আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বিদ্যুৎ, গ্যাস, পানি সমস্যা, অপচয় এবং আবাসিক এলাকা



আমার বাসার কাজের লোক চুলা ছোট করে জ্বালিয়ে তরকারি কাটাকুটি আর ধোয়াপাল্লার কাজ করছিল। আমি কিচেনে ঢুকে চুলাটা বন্ধ করে দিলাম। আর তাই দেখে সে 'হায় হায়' করে উঠল- "একটু পরেই সে আরেকটা রান্না চড়াতে যাচ্ছে আর আমি কিনা চুলা বন্ধ করে দিলাম। " আমি হাসলাম এবং পাচ মিনিটের একটা লেকচার দিলাম। "এখন দুই বার্ণার চুলার জন্য দিতে হয় ৪৫০ টাকা।

যত খুশি গ্যাস ব্যবহার করো আর নাই করো, মাত্র ৪৫০ টাকা। আর সিলিন্ডার কিনে ব্যবহার করতে যাও, প্রতি সিলিন্ডারে খরচ পড়বে ১০০০ টাকা। এই সময়ে মাত্র ৪৫০ টাকা খরচ করে যে গ্যাস পাচ্ছো, সেই একই গ্যাসের জন্য তখন খরচ করতে হবে ৩০০০ টাকা। সেই দিন আর বেশী দূরে নয়, হয়তো তোমার ছেলেপুলেই পাবেনা, গ্যাসের জন্য মারামারি করবে। এই আমরাই শেষ বয়সে সিলিন্ডার কেনার জন্য এ বাজার থেকে সে বাজার দৌড়াদৌড়ি যে করবো না,সে নিশ্চয়তা কে দেবে?" চোখের সামনে ভাসে বাস্তব উদাহরন।

আমার মা একই কাজ করেছেন তার রান্না বান্নার সময়, একটি করে ম্যাচের কাঠি বাচিয়েছেন। রিটায়ার্ড বাবার সাথে এখন যে জায়গায় থাকছেন সেখানে গ্যাস নাই, সিলিন্ডার এবং কাঠের চুলা ব্যবহার করছেন। আগে যেখানে সবার আগে চুলা জ্বালাতেন, তারপর বাকী কাজ করতেন, এখন সেখানে সব সাজিয়ে তারপর চুলা জ্বালান। ভাত রান্না পুরো শেষ হবার আগেই চুলা নিভিয়ে দেন, বাকীটা ভাপেই হয়ে যাবে! গ্যাসের সমস্যা যদিও ততটা প্রকট হয়ে দেখা দেয়নি এখনো, কিন্তু বিদ্যুত এবং পানির সমস্যা বহুদিনের। আমাদের উতপাদন কম, সে কথা সত্যি কিন্তু অপচয়ের পরিমানটা কত? হিসাব করলে দেখা যাবে হয়তো আবাসিক এলাকা বিশেষ করে ছাত্রদের হলগুলোতে যে পরিমান অপচয় হয় তা দিয়ে ছোট খাটো একটা গ্রামের ২৪ ঘন্টার চাহিদা পূরন হয়ে যাবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলগুলোতে দেখেছি - প্রত্যেক ফ্লোরে অন্ততঃ একটা বাথরুম/টয়লেটে প্রতিদিন কমপক্ষে একটি করে কল নষ্ট থাকে যেখান দিয়ে সারাদিন পানি পড়ে যায়। আর শেভ করা কিংবা গোসল-হাতমুখ ধোয়ার সময় তো ভিন্ন কথা। বিদ্যুতের ব্যবহার তো ভয়াবহ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়েরই এক শিক্ষক বলেছিলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হল বাংলাদেশের আমেরিকা কারন এখানে কখনো কারেন্ট যায় না - কথাটা বোধহয় অনেকাংশে সত্যি (এফ রহমান হল বাদে, বেচারাদের লাইন নীলক্ষেতের সাথে) কিন্তু যেটা হয়তো সত্যি নয় সেটা হল আমরা যতটা ব্যবহার করি ততটাই অপচয় করতে চেষ্টা করি!!! javascript:void(0); শেষ করি একটা গল্প দিয়ে- আমার দাদাজান ব্রিটিশ, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশ - তিন আমলেই সরকারী চাকরি করেছেন। তার কাছ থেকে শুনেছি - ব্রিটিশ এবং পাকিস্তান আমলে নাকি শীতকালের তিন-চার মাস অফিসে কোন ফ্যান থাকতো না, সময় হলেই সব খুলে নিয়ে স্টোরে জমা রাখা হতো।

আবার গরমের শুরুতে ফ্যান লাগিয়ে দেয়া হতো। খুব এক্সট্রিম মনে হলেও মাঝে মাঝে মনে হয় এধরনের প্রাকটিস এখনও থাকলে হতো!

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.