আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

টিপাইমুখ বাধ প্রসংগে: চাই সংগ্রামের আন্ত:সংযোগ



ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিশাল হিমালয় এবং বরাক অববাহিকা অঞ্চলের প্রকৃতির উপর পরাশক্তি হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হতে উদগ্রীব ভারতীয় পুজি এবং আন্তর্জাতিক পুজির মুনাফা-নজর পড়েছে। লোভাতুর পুজি কখনো প্রকৃতি বোঝেনা, দীর্ঘ মেয়াদী বিবেচনা বোঝেনা, ঐতিহ্য সংস্কৃতি বোঝেনা। পুজি কখনো জীব বৈচিত্র-পরিবেশ-প্রতিবেশকে মূল্য দিতে শেখেনি, টেকসই উন্নয়নের গুরুত্ব অনুধাবন করতে চায়নি। এই পুজি সাধারণ গণমানুষের জীবন-জীবিকার মৌল স্বার্থকে প্রধান বিবেচনায় ঠাই দিতে শেখেনি। পুজি হচ্ছে একচক্ষু দানব, পুজি বোঝে শুধু মুনাফা।

উত্তর-পূর্ব ভারত থেকে প্রকৃতিক সুবিধা ব্যবহার করে জলবিদ্যুত প্রকল্পের মাধ্যমে ষাট হাজার মেগাওয়াটেরও বেশী বিদ্যুত নির্মাণ করে তা দিয়ে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এনার্জি গ্রিড তৈরীর মধ্যদিয়ে বিশাল এক মুনাফা বাণিজ্যের আয়োজন করে চলেছে উদগ্র ভারতীয় ও আন্তর্জাতিক পুজি। বিশেষত: বরাক নদীকে ব্যবহার করে উত্তর-পূর্ব ভারতের মণীপুর রাজ্যে টিপাইমুখ অঞ্চলে ১৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুত উতপাদনের প্রকল্পটি হচ্ছে ঐ বিশদ পরিকল্পনারই একাংশ মাত্র১ যার খেসারত দিতে হবে আসাম-মণিপুর-মিজোরাম রাজ্যের সাধারণ মানুষ এবং বাংলাদেশের জনগণকে। বুঝে শুনে যদি কেউ বিষ না খাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, তাহলে পুজি কি করে - হয় মধু কিংবা চিনি মিশিয়ে ভুলিয়ে ভালিয়ে তা গিলিয়ে দেয় কিংবা তার মতামতের কোন তোয়াক্কা না করে তার সামনে দিয়ে কিংবা পেছন দিয়ে যেভাবেই হোক সেটা ঢুকিয়ে দেয়। টিপাইমুখ বাধের ক্ষেত্রে ভারতীয় পুজি উভয় উপায়ই অবলম্বন করছে মণিপুরের বেলায় আর দ্বিতীয় পদ্ধতি প্রয়োগ করছে বাংলাদেশের উপর। অথচ টিপাইমুখ বাধ একই সাথে কাপ্তাই আর ফারাক্কার ভূত;মণীপুর বাসীর কাছে যা কাপ্তাইয়ের মত,বাংলাদেশের কাছে তা আরেক ফারক্কা।

মণিপুরবাসীর নাকের ডগায় বিদ্যুত উতপাদনের মূলা: আসামের কাছার অঞ্চলের মৌসুমি বন্যা প্রতিরোধের নামে মনিপুরের ২৭৫.৫০ বর্গকি.মি এলাকার ১৬টি গ্রাম পুরোপুরি ডুবিয়ে এবং আরও ৫১টি গ্র্রামকে আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ করে ৪০ হাজারেরও বেশী মানুষের জীবন জীবকা ও ঐতিহ্য-সংস্কৃতি ধ্বংস করার পরিকল্পনা মনিপুরবাসী কখনই মেনে নেয়নি। ফলে মনিপুরের বরাক নদীর উপর বাধ নির্মানের স্থান ক্রমশই পরিবর্তিত হতে থাকে- ১৯৫৫ সালে ময়নাধর, ১৯৬৪ সালে নারায়নধর এবং তার পর ভুবন্দর এবং সবশেষে ১৯৮০’র দশকে তুইভাই এবং বরাকনদীর সংগম স্থলের ৫০০ মিটার ভাটিতে টিপাইমুখে বাধ নির্মানের পরিকল্পনা করা হয়। লক্ষণীয় বিষয় হলো প্রথমে বাধটি ব্রম্মপুত্র ফ্লাড কনট্রোল বোর্ড বা বিএফসিবি’র আওতায় থাকলেও ১৯৮৫ সালে সম্ভাব্যতা যাচাইয়ের পর ১৯৯৯ সালে বাধটিকে নর্থ ইষ্টার্ণ ইলেক্ট্রিক পাওয়ার কর্পোরেশন বা নেপকো’র হাতে দিয়ে দেয়া হয়২ এবং তখন বাধটির নাম টিপাইমুখ হাই ড্যাম থেকে পরিবর্তিত হয়ে টিপাইমুখ পাওয়ার প্রজেক্ট এ পরিবর্তিত হয় যদিও বিদ্যুত উতপাদনকে মুখ্য উদ্দেশ্যে পরিণত করার লক্ষে বাধের ডিজাইনে কোন পরিবর্তনই করা হয়নি যেকারণে আগে বাধের যে উচ্চতা(১৬৮.২ মিটার) ও লোড ফ্যাক্টর (২৬.৭৫%) আছে এখনও তাই আছে। এর মানে হলো বছরের কোন এক সময়ের সর্বচ্চো বিদ্যূত উতপাদন ক্ষমতার অর্থাত ১৫০০ মেগাওয়াট ক্ষমতার মাত্র ২৬.৭৫% অর্থাত ৪০১.২৫ মেগাওয়াট বিদ্যূত সারাবছর ধরে পাওয়া যাবে। এটা নাকি মনিপুরবাসীর জন্য বিদ্যুত প্রকল্প (বর্তমানে যুগে তো ৬০% এর নীচে কোন হাইড্রোইলেক্ট্রিক প্লান্ট এর ডিজাইন-ই করা হয়না!) যার মাত্র ১২% বিদ্যূত অর্থাত ৪৮ মেগাওয়াট পাওয়া যাবে বিনামূল্যে।

