আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জয় জনতার , জয় কবিতার



এই শ্লোগান নিয়ে আজ জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু হয়েছে ঢাকায়। এই জাতির চরম ক্রান্তিকালে এক শক্তিশালী প্লাটফর্ম হিসেবে জন্ম হয়েছিল জাতীয় কবিতা পরিষদ এর । এগিয়ে এসেছিলেন এদেশের সচেতন কবিকূল। কবিতা এগুবেই মানুষের প্রেমের আলো নিয়ে যুগে যুগে , কালে কালে। ঢাকার সুহৃদ ব্লগার বন্ধুরা কবিতা উৎসব ঘুরে এসে এখানে অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরতে পারেন।

আমরা জানতে পারবো কবিতার কথা। কবিতার পথচলার কথা । ========================================== দৈনিক ভোরের কাগজ / ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ - রিপোর্ট জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু : গণতন্ত্রের পক্ষে প্রত্যয় কাগজ প্রতিবেদক : ভাষার মাসে কবি ও কবিতার এক হয়ে মিশে একুশের পদযাত্রাকে ভিন্ন মাত্রা দেয়ার প্রত্যয় নিয়ে গতকাল বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের লাইব্রেরি চত্বরে শুরু হয়েছে তিন দিনব্যাপী জাতীয় কবিতা উৎসব। পাশাপাশি মৌলবাদ, সাম্প্রদায়িকতা এবং অগণতান্ত্রিক শাসনের বিরুদ্ধে এবং গণতন্ত্রের পক্ষে সবসময় কথা বলার প্রত্যয় ব্যক্ত করা হয়েছে এ উৎসবে। ‘জয় জনতার, জয় কবিতার’- এই স্লোগানকে সামনে রেখে শুরু হয়েছে জাতীয় কবিতা উৎসবের ২৩তম আসর।

কবি খালেদা এদিব চৌধুরী ও সমুদ্র গুপ্ত স্মরণে উৎসর্গ করা হয়েছে এবারের উৎসব। উৎসবের উদ্বোধন করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের উপদেষ্টামণ্ডলীর সভাপতি কবি সৈয়দ শামসুল হক। সকালে জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা উত্তোলন করে আনুষ্ঠানিকভাবে উৎসব শুরু করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তথ্য ও প্রযুক্তির মাধ্যমে কবিতাকে ভৌগোলিক সীমানা ছাড়িয়ে সব মানুষের কাছে পৌঁছে দেয়ার আহ্বান জানানো হয়। উৎসবের উদ্বোধন করতে গিয়ে সৈয়দ শামসুল হক বলেন, দীর্ঘ এক দুঃসময়ের পর দেশ এখন সুসময়ের দিকে অগ্রসর হচ্ছে।

এটা সম্ভব হয়েছে মানুষের শুভ চেতনার জন্য। দেশে যে গণতান্ত্রিক ধারার সূচনা হয়েছে তা অব্যাহত থাকলে সংস্কৃতি চর্চার জয় হবে। তিনি বলেন, জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু হয় সেই স্বৈরাচারী শাসনের সময়ে যখন সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডে নানা বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছিল। তখন ছিল সংস্কৃতির অন্ধকারাচ্ছন্ন যুগ। সেই যুগকে মোকাবেলা করে আমাদের এতোদূর আসা।

প্রতিক্রিয়াশীলগোষ্ঠী সবসময়ই সংস্কৃতির গলা টিপে ধরতে চায়। কিন্তু ওরা কখনই সফল হয়নি। সাংস্কৃতিক কর্মীদের এ ক্ষেত্রে সবসময় মাথা উঁচু করে থাকতে হবে। সৈয়দ শামসুল হক আরো বলেন, ’৫২ সাল থেকে কবিরা দেশ ও মাটির কথা বলে আসছেন। তবে সবসময় তারা স্বাধীনভাবে তাদের কথা বলতে পারেননি।

বেশ কয়েকবারই তাদের কণ্ঠরোধ করার চেষ্টা করা হয়েছে; কিন্তু কবিরা তাদের কবিতা ছাড়েননি। এখন দিনবদলের পালা শুরু হয়েছে। কবিরাও দিনবদলের কথা বলবেন, দেশের কথা বলবেন, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে কথা বলবেন। তিনি কবিতাকে সকলের মাঝে ছড়িয়ে দেয়ারও আহ্বান জানান। উৎসবের ঘোষণাপত্র পাঠ করেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহন রায়হান।

