আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জাম্বো সাইজ ব্লগঃ বঙ্গের গল্প

::::: দেখবো এবার জগতটাকে :::::

দু-হাজার বছর আগে। উজ্জয়নীর রাজপুত্র বিক্রমাদিত্যের অনেক গল্প, অনেক মীথ প্রচলিত আছে উপমহাদেশের লোক গাথায়, গল্পে আর কিংবদন্তিতে। রাজা বিক্রমাদিত্য সম্ভবত ভবঘুরে টাইপ যুবরাজ ছিলেন। সম্রাট অশোক দ্যা গ্রেটের পরেই মৌর্য বংশে তার নাম ডাক অনেক। বিক্রমাদিত্য ঘুরতে ঘুরতে এলেন বাঙ্গালা মুল্লুকে।

যিশু খ্রিষ্টের জন্মাতে তখনো প্রায় এক শতাব্দি বাকি। সে সময় এখনকার বাংলার মানচিত্র অন্যরকম ছিল। বঙ্গ, সমতট, হরিকেল, পুন্ড্র অনেক গুলো রাজ্য। নদী নালায় ভর্তি বঙ্গ ঘন অরন্যে ঘেরা। হাজার হাজার হিংস্র প্রানী আর ভয়ঙ্কর জঙ্গল বঙ্গে স্থল যোগাযোগ অসম্ভব বানিয়েছে।

নদী পথে ব্যাবসা বানিজ্য হয়। বঙ্গের বস্ত্র, নৌ-যান ইত্যাদির খ্যাতি গ্রীক মুল্লুকেও পৌছেছে। বিক্রমাদিত্য শীতলক্ষার পারে সবুজ শ্যামল, শান্ত সুনীবির দেশটাকে ভালোবেসে ফেললেন। গড়ে তোলেন অপুর্ব এক রাজধানী। তার নামানুসারে নাম হলো বিক্রমপুর।

রাজধানী হিসাবে সুবর্নপুর (সোনার গাঁ) জন্মাতে অনেক শতাব্দি বাকী তখনো। আর ঢাকা। সে আরো অনেএএএক ভবিষ্যতের কথা। বিক্রমাদিত্য প্রতিষ্ঠিত শহর বিক্রমপুর, নাম যশ আর খ্যাতিতে প্রাচ্য আর পাশ্চাত্যের যে কোন নগরীর সাথে পাল্লা দিতে পারে। নদী পথের কারনে বানিজ্যে খুবই গুরুত্বপুর্ন স্থান।

ইতিহাস পরিষ্কার বলতে পারে না কিভাবে পাল বংশ বিক্রমপুর অধিকার করলো। যদিও সম্রাট অশোক বুদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন আর পাল বংশের রাজারাও বুদ্ধ ধর্মাবলম্বী ছিলেন। এভাবে অনেক কাল কাটলো। বিক্রমপুরের খুব কাছেই বজ্রযোগীনী গ্রাম। আচার্য শীল রক্ষিতের মত জ্ঞানী ধর্ম-পন্ডিত জন্মেছেন।

প্রায় এক হাজার বছর আগে একই গ্রামে জন্মালেন আরেক প্রবাদ পুরুষ অতীশ দিপঙ্কর শ্রী-জ্ঞ্যান। জ্ঞ্যান গরীমায় প্রাচ্যে তার সমকক্ষ কেউ ছিলেন না সে সময়। পায়ে হেটে হিমালয় পারি দিয়ে (কিভাবে সম্ভব, ভেবে পাই না। তার জন্ম স্থান ভাস্কর্যে চীনারা লিখে রেখেছে he trekked to china) তীব্বতে প্রবেশ করার পর বাংলা থেকে তার নামটা ভুলেই গিয়েছিল সবাই। কিন্তু দূর প্রাচ্যে বৌদ্ধ ধর্মের অহিংস বানী প্রচার শুরু হয় তার হাত ধরে।

