আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দেবদূতদের জন্য আহ্বান ও ছোটদের সামহয়্যার ইন...

Never argue with idiots. They bring you down to their level and then beat you with experience

মনে পড়ে শৈশবের কথা। খুব ছোটবেলায় মায়ের কোলের ঘুমপাড়ানী গান, একটু বড় হতেই রূপকথার গল্প,ভুত-পেত্নী, দৈত্য-দানো ! ছড়া মুখস্থ করে আত্মীয়-প্রতিবেশীর কাছে বাহবা কুড়ানো। স্কুলে ভর্তি হবার পর টিফিনের পয়সা বাঁচিয়ে কেনা বিভিন্ন দৈনিক পত্রিকার সাপ্তাহিক ছোটদের পাতা, কিশোর পত্রিকা বইয়ের ভেতর লুকিয়ে পড়া...। আমাদের তুলনায় আজ-কালকার পিচ্চিগুলো সাধারণত বেশ চালাক-চতুর। তাদের বুদ্ধিমত্তা দেখলে প্রায়ই টাসকি লেগে যায়, আমরা কি ছোটবেলায় এরকম ভাবতে বা ঘটাতে পারতাম ! যেমন ধরুন আমাদের যে বয়সে টিভি নামক বস্তুটাই বিস্ময়কর ছিল,সেই বয়সের অনেক আগেই তারা পছন্দের চ্যানেল দেখার জন্য রাগ করে বসে থাকে।

খেলার মাঠবিহীন স্কুল, কার্টুন, টিভি, গেমস, কম্পিউটার ইত্যাদি নিয়েই বেড়ে উঠছে আজকালকার শিশুরা। আমরা যে বয়সে লোকছড়া আউড়াতাম সেই বয়সে ওরা পড়ে নার্সারী রাইম ! আমাদের রুপকথার গল্প শোনার সময়ে ওদের ম্যাথ টিচার-ইংলিশ টিচারের ধস্তাধ্বস্তি । সৃষ্টিশীলতা থাকলেও তা বিকাশের জন্য চর্চা নেই। রুপকথার গল্প- ছড়া পড়ার সময় ওদের কোথায়? এসব নিয়ে ব্লগার ইশতিয়াক আহমেদ একটি পোষ্ট দিয়েছিলেন “বরাবর, প্রিয় ব্লগার এবং সা.ইন কর্তৃপক্ষ :আসেন না ব্লগের একটা দিন খরচ করি আমাদের দেবদূতদের জন্য ...” Click This Link পোষ্টটি আসার পরই ব্লগাররা শিশুদের জন্য কিছু করার বিষয়টিকে বেশ ভালোভাবেই গ্রহন করেন এবং পোষ্টটি স্টিকি করা ও এ ব্যাপারে কার্যকরী পদক্ষেপের জন্য কর্তৃপক্ষকে আহ্বান জানান। ।

শিশুদের জন্য এ ডাকে সামহয়্যারইন কর্তৃপক্ষ সাড়া দেয় এবং পোষ্টটি স্টিকি করে। পোস্টটি স্টিকি হবার পর দেখা গেল শিশুদের প্রতি সামহয়্যারের ব্লগারদের ভালোবাসা মুগ্ধ করার মতো। দুদিন স্টিকি থাকা অবস্থায় পোস্টটিতে 'শিশুদের জন্য একটা কিছু হোক' এমন প্রত্যাশার প্রতি দেখা গেছে স্বতস্ফুর্ত সাড়া, সবাই একে একে স্ক্রীনের ওপার থেকে মিশে গেছেন দেবদুতদের জন্য ভালোবাসার মিছিলে। ব্লগারদের প্রত্যাশার সাথে মিল রেখে কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকেও সাড়া মেলে এবং এরই ধারাবাহিকতায় সামহয়্যারইন প্রতিনিধি জানা বিষয়টি নিয়ে ইশতিয়াক ভাইসহ আমাদের কয়েকজন ব্লগারের সাথে কথা বলেন ও সামহয়্যারইন কার্যালয়ে আমন্ত্রণ জানান। নির্ধারিত দিনে ইশতিয়াক আহমেদ, মনির হাসান, শাকিল ফারুক ও আমি উপস্থিত হই এবং কফি খেতে খেতে বিষয়টি নিয়ে কথা হয় আরিল ও জানা-র সাথে।

দেবদুতদের জন্য ব্লগারদের ভালোবাসায় মুগ্ধ আমরা আবারো আবিভূত হই দেবদুতদের জন্য সামহয়্যার ইন এর কার্যকরী কিছু করার আগ্রহে। জানা আপু আমাদের জানান শিশুদের জন্য ছোটদের সামহোয়্যার ইন Click This Link নামে প্রাথমিকভাবে একটি গ্রুপ খোলা হবে। শিশুতোষ সকল লেখা একটি বিশেষ আইকনসহ ব্লগের প্রথমপাতায় প্রকাশিত হবে এবং একইসাথে ছোটদের সামহয়্যারইনেও Click This Link প্রকাশ পাবে লেখাটি। এছাড়া শুধু গ্রুপ ব্লগই নয় শিশুদের জন্য আরও বড় কিছু করার ইচ্ছা সামহয়্যারইন কর্তৃপক্ষের আছে। প্রিয় ব্লগার খুবই আনন্দের সাথে জানাচ্ছি, অবশেষে আমাদের দেবদূতদের জন্য ছোটদের সামহয়্যার ইন Click This Link নামে একটি গ্রুপ খোলা হয়েছে।