৩ ফলে যতই ঘরে ঘরে বিদ্যূতের মূলা ঝোলানো হউক না কেন, সারা বছর ধরে ৪৮ মেগাওয়াট মাগনা বিদ্যুতের বিনিময়ে জল-জীবন-জীবিকা-পরিবেশ-সংস্কৃতি ধ্বংসের প্রকল্পের বিরুদ্ধে তামেলং ও চারুচাদপুরের হামার এবং জেলিয়াংরং নাগা আদিবাসী গোষ্ঠী সহ সংখ্যাগরিষ্ঠ মণিপুরবাসী প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। জলবিদ্যুত, বন্যা নিয়ন্ত্রণ কিংবা সেচ প্রদান ইত্যাদি ঘোষিত উদ্দেশ্যের বাইরে রয়েছে বিশাল ও সম্পদশালী কিন্তু স্বায়ত্বশাসনের দাবীতে অস্থিতিশীল উত্তরাঞ্চলের জলজ শক্তি, গ্যাস, ইউরোনিয়াম ইত্যাদির উপরে দেরী হয়ে যাওয়ার আগেই নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার পাশাপাশি একই সাথে সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলে সামরিক ও অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার বাসনা। টিপাইমুখ বাধ সেই পরিকল্পনারই অংশ। মনিপুর বাসীর জন্য বিদ্যুত উতপাদনের সুফলের কথা বলে ২০০৩ সালের ৯ জানুয়ারী টিপাইমুখ বাধের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার এবং মনিপুর রাজ্য সরকারের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর হলেও খোদ মণিপুরবাসী সহ বাধের উজান এবং ভাটির উভয় অঞ্চলের জনগণের তীব্র বিরোধীতার মুখে এখনও নির্মাণ কাজ শুরুকরতে পারেনি। ভারতীয় সামরিক বাহিনীর অধিনস্ত আধাসামরিক বাহিনী আসাম রাইফেলস বাধ রক্ষণাবেক্ষণের ঘোষণা দিলেও কাজ হয়নি।

সবশেষ, ২০০৮ সালের ২৮ জুলাই রাজ্য সরকার আইন পাশ করে টিপাইমুখ বাধের নির্মান কাজের প্রয়োজনে নির্মাণ সামগ্রী আনা-নেয়ার কাজে ব্যবহ্রত মনবাহাদুর রোডের ৯৯ কিমি দূরত্বের প্রতি ৭ কিমি অন্তর সামরিক পোষ্ট স্থাপন করেছে। ৪ বাংলাদেশের জলপ্রবাহের উপর প্রতিক্রিয়া: বহুমুখী টিপাইমুখ বাধ প্রকল্পের কাজ হবে মূলত তিন ধরনের- আসামের কাছার অঞ্চলে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ প্রদান এবং বিদ্যুত উতপাদন। বরাক নদীর উজানে এ তিনটি কাজের জন্য বাধ নির্মাণ মানেই হলো ভাটির পানি প্রবাহের পরিমাণের পরিবর্তন ঘটা: জলসেচের জন্য নদীথেকে পানি প্রত্যাহার করে নালা বা খালের মাধ্যমে আসামের কৃষি জমিতে সেচ প্রদান, জলবিদ্যুত উতপাদনের জন্য নূন্যতম একটি নির্দিষ্ট উচ্চতার পানি নীচের দিকে প্রবাহিত করে তার গতিশক্তি ব্যবহার করে টারবাইন ঘুরানোর প্রয়োজন হয় বলে অতিরিক্ত পানি জমিয়ে রাখা- ফলে শুকনো মৌসুমে ভাটির দিকে পানি প্রবাহের হ্রাস এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বর্ষা মৌসুমে সময়ে সময়ে জলাধারের পানি ছেড়ে দিয়ে বন্যা নিয়ন্ত্রণ অঞ্চলে পানির উচ্চতা স্বাভাবিক রাখা ইত্যাদি প্রকৃয়া চলবেই। ফলে প্রয়োজনের সময়ে ভাটিতে অবস্থিত বাংলাদেশ কম পানি পাবে আর যখন প্রয়োজন থাকবেনা তখন ভারতের ছেড়ে দেয়া পানিতে জলমগ্ন হবে মেঘনা অববাহিকা! ইন্সটিটিউট অব ওয়াটার মডেলিং এর গবেষণায় এই পানির পরিমাণ বাড়া-কমার একটা হিসাব পাওয়া গেছে: টিপাইমুখ বাধ যখন পূর্ণ কার্যক্ষম থাকবে তখন বরাক নদী থেকে অমলসিধ পয়েন্টে সুরমা-কুশিয়ারা-মেঘনা নদীর দিকে পানি প্রবাহ জুন মাসে ১০%, জুলাই মাসে ২৩%, আগষ্ট মাসে ১৬% এবং সেপ্টম্বর মাসে ১৫% কমে যাবে। কুশিয়ারা নদীর পানির উচ্চতা অমলসিধ স্টেশনে কমবে জুলাই মাসের দিকে গড়ে ১ মিটারেরও বেশী আর ফেঞ্চুগঞ্জ, শেরপুর ও মারকুলি স্টেশনে কমবে যথাক্রমে ০.২৫ মিটার, ০.১৫ মিটার এবং ০.১ মিটার করে।