বজ্রযোগিনী গ্রামটা এখনো টিকে আছে। তবে একেবারেই গ্রাম। পন্ডিতের ভিটায় চাইনিজ গভর্নমেন্ট মনুমেন্ট গড়েছে। পাশে সম্ভবত মিউজিয়াম হচ্ছে। আমাদের রিক্সাওয়ালা অবশ্য দাবী করলো এটা উদ্ধোধন করতে চায়না থেকে অতীশ দীপঙ্করের ছেলে (চাইনিজ এম্বেসেডর) এসেছিলেন।

আমি যখন বললাম মামা অতীশ দীপঙ্করের ছেলের বয়স হাজার বছর হবার কথা, জানালো তাইলে নাতী। আমি প্রতিবাদ করলাম বৌদ্ধ ভিক্ষুরা বিয়ে করে না। উনি বিজ্ঞের মত মাথা ঝুকিয়ে জানালো তাইলে অতীশ দীপঙ্করের আত্মীয় স্বজন কেউ হবে। অতীশ দীপঙ্করের ভিটার সামনেই বিশাল এক পোল্ট্রি ফার্ম। নাম জিদান মুরগীর খামার।

দীগ্বিজয়ী পন্ডিতের সাথে দিগ্বিজয়ী ফুটবলারের স্মৃতি। পাল ডাইনেস্টির শাষন শেষ হয়েছে এর মাঝে বাংলা থেকে। বৌদ্ধরা শাসন করেছে সুদীর্ঘ কাল। পাল বংশে রাজা ধর্ম-পালের মত প্রতাপশালী নৃপতী ছিলেন। এর পরে সিংহাসনে বসলেন রাজা আদীশুর।

আদিশুর ধার্মিক হিন্দু রাজা ছিলেন। তিনি ব্যাথিত হয়ে দেখলেন সুদীর্ঘ কাল বৌদ্ধ শাষনে থাকায় ধার্মিক হিন্দু ধর্মাবলম্বি বিক্রমপুরে নেই। তিনি হতাশ হয়ে দেখলেন, ধর্মিয় ক্রিয়া কর্ম কিংবা যজ্ঞে একজনও খাঁটি ব্রাহ্মন পাওয়া যায় না। উনি দুত পাঠলেন সকল হিন্দু রাজ্যে। যেই সব রাজ্য দির্ঘদিন অ-হিন্দু শাষনে থাকেনি সেখান থেকে ব্রাহ্মনদের আনা যায় কি না।

পরে কনৌজ রাজ্য থেকে কয়েকজন খাঁটি ব্রাহ্মন আনলেন। এদের বলা হয় কনৌজ ব্রাহ্মন। বাংলার ইতিহাসে এদের ভুমিকা মজার। চালু হলো ব্রাহ্মনদের কুলীন গোত্র। এর মাঝে আবার মুখ্য কুলীন, গৌন কুলীন।

যারা নির্দিধায় খাঁটি তারা মুখ্য। আর অতোটা খাঁটি না তারা গৌন কুলীন। কুলীন রমনীরা অন্য পুরুষদের বিয়ে করতে পারে না। কিন্তু কুলীন পুরুষরা নিম্ন বর্নের মহিলাদেরকেও বিয়ে করতে পারে। যতো খুশি।

সে সময় একটা ফ্যাশন চালু হলো। মেয়েদের বাবারা বিপুল টাকা যৌতুক দিয়ে কুলীন জামাইএর কাছে বিয়ে দিত। এতে নিম্ন বর্নের টাকা ওয়ালা শশুরদের সমাজে স্ট্যাটাস বাড়ে। এই জামাইরা টাকার লোভে টপাটপ বিয়ে করতেন। মেয়েদের সাথে ঘর সংসার করতেন না।

