আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

৭ই মার্চের ভাষণ ছিল বঙ্গবন্ধুর শৈল্পিক প্রকাশ



১৯৭১-এর ৭-ই মার্চ। লক্ষ জনতা চেয়ে আছে একজন মানুষের দিকে। তাঁর নির্দেশের দিকে। আজই কিছু একটা ঘোষণা আসতে পারে। উপরে পাকিস্তান সামরিক জান্তার হেলিকাপ্টার ঘুরপাক খাচ্ছে।

কোনো ধরনের উস্কানীমূলক বক্তব্য বলা হলেই শুরু হবে রক্তের বন্যা। কিন্তু জনতার মন এখন সেদিকে নেই। জনতা অপেক্ষা করছে সেই মানুষটির যেই মানুষটিকে তারা সকলে বলে "বঙ্গবন্ধু"। সাধারণ মানুষের প্রাণের নেতা শেখ মুজিবুর রহমান। এই সেই নেতা যে কিনা একটি ঘুমন্ত জাতিকে জাগিয়ে তুলেছিলেন।

একটি জাতিকে স্বপ্ন দেখতে শিখিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তিনি আসলেন; জনতার স্রোতে রেসকোর্স ময়দান ভাসছে। আজই হয়তো বাংলার ইতিহাসে ঘটবে সবচাইতে স্বরণীয় ঘটনা। চারিপাশ জয় বাংলা-জয় বাংলা শ্লোগান। তোমার নেতা আমার নেতা শেখ মুজিব শেখ মুজিব।

মুখরিত প্রান্তর। তিনি মঞ্চে উঠলেন। বললেন, বাঙালী জাতির মনের কথা। আঙুল উচিয়ে বলে গেলেন বাঙালী জাতির দাবি কথা। সেই বিশাল দেহী মানুষ সেদিনই নির্ধারণ করে দিলেন বাঙালী জাতির ভাগ্য।

একই সাথে ছিল দিক-নির্দেশনা, ছিল বাঙালীর ইতিহাস, ছিল সমকালীন বক্তব্য, ছিল স্বাধীনতার ঘোষণা। এক সাথে এতগুলো বিষয় তিনি সাবলীলভাবে বলে গেলেন। লাখো জনতার হৃদয়ের ধ্বনি সেদিন বঙ্গবন্ধু বাজিয়েছিলেন তাঁর বজ্রকন্ঠ দিয়ে। সেই ভাষণ বর্তমান সমসাময়িক রাজনৈতিক ভাষণের মতো নয়। যেখানে ছিল এক শৈল্পিক রুপের ছোঁয়া।

সেই ভাষণের প্রতিটি লাইন ছিল শৈল্পিক প্রকাশ। শক্ত বাক্য গঠন, চমৎকার বাচন ভঙ্গি, অনুপ্রেরণা দেয়ার মত বাক্যের ব্যবহার; সব কিছুই ছিল সে ভাষণে। একটি বাক্য থেকে আরেকটি বাক্যে চলে যাওয়ার যে পারদর্শীতা তা শুধু বঙ্গবন্ধু ছাড়া আর কার মাঝেই বা তা পাওয়া যায়। ভাষণের শুরুতেই তিনি জনতার উদ্দেশ্যে বলেছেন, ভাইয়েরা আমার। তাঁর প্রতিটি ভাষণে লক্ষ্য করা যায় তিনি বলে উঠেন, ভাইয়েরা আমার; বাংলার মানুষকে তিনি আপন ভাবতেন।

তাই "ভাইয়েরা" বলার পর "আমার" শব্দটি ব্যাবহার করতেন। তারপর বক্তব্যে ঢুকে যাওয়াটা চমৎকার। তিনি বলেন, আজ দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়েছি। জনতার কৌতুহলকে আকড়ে ধরার একটি প্রয়াস। কেন তিনি দুঃখ ভারাক্রান্ত মন নিয়ে জনতার সামনে আসলেন! জনতার কৌতুহল এখন এই প্রশ্নের উত্তরের দিকে চলে যাবে।

