আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভয়াল সেই কাল রাতে ক্ষণজন্মা মনিষী, দার্শনিক ড গোবিন্দ চন্দ্র দেব যেভাবে শহিদ হলেন

পরাজিত হতে হতে আমি উঠে দাড়িয়েছি এবার ফিরে যাবো না খালি হাতে, স্তব্ধতা আর সৌন্দর্যের পায়ে পায়ে এগিয়ে যাই যে কবি সে কখনো খালি হাতে ফিরে যেতে পারে না ।

ক্ষণজন্মা মনিষী , আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন দার্শনিক ড গোবিন্দ চন্দ্র দেব ( জি সি দেব বলে অধিক পরিচিত ) শহীদ হন ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ ভয়াল সেই কাল রাতে পাক হানাদারদের অপারেশন সার্চ লাইট এর শিকার হয়ে । ওয়ার ক্রাইম ফ্যাকটস ফাইন্ডিং কমিটির আহবায়ক ডা: এম এ হাসানের মতে -পাক ব্রিগে আসলাম আর লে. ক. তাজ সরাসরি জিসি দেব হত্যায় জড়িত ছিলেন । আসুন জেনে নেই ,কিভাবে তিনি শহিদ হলেন - ড. দেব এর পালিতা কন্যা রোকেয়া বেগম আর তার স্বামী তার বাসায় থাকতেন । ২৫শে মার্চ রাতে সারারাত ধরেই তার বাড়ীর উপর গুলি বর্ষিত হয়েছে।

তিনি অস্থিরভাবে পায়চারি করেছেন। মাঝে মাঝে সম্বিত হারিয়ে মেঝেতে পড়ে গেছেন। ভোরের দিকে তিনি তার মেয়েকে বললেন : মা তুমি একটু চা কর। আমি ততক্ষণে ভগবানের একটু নাম করি। তার মেয়ে চা বানিয়ে শেষ করেনি এমন সময় দরজায় করাঘাত , বুটের লাথি ।

দরজা খোলার ফুরসত দেইনি জল্লাদ বাহিনী । জোর করে ধাক্কা দিয়ে দরজা ভেঙ্গে ঘরে ঢুকেছে । ঘরে ঢুকেই "কাঁহা মালাউন কাঁহা" বলে দেবকে খোঁজ করেছে। এগিয়ে এসেছেন পালিতা কন্যা রোকেয়া বেগমের স্বামী । জল্লাদদের মন গলানোর জন্য কলেমা পড়েছেন কিন্তু কাজ হয়নি।

ড দেব নিজেও দু'হাত উপরে তুলে "গুড সেন্স গুড সেন্স" বলে তাদের নিবৃত্ত করতে চেয়েছেন । তিনি চিন্তা করতে পারেন নি তার এই মহান আবেদন সম্পুর্ন অপাত্রে দান । হাত কয়েক ব্যবাধান থেকে স্টেনগান দিয়ে ব্রাশ ফায়ার করেছে প্রখ্যাত দার্শনিক অধ্যাপক ড গোবিন্দ চন্দ্র দেবকে। তিনি ঢলে পড়েছিলেন মৃত্যুর কোলে । নরপশুর দল গুলি করে হত্যা করেছে রোকেয়া বেগমের স্বামীকেও ।

রোকেয়া বেগম আকস্মিক আক্রমন ও হত্যাকান্ডে অচেতন হয়ে পড়ায় বেচে যান। ২৬ শে মার্চ বিকেলে জগ্ননাথ হলের পশ্চিম পাশ (যেখানে তার লাশ ফেলে রাখা হয় ) ঘেষে উত্তর দক্ষিনে গর্ত খুলে মাটি চাপা দেয়া হয় হলের প্রভোষ্ট ড দেবসহ অন্যদের লাশ । সুত্র ঃ (ক) দৈনিক আমাদের সময় , ১৫ ডিসে ২০০৮ খ) গোবিন্দ চন্দ্র দেবের জীবন দর্শন , দর্শন ১৫ বর্ষ ,১ম সংখ্যা ,মাঘ ১৩৭৯ পৃ ৩-৪ (গ) দৈনিক সংবাদ, ১৪ ডিসেম্বর ১৯৯০ , পৃ ৭ (ঘ) বাসন্তিকা , হীরক জয়ন্তী সংখ্যা ,জগ্ননাথ হল , ঢাবি,১৯৮১ ,পৃ২৪৪-২৫৫।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।