আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোন তথ্য নয়, নিষ্ফল কিছু আবেগ

সাব্বির ভাইয়ের জন্য আরো দশ লাখ টাকা দরকার। মানবতার দিকে তাকিয়ে আছি।

নতুন করে কিছুই বলার নেই। বুধবার থেকে এই মুহূর্ত পর্যন্ত ব্লগের পাতায়, টিভিতে, খবরের কাগজে চোখ রেখে চলেছি যখনই সম্ভব হয়েছে। প্রথমদিনের শুরুর পোস্টগুলো ছিলো মূলত প্রকৃত ঘটনা অনুধাবনের বা জানানোর ইচ্ছা থেকে।

আপডেট জেনে নিতে আতংকিত সকলে টিউনড থেকেছেন। আস্তে আস্তে আমরা ঘটনার কারণ, ভালো-মন্দ দু'দিকের বিবেচনা ভরা বিশ্লেষনী পোস্ট, মন্তব্যের জোয়ার দেখতে লাগলাম। যখন সশরীরে দেশে নেই, স্বজন-বন্ধুদের সাথে আবেগ, মতামত ভাগ করার সুযোগ পাচ্ছিনা, তখন ব্লগই শেষ ভরসাস্থল। উৎকন্ঠার সাথে আমরা আশা করতে লাগলাম পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে যাক। দেখলাম আমরা বিভক্ত হচ্ছি, প্রথম এবং দ্বিতীয় দিনে।

বিডিআর জোয়ানদের বঞ্চনার প্রতিবাদের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন আসতে থাকলো। কেউ সহিংস কেউবা অহিংস উপায়ে দাবী আদায়ের পথগুলো তুলে ধরলেন। আমরা জানতে থাকলাম আর্মিরা দুর্নীতিবাজ, কিন্তু অনেকেই নিরীহ। তাদের পরিজন অন্যায়গ্রস্ত নয়। আমাদের বাদানুবাদের সমান্তরালে অস্ত্র সমর্পণ, লাশ ভেসে যাওয়া, হাহাকার, অনেক ব্লগারের পরিজনের প্রয়াণ সংবাদ, বিডিআর জোয়ানদের ধরে নিয়ে যাওয়া, অসংখ্য নিখোঁজ সেনা এবং বিডিআর সদস্যের জন্য নিখাদ উৎকন্ঠা - লেখক, পাঠক কিংবা মন্তব্যকারী হিসেবে আমাদের পক্ষ-বিপক্ষ-নিরপেক্ষ করে তুলতে লাগলো।

আমি দেখতে পাচ্ছি আস্তে আস্তে আমাদের আবেগ, উৎকন্ঠার জায়গাগুলো আবর্তিত হচ্ছে কয়েকটি মানুষের বিদায়যাত্রার বীভৎস রূপের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে - অপরাধী না নিরপরাধী সে বিচার নিজের মাথায় তুলে না নিয়ে আমরা একটা ভাষাতেই কথা বলছি - তা হলো, শান্তির ভাষা। যারা স্বজন হারিয়েছেন, তাঁরা অপারেশন ডাল-ভাত বুঝতে চাইবেননা, তাঁরা চাইবেন বিচার। যেসব বিডিআর সদস্য নিকৃষ্টতম নিষ্পেষণের শিকার, তাঁরা সহকর্মী বা সেনা কর্মকর্তাদের লাশ দেখে সাম্প্রতিক ঘটনাকে কতটা সমর্থন জানাচ্ছেন, আমার ভীষণ কৌতূহল হচ্ছে। যে পরিবার-পরিজনের জন্য তাঁরা নিজেদের একরকম মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিয়েছেন বিদ্রোহ করে, সেই মানুষগুলোর কাছে ঠিক কতটা বাহবা পাবেন এমন গণমৃত্যুর হোতা হওয়ার জন্য? ঘটনার উস্কানি এসেছিল প্রয়াত উচ্চতম কর্মকর্তার আগ্নেয়াস্ত্রের কাছ থেকে নাকি জমাকৃত ক্ষোভ উস্কানি ছাড়াই বুলেট হয়ে ঝরতে লাগলো, আমরা এখনো সঠিক জানিনা। ব্লগেই বিভিন্ন রকম তথ্য দেখছি।

প্রথম বুলেটটি যিনি ছোঁড়েন, তিনি কি প্রাণহানি, সংঘাতের সম্ভাব্য আকার সম্পর্কে সামান্যতম ভাবতে চেয়েছিলেন? রক্তবন্যাতে তাঁর রক্তই শুধু বইছেনা, অসংখ্য প্রাণ তাঁর, তাঁদের হাত ধরেই নিঃশেষ হলো। আমি পূর্ণ সহমর্মিতা জানাচ্ছি বঞ্চিতদের প্রতিবাদের প্রতি, অকুন্ঠ ধিক্কার জানাচ্ছি নীতিচ্যুত সেনা কর্মকর্তাদের প্রতি। কিন্তু কিছুতেই মেনে নিতে পারছিনা এ হত্যাযজ্ঞ। দুর্নীতির পাহাড়ে চড়তে গিয়ে শেষ পরিণতি কী হলো? প্রতিবাদের সশস্ত্র ভাষায় শেষ পর্যন্ত কোন মহাগাথা রচিত হলো?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.