আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

যারা অরগানাইজিং এ আছেন, তাদের অনেক কেই আমি ফেসবুক ফ্রেন্ড হিসেবে চিনি। আমি তাদের উদ্দেশ্যে কিছু ভাবনা শেয়ার করতে চাই।

এইটা আমার ব্লগ। গতকাল রাতে গিয়েছিলাম। সে একটা অবিস্মরনিয় দৃশ্য। হাজার হাজার জনতা। কেও করছে গান, চলছে পথ নাটক।

মুক্ত সিনেমা। স্লোগান দিচ্ছে কেউ। ছাড়া ছাড়া মিছিল। পিতার মাথায় শিশু। ভাই এর হাতে বোন।

কিছু মানুষ ঘুরছে, খুজছে পরিচিত মুখ- এই তুই ?? কখন আসলি ? এত মানুষ স্বপ্ন নিয়ে এসেছে। নিশ্চয়ই আমার মত অনেকের মনেই, কিছু প্রশ্ন জেগেছে। এর পর কি ? আন্দোলন কোন পথে যাবে ? থাকবে নাকি এই গন জোয়ার ? কি ভাবে এই আন্দোলন কি ছড়িয়ে দেয়া যাবে সারা দেশে ? এই কি তাহরির স্কয়ার ? দুর্বৃত্ত রাজনইতিক সংস্কৃতির বিরুদ্ধে আন্দোলনের শুরু ? নাকি কাল ই সব শেষ ? গোলাম আজমকে চার টা চটকনা দিয়ে মুক্তি দেবে গোপন আতাতে ? সরকার বলবে, এই ছিল নিরপেক্ষ বিচারকের রায়, আমরা কি করতে পারতাম ? কি নিয়ে ঘরে ফিরে যাবে এই অজস্র্ স্বপ্নাবিস্ট মানুষ ? কি জওয়াব দিবে তারা তাদের ভাই ব্রাদারদের ? ওরা কেন গিয়েছিল, ঘর গিরস্থি পড়াশোনা ফেলে ? কি তার অর্জন হয়েছে ? যারা অরগানাইজিং এ আছেন, তাদের অনেক কেই আমি ফেসবুক ফ্রেন্ড হিসেবে চিনি। আমি তাদের উদ্দেশ্যে আমার কিছু ভাবনা শেয়ার করতে চাই। আমি এইটা জেনে এইটা শেয়ার করছি যে, সবাই স্পেশিয়ালি চেতনা ব্যবসায়ীরা এই মতামতের সাথে এগ্রি করবেন না।

গালাগালি খওয়ার রিস্ক নিয়েও পোস্ট টা দিলাম। ১. খুব সহজ ভাবে বোঝা যায় এবং সবাই গ্রহণ করতে পারে এই ধরণের তিন চার টা দাবি দিয়ে আন্দোলন কে আরো ক্লিয়ারলি ডিফাইন করুন। অজস্র মানুষ এসেছে, সমবেত হয়েছে। এইটাই গনজাগরণ , সারা দেশে মানুষ জাগছে- দারুন। কিন্তু কি চাই আমরা ?? গোল কি ? এই দাবি গুলো খুব ক্লিয়ারলি ডিফাইন করলে সারা দেশের মানুষ সেই দাবি গুলো নিয়ে আন্দোলন কে পাড়ায়, পাড়ায় ছড়িয়ে দিতে পারবে।

এই দাবি গুলো সহজবোধ্য হতে হবে এবং স্বাধীনতার চেতনা ও সাধারন মানুশের এর জীবন যাপনের সংগ্রামের সাথে সিঙ্করোনাইযড হতে হবে। গড়পড়তা কিছু দাবি তুললে হবেনা। এমন দাবি আনা যথেষ্ট কঠিন কাজ। ২. আপনাদের দাবি গুলোর মধ্যে বিচার কে আওয়ামী রাজনৈতিক প্রভাব থেকে মুক্ত করার একটা দাবি রাখবেন অবশ্যই। অনেকেই কনফিউশনে আছে, এই চিন্তা করে যে ট্রাইবুনালকে নিয়ে প্রশ্ন করলে, পরবর্তী বিচার বাধা গ্রস্ত হবে।