অন্যদিকে একই সময়ে সুরমা নদীর পানির উচ্চতা সিলেট এবং কানাইয়ের ঘাট স্টেশনে কমবে যথাক্রমে ০.২৫ মিটার এবং ০.৭৫ মিটার করে। এ তো গেল ভরা মৌসুমের চিত্র। শুকনো মৌসুমে বরাক-সুরমা-কুশিয়ারা থেকে পানি প্রত্যাহারের হার আগষ্ট মাসে ১৮% এবং সেপ্টেম্বর মাসে ১৭% । ৫ প্লাবন পদ্ধতি এবং প্লাবন-ভূমির উপর প্রভাব: বরাক নদী অমলশিদ নামক স্থানে দুটি ভাগে বিভক্ত হয়ে সুরমা ও কুশিয়ারা নামে সিলেটের জকিগঞ্জ সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। এরপর নদীগুলো ৫টি প্লাবন ভূমি অতিক্রম করে মেঘনায় গিয়ে মিশেছে।

প্লাবন ভূমিগুলো হলো: পুরোনো মেঘনা সংলগ্ন প্লাবন ভূমি, পূর্বাঞ্চলীয় সুরমা-কুশিয়ারা প্লাবনভূমি, সিলেট প্লাবনভূমি, উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পাইডমন্ট অববাহিকা এবং উত্তর ও উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পাহাড়ী এলাকা। উজানে বাধ নির্মানের ফলে এসব প্লাবনভূমির প্লাবনের ধরণ, মৌসুম এবং পরিমান ক্ষতিগ্রস্ত হবে। সুরমা ও কুশিয়ারার প্রাকৃতিক জলপ্রবাহ শুস্ক করার ফলে কমপক্ষে ৭ টি জেলা- সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ব্রাম্মনবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোণার ধান উতপাদন ব্যহত হবে- যে জেলাগুলোতে দেশের উল্ল্যেখযোগ্য পরিমাণ ধান উতপাদন হয়। ৬ এর মধ্যে সিলেট ও মৌলভীবাজার এলাকাতেই প্লাবনভূমির পরিমাণ কমে যাবে যথাক্রমে ৩০,১২৩ হেক্টর(২৬%) এবং ৫,২২০ হেক্টর( ১১%)। বাধ নির্মাণের পর থেকে সুরমা-কুশিয়ারার উজানের ৭১% এলাকাই আর স্বাভাবিক মৌসুমে জলমগ্ন হবে না।

কুশিয়ারা নদী প্রায় ৬৫ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে তার ডান পাশের প্লাবনভূমি হতে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাবে। শুকনো মৌসুমে কুশিয়ার বাম তীরে কুশিয়ারা-বরদাল হাওর পুরোপুরি শুকিয়ে যাবে। কাউয়ার দিঘী হাওর এর ২,৯৭৯ হেক্টর( ২৬%) জলাভূমি হারাবে। ৭ ফলে সুরমা-কুশিয়ারা-মেঘনা অববাহিকার বিশাল অঞ্চল জুড়ে চাষাবাদের জমি, জমির উর্বরতা, মাটির উপরের ও মাটির নীচের পানির স্তর, পুকুর-হাওর-বাওড়, মাছ, জলজ উদ্ভিদ, গোচারণ ভূমি ও পশুখাদ্যের প্রাপ্যতা সবমিলিয়ে সমস্ত জলবায়ু, বাস্তসংস্থান এবং জীবন জীবিকার ব্যাপক ক্ষতিসাধন হবে। ভূমিক্ষয় এবং ভূ-প্রকৃতির উপর প্রভাব: টিপাইমুখ বাধের ঠিক নীচ থেকেই ভূমিক্ষয়ের পরিমাণ মারত্মক রকম বেড়ে যাবে এবং এই ক্ষয়ের এলাকা বাধ থেকে ১০০/১৫০ কিলোমিটারের ও ভাটি অঞ্চল পর্যন্ত বিস্তৃত হবে।

