আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

লাঠি হাতে ভবিষ্যত কুয়েট প্রকৌশলীদের দেশ গড়ার শপথ

আমি এবং আরণ্যক ছাইরংয়া বধ্যভূমিতে দাড়িয়ে দেখছি শেষ সূর্যাস্ত

মাগো ভাবনা কেন ? আমরা তোমার শান্তি প্রিয় শান্ত ছেলে তবু শত্রু এলে অস্ত্র হাতে ধরতে জানি .................. । ১৯৭১ সালে ঠিক এই সুর কন্ঠে নিয়েই বাংলাদেশের আপামর ছাত্রসমাজ পাক হানাদারের বিরূদ্ধে ঝাপিয়ে পড়েছিল । সেদিন আপামর ছাত্রসমাজের ভেতর না ছিল অবস্থানগত ভিন্নতা, না ছিল গোষ্ঠিগত আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একে অপরের ভেতর গড়ে ওঠা শত্রু মনোভাবাপন্নতা । অথচ সময়ের সাথে সাথে পেক্ষাপটের ভিন্নতায় বর্তমান ছাত্রসমাজের ভূমিকায় বলে দেয় সেদিনের ছাত্রসমাজের সাথে বর্তমানের অপরিসীম বৈপরিত্যতা । গত ৩রা মে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) এ ছাত্রদের ভেতর ঘটে যাওয়া অসহিংসতায় এর প্রমান।

তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গড়ে ওঠা এই অস্থিতিশীলতার মধ্য দিয়ে প্রতিয়মান হয় সময়ের প্রয়োজনে কিংবা যাই হোক নিজেদের অবস্থানগত বৈষম্য টিকিয়ে রাখতে বই পড়ুয়া নিরীহ ছাত্র কিংবা আগামীদিনের প্রকৌশলী যাদের হাত দিয়ে একদিন সোনার বাংলা খাটি সোনায় পরিনত হবে তারাও কলম ফেলে লাঠি হাতে নিতে পারে,পারে নির্দয়ের মত নিজের সবচেয়ে কাছের বন্ধুকে অমানুষিকভাবে প্রহার করতে। ঘটনার কারন অনুসন্ধান করতে কেবলমাত্র ডিপার্টমেন্টালিজম নামক এক ধরনের অসুস্থ রাজনীতির পরিচয় পাওয়া যায় । বর্তমানে বাংলাদেশের কর্মক্ষেত্রে প্রকৌশল বিদ্যার দামদরে মেকানিক্যাল থেকে ইলেকট্রিকাল কিংবা ইলেকট্রিকাল থেকে সিভিলের মূল্যমান আজকাল কর্মক্ষেত্র ছাড়িয়ে শিক্ষাঙ্গনও স্থায়ী আসন গেড়ে নিয়েছে । যার প্রভাব থেকে বাংলাদেশের ভবিষ্যত আলোকবর্তিকা বহনকারী ছাত্ররাও মুক্ত হতে পারেনি । ঘটনার কারন অনুসন্ধান করতে গেলে আরও একটি মজার বিষয় পাওয়া যায় আর তা হল সেদিনের অসহিংসতায় অংশগ্রহনকারী ছাত্রদের মধ্যে শতকরা ৯০ ভাগ ছাত্রই ঘটনার কারন সম্পর্কে স্পস্ট কোন ধারনা দিতে পারেনা ।

আর বাংলার নিরাপত্তা বিভাগের অতন্দ্র প্রহরী হিসাবে খ্যাত পুলিশ বাহিনীর ভূমিকাও ছিল চরম । যাই হোক প্রশাসনিক দোহায় দিয়ে আমাদের নিজেদের ভেতরের দূর্বলতাকে ঢেকে রাখার চেষ্টা করা শুধু বোকামীই নয় রীতিমত অপরাধও বটে । তৃতীয় বিশ্বের দরিদ্র দেশগুলোর ভেতর বাংলাদেশ একটি । তাছাড়া সন্ত্রাস, দুর্নীতি,অসুস্থ রাজনীতি প্রতিনিয়ত আমাদের জাতীয় উন্নয়নকে বাধাগ্রস্থ করছে । এর মাঝে উচ্চশিক্ষায় শিক্ষিত প্রকৌশলী, ডাক্তার প্রভূতি মূর্তিমান ব্যতিক্রম ।

কিন্তু প্রায়ই যখন পেপার পত্রিকায় পড়তে হয় রাজনৈতিক অসহিংসতায় মেডিকেল কলেজের ছাত্রকে তিন তলা থেকে ফেলে দিয়ে হত্যা করা হয় কিংবা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিনা অপরাধে লাঠির আঘাতে জখম হয় সবচেয়ে নিরীহ ছাত্রটি তখন কেবল মাত্র নিজেদের ভেতরের অপরিসীম তুচ্ছতায় প্রতিয়মান হয় । তাই সমস্ত ছাত্র সমাজের প্রতি এই দেশ ও জাতীর আহব্বান, শুধুমাত্র এই দরিদ্র দেশটাকে সুন্দর করে গড়তে আমরা কি একটুও সহনশীল হতে পারিনা?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.