আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

দূষণমুক্ত, দখলমুক্ত তুরাগ-বালু-শীতলক্ষ্যা-বুড়িগঙ্গা চাই



দূষণমুক্ত, দখলমুক্ত তুরাগ-বালু-শীতলক্ষ্যা-বুড়িগঙ্গা চাই দেশে নতুন সরকার রাষ্ট্র দায়িত্বে এসে উন্নয়নের লক্ষ্যে বিভিন্ন কর্ম পরিকল্পনা প্রণয়ন করছে। অর্থনীতি, জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ বিবেচনায় ঢাকার বুড়িগঙ্গা সহ তুরাগ-বালু-শীতলক্ষ্যা ও অন্যান্য নদ-নদীগুলো বাঁচানোকে এই কর্মপরিকল্পনায় অগ্রাধীকার দেওয়া প্রয়োজন। এই সরকারের মাননীয় অর্থমন্ত্রী, পরিকল্পনা মন্ত্রীসহ বেশ কিছু মন্ত্রী ও সাংসদগণ এই বুড়িগঙ্গা বাঁচাও আন্দোলনে অতীতে নেতৃত্ব দিয়েছেন বা অংশগ্রহণ করেছেন। সরকারের মন্ত্রি ও সাংসদগণ এ আন্দোলনে সরাসরি সম্পৃক্ত থাকায় এই জনদাবী বাস্তবায়নে আন্তরিক হবেন এ বিশ্বাস এবং তাঁদের কাছে আমদের প্রত্যাশাও অনেক বেশি। আজ ৩০ জানুয়ারী সকাল ১১:০০ টায় পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলন (পবা) এর উদ্যোগে বুড়িগঙ্গার সোয়ারীঘাটের পল্টুনে "দূষণমুক্ত, দখলমুক্ত তুরাগ-বালু-শীতলক্ষ্যা-বুড়িগঙ্গা চাই" দাবীতে মানববন্ধন ও গণ জমায়েতে পবা'র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান ও বক্তাগণ এ অভিমত জানান।

গণ জমায়েতে অন্যান্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-পবা'র চেয়ারম্যান আবু নাসের খান, ওয়াটার রিসোর্স প্ল্যানিং এর সাবেক মহাসচিব ইনামূল হক, শুভাঢ্যা খাল রক্ষা কমিটির আহ্বায়ক মন্জুর মোর্শেদ অপু, পবা'র প্রোগ্রাম কো-অর্ডিনেটর কামাল পাশা চৌধুরী, পীচ এর মহাসচিব ইফমা হোসেন, আহসানুল আশু, নগরবাসী সংগঠনের সভাপতি ও সম্পাদক আনসার আলী ও নাজিম উদ্দীন সহ নদীর পাড়ের অসংখ্য জনসাধারণ। বুড়িগঙ্গার বর্তমান যে করুণ দশা তা আজ বর্ননাতীত। পানির রং কুচকুচে কালো এবং অত্যনত্দ দুর্গন্ধময়। লোকজন বিভিন্ন প্রয়োজনে নৌকা করে নদীর এপার ওপার হচ্ছে নাকে রুমাল চেপে। নদীর পাড়ের সাধারণ মানুষের জীবন যাপন দূর্বিসহ এবং এলাকা বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাচ্ছে দিনে দিনে।

এছাড়া সারা ঢাকাবাসীর জন্য এ নদী আজ অভিশাপে রূপান্তরিত হয়েছে। বুড়িগঙ্গা, তুরাগ, বালু, শীতলক্ষ্যা, ধলেম্বরী নদী ও জলাশয় সমূহ দখল, দূষণ ও ভরাটের ফলে দ্রুত নিঃশেষ হয়ে যাচ্ছে। বুড়িগঙ্গার দু'ধারেই বৃহৎ বানিজ্যিক ভবন এবং ড্রেনেজ ও সুয়ারেজ লাইনের সরাসরি সংযোগের ফলে নদীর তলদেশে জমা হচ্ছে স্তরিত আবর্জনা। হাজারীবাগ ট্যনানারীসহ অন্যান্য শিল্পবর্জ্য, নদীর তীরবর্তি স্তুপীকৃত ময়লা আবর্জনা, কাঁচামালের আগড়তের ময়লা, কনস্ট্রাকশন কাজের ময়লা, ওয়াসা এবং সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক পয়ঃবর্জ্য ও অন্যান্য দূষণ নদীতে ফেলা কঠোর ভাবে দমণ করতে হবে। কাল বিলম্ব না করে বুড়িগঙ্গা সহ ঢাকার আশপাশের নদীগুলিকে এখনই ড্রেজিং এর আওতায় আনা জরুরী।

ঢাকা শহরের অপর পাড়ের এলাকাগুলিতে ফসল উৎপাদনের জন্যও এ পানি ব্যবহার করা যাচ্ছে না। অথচ এই নদীর পানিই ঐ এলাকার চাষাবাদের প্রধান অবলম্বন। গৃহস্থালী কাজেও ব্যবহার কার যাচ্ছে না। এ বিষাক্ত পানিতে মাছ থাকতে পারছে না। এই বুড়িগঙ্গা একসময় ঢাকার আশির্বাদ ছিল তা আজ আমাদের কারণেই রূপান্তরিত হয়েছে অভিশাপে।

দীর্ঘদিন পবা এবং পরিবেশবাদিদের আন্দোলনের ফলে বুড়িগঙ্গা রক্ষার জন্য সরকার একটি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন ট্রাস্কফোর্স গঠন করে। তাতে ৩১ টি সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় । কিন্তু সেই ট্রাস্কফোর্সের অধিকাংশই সিদ্ধান্ত এখনও বাস্তবায়ন করা হয়নি। কিছু অবৈধ স্থপনা উচ্ছেদ হলেও অধিকাংশ স্থাপনা রয়ে গেছে এবং উচ্ছেদ স্থানে আবারও স্থাপনা গড়ে উঠেছে। বক্তারা বুড়িগঙ্গা সহ ঢাকার চারপাশের নদীগুরোকে বাঁচানোর জন্য সরকার কর্তৃক গৃহীত ট্রাস্কফোর্সের সুপারিশমালা দ্রুত বাস্তবায়ন করার আহবান জানান।

বক্তারা বুড়িগঙ্গা সহ ঢাকার আশেপাশের নদীগুলোর পানি প্রবাহ ঠিক রাখার জন্য ড্রেজিং এর ব্যবস্থা করতে হবে; শিল্পবর্জ্য বিশেষ করে হাজারীবাগ ট্যানারীসহ অন্যান্য শিল্পবর্জ্য, নদীর তীরবর্তী স্তৃুপীকৃত ময়লা আবর্জনা, কাঁচামালের আড়তের ময়লা, কনস্ট্রাকশন কাজের ময়লা, ওয়াসা এবং সিটি কর্পোরেশন কর্তৃক পয়ঃবর্জ্য সকল নদীতে ফেলা বন্ধ করে নদীর পানি দূষণ রোধে প্রয়োজনিয় ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে; সকল অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করে নদীর জায়গা নদীকে ফিরিয়ে দিতে হবে এবং দখলকারীদের দৃষ্টানত্দমূলক শাসত্দির ব্যবস্থা করা; গতানুগতিক পরিকল্পনা পরিহার করে বিসত্দারিত জরিপ ও তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করে দুরদৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে নৌ-বারিজ্য এবং নদীর পাড়কে কিভাবে সমন্বিত করে নাগরিক বিনোদন উপযোগী করে সাজানো যায় সে ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানান।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।