৮ ফলে নদীর এই বিশাল মধ্যাঞ্চলে ব্যাপক ভূমিক্ষয়ের ফলাফলস্বরুপ ভাটি অঞ্চলের নদীরবুক পলিতে ভরাট হয়ে সুরমা-কুশিয়ারা নদীর গতিশীলতা বাধাগ্রস্ত হবে। বর্ষার আগে পরে নদীর বুকে এই পলিজমাটের পরিমাণ বেড়ে গিয়ে বেশ কিছু শাখা নদীর মুখ বন্ধ করে দেবে। ফলে একদিকে কিছু অঞ্চলে যেমন একেবারেই পলিজমাট পড়বে না অন্যদিকে কিছু অঞ্চলে নদীরবুক ভরাট হয়ে বর্ষাকালে পানি ধরে রাখতে না পারে অস্বাভাবিক বন্যার কবলে পড়বে। আবার নদীর পানির স্তর নীচে নেমে গেলে মেঘনা অববাহিকা এলাকার লবণাক্ততা বেড়ে যাবে। লবণের উপস্থিতির কারণে সমুদ্রের পানির চাপ নদীর স্বাদু পানির তুলনায় বেশী হয়।

ফলে সমউচ্চতার সমুদ্রের পানির স্তর থেকে সমউচ্চতার নদীর পানির স্তরের দিকে লবণাক্ত পাণির প্রবাহ হয়। তার উপর যদি নদীর স্বাভাবিক পানির পরিমাণ আরো কমে যায় তাহলে সমুদ্রের লবণাক্ত পানি আরো বেশী করে আরো বেশী এলাকাকে লবণাক্ত করে ফেলে। টিপাইমুখ বাধের ফলে নদীর পানির স্তর নীচে নেমে গেলে এবং মাটির নীচের ওয়াটার টেবিলের উচ্চতা কমে গেলে স্বাভাবিক ভাবেই জমিতে লবণাক্ততা বেড়ে যাবে। বাধের জলাধারের প্রভাবে ভূমিকম্প প্রবণতার বৃদ্ধি: বাধের জলাধারে যে বিপুল পরিমাণে পানি জমা করা হয়, বাধের ভিত্তি ভূমি এবং এর আশপাশের শিলাস্তরের উপর তার চাপের পরিমাণও হয় ব্যাপক। অল্প একটু অঞ্চলে এই বিপুল চাপ পড়ার কারণে ইতোমধ্যেই ঐ অঞ্চলে থাকা শিলাস্তরের ফাটলকে সক্রিয় করে তুলতে পারে।

এই ঘটনাটি কখনও তাতক্ষণিক ভাবে বাধ চালু হওয়ার কয়েক দিনের মধ্যে কিংবা শুকনো ও ভরা মৌসুমে চাপের কম বেশী হতে হতে বাধ চালুর অনেক পরেও হতে পারে। এ প্রকৃয়ায় মাটির নীচের সচ্ছিদ্র শিলাস্তরের ফাকে ফাকে জমে থাকা পানির যে স্বাভাবিক চাপ(porous pressure) থাকে তা বাধের পানির ভারে এবং শিলাস্তরে চুইয়ে যাওয়া বাড়তি পানির প্রভাবে স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়। এ porous pressure বেড়ে যাওয়া ছাড়াও বাড়তি পানির রাসায়নিক ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়ার কারণেও ফাটলের দুদিকের শিলাস্তর যা এমনিতেই টেকটোনিক ক্রিয়া-প্রতিকৃয়ার কারণে পরস্পর থেকে দুরে সরে যেতে চায় কিন্তু পরস্পরের মধ্যকার ঘর্ষনের শক্তির কারণে একত্রিতই থাকে, সেটা এবার আর বাড়তি চাপ সহ্যকরতে না পেরে চ্যূতি বা স্লিপ-স্ট্রাইকের সৃষ্টি করে- ফলে ভূমিকম্পের হাইপোসেন্টার সৃষ্টি হয়ে সেখান থেকে ভূমিকম্প চারিদিকে ছড়িয়ে পরে। জলাধারের প্রভাবে এভাবে কোন অঞ্চলে ভূমিকম্প প্রবণতা বেড়ে যাওয়ার বিষয়টিকে বলা হয় River Induced Seismicity( RIS)৯। এভাবে ভূমিকম্প বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি প্রথম নজড়ে আসে ১৯৩২ সালে আলজেরিয়ার কুয়েড ফড্ডা বাধের ক্ষেত্রে।

পরবর্তিতে এ পযন্ত বিশ্বের বিভিন্ন ভূমিকম্প প্রবণ অঞ্চলে এধরনের বাধের সাথে ভূমিকম্প বেড়ে যাওয়ার নজির পাওয়া গেছে কমপক্ষে ৭০টি। ভারতের কাছে বিষয়টি অজনা থাকার কথা নয় কেননা এ যাবত কালে বিশ্বের সবচেয়ে তীব্র মাত্রার জলাধার প্রভাবিত ভূমিকম্প হয়েছে খোদ ভারতের মহারাষ্ট্রের কয়না বাধের কারণে। ১৯৬৭ সালের ১১ ডিসেম্বর ঘটা ৬.৩ মাত্রার এই ভূমি কম্পটি এমনকি তার কেন্দ্র থেকে ২৩০ কিমি দূরেও তীব্র আঘাত হেনেছিল । ১০ এতসব জেনেশুনেও ভারত যে জায়গায় টিপাইমুখ বাধ নির্মাণ করছে সেটা হলো সারা দুনিয়ার মধ্যে ছয়টা ভয়ংকর ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকার মধ্যে একটা- উত্তর-পূর্ব ভারত ছাড়া অন্যান্য অঞ্চলগুলো হলো হলো ক্যালিফর্নিয়া,জাপান, মেক্সিকো, তুরস্ক ও তাইওয়ান। টিপাইমুখ বাধের ১০০-২০০ কিমি ব্যাসার্ধের মধ্যে গত ১০০-২০০ বছরে পাচমাত্রা বা তারও বেশী মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে ১০০’রও বেশী।

