আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

‘রাজিব ভাই নির্দোষ ছিলেন’



গত ৩১ মার্চ ঢাকা মেডিক্যাল কলেজের ঘটে যাওয়া ন্যক্কারজনক ঘটনার পর সবগুলো পত্রপত্রিকায় একযোগে এসেছে একজন ছাত্রনেতার কুকীর্তির ইতিহাস। মাদক ব্যবসা, নারী ব্যবসা, ছিনতাইসহ এমন কোনো খারাপ বিশেষণ নেই, যা এই ছাত্রনেতার নামে বলা হয়নি। মেডিক্যাল কলেজের একজন ছাত্র হয়েও মানুষ এতটা খারাপ হতে পারে, তা হয়তো জাতি ধারণা করতে পারেনি। ছাত্রনেতা নামক এই কলঙ্কের ওপর মানুষ যখন ধিক্কার জানাতে ব্যস্ত, তখন আমার মতো একজন মানুষ যদি বলে, ‘রাজিব ভাই নির্দোষ ছিলেন। তিনি এমন ছিলেন না।

’ তাহলে তা সবার চিন্তার উদ্রেক করবে বৈকি। হ্যাঁ, আমি বুঝেশুনেই বলছি­ আসলে রাজিব ভাইয়ের তেমন দোষ ছিল না। তবে সেই রাজিবের কথা বলছি না যে রাজিব ঢামেক ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ছিলেন। আমি তার কথা বলছি যিনি স্কুলজীবনে ছিলেন দারুণ মেধার অধিকারী। যিনি ২০০০ সালে মাধ্যমিক পরীক্ষায় রাজশাহী বোর্ডের একজন স্ট্যান্ড করা ছাত্র ছিলেন।

যিনি ২০০২ সালে উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায়ও একই বোর্ডে স্ট্যান্ড করেছিলেন। ২০০২ সালের রাজিব কোন মাদক ব্যবসার সাথে জড়িত ছিলেন না। ছিলেন না দখলের রাজনীতিতে। কেন তবু তাকে দোষী বলা হচ্ছে? আসলে রাজিবের ভুল ছিল একটাই­ সে রাজনীতি নামক একটি ধান ভাঙার মেশিনে প্রবেশ করেছিল। এই মেশিনে একপাশ দিয়ে ধান ঢুকানো হয়, অন্য পাশ দিয়ে চাল বের হয়ে আসে।

আমাদের দেশের ছাত্ররাজনীতি নামক মেশিনেও এখন একপাশ দিয়ে ঢুকছে বোর্ডস্ট্যান্ড করা মেধাবী তরুণরা, অন্যপাশ দিয়ে বের হচ্ছে টেন্ডারবাজ, দখলবাজ, মাদক ব্যবসায়ীরা। হয়তো অনেকে চিৎকার করে বলে উঠবে, ‘নিজে ঠিক থাকলেই তো দুনিয়া ঠিক, এটা রাজিবেরই দোষ। সে কেন খারাপ রাজনীতিতে গা ভাসিয়ে দিলো?’ উত্তরে এতটুকু বলব, আমাদের এমন একটি বড় কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয় দেখান যেখানে ছাত্ররাজনীতির নামে টেন্ডারবাজি, দখলবাজি হয় না। কে পরিবর্তন করবে এ দু:খজনক অবস্খার? যারা বড় বড় পদ নিয়ে বসে আছেন, যারা মাঝে মধ্যে বড় বড় কথা বলছেন, তারা নিজেরাই তো এই রোগে আক্রান্ত। প্রতিকার চাইব কার কাছে? জানি, প্রতিকার পাবো না।

এরপরও আপনাদের বিবেকের দরজায় দু’টি আকুল আবেদন­ ১. রাজিবের নামের সাথে কয়েকটি খারাপ খারাপ বিশেষণ ব্যবহার করে এ হত্যাকাণ্ডকে বৈধতা এবং খুনিদের প্রশ্রয় দেবেন না। আপনার কোনো আপনজনকে যে আগামীকাল সকালে খুন হতে হবে না, তার নিশ্চয়তা দেবে কে? ২. শুধু রাজিব হত্যার বিচার করে আর ছাত্ররাজনীতি কয়েক মাসের জন্য স্খগিত রেখেই সমাধান খোঁজার চেষ্টা করবেন না। আমরা এর স্খায়ী সমাধান চাই। ছাত্ররাজনীতির গুণগত পরিবর্তন আসুক যাতে আমরা এই রাজনীতি নিয়ে গর্ব করতে পারি, যেমন গর্ব করি স্বাধীনতা সংগ্রামে কিংবা ভাষা আন্দোলনে ছাত্রদের অবদান নিয়ে। অথবা এই বিষফোঁড়াটি আমরা অশ্রুসজল চোখে কেটে ফেলে দিতে চাই।

এরপরও স্বপ্ন দেখি এমন ছাত্ররাজনীতির যা হবে মেধাবী ও দেশপ্রেমিক ছাত্রছাত্রীদের প্রধান আশ্রয়স্খল। Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.