বিয়ে বানিজ্য। যৌতুকলোভীরা সেকালেও ছিল। আদিশুর তার প্রিয়তমা পত্নিকে সন্দেহ করেন জনৈক ব্রাহ্মনের ব্যাপারে। ক্ষোভে দুঃখে রানী নদীতে ঝাপ দেন। কিন্তু অলৌকিক উপায়ে উনি বেঁচে যান।

লোক-কথা বলে দেবী দুর্গা তাকে নিমিষেই জলের তরঙ্গ থেকে উদ্ধার করে ওপারের জঙ্গলে (বর্তমানে ঢাকা নগরী) নিয়ে যায়। মহারানী এসময় গর্ভবতী ছিলেন। এই জঙ্গলে (ঢাকা কিংবা বর্তমানে পাগলা অথবা ফতুল্লার কাছা কাছি) এক অনিন্দ্য সুন্দর পুত্র সন্তানের জন্ম দেন। তার নাম বল্লাল সেন। দেবী দুর্গা তাদের রক্ষা করে।

কিশোর বল্লাল সেন জঙ্গলে হিংস্র জীবজন্তুর মাঝে বড় হতে থাকে। একদিন জঙ্গলে ঢাকা একটি দেবী মুর্তি দেখতে পান তিনি। এখানে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। জঙ্গলে ঢাকা দেবী তাই নাম দেন ঢাকা ইশ্বরী বা ঢাকেশ্বরী। এই মন্দিরকে ঘিরে বসতী গড়ে উঠতে থাকে।

ঢাকেশ্বরী মন্দিরের পাশে গ্রামটার নাম হয় মন্দিরের নামে ঢাকা। অনেক অনেক অনেক মোগলরা আসলে এই ঢাকা বাংলার ইতিহাসে সবচাইতে গুরুত্বপুর্ন শহরে পরিনত হবে। সে গল্প পরে হবে। জঙ্গলে মানুষ হলেও বল্লাল সেনের সাহসীকতা আর রুপের কথা ছড়াতে থাকে (টারজানের গল্পের মত)। রাজা আদিশুর তাকে দেখতে পেয়ে মুগ্ধ হন।

এবং নিজের পুত্র বলে স্বীকৃতি দিয়ে রানী সহ রাজ্যে ফিরিয়ে আনেন। বল্লাল সেন রাজা হবার সাথে সাথে বাংলায় বিখ্যাত সেন ডাইন্যাস্টির শুরু হয়। সেন বংশের সব কীর্তিকলাপের সাথে এলাকাবাসী বল্লাল সেন কে জড়িয়ে রাখে। যেকোন প্রাচীন মন্দির দেখলেই বলে এটা বল্লাল সেনের মন্দির। উদাহরন দেই, একটা প্রাচীন গাছ ছিল।

স্বাধীনতার পরে সেটা কেটে ফেলা হয়। এলাকার মুরুব্বিরাও নাকি শিশুকাল থেকে সেটা এভাবে দেখেছে। লোক মুখে শুনেছি দেবতারা বল্লাল সেনকে অমরত্বের বর দিতে ডেকেছিলেন। কিন্তু বল্লাল সেন আসতে দেরী করায় সেই গাছটাকে (উনি এই গাছের সাথে হাতি বাধতেন) অমর করে দেবতারা ফিরে যান। এরকম গল্প দেখে ঐতিহাসিকেরা ভাবেন হয়তো সেন ডাইন্যাস্টিতে কয়েকজন বল্লাল সেন ছিলেন।

ডাইনেস্টির শুরুর জন এবং শেষ জন দুজনের নাম যে বল্লাল সেন ছিল তা নিশ্চিত। বল্লাল সেন ধার্মিক (প্রচুর মন্দির গড়েন) এবং মাতৃভক্ত ছিলেন। প্রজাদের পানীয় জলের কষ্ট দুর করতে চাইলেন। পরামর্শদাতার নাম রামপাল (রামপাল, পঞ্চবটি এই সব ঐতিহাসিক গ্রামগুলো এখনো টিকে আছে)। রাজা বল্লাল সেন ঘোষনা দিলেন একরাতের মাঝে তার মা যতোটা রাস্তা পায়ে হাটতে পারবেন উনি ততোবড় দীঘি খনন করবেন।