তারা নিশ্চুপ হয়ে যাবে তা জানার জন্য। এজন্যই হয়তো এ বাক্যের ব্যবহার। এরপরই তিনি চলে যান আসল বিষয়টিতে। নির্বাচনে আওয়ামীগের একক সংখ্যা গরীষ্ঠতা মেনে নেয়নি পশ্চিম পাকিস্তান। সরকার গঠনের অঙ্গিকার করেও বিভিন্ন টাল-বাহানা করে সরকার গঠনের দিন তারিখ পেছানো হচ্ছিল।

বাংলার মানুষ তখন আন্দোলনে কাপিয়ে রেখেছিল পুরো দেশকে। সেই মানুষগুলোর ত্যাগকে তিনি এক ভিন্ন উপায়ে সম্মান জানালেন। আপনারা সবাই জানেন এবং বোঝেন, আমরা আমাদের জীবন দিয়ে চেষ্টা করেছি; কিন্তু দুঃখের বিষয় আজ ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, রংপুর আমার ভাইয়ের রক্তে রাজপথ রঞ্জিত হয়েছে। এতুটুকুতেই তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন, আন্দোলন সমস্ত দেশজুড়ে হচ্ছে। শুধু ঢাকা কেন্দ্রিক আন্দোলন নয়।

এরপরই তিনি সকলকে মনে করিয়ে দেন বাঙালী জাতির দাবির কথা। বাংলার মানুষ মুক্তি চায়, বাংলার মানুষ বাঁচতে চায়, বাংলার মানুষ তাদের অধিকার চায়। এই দাবির জন্যই বাংলার মানুষ সংগ্রাম করছিল। নিজস্ব অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার যে দাবি তা একথাগুলোর সুঠাম ব্যবহারে তিনি বুঝিয়ে দিয়েছেন। ভাষার শৈলী সকলকে আকড়ে রাখছিল তখন।

এরপর তিনি বাংলার ইতিহাস তুলে ধরেন জাতির কাছে। সংক্ষেপে এতো সুন্দর ইতিহাসের বর্ণনা বঙ্গবন্ধু এমনভাবে বললেন যেনো একজন ইতিহাস না জানা, গন্ড মূর্খও বুঝতে পারে সংগ্রামের মর্ম। তিনি একাধারে বলে চললেন, কী অন্যায় করেছিলাম। নির্বাচনে বাংলাদেশের মানুষ সম্পূর্ণভাবে আমাকে ও আওয়ামী লীগকে ভোট দেন। আমাদের ন্যাশানাল এসেম্বলি বসবে, আমরা সেখানে শাসনতন্ত্র তৈয়ার করবো এবং এই দেশকে আমরা গড়ে তুলবো, এই দেশের মানুষ অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক মুক্তি পাবে।

কিন্তু আজ দুঃখের সাথে বলতে হয়, গত ২৩ বৎসরের করুন ইতিহাস, ২৩ বৎসরের ইতিহাস-মুমূর্ষ নরনারীর আর্তনাদের ইতিহাস, বাংলার ইতিহাস, এ দেশের রক্ত দিয়ে রাজপথ রঞ্জিত করবার ইতিহাস। ১৯৫২ সালে রক্ত দিয়েছি, ১৯৫৪ সালে নির্বাচনে জয়লাভ করেও আমরা গদিতে বসতে পারি নাই। ১৯৫৮ সালে আইয়ুব খান মার্শাল ল জারি করে ১০ বছর পর্যন্ত আমাদের গোলাম করে রেখেছে, ১৯৬৬ সালে ছয় দফার আন্দোলনের ৭ই জুনে আমার ছেলেদের গুলি করে হত্যা করা হয়েছে, ১৯৬৯ এর আন্দোলনে আইয়ুব খানের পতন হওয়ার পরে যখন ইয়াহিয়া খান সাহেব সরকার নিলেন। .................................................................................................................................................................................................................................................................................. এভাবেই সেদিন জনতাকে বুঝিয়েছিলেন, বাংলার মানুষ আন্দোলন করলে ব্যর্থ হয় না। ১৯৫২ সালে রক্ত দিয়েছি বলে তিনি বুঝিয়েছেন, আমরা রক্ত দিয়ে ঠিকই আমাদের অধিকার আদায় করে নেই।

