আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

তাহিয়া আনান ধীরা'র একটি কবিতা বা 'চিঠি'



ভেবেছ কি . . ? কানে খাটো বলেই ক্ষমা করব . . ? মোটেও না। যত আস্তেই বলিনা কেন, শুনতে তোমাকে হবেই। অন্তরের অবাধ্য কথা গুলোকে টুকে রাখতে হবে প্রতিটা নিউরনে; যেখানে অসংখ্য অ্যাক্সন আর ডেনড্রাইটের ঘনিষ্ট জোড় বাধাঁ। তেমনি তোমাকে আষ্ট্রে-পৃষ্ঠে বেঁধে রাখতে চাই আমার আঁচলে। হয়ত কিছুই দিতে পারিনি, ঠেলে দিয়েছি এক অন্ধকার প্রকোষ্ঠে এক তিল দ্বীপের প্রভাও জ্বলেনা যেখানে।

অনাহারে জীর্ণ হয়েছে হাড়গোড়, ক্লান্তিতে . . . ধূসর বাদামী চোখ জোড়াও হয়েছে মলিন কই, তোমার বাবুয়ানা পোষাকও'তো আজকাল দেখিনা ময়লা বসনে একগাদা সিগারেটই তোমার সঙ্গী, তবু ভালবাসো . . ? যেদিন চেয়েছিলে হাত, আমি বুঝেছিলাম . . . শুধু হাতটাই ছুঁতে চাওনি, হতে চেয়েছ অন্তর্যামী আমার আয়নায় আমারই প্রতিবিম্ব। আমার অন্ধকারে খুঁজে নিয়েছ সহস্র অমরাবতী যেখানে লক্ষ নারীর মাঝেও এই চিরচেনা কৃঞ্চবর্ণের মেয়েটাকেই তোমার আফ্রোদিতির মত লাগতো . . . জানতাম ঐ হাত স্পর্শ করলে প্রতিনিয়ত জ্বলতে হবে এই শহর, কোলাহল, প্রতিটা নিরস ঘর্মক্লান্ত মুখ হয়ে উঠবে হিংস্র হায়েনা . . . তবু তোমাকে লুকিয়ে রাখতে চাইলাম আমার করতলে। কত নিবিড় বন্ধু-পরিজন বলে উঠল- 'ভুল করছ তুমি' শত আলোক শিখা, প্রাণময় জীবন বিসজর্ন দিয়ে জয় করতে চাইছ মৃত্যুকে; জানো'তো . . . এই পথে কত কাঁটা . . ? তাদের এই নীতিজ্ঞান আমার গতিকে করেছিল আরো উত্তাল . . . শুধু তোমাকে পাওয়ার আশায় হয়ে উঠলাম এক মৃত্যুঞ্জয়ী মাতাল জোনাকী . . । তোমাকে মনে হয়েছিল আমার স্বাধীনতা; যে আদিম ডানা দুটোতে জং ধরে গিয়ে ছিল শত বিপদের আশঙ্কায় . . . তুমি সেথায় লাগিয়ে দিলে উজ্জল ক্রোমিয়ামের প্রলেপ। আয়নায় নিজেকে আবিস্কারের চেষ্টাও কম করিনি, রাস্তায়, রিক্সায়, পার্কে বা ক্যাফেতে প্রতিনিয়ত তোমার সেই হাত, সেই হস্ত রেখার মাঝে আমার অবাধ বিচরন।

