আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

উৎকন্ঠায় ডুবে থাকি পুরো, পোকা হয়ে থাকি মিডিয়ার, আমাকে কখনো আর্মীরা ধরে, কখনো বা ধরে বিডিআর...



ছোটবেলা থেকে যে-ই কোনো রূপকথার গল্প শোনাতো। প্রবল বিস্ময়ে শুনতাম। শুনতাম প্রবল উৎকন্ঠায়ও। কি হচ্ছে? কি হবে? টানটান উত্তেজনা। শেষ পর্যন্ত কি সব ঠিক হয়ে যায়?- গল্পের মাঝমাঝি অবস্থায় এটা জানতে 'গল্প বলা জনে'র বিরক্তি উৎপাদনও করেছি প্রচুর।

গল্প বলা জন, গল্প বলা সেই মিডিয়াম্যান চাইলে আমার উৎকন্ঠা লাঘব করতে পারতেন। চাইলে ইতি টেনে দিতে পারতেন আমার ভেতরের খারাপ অবস্থারও ...। অবশেষে তারা সুখে শান্তিতে বাস করিতে লাগিল- শেষ অবধি এসে যখন এই লাইনটি এসে দাঁড়াতো? সেই বয়সে, সেই শৈশবে পৃথিবীতে বোধ হয় এর চেয়ে আনন্দময়, এর চেয়ে প্রশান্তি জাগানিয়া বাক্য আর কিছুই ছিলনা। আমি ভাবতাম, পৃথিবীতে সেই বাক্যর চেয়ে প্রশান্তিময় বাক্য কী আর আছে? ২. আজ অনেকদিন পরের কথা। অবশেষে অবসান হলো বিডিআর বিদ্রোহের- পত্রপত্রিকায়, ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সেই বাক্য দেখে, শুনে সেই প্রশান্তি পেলাম।

ভুল। সেই রকম বললে অনেক কম হবে। বরং তারচে কয়েক কোটি গুন প্রশান্তি নেমে এসেছে ভেতেরে আমার। আমি জানি, এই প্রশান্তি যেমন আমার, একই রকম প্রশান্তি আপনার, এদেশের কোটি মানুষেরও। এবং এর চেয়েও আরো কয়েক কোটি গুন প্রশান্তি এদেশে আত্মা রেখে জীবন জীবিকার তাগিদে দেশের বাইরে থাকা মানুষগুলোর।

৩. আমাদের একটা আজন্ম দোষ আছে। আমরা সামান্য কিছুতে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে মত প্রদান শুরু করে দেই। কারো না কারো উপরে দোষ চাপিয়ে দেই। গত কয়েকদিনের ব্লগিংয়ে যার প্রমান অসংখ্য। একটু বড় করে ভাবিনা।

দেশের আনাচে কানাচে, রাস্তা ঘাটে, হোটেলে অফিসে, আদালতে সর্বত্রই কেউ একে দুষছেন, কেউ দুষছেন ওকে। আবার একেকদিন দোষ দিচ্ছেন একেকজনের ঘাড়ে। এই দোষাদোষীর কোনো কোনো পর্বে আমরা প্রচন্ড নির্মমও হয়ে যাই। সমর্থন দেই, হত্যার মতো বিভৎষতাকেও, মার শালাগো। অনেক ট্যাকা খাইছে।

আবার যখন আর্মীর লাশ পাওয়া যাচ্ছে, তখন আমাদের সুর উল্টো, ক্যামনে মারছে? শালা বিডিআর গো তো ফাঁসিতে ঝুলাইয়া মারন দরকার। আমরা একবারও ভাবিনা, সে আর্মী হোক অথবা বিডিআর? মৃত্যু হলে, আসলে মানুষেরই মৃত্যু হয়। কেউ আর্মী, বিডিআর হয়ে মরেনা। আর একটা মানুষের মৃত্যু মানে তার সঙ্গে জড়িয়ে থাকে অনেক মানুষের ধুকে ধুকে মৃত্যু। যে মৃত্যুতে প্রতিদিন হয়তো মরে মরে যাবে মৃত ব্যাক্তির বেচে থাঁকা স্বজনেরা।

মা, বাবা, ভাই বোন, স্ত্রী, সন্তান... আমাদের একটা দূর্ঘটনা ঘটে গেছে। আসুন আমরা এথেকে শিক্ষা নিই। সংযত হই। আমাদের ভেতরে। বাইরে।

কাজে। কর্মে। ভাষায়। আচারে। আচরনে।

আসুন সংযত হই আমাদের ক্রোধে। সংযত হই আমাদের উচ্চভিলাসেও। আমাদের ভাতৃত্ববোধ সুসংহত হোক। আমাদের ভাতৃত্ববোধ দীর্ঘজীবী হোক।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।