আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যজুর্বেদে হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) - অগ্নি ও ঐশ্বরীক রাজা ।

"A little knowledge of science makes man an atheist, but an in-depth study of science makes him a believer in God." Francis Bacon.

১. "হে অগ্নি, দেবতাদের আহ্বানকারী, স্তুতিযোগ, বন্দণীয় ! দেবগণের সাথে সমান প্রদিযুক্ত তুমি এস । যে পূজ্য, শ্রেষঠ্য যাগকর্তা তুমি প্রেরিত হইয়া দেবতাদের আহ্বান কর ও তাহাদের যাগ কর । । (শুক্ল , ২৯ অধ্যায় ২৮ সুক্ত ) বেদে উল্লেখিত 'অগ্নি' বলিতে কোন বস্তগত অগ্নি নয় বরং উহা গুনগত অর্থে ব্যবহৃত হইয়াছে । শ্রী বিজন বিহারী গো-স্বামী মহাশয় শুক্ল হরফ প্রকাশিত যর্জুবেদ ৩ অধ্যায় ১৩ সুক্তের টিকায় লিখিয়াছেন, "যিনি অগ্রে নিয় যায়, তাহাকে অগ্নি বলে, অগ্রে নীয়াতে ইত্যিাগ্নিঃ- যাস্ক ।

" শ্রী পরিতোষ ঠাকুর মহাশয় সামবেদের ভূমিকায় বলিয়াছেন- "তিনি অগ্নিযুক্ত বা গতিযুক্ত (অগ্নি ধাতু গতি অর্থে) হইয়া তাহার বৃদ্ধিকে আগাইয়া নিয়ে যাইতে থাকেন । তাই তিনি হইল 'অগ্নি" । পুনরায় তিনি সামবেদের ১২৭৯ সুক্তের অর্থে অগ্নিগণ বলিতে 'রশ্নিগণ" লিখিয়াছেন । দুঃখের বিষয় পরবর্তী যুগে মানুষ বেদের নিরাকার ব্রক্ষাকে বিকৃত করিয়া বস্তু পূজা আরম্ভ করে, তখনই বেদের ভাবগত ও আধ্যাত্নগত বর্ণনাগুলিকেও বস্তবাদিতা রূপ দিয়া দেবভাষা হইতে সংস্কৃতে অনুবাদ করা হয় । বেদে উল্লেখিত নরাশংস, স্তুতিযোগ্য, বন্দণীয় ঋষি মানব জাতিকে আধ্যাত্নিকতার উচ্চমার্গে অগ্রবর্তী করিয়া দিবেন এবং তিনি রশ্মি ও জোর্তিময় হইবেন , সেহেতু তাহাকে 'অগ্নি' নামি আখ্যায়িত করা হইয়াছে ।

২. অশ্বমাশুগারুহ্য দেবদত্তং জগৎপতিঃ জগৎপতি দেবদত্ত অশ্বে আরোহণ করিবেন । (কক্লি পুরাণ শেষ অধ্যায় ১ম সুক্ত ) কল্কি পুরাণে উক্ত হইয়াছে যে কল্কি অবতারের বাহন হইবে বায়ুর ন্যায় গতিশীল সাদা অশ্ব । ইতিহাসে দৃষ্ট হয় যে, হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) দেবতাদের ঐশী প্রদত্ত অশ্ব বোরাকে আরোহণ করিয়া সপ্তস্বর্গ ভ্রমণ করিয়াছেন । বোরাক অর্থ বিদ্যুৎ অর্থাৎ সেই অশ্ব বিদ্যুতের ন্যায় গতিশীল ছিল । ৩. তৎসবিতবকরিয়াণাং ভগোং দেবস্য ধীমহি ।

ধীয়ো যো নঃ প্রচোদয়াৎ । । (শুক্ল , ৩য় অধ্যায়, ৩৫ সুক্ত ) যর্জুবেদের অনুবাদক শ্রী বিজন বিহারী গোস্বামী মহাশয় এই সুক্তের অনুবাদ সম্পর্কে বলিয়াছেন- "প্রাচ্য ও পাশ্চেত্য বহু পন্ডিত ও মন্ত্রের বিভিন্ন ব্যাখ্যা করিয়াছেন । প্রতি আচার্যই এই মন্ত্রের নানা রূপ ব্যাখ্যা করিয়াছেন । পাশ্চাত্য পন্ডিত Colebrooke এর ব্যাখ্যার উদ্ধিতি করিতেছি- Let us meditate on the adorable sight of the divine ruler savitri, may it guide our intellects. আস আমরা ঐশ্বরীক রাজা সবিত্বের অপূর্ব রাজ্য০শাসন দৃশ্যকে ধ্যান করি, উহা আমাদের বৃদ্ধিকে পরিচালিত করুক ।

