আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আহীর ভৈরব: নজরুলের একটি গানে রাগটির প্রয়োগ

বাংলার মাটি বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল, পুন্য হউক, পুন্য হউক, পুন্য হউক, হে ভগবান। বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ, পুর্ন হউক, পূর্ন হউক, পূর্ন হ্‌উক, হে ভগবান। রবীন্দ্রনাথ
নজরুলকে শুধু যদি ভারতীয় রাগসঙ্গীতের প্রেক্ষাপটে বিচার করি-তা হলেও বলা যায় কুড়ি শতকের তাঁর মতো উচ্চাঙ্গসঙ্গীতবেত্তা খুব কমই জন্মেছে। একেকটি রাগকে কী নিপুন কৌশলে আত্বস্থ করে রাগগুলিকে তিনি বাংলা গানে প্রয়োগ করে চিরকালীন মাহাত্ব্য দিয়েছেন। যেমন-বাগেশ্রী বলতে আমরা বুঝি-‘হারানো হিয়ার নিকুঞ্জ পথে ...।

’ ভৈরবী বলতে-‘প্রিয়, এমনও রাত যেন যায় না বৃথাই...’ উত্তর ভারতীয় সঙ্গীতে রাগ পরিবেশনের ক্ষেত্রে বাণীর ভূমিকা গৌন-সুরই প্রধান। আমাদের সৌভাগ্য এই -আমরা শ্রুতিমধুর রাগের সঙ্গে অপূর্ব নজরুলীয় বাণী লাভ করেছি। নজরুল এখানেও অনন্য। আহীর ভৈরব রাগটি সারা উপমহাদেশজুড়েই বেশ জনপ্রিয়। রাগটি রাত্রির চতুর্থ প্রহর বা দিনের সূচনালগ্নের রাগ বা ভোরবেলার রাগ।

ভারতীয়রা কল্পনাপ্রবণ। সে কল্পনার ছোঁওয়া রাগের নামের ওপরও পড়েছে। যেমন: আহীর অর্থ -গোয়ালা। ভোরে গোয়ালা গ্রামে গ্রামে দুধ নিয়ে যায়। আহীর ভৈরবে সেই ভোর ভোর সময়টাকেই কল্পনা করা হয়েছে।

রাগটি ভৈরব ঠাটের অর্ন্তগত। সা ঋে গা মা পা দা ণি র্সা র্সা ণি ধা পা মা গা ঋে সা। অত্যন্ত গম্ভীর মেজাজ আহীর ভৈরবের। নজরুল এই গম্ভীর মেজাজই প্রয়োগ করেছেন তাঁর একটি বিখ্যাত গানে। অরুণকান্তি কে গো যোগী ভিখারি নীরবে হেসে দাঁড়াইলে এসে প্রখর তেজ তব নেহারিতে নারি।

সত্যিই এই গানটির বাণীর অর্ন্তনিহিত শক্তি অসাধারন। যেমন- নবমেঘ চন্দনে ঢাকি অঙ্গজ্যোতি প্রিয় হয়ে দেখা দাও ত্রিভূনপতি। অম্বরে হেরি আজ এ কী জ্যোতিপুঞ্জ। হে গিরিজাপতি -কোথা গিরিধারী। যদ্দুর জানি অবাঙালিদের মধ্যে তিনজন নজরুলের গান গেয়েছেন।

একজন হলেন -মো: রফি; অন্যরা- আশা ভোঁসলে ও অনুপ জালোটা। অরুণ কান্তি কে গো যোগী ভিখারি -এই গানটিও গেয়েছেন একজন অবাঙালি। তাঁর নাম এস আর ভীরা রাঘবন। ইনি দক্ষিণ ভারতের একজন খ্যাতনামা কন্ঠশিল্পী। বেশ কিছুদিন আগে ঢাকায় এসে গেয়েছিলেন।

তখন আহীর ভৈরব রাগে নজরুলের অরুণকান্তি গানটি গেয়েছিলেন। এস আর ভীরা রাঘবনের কন্ঠে আহীর ভৈরব যথার্থ ফুটেছে। শুধু তাই নয়-তাঁর বাংলা উচ্চারণ বাঙালিকে-সন্দেহ নেই- চমৎকৃত করবে। আমার বাজানো গিটারে আহীর ভৈরব। কয়েক সেকেন্ড মাত্র।


 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।