আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

সনাতন ধর্ম (হিন্দু ) ও ইসলাম এর মধ্যে যোগ সম্পর্ক-৬ (যৌথ মূল্যবোধ)

"A little knowledge of science makes man an atheist, but an in-depth study of science makes him a believer in God." Francis Bacon.

বাস্তব জীবনের জন্য যারা বিধান পেয়েছে তাদের মধ্যে অন্যতম পুরাতন হল হিন্দু এবং সর্বশেষ হল মুসলমান জাতি । খেয়াল করে দেখুন ভারতবর্ষের সকল মসজিদ ও মন্দির পূর্ব-পশ্চিম মুখী । দুবইজ তার রচিত গ্রন্হে লিখেছেন-"বড় বড় মন্দিরগুলির নির্মাণ পদ্ধতি এবং কাঠামো, নতুন পুরানো যাই হোক না কেন, দেখতে পাবেন সকল স্হানেই এদের আকৃতি-প্রকৃতি অবিকল একই ধরণের এবং একই কাঠামোর । এগুলির প্রবেশ-দ্বার সবখানেই দেখা যায় পুর্ব দিকে এবং এগুলি এমনই এক কাঠামোতে গড়া যে সকল মন্দির ও পূজামন্ডপে এ বৈশিষ্টগুলো টিকিয়ে রাখা হয়েছে । " মুসলমানরা তো মসজিদের দিক কাবা শরীফমুখী কেন নির্মাণ করে তা তারা জানে , কিন্তু হিন্দুরা কেন কিবলার দিকে (পশ্চিম) তাদের মন্দিরের অগ্রভাগ রাখে তা তারা জানে না ।

ওদের বিভিন্ন জনগোষ্ঠি এর বিভিন্ন কারণ বলার চেষ্টা করে বটে, কিন্তু কেউ এ বিষয়ে সঠিক জানেনা । The garbha griham is usually also on the main horizontal axis of the temple which generally is an east-west axis. (বিদ্রিঃ- এক্ষেত্রে আমার এই সিরিজের কাবা শরীফ পার্টটুকু দেখলে আরও পরিস্কার হবে ) তাহলে কি এর কারণ এটা নয় যে, তাদের পুরাতন একটি সম্পর্ক রয়ে গেছে কাবা শরীফের সাথে এবং তারই এক বহিঃপ্রকাশ এটা । আজ হয়তো তারা ইতিহাস ভুলে গেছে, কিন্তু রীতিটা বাকি রয়ে গেছে, হারিয়ে গেছে এর অর্ন্তনিহিত সত্য । আরও দেখুন মৃত ব্যাক্তির সৎকারের উদ্দেশ্যে হিন্দুগণ চিতা সাজানোর সময় মাথার দিকটা রাখে উত্তর দিকে, অপর দিকে মুসলমানদের কবরের মাথাও একই দিকে থাকে । হজ্জ ও ওমরা করার সময় মুসলমানগণ সাত বার তওয়াফ করে, আর বিয়ে শাদীর সময় হিন্দুগনও অগ্নি হস্তে ৭ বার বিবাহ মন্চ প্রদক্ষিণ করে শপথ করে ।

মুসলমানগণ হজ্বের সময় যে এহরাম বস্ত্র পরিধান করে তা হচ্ছে দুটি সেলাই বিহীন চাদর ঃ একটি পরার জন্য এবং অপরটি গায়ে জড়ানোর জন্য । অপরদিকে হিন্দুগনও হাজার হাজার পূর্ব থেকে তীর্থ যাত্রাকালে এই একই পোষাক ব্যবহার করে আসছে; বরং তাদের কাছে এই পোশাকটিকে এতই পবিত্র মনে করা হয় যে এই পোষাকেই পরিবর্তিত রূপ হিসেবে পুরুষগণ ধুতি এবং নারী গণ শাড়ীকে তাদের জাতীয় পোষাক হিসেবে ঠিক করে নিয়েছে । হজ্ব ও ওমরার সময় মুসলমানদের চুল ছাটাঁ অবশ্যকরণীয় এবং মাথা মুন্ডন করা উত্তম বলা হয়েছে, আর হাজার হাজার বছর ধরে হিন্দুগণ তীর্থ যাত্রাকালে মাথা মুন্ডন করার রীতি চলে আসছে । মুসলমানগন আকীকা করার সময় বাচ্চার নাম রাখে এবং তার মাথা মুন্ডন করে দেয় এবং হিন্দুগনও অনেক অনেক আগে থেকে বাচ্চাদের নামকরণ-সংষ্কার বা বাচ্চাদের নাম রাখার ধর্মীয় রীতি হিসেবে তাদের মাথা মুন্ডন করে আসছে । আপনারা কি কোনভাবে ধারণা করতে পারেন যে, চৌদ্দ শত বছর পূর্বে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) এসব রীতিনীতি হিন্দুদের নিকট থেকে ধার বা অনুকরণ করেছেন (নাউজুবিল্লাহ)? বরং এটাই প্রকৃত সত্য যে, সত্য সব সময় সত্যই ।

তার রূপ সব সময় এই একই । কালের পরিক্রমায় তা বিকৃত হয়ে গেছে কিন্তু কিছু রেশ রয়ে গেছে । সময়ের দীর্ঘ পরিক্রমায় অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের নিকট থেকে প্রকৃত সত্য-ঘর কাবা শরীফ হারিয়ে গেলেও এই হিন্দু জাতি নিজেদের অজান্তেই এই কাবা ঘরের সাথে সংশ্লিষ্ট রীতিনীতি এবং অন্যান্য কিছু অপরিবর্তিত আকারে হলেও, আজ অবধি অনুসরণ করে চলেছে । এ ধরণের শত শত উদাহরণ রয়েছে যেগুলি দীর্ঘসুত্রিতা এড়ানোর জন্য এখানে উল্লেখ করা হলো না । কিন্তু এ কথা বুঝা দরকার যে, এ জাতির মধ্যে বিরাজমান এসব রীতিনীতি অত্যন্ত মূল্যবান কিছু বৈশিষ্ট ।

তাদের এসব হারিয়ে যাওয়া সত্যগুলিকে যদি কোন ভাবে উদ্ধার করা যায়, তাহলে অন্য যে কোন জাতির তুলনায় হিন্দুদের পক্ষে ইসলামকে বুঝা সহজ হয়ে যাবে । আল্লাম ইকবাল বলেছিলেন, " হতভাগা এ জাতি আজ হারিয়ে গেছে আজেবোজে কথার মাঝে । আর সত্য আজ ঢাকা পড়ে যাচ্ছে অলীক কাহিনীর আবরণে । " --চলবে... সূত্র-- --জগদগুরু মুহাম্মদ (সাঃ) , শায়খুল উবুদিয়া ইমাম সাইয়েদ মুহাম্মাদ আবদুল্লাহ ইবনে আবদুহু আল-হোসাইনী । রেনেসাঁ পাবলিকেশন্স ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.