দেখা গেছে ১৫০ বছরের মধ্যে টিপাইমুখের ১০০ কি.মি ব্যাসার্ধের মধ্যে ৭+ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে ২টি এবং এর মধ্যে একটি তো হয়েছে ১৯৫৭ সালে টিপাইমুখ থেকে মাত্র ৭৫ কি.মি দুরে। ১১ এ অঞ্চলটিতে এত বেশী ভূমিকম্পের কারণ হলো অঞ্চলটি যে সুরমা-গ্রুপ শিলাস্তর দ্বারা গঠিত তার বৈশিষ্টই হলো অসংখ্য ফাটল আর চ্যুতি। পুরো বরাক অববাহিকা এলাকাটিতেই রয়েছে অসংখ্য ফল্ট লাইন যা ঐ এলাকার নদী এবং শাখানদীগুলোর গতি প্রবাহকে নিয়ন্ত্রণ করে। প্রস্তাবিত টিপাইমুখ বাধের একেবারে অক্ষ বা axis টিই অবস্থিত হলো বহুল পরিচিত তাইথু(Taithu) ফল্টের উপর অবস্থিত যা সম্ভাব্য ক্রিয়াশীল একটি ফল্ট এবং ভবিষ্যতের যে কোন ভূমিকম্পের এপি সেন্টার হয়ে উঠতে পারে। তাছাড়া ভারত এবং বার্মার টেকটোনিক প্লেট এর সংঘর্ষের জন্য এলাকাটি দুনিয়ার অন্যতম একটি ভূমিকম্প প্রবণ এলাকা।

কাজেই এরকম একটি এলাকায় ১৬৮.২ মিটার উচ্চতার একটি জলাধার নির্মাণ করা মানে( জলাধারের উচ্চতা ১০০ মিটারের বেশী হলে River Induced Seismicity এর সম্ভাবনা বেশী থাকে) বাংলাদেশ ও ভারতের পুরো এলাকার জন্য সেধে ঘন ঘন ভূমিকম্প ডেকে আনা ছাড়া আর কি? বাধ ভাঙার আশংকা এবং সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া: বাধের যে জলাধার ভূমিকম্পের প্রভাবক হিসাবে কাজ করে, সে ভূমিকম্পের ফলে আবার সেই বাধেরই ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া কিংবা ভেঙে যাওয়ার(Dam Break) সম্ভাবনা থাকে বেশী- আর বাধ ভেঙে যাওয়া মানে এর বাধের ভাটি অঞ্চলের জন্য সমূহ সর্বনাশ। ধরা যাক সমউচ্চতার দুটো ভবন পাশাপাশি অবস্থান করছে যার একটির ছাদে সুইমিং পুল আছে এবং অন্যাটির ছাদ ফাকা। এখন ভূমিকম্প হলে কোনটি বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবে? যেবাড়ির ছাদে সুইমিং পুলভর্তি পানি আছে সেটা বেশী ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কেননা স্বাভাবিক অবস্থায় যে মধ্যাকর্ষন শক্তির কেবল লম্ব উপাংশটি বাড়ির ছাদের উপর বলপ্রয়োগ করে, ভূমি কম্পের ফলে পানির চলমানতার কারণে তার একটি সমান্তরাল উপাংশ তৈরী হবে যার পরিমাণ নিউটনের দ্বিতীয় সূত্রানুসারে পানির ভর এবং ত্বরণের গুণফলের সমান। এই চলমানতা বা লাইভ লোড হওয়ার কারনে একই পরিমাণ পানি স্থির অবস্থার চেয়ে ভূমিকম্পের সময় অনেক বেশী পরিমাণ লোডে পরিণত হতে পারে।

