আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কি হবে লিখে ?

এখন অন্তর্জালে বাংলা লেখা । দুর্দান্ত!

নারী দিবসে শত শত পোস্ট পড়ে সবাইতো অনেক ক্লান্ত। আমি দিনে ব্লগে আসতে পারিনি। এখন বসে বসে পোস্ট গুলো কিছু পড়লাম। এতোক্ষনে নারী দিবস শেষ হয়ে পুরুষ বর্ষ শুরু হয়ে গেছে।

নাহ, এভাবে বলাটা ঠিক হচ্ছেনা। বাকি সবগুলা দিন নারী-পুরুষের(আমরা এভাবেই না হয় ভাবি)! এই একদিনে বিশেষ কিছু নারী সেমিনারে গিয়ে , টিভি টক শো তে এসে , সভা করে ,প্রদীপ জালিয়ে , বক্তৃতা দিয়ে,গাণ গেয়ে, বড় বড় উক্তি করে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়ে গেলেন "আমি নারী"। বড় গলায় শুনিয়ে দিয়ে গেলেন "আমি কিন্তু নারী"। বুঝিয়ে দিয়ে গেলেন "আমি নারী ই, মানুষ না"। আর যারা মানুষ নারী , তারা গতকাল ঠিকি সকালে উঠে বাচ্চাকে রেডি করে দিয়েছেন।

ঘরের সবার নাস্তার ব্যাবস্থা করেছেন। কেউ কেউ স্মামী সন্তানের সাথে নিজেও তৈরী হয়েছেন। তারপর কারো খানিক অবসর এসেছে , কেউ বেড়িয়ে পড়েছেন সংসারের অর্থনৈতিক কাজে অংশগ্রহনের জন্য চাকরী স্থলে। পেপার এ চোখ বুলাতে গিয়ে নজরে এসেছে আজকে আট ই মার্চ। তাতে রুটিনে একটুও পরিবর্তন আসেনি গার্মেন্টস কর্মী রহিমা, জুলেখা ,শাবানা কিংবা শেফালীর।

এইজন্য অল্প হলেও মনে শান্তি আসেনি রঙ্গিন কাপড় পড়ে আর রঙ মেখে অন্ধকারে দাঁড়িয়ে থাকা চন্দনার। এজন্য ছুটি মেলেনি কাজের বুয়া রেজিয়ার। মাদকাসক্ত স্বামীর প্রতিদিনের হিংস্রতা থেকে আজো বাচেনি ডলি। আজকেও যৌতুকেরঁ টাকার জন্য কটু কথা শুনেছে ছেলের বঊ। ভয়ে আছে সে রাতে স্বামী ঘরে ফিরলে না জানি কোন নতুন নাটক করবে ননদ দেবরেরা ।

কোন এক নির্জনে ,কোনায় এসিডে হয়তো কোন নারী ঝলসে গেছে। কিংবা কোন হায়েনার হিংস্রতার কাছে নিজের সর্বশ্য হারাচ্ছে কোন একজন। ... আরো এমনহাযারো মানুষ নারীর কাহিনী ... চলছে অবিরাম। নারী দিবসে তাদের জন্য স্লোগান আছে ঠিকি। বার্তা পৌছায়না।

রাহেলারা এমন দিবসের নাম ও জানেনা। সিমিরা দিবস থাকলেও ঠিকি মরে যায়। তারপরো "আমি নারী" রা সব সমস্যার জন্য সব দায়ী করে যান অনেক পুরোনো একটি পবিত্র গ্রন্থ কে। আর সেই গ্রন্থ যিনি পেয়েছিলেন সৃষ্টিকর্তা থেকে , তাকে... একসময় কেউ কেউ সৃষ্টিকর্তাকেই। "আমি নারী" রা অধিকার খুজে বেড়ান উত্তরাধিকারে।

অধিকার খুজে বেড়ান লোক দেখানো আভিজাত্যে , অধিকার খুজে বেড়ান আসলে যে কিসে , এই আমি বুঝতে পারিনা। জ্ঞানের অভাব ?হতেও পারে। "আমি নারী" রা কখনোই মুখ খুলবেন না ,যখন বলা হয় ,সৌন্দর্য হলো শক্তি। যখন নারী কে তৈরী হতে হয়, কোন ছেলের চোখ যেন তার দিকে ড্যাব ড্যাব করে তাকায় (ফেয়ার এন্ড লাভলী) যখন তার কাঠামোর সাথে তুলনা হয় পানীয়ের বোতলের। যখন নির্দিষ্ট এঙ্গেলে শরীর বাকিয়ে দাড়াতে পারলে সে সুপারস্টার হয়ে যায়।

আর তার সৌন্দর্যের প্রকাশ্যে বিকিকিনি হয় এসেমেস এর মাধ্যমে। দোকানে কিছু পন্য হাত দিয়ে ধড়তে দ্যায়, কিছু পন্য দ্যায়না। সৌন্দর্য প্রদর্শন আর প্রতিযোগিতার মেয়ে গুলো কি ডিসপ্লের সেই পন্য হয়ে যায়না ?? আর রাস্তার ,বস্তির বা অন্য কোন অসহায় মেয়ে হয়ে যায় তখন ছুয়ে দেখার বস্তু। এভাবে পরদিনের খবরের পাতা ভরে যায় নির্যাতনের খবরে। "আমি নারী" দের অনেকে এসব পন্য প্রদর্শনীর স্পন্সর ,বিচারক , অতিথী ! "আমি নারী"রা দেখেও দেখবেনা কিভাবে নারীত্বের অসহায়ত্বর সুযোগ নিচ্ছে ভোগবাদী সমাজ ।

এই সমাজ ব্যাবস্থাই নারীকে নারী বানিয়ে রেখে চিরকাল বুঝিয়ে রাখবে, তোমরা নারী , তাই তোমরা ঠিক মানুষ নও। তোমরা একধরনের বিনোদনের বস্তু , এটা সরাসরি মুখে না বললেও এই সমাজ, দেশ ,বিশ্ব নারীকে তাই বানিয়েছে। অসহায় নারী কলের পুতুল ই হয়ে থাকে তারপর ৯ ই মার্চ থেকে ৭ ই মার্চ। আর ৮ ই মার্চ ... ... ... ওই দিন ও তাই থাকে। একটুও পাল্টায়না জীবন! তারপরো আমাদের বড় কষ্ট ,আসল সত্যকে মানার।

আর সঠিক পন্থাকে গ্রহনে তারপরো আমাদের ব্যাপক অনীহা। যদি তাতে খ্যাত হয়ে যাই! আন্সমার্ট ,আন সিভিলাইযড যদি বলে লোকে!! হোকনা তা দেড় হাজার বছরের পুরোনো। কিন্তু যিনি দিয়েছেন ,তিনি তো সব জানেন।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।