সেই সাথে তিনি এটাও বোঝাতে চেয়েছেন, বাংলার মানুষের ন্যায্য অধিকারকে বার বার ছিনিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু বাংলার মানুষ বারবার তার বিরুদ্ধে রুখে দাড়ায়। আস্তে আস্তে তিনি পশ্চিম পকিস্তান শাসক গোষ্ঠীর ষড়যন্ত্রগুলো বলতে থাকলেন। প্রতিটি ধাপ তিনি যথেষ্ট কৌশলের সাথে বলছিলেন। এসেম্বলী নিয়ে পাকিস্তানের শাসকবৃন্দ যে সময়ক্ষেপন করছিল তার বর্ণনাও তিনি দেন।

বাংলার মানুষের আন্দোলনের মুখর এই বলে সম্বধন করেন। তবে শৈল্পীকভাবে উপাস্থাপনটা দেখার মতো ছিল। একটি জায়গায় তিনি বলেন, আমি বললাম, আপনারা কলকারখানা সব কিছু বন্ধ করে দেন। জনগণ সাড়া দিলেন, আপন ইচ্ছায় জনগণ রাস্তায় বেরিয়ে পড়লো। তারা শান্তিপূর্ণভাবে সংগ্রাম চালিয়ে যাবার জন্য স্থির প্রতিজ্ঞ হলো।

কী পেলাম আমরা? আমরা পয়সা দিয়ে অস্ত্র কিনেছি বহিঃশত্র“র আক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করার জন্য। আজ সেই অস্ত্র ব্যবহার করা হচ্ছে আমার দেশের গরীব, দুঃখী , নিরস্ত্র মানুষের বিরুদ্ধে, তাদের বুকের উপর হচ্ছে গুলি। এভাবে তিনি বলতে থাকেন এসেম্বলী ডাকা নিয়ে নানা নাটকের পর জনগণের আন্দোলণের কথা এবং তাদের উপর নির্যাতনে কথা। বলতে বলতে তিনি একটু শ্বাস নেন। তারপর আবার বলে উঠেন, ভাইয়েরা আমার।

জনতার মনকে জয় করার মতো ভাষা ব্যবহার করলেন এবার। বললেন, ২৫ তারিখ ইয়াহিয়া খান এসেম্বলি কল করেছেন। রক্তের দাগ শুকায় নাই। আমি ১০ তারিখ বলে দিয়েছি ঐ শহীদের রক্তের ওপর দিয়ে আরটিসিতে মজিবুর রহমান যোগদান করবে না। চমৎকার বাচনভঙ্গিতে মানুষের মনের একদম গভীরে এই কথাগুলো লাগার মতো।

উত্তেজনায়পূর্ণ বাঙালীর মন নেতার এই ধরনের কথা শুনে সাহসী হয়ে উঠবে এটাই স্বাভাবিক। আর তাই বঙ্গবন্ধু কিছুক্ষণ পরই বলে ওঠে, আমার উপর আস্থা আছে? এই প্রশ্নের উত্তরে তখন ফেটে পড়েছিল গোটা রেসকোর্স ময়দান। হ্যা বলে যে চিৎকারের ধ্বনিত হবে তা বঙ্গবন্ধু জানতেন। পাকিস্তান শাসক গোষ্ঠীর চোখ সেদিন যে রেসকোর্স ময়দানে ছিল তাও তিনি জানতেন। আর তাই এই প্রশ্নটি তিনি ছুড়ে দিয়েছিলেন লাখো জনতার দিকে এই জন্য যে সেই হ্যা ধ্বনি যাতে শাসক গোষ্ঠীর কাছে পৌছে যায়।

