আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কেরালায় ভোট-১



উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ নিয়েছেন বামপন্থীরা অজয় দাশগুপ্ত তিরুবনন্তপুরম, ১০ই এপ্রিল- পশ্চিমবঙ্গে ভোটের হাওয়া এখনো সেভাবে গরম না হলেও কেরালায় যে তা চরমে উঠেছে তা তিরুবনন্তপুরমে নেমেই টের পাওয়া গেলো। রাস্তার সর্বত্র পোস্টার, ব্যানার, ফেস্টুনের ছড়াছড়ি, আমাদের রাজ্যের মতো দেওয়াল লেখাও ব্যাপক হারে। কোথাও পথসভার মাইক বাঁধা রয়েছে, ছোটখাটো মঞ্চও চোখে পড়লো। অবশ্য হবে নাই বা কেন, কেরালার ২০টি লোকসভা আসনেই ভোটগ্রহণ হবে প্রথম দফায়, ১৬ই এপ্রিল। ইতোমধ্যেই এখানে ভোটের প্রচার সেরে গেছেন সোনিয়া গান্ধী।

শুক্রবারই চারদিনের সফর সেরে ফিরে যাচ্ছেন প্রকাশ কারাত। শেষ বেলায় আসার কথা প্রধানমন্ত্রীরও। সি পি আই (এম) রাজ্য দপ্তর এ কে জি সেন্টারে গিয়েও দেখলাম অফিস ফাঁকা। মুখ্যমন্ত্রী ভি এস অচ্যুতানন্দন এদিন প্রচারে ছিলেন কেরালার উত্তরতম প্রান্তে, কাসারগড় জেলায়। কোঝিকোড়ে এবং ইদ্দুকি জেলায় প্রচার সেরে একেবারে শেষদিনে ফিরবেন রাজধানীতে।

পার্টির রাজ্য সম্পাদক পিনারাই বিজয়নও ছিলেন কোট্টায়ামে। সব মিলিয়ে নির্বাচনী প্রচারে এখন সরগরম কেরালা। কিন্তু প্রচারে কী ইস্যু হচ্ছে? এখানেও অদ্ভুত মিল পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে। পশ্চিমবঙ্গের মতোই এখানেও সমস্ত বিরোধী রাজনৈতিক দলের আক্রমণের প্রধান লক্ষ্যবস্তু কেরালার বাম ও গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এল ডি এফ), আরো সুনির্দিষ্টভাবে বললে সি পি আই (এম)। লোকসভা নির্বাচন হলেও জাতীয় স্তরের বিষয় না এনে তোলা হচ্ছে রাজ্যের নানারকম ইস্যু, যারমধ্যে কুৎসার ভাগ অনেকটাই।

সি পি আই (এম) নেতৃত্বের মধ্যে ‘মতপার্থক্য‘, এল ডি এফ-র মধ্যে আসন রফায় কিছুটা টানাপড়েন ইত্যাদি প্রসঙ্গ বিরোধীরা নিয়ে আসছে প্রচারে। কিন্তু অটোচালক সথীশকে ভোটের খবর জিজ্ঞেস করতেই সে এসব বিষয় উড়িয়ে দিয়ে বললো, ওসব ঝগড়াঝাঁটি তো গত বিধানসভা নির্বাচনের সময় অনেক বেশি ছিল। তাতে কী হয়েছে। মানুষের জন্য কাজ দেখেই ভোট হবে। আর এখানেই এগিয়ে আছে এল ডি এফ।

রাজ্যের উন্নয়ন ও জনমুখী কাজের প্রশ্নে আগের ইউ ডি এফ সরকারের থেকে গত আড়াই বছরে যে কয়েকগুণ এগিয়ে গেছে বর্তমান এল ডি এফ সরকার, তা বলছেন এখানকার মানুষই। সবচেয়ে বড়ো কথা হলো, এই সময়ে কেরালায় ঋণের জ্বালায় কৃষক আত্মহত্যা শুন্যে ঠেকেছে। অথচ ইউ ডি এফ-এর পাঁচ বছরে দেড় হাজারের বেশি কৃষককে ঋণের দায়ে আত্মঘাতী হতে হয়েছিল। সরকারে এসেই এজন্য একগুচ্ছ কর্মসূচী নিয়েছিল অচ্যুতানন্দন সরকার, আজ তার ফল ফলছে। কৃষকদের কাছ থেকে ধানের সংগ্রহ মূল্য ৭ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১টাকা করা, ধানচাষী ও মৎস্যচাষীদের বিনাসুদে ঋণ দেওয়া, বি পি এল এবং এ পি এল উভয় পরিবারের জন্যই রেশনে কমদামে চাল দেওয়া, ধান উৎপাদন ৩০ শতাংশ বাড়ানো ইত্যাদি পদক্ষেপ নেওয়া হয়।

অর্থনৈতিক মন্দার প্রেক্ষিতে আক্রান্ত আর্থিকভাবে দুর্বল অংশের মানুষদের জন্য এই সরকারের বিকল্প জনমুখী প্যাকেজও সকলের নজর কেড়েছে। তাই ভি এস অচ্যুতানন্দন প্রচারে উন্নয়নের প্রশ্নে খোলাখুলি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন বিরোধীদের। তাঁর বক্তব্য, পশ্চিমবঙ্গ, কেরালা ও ত্রিপুরায় বামপন্থীদের দ্বারা পরিচালিত সরকারগুলির মতো জনমুখী কর্মসূচী দেশের আর কোন সরকার নিয়েছে, তা দেখাক বিরোধীরা। এই চ্যালেঞ্জের জবাব আজো পর্যন্ত কেরালার মানুষ পাননি বিরোধীদের কাছ থেকে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।