সিটি নির্বাচনের কয়েক মাসের মধ্যেই জাতীয় নির্বাচনের ভাবনা মাথায় নিয়ে নিজেদের অবস্থান সংহত করার চেষ্টায় থাকা এই দুই নেতা হলেন ফজলে হোসেন বাদশা ও মিজানুর রহমান মিনু।
মেয়র পদে আওয়ামী লীগের লিটনের প্রধান নির্বাচনী সমন্বয়কের দায়িত্ব নিয়েছেন ওয়ার্কার্স পার্টির বাদশা। অন্যদিকে দলের প্রার্থী বুলবুলের প্রধান সমন্বয়কের দায়িত্বে রয়েছেন বিএনপি নেতা মিনু।
জাতীয় নির্বাচনের আগে এই নির্বাচনকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে নেয়ার কথা জানিয়ে রাজশাহীর সাবেক মেয়র মিনু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “রাজশাহী ছিলো বিএনপির ঘাঁটি। গত সিটি নির্বাচনের মাধ্যমে রাজশাহীর নেতৃত্ব বিএনপির হাতছাড়া হয়ে যায়।
পরে মহানগরীর আসনটিতেও জেতেন মহাজোট প্রার্থী।
“এবার বিএনপিকে তা পুনরুদ্ধার করতে হবে। সেটাই চ্যালেঞ্জ। এবারের নির্বাচনে কোনো ছাড় দেয়া হবে না। ”
২০০৮ সালের নির্বাচনে বুলবুলকে ১৮ হাজার ভোটে হারিয়ে মেয়র হন এ এইচ এম কামরুজ্জামানের ছেলে লিটন।
এর চার মাস পরে সংসদ নির্বাচনে সদর আসনে বিএনপির মিনুকে হারিয়ে দেন মহাজোটের প্রার্থী বাদশা।
সিটি নির্বাচনই যে জাতীয় নির্বাচনে জয়ের পথ করে দিয়েছিলো তা স্মরণে আছে এক সময়ের ছাত্রনেতা বাদশার।
তিনি বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “গত সিটি নির্বাচনের মাধ্যমে রাজশাহীতে মহাজোটের যে অবস্থান তৈরি হয়েছে, তার ফল পরবর্তী জাতীয় সংসদ নির্বাচনেও মিলেছে। সেই অঙ্গীকার আমাদের রক্ষা করতে হবে। ”
“ফলে এ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচন মহাজোটের জন্য গুরুত্বপূর্ণ,” বলেন ওয়ার্কার্স পার্টির এই পলিটব্যুরো সদস্য।
তাই আগামী ১৫ জুন অনুষ্ঠেয় নির্বাচনে ক্ষমতাসীন মহাজোট ও ১৮ দলীয় জোটের ব্যাপক প্রস্তুতিতে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাচ্ছেন রাজশাহী নগরবাসী।
সদ্যবিদায়ী মেয়র লিটন তার সময়ের উন্নয়ন কার্যক্রম তুলে ধরে শিল্প নগরীর ‘রূপকল্প’ নিয়ে মাঠ চষে বেড়াচ্ছেন নগর ভবনে প্রত্যাবর্তনের জন্য।
অন্যদিকে মহাজোট সরকারের ব্যর্থতা আর সিটি কর্পোরেশনের অনিয়ম-দুর্নীতি তুলে ধরে পরিবর্তনের বার্তা দিয়ে লড়ছেন বুলবুল।
‘প্রত্যাবর্তন’ আর ‘পরিবর্তন’ এর এই লড়াই জাতীয় নির্বাচনেও গুরুত্বপূর্ণ বার্তা দেবে বলে মনে করেন দুই জোটের নেতারা।
গত সিটি নির্বাচনে বিএনপির কোন্দলকে বুলবুলের পরাজয়ের অন্যতম কারণ বলে মনে করেন দলীয় নেতারা।
তবে এবারের চিত্র অনেকটাই ভিন্ন।
বিএনপির বিবদমান পক্ষগুলো আঁটঘাট বেঁধে নেমেছে দলের প্রার্থীকে বিজয়ী করতে। মিনুর নেতৃত্বে মহানগর বিএনপির একটি নির্বাচন পরিচালনা কমিটি যেমন হয়েছে, তেমনি জেলা বিএনপির পক্ষ থেকে দুটি কমিটি করা হচ্ছে।
মিনুর প্রতিপক্ষ হিসেবে পরিচিত জেলা সভাপতি নাদিম মোস্তফার নেতৃত্বে একটি এবং জেলার সাধারণ সম্পাদক কামরুল মনির নেতৃত্বে অন্য কমিটি হচ্ছে।
বুলবুলের পুরো নির্বাচনী কর্মকাণ্ড সমন্বয় ও মনিটরিংয়ের দায়িত্ব পালন করবেন দলের রাজশাহী বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক হারুন অর রশিদ, রংপুর বিভাগের সাংগঠনিক সম্পাদক আসাদুজ্জামান দুলু।
তাদের সঙ্গে থাকছেন সাবেক মন্ত্রী ব্যারিস্টার আমিনুল হক।
বুলবুলের পক্ষে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন ১৮ দলের অন্যতম শরিক জামায়াত ইসলামের প্রার্থী মোহাম্মদ জাহাঙ্গীরও।
বুলবুলের পক্ষে যেমন দলীয় নেতারা নামছেন, তেমনি লিটনের পক্ষে নামছেন মহাজোট নেতারা।
রাজশাহীর ছয় সংসদ সদস্যসহ শীর্ষ নেতারা প্রচার চালাবেন লিটনের জন্য। এর বাইরে নাগরিক কমিটির হয়ে লিটনের জন্য ভোট চাইছেন বাদশা।
রাজশাহী নগরীতে মোট ভোটার ২ লাখ ৮৬ হাজার ৯১৭। ৩০টি ওয়ার্ডের ১৩৭টি কেন্দ্রে ভোটাররা ভোট দেবেন। প্রথমবারের মতো মহানগরীর ৮ নম্বর ওয়ার্ডেও তিনটি কেন্দ্রে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনে (ইভিএম) ভোট হবে।
এ নির্বাচনে মেয়র পদে এ দুই প্রার্থী ছাড়াও হাবিবুর রহমান নামে এক ব্যবসায়ী লড়ছেন। তবে নগরবাসী বলছেন, মূল প্রতিদ্বন্দ্বিতা তালা প্রতীকের লিটন এবং আনারস প্রতীকের বুলবুলের মধ্যেই।
।
অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।