এই সাবিতৃ দেবের আরো পরিচয় প্রদান করা হইয়াছেঃ অভি ত্যং দেবং সবিতারমোণ্যেঃ কবিক্রতুর্মচামি সত্যসর্বং রত্নধামন্ডি প্রিয়ং মতিং কবিম । উর্ধ্বা যস্যামতির্মা আদিদ্যুতৎ সবীমনি হিরণ্য-পানিরমিমীত সুক্রতঃ কৃপা স্বঃ প্রজাভ্যস্তা প্রজাস্তাহনু প্রানন্ত প্রজাস্তনু প্রাণিহি । । (২৫ শুক্ল, ৪র্থ অধ্যায় ২৫ মন্ত্র ) অনুবাদ - বিশ্বব্যাপক মেধাবী, সত্যস্বরূপ, বিবিধ রত্নের ধারক, সকলের প্রতির আস্পদ, মননযোগ্য, ক্রান্তদর্শী (সর্বদর্শী) সে প্রসিদ্ধ সবিতৃদেবের অর্চনা করি । যাহার কিরণ নিখিল কর্ম প্রকাশের জন্য উদ্ধগগনে সকল বস্তু প্রকাশ করিয়া ।

হিরণ্যপাণি (স্বর্ণের মত জ্ঞানধন প্রদানে যিনি মুক্ত হস্ত), শোভন ক্রতুসম্পন্ন সে সবিতৃদেব জনগণের কল্পনার অতীতে বর্তমান । হে দেব, সকলের জন্য তোমাকে অর্চনা করি । বিশ্ববাসী সকলে তোমাকে হৃদয়ে ধারণ করুক । বিশ্বব্যাপী সকলকে তুমি সজ্ঞীবিত কর । সবিতৃদেবের বিশেষ বিশেষ পরিচয়ঃ (ক) বিশ্বব্যাপক - বিশ্ববাসী সকলে তাহাকে হৃদয়ে ধারণ করুক এবং তিনি বিশ্বব্যাপী সকলকে সজ্ঞীবিত করিবেন অর্থাৎ তিনি আর্য-দেবগণের ন্যায় কেবলমাত্র আর্যাবর্তের মধ্যে সীমাবদ্ধ এবং কেবলমাত্র আর্যজাতির দেবতা হইবেন না , বরং তিনি সমগ্র বিশ্বের এবং আর্য-অনার্য সকল বিশ্ব মানবের দেবতা হইবেন ।

(খ) বেদ পাঠ ও শ্রবণে ব্রাক্ষণ ছাড়া পৃথিবীর কোন মানুষের অধিকার নাই; এমন কি পৃথিবীর বহুস্হানে ও কালে পাঠ ও শ্রবণ নিষিদ্ধ করা হইয়াছে । কিন্তু সবিতৃদেব বিশ্বমানবের দেশকালপাত্র নির্বিশেষে সকলকে ঐশীজ্ঞান দান করিবেন । আমারা দেখতে পাই যে, (১) হযরত মোহাম্মদ সাহেব রাজা রুপে ছিলেন (২) যিনি বিশ্বে ঐশী রাজত্ব প্রতিষ্ঠা করেন (৩)তিনি বিশ্বনবী তথা সমগ্র বিশ্বের জন্য পয়গম্বর ছিলেন বলিয়া ঘোষণা করিয়াছেন এবং কোরআনেও উহা সুষ্পষ্টরূপে ব্যাক্ত হইয়াছে । (৪) তিনি বিশ্ব মানবের জাতি দেশ কাল পাত্র নির্বিশেষে প্রত্যেককে তাহার ধর্ম ইসলাম পালন করার এবং দেবগ্রন্হ কোরআন পাঠ করার অধিকার দিয়াছেন । অতএব, তাহার মধ্যে মন্ত্রে উল্লেখিত প্রতিটি লক্ষণ বিদ্যমান; যা অন্য কোন ঋষির মধ্যে দৃষ্ট হয় না ।

উৎসঃ----বেদ - পুরাণে আল্লাহ ও হযরত মোহাম্মদ (সাঃ) - ধর্মাচার্য অধ্যাপক ড. বেদপ্রকাশ উপাধ্যায়, ইসলামী সাহিত্য প্রকাশনালয়, ৪৫, বাংলাবাজার, ঢাকা-১১০০. [পরবর্তী পোষ্টঃ যর্জুবেদে মোহাম্মদ (সাঃ)- মুন্ডিত কেশ রুদ্র নেড়ে ]

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.