রাজা ভেবেছেন বৃদ্ধা মা কতোটুকু আর হাটতে পারবে। রাতে রাজমাতার হাটা দেখে বল্লাল সেনের চক্ষু চরকগাছ। উনি হন হন করে হাটা শুরু করে বিশাল এলাকা ক্রস করে ফেললেন। ছলনার মাধ্যমে বল্লাল সেন মায়ের পথরোধ করলেন। পরে বিশাল এলাকা খনন করলেন।

কিন্তু মায়ের সাথে ছলনার ফলে দিঘিতে পানি আসে না। বল্লাল সেনের প্রেস্টিজ শেষ প্রজাদের সামনে। মন্ত্রি রামপাল জানালেন দিঘিতে প্রান বিসর্জন দিলে পানি আসবে (দিনাজপুরের রাম সাগরের গল্পটাও অবিকল)। রাম সাগরের রাজা রাম নিজের প্রান বিসর্জন দিয়েছিলেন। বল্লাল সেনও তাই করতে গেলেন।

কিন্তু রামপাল তার বন্ধুকে খুব ভালোবাসতেন। তাই বন্ধুকে ফাঁকি দিয়ে নিজের প্রান বিসর্জন দিলেন। বল্লাল সেনের দিঘী এখনো আছে। কিন্তু এখন আর দিঘি বলে চেনা যায় না। বিশাল একটা নিচু জায়গা।

ধুমায় চাষ বাস হচ্ছে। তবে বর্ষায় নাকি পুরো দিঘিতে পানি থাকে। সেন বংশের শেষ হলো কিভাবে? রাজা বল্লাল সেন (মনে হয় উনি শেষ বল্লাল সেন, আরেকজন একই নামধারী রাজা) প্রচন্ড ধর্মান্ধ ছিলেন। তার রাজ্যে একজন মুসলীম প্রজা ছিলেন। তার কোন সন্তান হয় না।

একদিন এক ফকির তার বাসায় ভিক্ষা চাইতে এসে বলে, বাবা আমাকে ভিক্ষা দাও। আল্লাহ তোমার মনের আশা পুর্ন করবে। সেই গৃহস্থ প্রচন্ড রাগ করে বলে তোমাকে ভিক্ষা দিবো না। তুমি ভন্ড ফকির। আমার কোন পুত্র সন্তান হয় না।

সেই ফকির বললেন। আমি দোয়া করলাম তোমার পুত্র সন্তান হবে। কিন্তু সন্তান হলে তুমি অবশ্যই আল্লাহর নামে একটা গরু কোরবানী দিবে। আসলেই তার এক পুত্র সন্তান হলো। বল্লাল সেনের রাজ্যে গরু খাওয়া বড় অপরাধ।

কাছেই ছিল জঙ্গল। সেই গৃহস্থ লুকিয়ে গরু জবাই দিয়ে হার গোর মাটি চাপা দিল। কিন্তু এক বদমাশ কাক সেই মাংসের টুকরা উড়িয়ে নিয়ে বল্লাল সেনের প্রাসাদে ফেললো। বল্লাল সেন গেলেন ক্ষেপে (লক্ষ্যনীয় মহাস্থান গড়ের লোক কথার সাথে যথেষ্ট সাদৃশ্য)। সেই মুসলমান প্রজাকে ধরা হলো।

বল্লাল সেন আদেশ করলেন। তুমি ছেলে হওয়াতে গরু কুরবানী করেছ। তুমি জাননা হিন্দুদের কাছে গরু প্রচন্ড শ্রদ্ধার জিনিস। এখন গরুর বদলে তোমার সদ্যজাত পুত্রকে হত্যা করা হবে। পুত্রকে বাচাতে সেই গৃহস্থ পালিয়ে গেলেন।