এতে বলা হয় - যতোবার এই দেশ, জনতা অবরুদ্ধ হয়েছে, মানুষের বাক ও ব্যক্তিস্বাধীনতা এবং নাগরিক অধিকার ভূলুণ্ঠিত হয়েছে, ততোবারই কবিতা দেশ ও জনগণের অধিকার হয়ে জ্বলে উঠেছে। সামরিক শাসনের বিরুদ্ধে কথা বলতে গিয়ে যাত্রা শুরু করা কবিতা উৎসব সবসময়ই দুঃশাসন, মৌলবাদ, জঙ্গিবাদ ও সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছে। কবিতা উৎসবের যুগ্ম আহ্বায়ক তারিক সুজাত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঘোষিত ডিজিটাল বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার উদ্যোগটি সর্বমহলে প্রশংসিত হচ্ছে। এর মাধ্যমে লেখক ও পাঠকদের জন্য প্রসারিত হয়েছে নতুন দিগন্ত। প্রতিটি জাতীয় পত্রিকা যেভাবে অনলাইন সংস্করণ করছে, তাতে করে ই-বুকসের মাধ্যমে পাঠকদের হাতে ডিজিটাল কনটেন্ট পৌঁছে দেয়ার বিষয়টি সম্ভব বলে মনে হয়।

উৎসবের আহ্বায়ক রবিউল হুসাইন পয়লা ফেব্র“য়ারিকে জাতীয় কবিতা দিবস ঘোষণার দাবি জানিয়েছেন। পাশাপাশি কবিদের জন্য একটি আলাদা ভবন তৈরির দাবি জানান যেখানে একটি মিলনায়তন, পাঠাগার, গবেষণাগার ও জাদুঘরের ব্যবস্থা থাকবে। কবি হাবিবুল্লাহ সিরাজীর সভাপতিত্বে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গোলাম কিবরিয়া পিনু প্রমুখ। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে জাতীয় অধ্যাপক কবির চৌধুরী, রফিক আজাদ, আসাদ চৌধুরী, হাসান ইমাম, ভোরের কাগজ সম্পাদক শ্যামল দত্ত, মোহন রায়হান, রবীন্দ্র গোপ, ড. মুহাম্মদ সামাদ, আনিসুল হক, আসলাম সানী প্রমুখ কবি উপস্থিত ছিলেন। এবারের কবিতা উৎসবে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ভারত, পাকিস্তান, সিঙ্গাপুরসহ ৩০টি দেশের বাংলাভাষী কবিরা কবিতা উৎসবে অংশ নিচ্ছেন।

বিদেশ থেকে আগত এবং সারা দেশ থেকে আগত সব মিলিয়ে চার শতাধিক কবি উৎসবে অংশ নেবেন। ভারতের পশ্চিমবঙ্গসহ সারা দেশ থেকে কয়েকশ কবি ও ছড়াকার অংশ নিচ্ছেন। পশ্চিমবঙ্গের স্বাতী চট্টোপাধ্যায়, অঞ্জলী বন্দ্যোপাধ্যায়, কাজল চক্রবর্তী, রাতুল দেব বর্মণ, নিলচার্য, পিনাকী ঠাকুর, রফিক-উল ইসলাম, ধনঞ্জয় ঘোষাল, চন্দনা খান, সিদ্ধার্থ সিংহ, শিবাশীষ মুখোপাধ্যায় প্রমুখ কবিরা এ উৎসবে অংশ নিতে ঢাকায় এসেছেন। পাশাপাশি এবার চিত্রশিল্পী, সঙ্গীতশিল্পী ও আবৃত্তিশিল্পীও এতে অংশ নিচ্ছেন। ২০ ফেব্র“য়ারি পর্যন্ত প্রতিদিন বিকাল ৩টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত চলবে কবিতা পাঠের এই আসর।

উল্লেখ্য, ১৯৮৭ সালে তৎকালীন স্বৈরশাসনের সময় ‘শৃঙ্খল মুক্তির জন্য কবিতা’ স্লোগান নিয়ে প্রথমবারের মতো জাতীয় কবিতা উৎসব শুরু হয়।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।