আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

খাঁচ কাঁটা কাঁটা কাঁটা কাঁটা...

পুরান আমি নব ভাবনায় বিভোর..

বাইরে বেশ বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে । “ঝিরিঝিরি বৃষ্টি কি জানি বলতে চাইছে আমাকে” এমন একটি অনুভূতি জাগিয়ে রেখেছে প্রকৃতি । চলুন আড্ডা দেওয়া যাক । ধরুন কিছু দুষ্ট ছেলের দল ওদিকে খুনসুটি করছে । চলুন বসা যাক ।

বাঙ্গালিয়ানার খোশগল্পতো এখনি জমবে ভাল । যারা নিয়মিত আড্ডা দিয়ে থাকে আমাদের সাথে তাদের প্রায় একটা গল্প বলি । আজ সেটা দিয়েই শুরু করা যাক !!! গুরুত্বপূর্ণ এক বালক । বালককে নিয়ে স্কুলে একটা সমস্যা তৈরী হয়েছে । ইদানিং বালক কে যাই লিখতে দেওয়া হোক স্কুলে সে একটি লেখাই লিখে আর তা হলো কুমির এর রচনা ।

যা লিখে তার শেষটুকু থাকে এরকম... “...আমরা জানি কুমির একটি হিংস্র প্রাণি । আর কুমির স্বরীসৃপ এবং জলে বসবাস করে । কুমিরের চারটি পা । ইয়া বড় চোয়াল । চোয়ালে আছে বড় বড় ধারালো দাঁত ।

আর পিছন দিকে রয়েছে বিশাল বড় লেজ । লেজে শুধু খাজকাঁটা কাঁটা কাঁটা কাঁটা কাঁটা...... (২ পাতা শুধুই কাঁটা কাঁটা কাঁটা ...) । “ এই কথা শুনে প্রধানশিক্ষক তাঁকে লিখতে দিলেন গরুর রচনা । বালক লিখলো ... “গরু একটি গৃহপালিত প্রাণি । গরু চারটি পা, একটি মাথা, মাথায় ২টি শিং , আর একটি লেজ ।

গরু আমাদের কৃষি কাজে অনেক সহায়তা করা ছাড়াও দুধ ও মাংসের যোগান দেয় । গরুর প্রধান খাদ্য হলো ঘাস । গরু ঘাস খায় দিনে , জাবর কাটে রাতে । গরু ঘাস খাওয়ার জন্য মাঠে যায় । মাঠে গরু ছেড়ে দিলেও নদীর ধারে গরু ছেরে দেওয়া ঠিক না ।

কারন নদীতে আছে কুমির । আর আমরা জানি কুমির একটি হিংস্র প্রাণি । আর কুমির হলো একটি...। । “...আমরা জানি কুমির একটি হিংস্র প্রাণি ।

আর কুমির একটি স্বরীসৃপ এবং জলে বসবাস করে । যার চারটি পা । ইয়া বড় চোয়াল । চোয়ালে আছে বড় বড় ধারালো দাঁত । আর পিছন দিকে রয়েছে বিশাল বড় লেজ ।

লেজে শুধু খাজকাঁটা কাঁটা কাঁটা কাঁটা কাঁটা...... (৪/৫ পাতা শুধুই কাঁটা কাঁটা কাঁটা ...) । “ প্রধানশিক্ষক তো গরুর রচনা পড়ে মহাক্ষেপা । কিরকম ভাবে ছেলেটা একই কাঁটা কাঁটা লিখে ভরিয়ে ফেলেছে পাতা । একে সঠিক রাস্তায় আনতে হবে । তারপরের দিন তিনি দিলেন এমন রচনা যেন কুমির না আশে ।

“আমাদের বাড়ি” কিন্তু... বালক লিখিলো ... আমাদের বাড়ি আমাদের আবাসস্থল । বাড়িতে আমরা মা-বাবা, ভাই-বোন মিলে বসবাস করি । বাড়ি হলো মানুষের জন্য শান্তির জায়গা । মানুষ বাড়িতেই শান্তিতে রাতে ঘুমায় । বাড়ি সুন্দর ও নিরাপদ জায়গায় বানানো উচিত ।

নদীর ধারে বাড়ি বানানো উচিত নয় । কারন নদীতে আছে কুমির । “...আমরা জানি কুমির একটি হিংস্র প্রাণি । আর কুমির একটি স্বরীসৃপ এবং জলে বসবাস করে । যার চারটি পা ।

ইয়া বড় চোয়াল । চোয়ালে আছে বড় বড় ধারালো দাঁত । আর পিছন দিকে রয়েছে বিশাল বড় লেজ । লেজে শুধু খাজকাঁটা কাঁটা কাঁটা কাঁটা কাঁটা...... (পাক্কা ৬ পাতা শুধুই কাঁটা কাঁটা কাঁটা আর কাঁটা কাঁটা...) । “ এবার প্রধানশিক্ষক সকল শিক্ষকদের সাথে আলোচনা করে এমন একটি রচনার বিষয় নির্ধারন করলেন যাতে নদী-কুমির না আশে ।

রচনার বিষয় নির্ধারিত হলো “পলাশীর প্রান্তর” । পলাশী নিয়ে লিখতে হলে কুমির আসবে না কোন ভাবেই । এবার বালক “পলাশীর প্রান্তর” যাহা লিখিলো তাহা না শুনিলেই নয় । “১৭৫৭ সালে ২৩ জুলাই বাংলার স্বাধীনতার সুর্য অস্তমিত যায় । বাংলার শেষ নবাব সিরাজদৌল্লা ইংরেজদের হাতে পরাজিত হোন ।

নবাবের ইংরেজদের কাছে হেরে যাওয়ার মূল কারণ ছিলো মীরজাফরের বিশ্বাসঘাতকতা । ঐতিহাসিকরা বলেন সেদিন যত মানুষ পলাশীর মাঠে চারিধারে ছিলেন তারা এক একটি নুড়ি পাথর ছুড়লেও ইংরেজরা পরাজিত হতো । নবাব সিরাজদৌল্লা মীরজাফর কে সেদিন বিশ্বাস করে যেন “খাল কেটে কুমির আনলেন” । “...আমরা জানি কুমির একটি হিংস্র প্রাণি । আর কুমির একটি স্বরীসৃপ এবং জলে বসবাস করে ।

যার চারটি পা । ইয়া বড় চোয়াল । চোয়ালে আছে বড় বড় ধারালো দাঁত । আর পিছন দিকে রয়েছে বিশাল বড় লেজ । লেজে শুধু খাজকাঁটা কাঁটা কাঁটা কাঁটা কাঁটা...... (এবার গোটা খাতার পাতায় শুধুই কাঁটা কাঁটা কাঁটা আর কাঁটা কাঁটা...) ।

“ এই কুমির এর কলের গান বাজানো বালকটি হলো আমাদের রাজনীতি ও রাজনীতিতে জড়িত রা । তারা ৩০ বছর ধরে একই টাইপ কথা বলে যাচ্ছে । একই কাজ করে যাচ্ছে । যেন খাঁচ কাঁটা কাঁটা কাঁটা কাঁটা ... শুধুই কি কাঁটা কাঁটা । নতুন কি শুনানোর কিছু নেই ।

আমরা তরুন রা কান পেতে রই ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.