পালাতে পালাতে উনি পবিত্র মক্কা শরীফে গেলেন। মক্কা শরীফে বাবা আদম নামের একজন ধার্মিক পীর সব ঘটনা শুনে অনেক রাগ করলেন। উনি সাড়ে সাতহাজার মুরীদ নিয়ে বিক্রমপুর আসলেন। এখানে উনারা শব্দ করে আজান দিয়ে নামায পড়া শুরু করলেন। উনি এজন্যে একটা মসজিদ নির্মান করেন।

এ অঞ্চলের প্রথম মসজিদ। এর নাম বাবা আদমের মসজিদ। বল্লাল সেন তার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষনা করলেন। বল্লাল সেনের সেনাবাহিনী অনেক বড়। এরপরেও উনি প্রাসাদে বলে রেখেছিলেন যদি আমি মারা যাই তোমরা প্রাসাদের সব মহিলা সুইসাইড করবে।

রানীরা জিজ্ঞেস করলো, কিভাবে আমরা বুঝবো তুমি মারা গেছ? উনি জানালেন তার জামার ভেতরে একটা কবুতর লুকানো থাকবে। মারা গেল সেই কবুতর ছাড়া পেয়ে উড়ে আসবে আর তার পরে সব মহিলারা গন সুইসাইড করবে। যুদ্ধে মুসলমানরা হেরে গেল। শেষে বাবা আদম যুদ্ধ ক্ষেত্রেও নামায পড়ছিলেন। কিন্তু বল্লাল সেনের তীরন্দাজরা তার চুল পরিমান ক্ষতি করতে পারলো না।

বাবা আদম নামায শেষে বল্লাল সেনের মুখো-মুখি লড়াই হলো। বাবা আদম বললেন। আল্লাহর ইচ্ছে আমি তোমার হাতে মারা যাব। চালাও তলোয়ার। বল্লাল সেন তরবারী চালালেন কিন্তু তা উনাকে একটুও আহত করতে পারলো না।

বাবা আদম বললেন। আল্লাহ চান না কাফিরের তলোয়ারে আমার মৃত্যু হোক। তুমি আমার তলোয়ার নাও। বল্লাল সেন এবারে বাবা আদমের তলোয়ার নিয়ে তাকে আঘাত করলেন এবং বাবা আদম শহীদ হন। বাবা আদমের মসজীদের পাশেই তার মাজারে উনার কবর।

মসজিদটা দুর্দান্ত সুন্দর। গেলেই পবিত্র অনুভতি হয়। জায়গাটার নাম সিপাহীপাড়া। এখানেই বাবা আদম বল্লাল সেনের সাথে লড়াই করেন। বাবা আদমকে হত্যার পর গায়ে লেগে থাকা রক্ত ধুতে বল্লাল সেন নদীর পানিতে ঝুকেন।

ঝোকার ফলে চান্স পেয়ে উনার কবুতরটা পালিয়ে যায়। বল্লাল সেন বিপদ বুঝতে পেরে দ্রুত প্রাসাদে ফেরেন। ততোক্ষনে দেরী হয়ে গেছে। কবুতর দেখে রানীরা সবাই বিশাল অগ্নিকুন্ড জ্বালিয়ে তাতে আত্মাহুতি দেন। শোকে দুঃখে কাতর বল্লাল সেন নিজেও আত্মহত্যা করেন।

বল্লাল সেনের মৃত্যুর কারন তার হাতেই নিহত বাবা আদম। লড়াইয়ে পরাজিত হয়েও উনি জয়ী। বল্লাল সেনের মৃত্যুর পরে বৌদ্ধরা আবার সিংহাসনে বসে। কিন্তু বেশী দিনের জন্যে না। মুসলমানরা আসা শুরু করেছে।