১২ বাড়ির ছাদের সুইমিং পুলের বিষয়টি বাধের বিশাল জলাধারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য- আর বাধ এলাকাটি যদি হয় টিপাইমুখের মতো ভয়ংকর ভূমিকম্পপ্রবণ এলাকায় তাহলে তো কথাই নেই! কাজেই টিপাইমুখ এলাকায় একটি বাধ হলে ভূমিকম্পের ফলে তা ভেঙে যাওয়ার সম্ভাবনা যে প্রবল সে বিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। এখন প্রশ্ন হলো যদি বাধ ভাঙে তাহলে বাধের ভাটিতে ১০০ কি.মি দূরে অবস্থিত বাংলাদেশের কি হবে? এ প্রশ্নটি মাথায় রেখে বাংলাদেশ সরকার পরিচালিত ফ্লাড একশান প্লান ৬ (FAP6) এর আওতায় ১৯৯২-৯৪ সালে একটা গবেষণা চালানো হয়। সাধারণত বন্যার পানি ঘন্টায় ১০ কি.মি গতিবেগে প্রবাহিত হয়, তবে কোন কোন ক্ষেত্রে ঘন্টায় ৩০ কিমি বেগেও প্রবাহিত হতে দেখা যায়। গবেষণায় ১০ কি.মি গতিবেগের হিসাবে বাধ থেকে ৮০ কি.মি দূরের পার্বত্য উপত্যকা, ১৪০ কি.মি দূরের শিলচর এবং ২০০ কি.মি দূরের অমলশিধ এলাকায় পানি পৌছার সময়ের একটা হিসেব কষা হয়। ফলে দেখা যায়, বাধ থেকে অমলশিধ পৌছতে পৌছতে স্রোতের বেগ কমে এলেও ২৪ ঘন্টারও কম সময়ের মধ্যে বাধের পানি মোটামুটি ৫ মিটার উচ্চতা নিয়ে হাজির হবে এবং ২৪-৪৮ ঘন্টার মধ্যে পানি তার সর্বোচ্চ উচ্চতা ২৫ মিটারের পৌছাবে যা প্লাবনভূমির উচ্চতারচেয়ে ৮ মিটার বেশী উচু ফলে প্লাবনভূমিকে ৮ মিটার পানির নীচে তলিয়ে রাখবে ১০ দিন বা তারচেয়েও বেশী সময় ধরে!১৩ আন্তর্জাতিক রীতি-নীতির লংঘন: ১৯৯৬ সালের ১২ ডিসেম্বর বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে গঙ্গার পানি বন্টন যে চুক্তি হয় সে চুক্তির শুরুতেই ভারত- “উভয় দেশের সীমানার ভেতর দিয়ে প্রবাহিত আন্তর্জাতিক নদ-নদীর পানির অংশীদ্বারিত্ব পারস্পরিক সমোঝতার মাধ্যমে করা এবং নিজ নিজ দেশে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ, নদী-অববাহিকার উন্নয়ন এবং জল-বিদ্যুত উতপাদনের ক্ষেত্রে উভয় দেশের জনগণের পারস্পরিক মঙ্গলের স্বার্থে জলসম্পদের সর্বোতকৃষ্ট ব্যাবহারের সদিচ্ছা”১৪ পোষণ করলেও বাস্তবে সব আন্তর্জাতিক নদ-নদীতো দূরের কথা ঐ চুক্তিতে উল্লেখিত হিসাব মতে বাংলাদেশেকে তার প্রাপ্য গঙ্গা নদীর পানিটুকু পর্যন্ত দিচ্ছে না।

দুই দেশের মধ্যকার এই যৌথ চুক্তি তো ছাড় ভারত দুই দেশের মধ্যকার যৌথ নদী ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক ভাবে স্বীকৃত হেলসেংকি রুল(লন্ডন, আন্তর্জাতিক আইন সংস্থা,১৯৬৭) কিংবা জাতিসংঘের আন্তর্জাতিক নদী ব্যাবহারের কনভেনশন(১৯৯৭) ইত্যাদি কোনটিরই তোয়াক্কা করছেনা- করলে বাংলাদেশকে না জানিয়ে, বাংলাদেশের জনগণের মতামত না নিয়েই টিপাইমুখ বাধ তৈরীর উদ্যোগ নিতে পারত না। হেলসিংকি রুলের আর্টিক্যাল ২৯(২) অনুসারে: একটি রাষ্ট্র নদী অববাহিকার যেখানেই অবস্থান করুক না কেন, তার যে কোন প্রস্তাবিত অবকাঠামো নির্মাণ এবং ইনষ্টলেশানের ব্যপারে নদী অববাহিকায় অবস্থিত অপর যে কোন রাষ্ট্র, এই কাজের ফলে অববাহিকায় ঘটা পরিবর্তনের কারণে যার স্বার্থহানী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে ফলে আর্টিক্যাল ২৬ এ সংজ্ঞায়িত আইনি অধিকার বিষয়ক বিরোধ দেখা দিতে পারে, তাকে এ ব্যাপারে নোটিশ দিতে হবে। নোটিশে গ্রহীতা দেশটি যেন প্রস্তাবিত পরিবর্তনের সম্ভাব্য ফলাফলের বিচার-বিশ্লেষণ করতে পারে তার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী থাকতে হবে। ১৫ এবং জাতিসংঘের নদী কনভেশনের আর্টিক্যাল ১২ অনুসারে: নদী অববাহিকায় অবস্থিত কোন রাষ্ট্র যখন অববাহিকায় অবস্থিত অপর কোন রাষ্ট্রের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে এমন কোন পরিকল্পনার অনুমোদন দেয় কিংবা বাস্তবায়ন শুরু করে, তখন সেই রাষ্ট্রকে সম্ভাব্য ক্ষতিগ্রস্থ রাষ্ট্রগুলোকে আগাম নোটিশ প্রদান করতে হবে। এই নোটিশের সাথে এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট এর ফলাফল সহ ঐ দেশের হাতে থাকা সমস্ত ডাটা এবং তথ্যাবলী সর্বরাহ করতে পারে যেন গ্রহীতা দেশটি পরিকল্পিত কাজটির সম্ভাব্য প্রতিক্রিয়া যাচাই-বাছাই করতে পারে।