লাখো জনতার সামনে তিনি স্বীকার করেছেন জনতার ত্যাগকে। তিনি কৃতজ্ঞ চিত্তে বলে উঠেছেন, আপনারা রক্ত দিয়ে আমাকে ষড়যন্ত্র মামলা থেকে মুক্ত করে এনেছিলেন। সেদিন এই রেসকোর্স ময়দানে আমি বলেছিলাম, রক্তের ঋণ আমি রক্ত দিয়ে শোধ করবো। আপনাদের মনে আছে? আমি আজো রক্ত দিয়ে ঋণ শোধ করতে প্রস্তুত। শক্ত ভাষা তবে তার মাঝেও আছে সালীলতা।

গভীর অনুভূতি। একজন নেতা রক্তের ঋণ শোধ করার জন্য নিজের প্রাণকে বিলিয়ে দেয়ার কথা বলছেন। সেই নেতা যে জনতার মনে গভীর জায়গা পাবে এটাইতো স্বাভাবিক। এটা দিয়ে তিনি এও বলতে চেয়েছেন, আমি স্বয়ং প্রাণ দিতে প্রস্তুত; সুতরাং তোমরাও প্রস্তুত হও। এরপর তিনি সমস্ত কিছু বন্ধ করার ঘোষণা দিয়ে দেন।

মানুষের প্রয়োজনীয় এমন প্রতিষ্ঠান এবং বাহন চালু রাখার নির্দেশ দেন। তিনি জানতেন ক্ষুধা পেটে নিয়ে বিপ্লব হয় না। তাই সেভাবেই তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। মাসের শেষে বেতন নেয়ার জন্য সকল কর্মচারীকে বলেন। এই অবরোধের ফলে পাকিস্তান শাসকগোষ্ঠী আক্রমণাত্বক ব্যবস্থা নিবে এটা তিনি বুঝতে পেরেছিলেন।

আর তাই সেইভাবে তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। আর যদি একটা গুলি চলে, আর যদি আমার লোককে হত্যা করা হয়, তোমাদের কাছে আমার অনুরোধ রইলো প্রত্যেক ঘরে ঘরে দূর্গ গড়ে তোলো। তোমাদের যা কিছু আছে তাই নিয়ে শত্র“র মোকাবেলা করতে হবে এবং জীবনের তরে রাস্তাঘাট যা কিছু আছে সবকিছু আমি যদি হুকুম দিবার নাও পারি তোমরা বন্ধ করে দেবে। আমরা ভাতে মরবো, পানিতে মরবো। একটি বিপ্লব হতে যাচ্ছে।

সেই বিপ্লবের প্রস্তুতি নেবার কথা তিনি এই কয়েকটি বাক্য দিয়েই বলে দিয়েছেন। সবাইকে বলে দিয়েছেন, তিনি না থাকলেও যাতে আন্দোলন বন্ধ না হয়; কোনোক্রমে যাতে আন্দেলন থমকে না যায়। সেই সাথে তিনি জানেন সেনাবাহিনী অনেক বড় একটা ফেক্টর। নিজ দেশীয় সেনাদের তিনি অনুরোধ জানালেন ব্যারাকে ফিরে যাবার জন্য। পশ্চিম পাকিস্তান নির্দেশের নিচে চাপা পড়া এদেশীয় সৈন্যদের তিনি নির্ভয় দেন।

কতকিছু তিনি সেই ভাষণে উল্লেখ করেছেন!! তা বলে শেষ করার মতো নয়। ধর্ম নিয়ে আন্দোলনে একদল কলহ সৃষ্টি করতে পারে সেই বিষয়েও তিনি বলেছেন। হিন্দু-মুসলিম বিরোধ থেকে দূরে থাকার কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন। আমরা সবাই ভাই। তিনি আন্দোলন করতে গিয়ে আহত নেতা-কর্মীদের চিকিৎসার কথাও উল্লেখ করেন।

কোনো এজেন্ডাই সেদিন তিনি বাদ দেননি। প্রতিক্ষার ক্ষণ যায়। বাংলার মানষের মনের কথা তখনও কেউ শুনতে পারছে না। লাখো জনতার চিৎকারে বাংলার বাতাস। বঙ্গবন্ধুর রহস্যময়তার কন্ঠ সকলকে আটকে রেখেছিল।