প্রাথমিকভাবে শিশুতোষ সকল লেখা একটি বিশেষ আইকনসহ ব্লগের প্রথমপাতায় প্রকাশিত হবে একইসাথে ছোটদের সামহয়্যারইনেও প্রকাশ পাবে লেখাটি। কিন্তু আমরা এখানেই থেমে যেতে চাই না। একটি শিশুর মধ্যে যেমন লুকিয়ে থাকে অমিত সম্ভাবনা তেমনি সকল ব্লগারদের সম্মিলিত অংশগ্রহনের মাধ্যমে আমরাও ছোটদের এই ব্লগটিকে গড়ে তুলতে পারি শিশুদের মানসিকতা বিকাশের একটি উৎকৃষ্ট ও আদর্শ ক্ষেত্র হিসেবে। অবদান রাখতে পারি শিশুদের মেধা মনন ও মানসিকতা বিকাশে। সেই সাথে এটা বলাও অপ্রাসংগিক হবে না যে ইশতিয়াক আহমেদেও লেখাটির সাথে দ্বিমতও পোষণ করেছেন কেউ কেউ।

ব্লগে শিশুদের উপস্থিতি কম বলে কেউ কেউ বলেছেন “ব্লগে শিশুদের জন্য এখনই কিছু করার দরকার নেই। তার আগে ব্যাক্তিগত ও স্থানীয়ভাবে শিশুদের সঠিক বিকাশে সচেতনতা গড়ে তুলতে হবে। এটা সত্যি যে, আমরা স্থানীয় ও ব্যাক্তিগত পর্যায়ে হয়তো অনেকে অনেক কিছুই করতে পারি। কিন্তু সকল কাজেরই সামগ্রিক সাফল্যের জন্য দরকার একটি সার্বজনীন প্লাটফর্ম। প্রশ্ন আসতে পারে সামহোয়্যারের সাথে বাংলাদেশের কতজন শিশু পরিচিত? কিন্তু যে কোন জায়গা থেকেই হোক শুরু তো করতে হবে।

আর যুগটা যেহেতু ডিজিটাল তাই প্ল্যাটফর্মটা ডিজিটাল সামহয়্যার হলে মন্দ কি? প্রত্যেকটি মানুষের মধ্যেই নাকি একটি শিশুমন লুকিয়ে থাকে। কখনো সেটি প্রকাশ পায়, কখনো কঠিন বাস্তবতার বেড়াজালে শিশুটি থেকে যায় লোকচক্ষুর অন্তরালে। আবার বৃদ্ধ বয়সে মানুষ নাকি পুনরায় শিশু হয়। আসলে আমাদের সবার মধ্যেই একটি শিশুমন লুকিয়ে আছে। আর তাইতো প্রত্যেকের পরিবারের আনন্দের সবচাইতে বড় উপলক্ষ্যটি থাকে শিশু সন্তানটি।

ছোটদের সামহয়্যারইনে লিখতে পারবেন নবীন-প্রবীন সবাই। গল্প-ছড়া-ভ্রমণকথা ছাড়াও নিত্যনতুন বিষয়ভিত্তিক ফিচার ও আইডিয়াতে সাজিয়ে তুলুন ছোটদের সামহয়্যারইন এর প্রতিটি পাতা। লিখতে পারেন আপনার শৈশবের কোন সোনালী স্মৃতি আথবা নবীন প্রজন্মকে জানাতে পারেন কোন শিক্ষনীয় ঘটনা। আপনার কষ্টার্জিত জ্ঞান-প্রজ্ঞা ছড়িয়ে দিন আগামী প্রজন্মর মাঝে। এতে আর কিছু না হোক আপনার কষ্টার্জিত অভিজ্ঞতা রেখে যাবেন ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আর কিছুক্ষণের জন্য হলেও অন্তত শৈশবে ফিরে যাওয়া যাবে ।

সামহয়্যারইন এর প্রিয় ব্লগার বন্ধুরা, আমরা সংগঠিত হয়ে অনেক ভালো কাজ করতে পারি। বদলে দিতে পারে সময়কে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে গণস্বাক্ষর অভিযানসহ বিভিন্ন কর্মকান্ডে আমরা প্রমান করেছি তা। আসুন আমরা আমাদের আগামী প্রজন্ম ,আমাদের দেবদূতদের নিয়ে ভাবি ; তাদের সমস্যা-সাফল্য, আনন্দ-বেদনা নিয়ে, তাদের সুস্থ বিকাশ ও ভবিষ্যত ভাবনা হোক নিত্যদিনের অনুষঙ্গ। আর দেবদূতের যারা নানা সমস্যায় জর্জরিত বা অবহেলিত হয়ে ‘পথকলি’ হিসেবে ছড়িয়ে আছে তাদের প্রতি সবার সহানুভূতি।

তাদের সুযোগ করে দেই তাদের প্রাপ্য পরিবেশে বেড়ে ওঠার, যাতে করে তারা জাতিকে উপহার দিতে পারে একটি সুন্দর বাংলাদেশ। দেবদূতদের ভুবনে স্বাগতম আপনাদের। সবার জন্য রইল শুভকামনা। ছোটদের সামহোয়্যার ইন : Click This Link

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।