আমি তাদের উদ্দেশে একটা কথা বলি। যত জনকে ধরা হইছে, তাদের মধ্যে কাদের মোল্লা ছিল সেই রাজাকার যার বিরুদ্ধে, মানব হত্যার অভিযোগ সব চেয়ে বেশী ছিল,যাকে নিয়ে ক্লিয়ারলি ডিফাইন্ড অভিযোগ ছিল,পরিষ্কার সাক্ষ্যপ্রমান ছিল-এবং পাচ পাচ টা মামলায় অপরাধি প্রমানিত হওয়ার পরেও মধ্যে রাতের আতাতে তার রায় ফাঁসি থেকে যাবৎজীবন হয়ে গেল। পেপারে অলরেডি আসা শুরু হয়েছে, সরকার আর জামাতের মধে আতাত হইছে এবং যার ফলস্রুতিতে আওয়ামি লিগ, জামাত কে ইতিমধ্যে বিভিন্য ছাড় দিচ্ছে এবং পাচ টি মামলায় অপরাধি প্রমানিত কাদের মোল্লার ফাসি থেকে যাবৎজিবন তার মধ্যে একটি । এই সব জেনে শুনে বুঝেও, যদি আপনেরা আওয়ামী প্রভাব মুক্ত আদালত এর দাবি তুলতে না পারেন, তো আপনারা পাব্লিক এর পালস বুঝতে ভুল করতেছেন। ৩।

প্রথম আলোর ফেসবুক কমেন্টস পড়ে দেইখেন। অনেকেই এই আন্দোলন কে,আওয়ামি লিগ এর আর একটা চাল এর সাথে গুলিয়ে ফেলতাসে। জন মানুষ কে, আরো ক্লিয়ার মেসেজ দিতে হবে। এই আন্দোলনে আমরা যারা সারা দিচ্ছি, তারা মুলত সোশিয়াল মেডিয়া থেকে খবর রাখি টাইপের শ্রেণি এবং কোন না কোন ভাবে পলিটিকাল এক্টিভিজম করি বা করার বাসনা রাখি। কিন্তু যারা জীবন যুদ্ধে ব্যস্ত বা যারা মেইনস্ট্রিম মেডিয়া থেকে ইনফরমেসান নেয় বা যারা সরল মনে ষড়যন্ত্র তত্তের ভিত্তিতে সব কিছুকে ডিফাইন করে, তাদের জন্যে আওয়ামি লিগ এর মুক্তিযুদ্ধের চেতনা নিয়ে ভণ্ডামির থেকে এই আন্দোলনের তফাত টা ক্লিয়ার না।

এই এঙ্গেল টা ভুলে যাইয়েন না। সামারি করে, আবার বলি। একটা তিন দফা বা চার দফা দাবি করে সেই দাবি গুলো সারা দেশে ছড়িয়ে দেন। মানুষ শাহবাগ ছেড়ে যাবে কয় এক দিন বাদে। কিন্তু দাবি গুলো নিয়ে পরবর্তী তে বিভিন্ন পর্যায়ে, বিভিন্ন সময়ে, ভিন্ন প্লাটফর্মে ধাপে ধাপে কাজ করা যাবে।

কাদের মোল্লার রায় নিয়ে এত ভয়ঙ্কর একটা ভন্ডামির পর, আওয়ামি মক্তিযুদ্ধের চেতনা ব্যবসায়ীদের সাথে এই আন্দোলনের পার্থক্য টা ক্লিয়ারলি ডিফাইনড করা অতীব জরুরী। যদি ডিফাইন না করেন, সাধারণ মেইনস্ট্রিম মেডিয়া সেবি মানুষ কনফিউযড হবে। অলরেডি হচ্ছে। ছোট মুখে বড় কথার জন্যে ক্ষমা চেয়ে নিলাম আগে থেকে। ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।