আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কিছু হতাশা এবং এক স্মরনীয় সকালের গল্প

.... তবুও আমি স্বপ্ন দেখি ... (স্বপ্ন, বাস্তব এবং ব্লগের সর্বস্বত্ব ব্লগার কতৃক সংরক্ষিত)

আজ সকালে ঘুম থেকে উঠেছি সকাল নয়টায়। তারপর জিমেইল খুলে শুরু করলাম দিনটা। স্মরনীয় এক দিন! বাংলায় একটা প্রবাদ আছে - "দুঃসংবাদ বাতাসের আগে ছোটে"। আজকে বুঝলাম শুধু বাতাস নয়, দুঃসংবাদ ইমেইলের চেয়ে দ্রুতগতির! আর হেয়ালী না করে সরাসরি প্রসঙ্গে চলে যাচ্ছি। কয়েকদিন আগে এই মেইলটা পেয়েছিলাম ইম্পেরিয়ালের স্কলারশীপ শাখা থেকে: Dear Niaz, The nominees for the Single Selection Process have now been selected by the academic departments and we regret to inform you that your application has not been short listed on this occasion. This year's competition was of an extremely high standard and there were over 250 applications. Imperial College is grateful for your interest in PhD scholarships and we are sorry to have to disappoint you on this occasion. Unfortunately, we do not have any further funding opportunities to offer at this stage. However, we wish you every success with securing alternative funding for your studies. With kind regards, The Scholarships Team কি সুন্দর হাসি হাসি মুখ করে মুখের উপর লাথি দেয়া।

যাইহোক, মনে একটা আশা ছিল, আরেকটা - ডিপার্টমেন্টাল ফান্ড - হয়তো হবে। সেই আশার সংবাদ শোনার আগেই কাল রাতে বাসায় ফিরে দেখি কিংস থেকে মেইল: Dear Niaz Morshed Chowdhury, I write with regards to your 2009/10 Graduate School Funding application for postgraduate funding at King’s College London. It is with regret that I inform you that your 2009/10 Graduate Funding application has been unsuccessful. Due to the large number of applications received this year, against the actual number of awards available, the competition for funding was extremely fierce. We hope that you will not be unduly disappointed by this news and that you are able to find alternative means of financing your studies. We wish you success in your future studies. Yours sincerely, Chan কি অসাধারন! তারা আশা করছে যে আমি unduly disappointed হবো না। এতই চমৎকার সংবাদ যে আমি আনন্দে লাফ দেব, তাই না? চ্যানকে জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করেছিল এই আজাইরা কথাগুলো না লিখলে কি হতো না? যাক, বাদ দিলাম, কাজ নাই আর মেইল করে। রাতে ঘুমাতে গেলাম একটু তাড়াতাড়িই। তারপর আসলো আজকের এই সকাল।

জিমেইল খুলে দেখি ইম্পেরিয়াল থেকে প্রফেসার কিন মেইল করেছে। রাত ১২.০৩ মিনিটে এটা তিনি পাঠিয়েছেন। Dear Niaz: My dept has already considered all new applicants for possible studentships. I believe your case was considered last year and thus won't be considered again this year. I am very sorry for your situation but the economic situation is so poor that things are tight everywhere. Given my current financial condition, I won't be able to provide you with any financial support either. I am sorry. I hope you can find ways for moving forward. All the best, - Kin কিছুক্ষন হাসলাম। মনে পড়লো এসএসসির হায়ার ম্যাথের কথা। একটা সম্পাদ্য না পারায় সব গুবলেট পাকিয়ে ফেলেছিলাম।

ঘামাতে ঘামাতে অংক করছি, কিন্তু অংক মেলে না। আমার অবস্থা দেখে এক স্যার এসে খানিকটা হিন্টসও দিয়ে গেলেন। কিন্তু তাতেও মেলে না। এক সময় ঘড়িতে দেখলাম সময় প্রায় শেষ। হঠাৎ করে হেসে ফেললাম।

রিলাক্সড লাগছিল। সেই স্যার এসে আবার আস্তে করে জিজ্ঞেস করেন মিলেছে কি না। আমি হেসে বলি, "আমি ট্রাই করি নাই"। সে অবাক হয়ে বলে, "আমি না হিন্টস দিলাম?" । আমি আরো বিগলিত হাসি দিয়ে বলি, "এখন করতে ইচ্ছে করছে না।

" সে ফ্যাল ফ্যাল করে মুখের দিকে তাকিয়ে ছিল। কিনের রিপ্লাই পড়ে তেমন অনুভুতিই হচ্ছিল। আমি দারুন উৎসাহে তাকে একটা থ্যাংস দিয়ে মেইলও করে ফেললাম। তারপর মনেমনে বললাম, ধুর শালার ইংল্যান্ড। গেলাম না ঐ দেশে! এর থেকে স্কটল্যান্ড অনেক ভালো।

এডিনবরায় স্কলারশীপ হবে, মোটামোটি নিশ্চিত তখনও। ১০.৩৭ মিনিটে এডিনবরা থেকে মেইল আসলো: Hi Niaz, I regret to say that you were unsuccessful in your bid for an ORS. Regards, Liz ওআরএস তখা যে স্কলারশীপটার জন্য এ্যাপ্লাই করেছিলাম সেটার ফলাফল। কি ছিমছাম রিপ্লাই। নামটাও পুরো লেখে নাই আমার। তবে এই রিপ্লাইটা ভালো লেগেছে ।

আজাইরা আলাপ নাই। যা বলার বলে খোদা হাফেজ দিয়ে দিয়েছে। তবে মজাটা বাকি ছিল আরো আট মিনিট পরে, ১০.৪৫-এ। কিংসের প্রফেসার হামিদ মেইল করলে: Dear Mr Chowdhury, I am sorry to inform you that there is no funding available for PhD study. Regards, Prof. Aghvami এই মেইল পাবার পর মনে হলো আচ্ছা, আমি কি স্বপ্ন দেখছি? এরা সবাই এক সাথে মেইল করছে কেনো? সমস্যাটা কোথায়? একেকজন একেক ইউনিভার্সিটিতে অথচ ভিন্নভিন্ন সময়ে এ্যাপ্লাই করা স্কলানশীপের রিপ্লাই প্রায় একই সময়ে দিচ্ছে! বাস্তবতা নাকি স্বপ্ন পরীক্ষা করা দরকার। ফোন দিলাম সায়মাকে।

কষে একটা ঝাড়ি দিল - যথারীতি কোন কারন ছাড়া। বুঝলাম, নাহ স্বপ্ন না। আসলেই বাস্তবে আছি!!! এর পরের গল্প মিউজিকাল ট্র্যাজেডীর মত। ইন্টারনেট থেকে আইয়ুব বাচ্চুর গান "এখন আমি কার কাছে যাবো?" বের করে শুনতে শুরু করলাম। আহ.... বুকের ভেতরটা কেমন যেন লাগছে।

হেডফোনে তখন বাচ্চু সাহেব চিল্লাচ্ছেন: আমার অনেক সূবর্ন ফেরারী অগোছালো জীবনের পথে, দাড়িয়ে থাকবে না কেউ বুকে তুলে নিতে আমাকে! এখন আমি....ও ও ও...কার কাছে যাবো...কার কাছে যাবো....কার কাছে যাবো.. বলে দাও..! ২৫ মার্চ ২০০৯ ডাবলিন, আয়ারল্যান্ড।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।