নক্ষত্রের মত আমাকেই কেন্দ্র করে ঘুরছে তোমার বর্তমান-ভবিষ্যত। সামনে এলেই হয়ে পড়েছ এক সুবোধ বিড়াল যার গোঁফে-গালে শুধু আদরের ছোপ। সেই আদরের ঢাক-ঢোল, সানাই বাজতে লাগলো বিমষর্ শহরের অলিতে গলিতে। কিন্তু হায় . . . নিন্দুকের কি কোন কমতি আছে এ সমাজে, আসলে তাদগের বিশেষন হিংসুক হওয়াই শ্রেয়। এমন অপার্থিব প্রেমময় জীবন ক''জনের কপালে জোটে. . ? অসূয়া হীন কামনাময় শরীর গুলো নিশ্চয় দাঁড়িয়ে রয়, হিরকের শৃঙ্খল পরিয়ে দেয় আমাদের পাখায়. . . অপযশের সিঁদুর চড়ে আমাদের ডালে।

কিন্তু তোমার প্রত্যাশায় বিজনে হয়ে উঠলাম তুখর চন্দ্রিমা। অব্যাকুল ব্রততী হয়ে জড়িয়ে রইলাম তোমাকে। তুমি কি রাগ করছ . . ? আমাকে কি নাছোড়বান্দা, একগুঁয়ে বা পাষন্ড মনে হচ্ছে . . ? হলে হোক; আমি যদি হই এক প্রাচীন unscrupulous ব্রীড়াহীন অবাধ্য মেয়ে, তবে বলে দিও। চলে যাব অসীম শক্তিধর দয়াময় ভূপতির কাছে। জানতে চাব, কোন মহৎ উদ্দ্যেশে আমার রক্তে তিনি এনেছিলেন তোমার জোয়ার . . ? কেন দিয়েছিলেন শত কন্টক দল বরণের শক্তি . . ? আমারই গহীণে বেড়ে ওঠা তোমার কুঁড়ি গুলোকে তিনি কেন অঙ্কুরেই বিনাশ করেননি. . ? কি জানি, তিনি দেবেন কিনা এসবের উত্তর।

হয়ত সেদিন প্রথমবারের মত হিসাব করতে বসব- 'কি দিলাম, কি পেলাম'। এক অদৃশ্য কায়া অবিরাম ছুটে চলবে তোমার পিছে, দেখবে কি করে বাজাও সুখের দামামা তাকে ছাড়া এ পৃথিভীতে . . ? অস্বস্তি বোধ হবে তোমার . . ? তোমার বুকের উপর শতরঞ্চি পেতে বসে রইব লক্ষ কোটি বছর। কিন্তু তুমি বুঝতেও পারবেনা, কি সুথ পাব তাতে . . ? জানিনা . . . কোনদিন যদি দেখি তোমার দু'চোখে সেই জ্বালাময় আগ্নেগিরি, হয়ত পেতে চাইব পুনরায় বিজয়ের স্বাদ। কোনদিন যদি তোমার আঁখি কোনে জমে এক বিন্দু নীহার আমারই স্মৃত্মিভারে, বুকে জড়িয়ে খুব আদর করব তখন কি সূখ পাববো তাতে জানিনা . . . কোনদিন যদি তোমার দ্রিমিতের কানে কানে শোনাও আমার গল্প, তার ভোরের আলোর মত শুভ্র মনে যদি লাগাতে চাও রবির তেজস্বি আলো . . . মন দিয়ে শুনব। লক্ষ্য করব, তার চোখে আছে কি কোন মমতার চিন্হ . . ? নাকি শুধুই ঘৃণা।

যদি সে সহানুভুতিশীল হয় আমার প্রতি, কি সুখ পাব তাতে, জানিনা। একা একা যখন রিক্সায় চলবে আকাশে যখন ভিড় করবে কালো শাড়ি পড়া বিদ্যুতের ঝিলিকে ভরা মেঘকণ্যারা, তখন কি আমায় ভুলে থাকতে পারবে তুমি . . ? তখন কি মনে পড়বে না- "৫ আগষ্ট'০২ বা ২৮ ডিসেম্বর' ০৫"-এর কথা; ভুলে থাকলে কষ্ট পাবো, কিন্তু যদি মনে পড়ে, কি সুখ পাবো তাতে জানি না . . .

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.