১৬ ভারত বহুবছর ধরে টিপাইমুখ বাধের পরিকল্পনা করছে এবং এমনকি ২০০৬ সালে বাধের ভিত্তি প্রস্তরও স্থাপন করেছে কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে বাংলাদেশকে এসব কিছুই জানায়নি। সম্প্রতি( ১৪ এপ্রিল,২০০৯) ভারতের পররাষ্ট্র সচিব শিবশংকর মেনন হুট করে ঢাকায় এসে বাংলাদেশকে আহবান জানিয়েগেছেন প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন করতে-কোন টেকনিক্যাল ডাটা নাই, এনভায়রনমেন্টাল ইমপ্যাক্ট অ্যাসেসমেন্ট এর কাগজপত্র নাই- যেন টিপাইমুখ একটি পর্যটন প্রকল্প, গিয়ে পরিদর্শন করে এলেই হলো! ফলে উপরে উল্লেখিত আইনগুলোর আওতায় বাংলাদেশ ভারতকে বাধ্য করতে পারে প্রয়োজনীয় যাচাই বাছাইয়ের জন্য প্রয়োজনীয় তথ্যাবলী দিতে এবং প্রয়োজনে আন্তর্জাতিক আদালতের মুখোমুখি হতে। অথচ বাংলাদেশের নতজানু শাসক শ্রেণীর সেদিকে কোন নজর তো নেই-ই বরং বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ নদীপথ ব্যবহারের চুক্তি থেকে শুরু করে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক দ্বাসত্ব মূলক বাণিজ্য চুক্তি নবায়ন এমনকি একের পর এক নতুন নতুন চুক্তিতে আবদ্ধ হচ্ছে! প্রয়োজন সংগ্রামের আন্ত:সংযোগ: টিপাইমুখ বাধ ভারতীয় সাম্রাজ্যবাদী পুজির নগ্ন আগ্রাসন যা প্রতিরোধের আন্দোলন ভারতের ভেতরে ও বাইরে উভয় দিক থেকেই চলছে। Citizen’s Concern for Dams and Development(CCDD), Hmar Students Association(HAS), All Tribal Students’ Association of Manipur(ATSUM), Action Committee of Tipaimukh(ACT)সহ আরো অনেকগুলো সংগঠন ভারতের ভেতরেই প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে। বাংলাদেশেও বিভিন্ন সংগঠন কখনও সিলেট কেন্দ্রীক কখনও রাজধানী কেন্দ্রিক আন্দোলন তৈরী করার চেষ্টা করছে।

মুশকিল হলো বাংলাদেশের সংগঠনগুলোর একটা বড় অংশই সংকীর্ণ জাতীয়তাবাদ কিংবা ধর্মীয় সাম্প্রাদায়িকতার সুরসুরি ব্যাবহার করে যার যার স্বার্থ হাসিলের চেষ্টা করছে যার ফলে ভারত এবং বাংলাদেশের ভেতরের আন্দোলনকে একসূত্রে গেথে জাতীয় পর্যায়ে নিজ নিজ শাসক শ্রেণীর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য করার যে সম্ভাবনা সেটা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে। এ প্রসংগে ভারতীয় অ্যাক্টিভিষ্ট নর্মদা বাধ আন্দোলনের নেত্রী মেধা পাটেকারের মতামতাটিকে আমরা সঠিক ও কার্যকর বলে মনে করছি: “ – আমরা খুব ভালো ভাবেই অবগত আছি বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে ফারাক্কা বাধ(১৯৭৪) কিভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করেছে এবং বর্তমানে টিপাইমুখ বাধ কিভাবে ক্ষতিগ্রস্থ করতে পারে। যখন শক্তিশালী দেশগুলো প্রচলিত কনভেনশনস মেনে চলতে অস্বীকার করে তখন এরকম সমস্যা হতে বাধ্য। জীবনের সাধারণ ইস্যুগুলোকে ভিত্তি করে রাষ্ট্রীয় সীমানা অতিক্রমকারী একটা আন্ত:সংগ্রাম গড়ে তোলার জন্য আমাদের কাজ করে যেতে হবে। .... যেহেতু নদী কিংবা জলপ্রপাতের মতো ইকোসিস্টেমকে রাষ্ট্রীয় সীমানা দিয়ে ভাগাভাগি করা যায়না, তাই আমাদেরকে টেকসই উন্নয়নের নতুন পলিসি তৈরী করতে হবে।