খুব দ্রুত ক্ষমতা চলে যায় তাদের হাতে। তারা অবশ্য রাজধানী হিসাবে ট্যাকটিক্যাল কারনে বিক্রমপুর নয় গড়ে তোলে আরেক নগর। গীয়াসউদ্দিন আযম শাহ, ঈসা খা প্রমুখের হাত ধরে পূর্ণতা পায় নতুন রাজধানী। যার নাম সোনার গাঁ। ধিরে ধিরে বিক্রমপুর রাজধানী থেকে হয় শহর, শহর থেকে গ্রাম।

*** ইতিহাস সম্পর্কে কিছু না জেনেই প্রাচীন বাংলার ইতিহাসের গল্প বলাটা উচিত না। তাই এটা ইতিহাসের গল্প না বলে শুধুই গল্প। বাংলার প্রাচীনতম এক রাজধানীর বর্তমান অধিবাসীদের মুখে প্রচলিত কিংবদন্তিগুলো সাহায্য করেছে। এছাড়া দুটো বই খুব মনোযোগ দিয়ে পড়েছি। জেমস টেলরের কোম্পানী আমলের ঢাকা (সিপাহী বিপ্লবেরও আগে ১৮৪০ সালে লিখা) আর ১৯০৬ সালে এফ বি ব্রাডলি বার্ট রচিত Romance of an eastern capital বইএর বঙ্গানুবাদ।

ব্লগার আমি নোমান ভাইএর ব্লগ পড়ে জায়গাটা ঘোরার আগ্রহ জন্মে। তথ্যের জন্যে তাঁকে ফোন দিয়ে সময় অসময়ে যথেষ্ট বিরক্ত করেছি। ফয়সাল ভাই আর রবিন ভাই সম্পুর্ন অচেনা অজানা হয়েও সঙ্গি হয়েছিলেন। ধন্যবাদ। ছবিঃ রাজা হরিশচন্দ্রের দিঘি।

এখানে নাকি প্রায় সোনা রুপার থালা বাসন পাওয়া যায়। পুর্নীমার রাতে শেকল ( বাংলা মীথে একধরনের প্রেতাত্মা টাইপ শালুক যা মানুষকে টেনে গভীর জলে নিয়ে যায়) ভেসে আসে। এলাকাবাসী জানালো রাজা হরিশচন্দ্রের দিঘীর এই পুরাকির্তি সংরক্ষন করুন সাইনবোর্ডটা নিজেই পুরাকীর্তি (ব্রিটিশ শাষনামলের)। তবে সাইনবোর্ডটার বর্তমান অবস্থান খুজে পাওয়া মুশকিল। ব্রজ্রযোগিনী গ্রামে পন্ডিত অতীশ দিপঙ্করের বাস্তু ভিটায় চায়না সরকারের তৈরি এই সিংহ গুলোর দাত অযত্নে অবহেলায় ক্ষয়ে গিয়ে ফোকলা দাঁতের সিংহ।

অতীশ দিপঙ্কর শ্রীজ্ঞ্যানের ভিটা। পন্ডিত অতিশ দিপঙ্করের জন্মস্থান। কালী মন্দির। এই পাখিটার নাম কি কেউ বলতে পারেন? এই পাখিটার নাম কি কেউ বলতে পারেন? এই পাখিটার নাম কি কেউ বলতে পারেন? টঙ্গিবাড়িতে প্রাচীন মন্দির। এখন লোকবাস করে।

একজন জানালো বারো ভুইয়ার জমিদার কেদার রায়ের প্রতিষ্ঠিত। বজ্রযোগীনী গ্রামে বিরাটকায় গুই সাপ। কানী বক। মাছ রাঙ্গা বাবা আদমের মাজারের পাশ দিয়ে অপুর্ব মসজিদটির পথে ফয়সাল ভাই আর রবিন ভাই। বাবা আদমের মসজিদ।

মসজিদের গায়ে শিলালিপী বাবা আদমের ঐতিহাসিক মসজিদের ভিতর। বাবা আদমের মসজিদের বাইরে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।