আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভার্চুয়াল



ভার্চুয়াল মেয়েটি ছেলেটির দিকে তাকিয়ে আছে। ছেলেটির মাথা নিচু। দৃষ্টি তার কোলের উপর। মেয়েটির দিকে সে মাত্র একবার তাকিয়েছিল। মিনিটখানেক ধরে।

তার এই তাকানোতে ছিল অন্য কিছু। এখন সে আর মেয়েটির দিকে তাকাতে পারছে না। মেয়েটি তাকিয়ে আছে। ছেলেটি তার দিকে তাকাবে। তার সাথে কথা বলবে।

এই আশায়। কিন্তু মেয়েটির আশা পূরণ হল না। তাই সে নিজেই নীরবতা ভাঙ্গলো। ‘আমাকে তোমার পছন্দ হয় নি?’ ছেলেটি নীরব। কোন প্রত্তুত্যর নেই।

সে কী ভাবছে? মেয়েটির চেহারা নিয়ে? যে মেয়েটির সাথে ছ’মাসের সম্পর্ক। যাকে আজকের আগে সে কখনও দেখে নি। এই তো সেই মেয়ে! রমনা পার্কের লেকের ধার। অনেক গুলো বেঞ্চ পাতা। তার একটি বেঞ্চে বসা দুটো ছেলে-মেয়ে।

দুজনের মধ্যে আধ হাত দূরত্ব। মেয়েটির চোখে হতাশা। ছেলেটি নির্বাক। আজকের আগে তারা কেউ কাউকে দেখে নি। অথচ সম্পর্ক ছ’মাসের! ফোনে পরিচয়।

ফোনেই যোগাযোগ হত। ফোনেই সবকিছু। কথা বলতো তারা। ঘন্টার পর ঘন্টা। কিভাবে রাত পেরিয়ে যেত- দিন পেরিয়ে যেত বুঝতো না তারা।

একজন আর একজনের খোঁজ করতো। তারপর এই ভাবে কাটতে লাগলো। দেখা করার অন্তিম ইচ্ছা জাগে কিছুদিন হল। তাদের সম্পর্ক গড়িয়েছে অনেক দূর। ফোনেই আজকাল সবকিছু হয়।

তারা তাই করেছিলো। ছেলেটি মেয়েটিকে প্রশ্ন করতো। মেয়েটি উত্তর দিত। এইভাবে সব- যা জানতে হয় মেয়েদের সম্পর্কে। মেয়েটিরও তাই।

তারপর – আর কত? তারা দেখা করতে চাইলো। দুজন দুজনকে আরো কাছে পেতে চাইলো। ছেলেটি ঢাকায় হোটেল ঠিক করে মেয়েটিকে জানালো। মেয়েটিকে বলেছিলো, ‘তুমি চলে এসো। ’ মেয়েটি এল।

সাভার নবীনগর থেকে। ছেলেটির কথা মতো। তারপর এই খানে। এই রমনা পার্কের বেঞ্চটিতে। সেই তারা দুজন।

কেউ কাউকে দেখে নি। আজই প্রথম। তাই ব্যাপারটি এ রকমও হতে পারতো –ছেলেটি আর মেয়েটি দুজন তাকিয়ে আছে দুজনের দিকে। তাদের চোখে বিস্ময়! তারা কল্পনার মানুষটির সাথে মেলাচ্ছে একে অন্যজনকে। কিন্তু সে রকমটি হলো না।

ছেলেটি সুদর্শন। মেয়েটিও কম না। মেয়েটির চেহারায় আছে কমনীয়তা। যে কোন পুরুষকে আকর্ষণ করতে সক্ষম। কিন্তু ছেলেটির কি হল? অবশেষে ছেলেটির নীরবতা ভাঙ্গলো।

তার ঠোঁট নড়ে উঠলো। সে বলল, ‘আমি আসি। ’ তারপর মেয়েটিকে বিস্মিত করে সে উঠে দাঁড়ালো। ছেলেটি চলে গেল। মেয়েটি একা বসে রইলো।

সে ভেবেছিলো ছেলেটি ফিরে আসবে। কিন্তু ছেলেটি আর ফিরে এল না। সন্ধ্যা ঘনিয়ে এলো। পার্কের আলো ঝলমলে বাতিগুলো জ্বলে উঠলো। মেয়েটির ঘোর কাটছে না।

ছেলেটির এই অদ্ভূত আচরণ তাকে হতভম্ব করেছে! ছেলেটিকে বার বার ফোন দিল। ছেলেটি ধরলো না। অগত্যা মেয়েটিকে ফেরার বাসে উঠতে হল। নগরীর ব্যস্ততা পিছনে ফেলে বাস এগুতে লাগলো। আচমকা একটি মেসেজ আসলো মেয়েটির ফোনে।

ছেলেটি পাঠিয়েছে। ‘সরি। আমি তোমাকে খারাপ মেয়ে ভেবেছিলাম। আমি নিজেও ওরকম একটা ছেলে। বাজে মেয়েদের পটানো আমার কাজ।

কিন্তু তোমাকে দেখে আমার এ রকম মনে হয় নি। আমি আসলে সরি!’ মেয়েটি ছেলেটিকে ফোন দিতে চাইলো। ফোন বন্ধ। তারপর আর কোনদিন মেয়েটি ছেলেটির ফোন খোলা পায় নি।


সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.