কিন্তু তার আগে প্রয়োজন ক্ষতিগ্রস্থ মানুষগুলোর মধ্যে আন্ত:যোগাযোগ তৈরী করা যেন পরস্পরের মতামত এবং অভিজ্ঞাতার মিশেলে যৌথ শক্তি গড়ে উঠে। “ ১৭ পুনশ্চ:টিপাইমুখ বাধ নিয়ে ব্লগের আরও কিছু লেখা এই ব্লগে টিপাইমুখ বাধ নিয়ে অনেকেই লিখেছেন, সেগুলোর সংকলনের প্রয়োজনীয়তার কথা এসেছে, কিরিটি রায়ের সৌজন্যে সেগুলোর কয়েকটির লিংক এখানে দেওয়া হলো। তবে এগুলোই শেষ নয় নিশ্চই। প্রয়োজনে আরও আপডেট করা যাবে। আর লেখাগুলো নেয়া হয়েছে কোন রকম বাছবিচার ছাড়াই অর্থাত লেখাগুলোর সবকথার সাথে একমত কি একমত নই এই বিচারের মধ্যে না গিয়েই লেখাগুলো দেয়া হলো: এস এ মেহেদীর পোষ্ট: টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ নিয়ে পিনাক রঞ্জনের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানাই Click This Link পরিবর্তনবাংলা’র পোষ্ট: টিপাইমুখ বাঁধ ইস্যুতে সোচ্চার সিলেটবাসী Click This Link রাজনীতিক এর পোষ্ট: টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণের ব্যাপারে পানিসম্পদ মন্ত্রীর ভারত তোষণ নীতি Click This Link রাজীব মিত্রের পোষ্ট: 'টিপাইমুখ বাঁধ' এবং বাংলাদেশে এর প্রভাব Click This Link ইমন১৯২৪ এর পোষ্ট: টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা ।

Click This Link ভিন্ন চিন্তার পোষ্ট: প্রসঙ্গ : টিপাইমুখ বাঁধ নিয়ে সরকারের নিষ্ক্রিয়তা । Click This Link ক্ষণজীবীর কবিতা পোষ্ট: টিপাইমুখ অতঃপর Click This Link কিরিটি রায়ের লেখা: টিপাইমুখ বাধ, পিনাক বাবুর আব্দার, আমাদের মান্যর মহোদয়ের বক্তব্য....হায় আইজদ্দিন!!! কি বিচিত্র এই সোনার ডিজিটাল স্বদেশ!!!!! Click This Link আগামী লিখেছেন: আমরা টিপাইমুখ বাঁধের বিরুদ্ধে Click This Link নীল সাগরের পোষ্ট: ভারতের কান্ড.. Click This Link বাংলাদেশ জিন্দাবাদ এর পোষ্ট: যত বড় বাঁধ, তত বেশি ক্ষতি Click This Link প্রপদ এর পোষ্ট: ভারতের সম্প্রসারণবাদী আগ্রাসণ থেকে আমাদেরকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন!!! টিপাই মুখে বাঁধ নির্মানের প্রতিবাদে সংগঠিত হোন! Click This Link বাবু>বাবুয়া>বাবুই এর পোষ্ট: "তোমার ভয় নেই মা আমরা প্রতিবাদ করতে জানি" .... প্রমাণ করতে হবে। Click This Link বাবু>বাবুয়া>বাবুই এর পোষ্ট: এক মূমূর্ষ মাকে বাঁচাতে এগিয়ে আসুন Click This Link ধীবরের লেখা: আমাদের মুখে তালা, হাতে পায়ে শেকল কেন? Click This Link তথ্যসূত্র: ১) বিতর্কিত টিপাইমুখ বাধ: সামগ্রিকতার নিরিখে- প্রাককথন, প্রকৌশলী হিলালউদ্দিন, পৃষ্ঠা-৭(২০০৬) ২) Hydropolitics of Tipaimukh Dam- Dr. R.K Ranjan Click This Link ৩) Tipaimukh Dam is a Geo-techtonic Blunder of International Dimensions- part 2-Dr. Soibam Ibotombi http://www.epao.net ৪) North East watch Click This Link siphro-npmhr-to-pm-of-india/ ৫) “Gaining Public Acceptance (GPA)” for Large Dams on International Rivers: The Case of Tipaimukh Dam in India and Concerns in Lower Riparian Bangladesh Click This Link Dam.doc ৬) বিতর্কিত টিপাইমুখ বাধ: সামগ্রিকতার নিরিখে- এম আনোয়ার হোসেন (২০০৬)- পৃষ্ঠা ১২, ১৬ ৭) “Gaining Public Acceptance (GPA)” for Large Dams on International Rivers: The Case of Tipaimukh Dam in India and Concerns in Lower Riparian Bangladesh ৮) ঐ ৯) রমেশ চন্দ্র Can Dams and Reservoirs Cause Earthquakes? Click This Link ১০) Silenced Rivers: The Ecology and Politics of Large Dams, by Patrick McCully, Zed Books, London, 1996 ১১) Tipaimukh Dam is Geo-techtonic Blunder of International Dimensions- part 1-Dr. Soibam Ibotombi http://www.epao.net ১২) Tipaimukh Dam site Highly Vulneable to Earthquakes- ড.মো.আলি আকবর মল্লিক No to Tipaimukh Dam(২০০৭) পৃ:৯৬ ১৩) Tipaimukh Dam is Geo-techtonic Blunder of International Dimensions- part 2-Dr. Soibam Ibotombi http://www.epao.net ১৪) Ganga Water Treaty-Water Resources Management in Bangladesh- M. Inamul Haque- page 369 ১৫) Helsinki Rules- Water Resources Management in Bangladesh- M. Inamul Haque- page 403 ১৬) Water Course Convention- Water Resources Management in Bangladesh- M. Inamul Haque- page 411 ১৭) Praxis Journal- Vol 1 No 1 Oct-Dec, 2003, No to Tipaimukh Dam(২০০৭) পুস্তকে উদ্ধৃত, পৃ:১০৫

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.