তারপর.....তারপর.....সকলের মনে শুধু কৌতুহল। তারপর কি বলবেন শেখ মুজিব!! হঠাৎ!...হ্যা!..হঠাৎ সেই বজ্র কন্ঠ দিয়ে উচ্চারিত হলো। যা শুনে ফেটে পড়েছিল গোটা জাতি। যা শুনার পর সারা বাঙালী জাতির সামনে উঠে আসলো মুক্তির স্বপ্ন। ইন্ডাইরেক্টলী বঙ্গবন্ধু সকলকে বোঝালেন এখন আর অন্যের দাস হয়ে থাকার সংগ্রাম নয়।

এখন সংগ্রাম হবে একটি মুক্ত দেশের। তিনি আঙুল উচিয়ে বলে ওঠেন সেই ঐতিহাসীক বাণীটি। মনে রাখবা রক্ত যখন দিয়েছি রক্ত আরো দেবো- এদেশের মানুষকে মুক্ত করে ছাড়বো ইনশাল্লাহ। এবারের সংগ্রাম মুক্তির সংগ্রাম এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম। স্বাধীনতার ঘোষণা এসেগেলো তখনই।

বাংলায় কেনো সারা বিশ্বেও এই ভাষণটি একটি স্থান পেয়ে গেলো। বাংলার মানুষকে তিনি দেখালেন একটি নতুন দেশের স্বপ্ন। এভাবে; বিভিন্নভাবে, বিভিন্ন শৈল্পীকতা ব্যবহার করে তিনি সেদিন ভাষণ দিয়েছিলেন। এমন অসাধারণ ভাষণের জন্য দরকার হয়নি কোনো স্ক্রিপ্টের। দরকার হয়নি বার বার চিন্তা করে কিছু বলার।

তিনি তার পবিত্র আত্মা দিয়ে বলে গেছেন। বাংলার মানুষকে তিনি কতটা ভালোবাসতেন তার সেই ভাষণে তিনি বার বার বোঝতে চেয়েছেন। স্বাধীনতার ডাক দিয়ে তিনি তার ভাষণ শেষ করেন। সেই ভাষণ বাংলার ইতিহাসে আজও জীবিত। তিনি যেভাবে সেদিন ভাষার শৈলী দেখিয়েছিলেন তাঁর ভাষণে; তা আজও কোনো নেতার মাঝে পাওয়া যায় না।

অসাধারণ ক্রিয়েটিভিটি ছিল তাঁর মাঝে। তিনি যেনো জন্মেছিলেন আমাদের নেতা হওয়ার জন্যই। তাঁর জন্মই যেনো হয়েছিল বাংলার মানুষকে মুক্ত করবার জন্য। সেই ভাষণে ছিল দিক নির্দেশনা, ছিল জেগে ওঠার প্রেরণা, ছিল নতুন করে কিছু করার স্বপ্ন। সব ছিল সে ভাষণে।

এমন বজ্রকন্ঠ বাঙালী জাতি আর কখনও পাবে কিনা তা জানি না। তবে হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ এই নেতা একটি জাতিকে দিয়ে গেছে একটি স্বাধীন দেশ। বাংলার ইতিহাস যদি বলতে হয় তবে বলতে হবে বঙ্গবন্ধুর কথা। বাংলার স্বাধীনতাকে যদি স্বীকৃতি দিতে হয় তবে বলতে হবে, স্বীকার করতে হবে এই বিশাল দেহী অবিসংবাদিত নেতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে। যার চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে সেদিন বাঙালী জাতি জেগে উঠেছিল; সেই বাঙালী জাতি তাঁকে রক্ষা করতে পারলো না।

বঙ্গবন্ধু তার ভাষণে বলেছিলেন, রক্তের ঋণ আমি রক্ত দিয়ে শোধ করবো। তিনি ঋণ শোধ করেছেন। যার প্রেরণায় উদ্বুদ্ধ হয়ে ৭১-এ বাঙালী ঝাপিয়ে পড়েছিল যুদ্ধে এবং শহীদ হয়েছিল ৩০ লক্ষ মানুষ। সেই ৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের ঋণ তিনি তো সত্যিই শোধ করে গেলেন নিজের রক্ত দিয়ে।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।