আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইতিহাস বর্ননায় সুশীলীয় কাকতাল!

যুদ্ধাপরাধীর বিচার ও জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবী করছি

মিরাজুর রহমান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, নতুন প্রজন্মের বুদ্ধিজীবি। মুক্তিযুদ্ধের উপর লেখালেখি করেন। উনি ১৪ই ডিসেম্বর একটা লেখায় ৭১ এ শহীদ বুদ্ধিজীবিদের বিষয়ে নতুন প্রজন্মের বিস্মরনের বিষয়ে আক্ষেপ করে একটা লেখা দিয়েছেন। সেখানে ভুমিকায় উনি কিছু ইতিহাসের বিবরন দিয়েছেন। "একটি নবীন জাতির জন্মলগ্নে তার শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করার মাধ্যমে বুদ্ধিবৃত্তিক ভাবে পঙ্গু করার নির্মমতার ৩৮ বছর পূর্তি হলো আজ ।

তাদেরকে হত্যা করার পেছনে যে কালোশক্তি দায়ী তারা তাদের উদ্দেশ্য অনেকাংশেই পূরণ করতে পেরেছে বলেই মনে হয় । স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে আমাদের যে দিকনির্দেশনাহীনতার শুরু তা থেকে আমরা এখনও বের হয়ে আসতে পেরেছি বলে মনে করিনা । আর সেই সব সূর্যসন্তানদের বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে দেবার জন্য যে বর্তমান প্রচেষ্টা তার বিরুদ্ধেও আমরা কোন কার্যকর ব্যবস্থা নিতে পারছিনা । আমাদের সকল প্রচেষ্টা কেবলি বছরে একটি দিনকে দীনহীনভাবে স্মরণ করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকছে । আর যে বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখার জন্য তারা জীবন দিলেন সেই বাংলাদেশ আজও স্বপ্নেই থেকে গেল ।

" উপরের অংশের একটা শব্দ - "কালোশক্তি" - আসলে কে? আমরা কি আসলেই জানি না! উনি নতুনপ্রজন্মের ইতিহাস বলছেন - কিন্তু আলবদর শব্দটা উচ্চারনে অনীহা! প্রশ্ন হলো নতুন প্রজন্ম "কালোশক্তি" মার্কা ইতিহাস জেনে কি করবে? নাকি - নিজে করো ধরনের একটা কাজ উনি নতুন প্রজন্মকে দিলেন - নিজে খোঁজে বের করো "কালোশক্তি" কে? কারা ১৪ই ডিসেম্বর ১৯৭১ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের পরিকল্পিত ভাবে হত্যা করেছিলো? একজন সচেতন মানুষ, একজন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, একজন নতুন প্রজন্মের বুদ্ধিজীবি যদি শব্দের খেলায় ইতিহাসকে রূপকথায় রূপান্তরিত করেন - তা হলে আমাদের নতুন প্রজন্ম কোথায় যাবে? (২) ১৪ই ডিসেম্বর আর দশটা পত্রিকার মতো রাজাকার-আল বদরদের পত্রিকা - যারা ৭১ এ বুদ্ধিজীবি হত্যার সাথে সম্পৃক্ত ছিলো - যার শত শত সাক্ষীপ্রমান এখনও আমাদের কাছে উপস্থিত - এরাও প্রথ পাতায় বুদ্ধিজীবি হত্যা দিবসের খবর ছেপেছে। নীচে দেখুন - "ইতিহাস বলে, একাত্তরে টানা নয় মাসের রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র যুদ্ধের চুড়ান্ত পর্যায়ে যখন শত্রুদের হাত থেকে জাতি পরম মুক্তির প্রহর গুণছিল, ঠিক তখনি পাকিস্তান সেনাবাহিনী ও ঘাতকচক্রের হাতে প্রাণ হারান বর্তমান বাংলাদেশের মেধা ও মননের ধারক, প্রথিতযশা বুদ্ধিজীবী, ধীমান সাংবাদিক, সাহিত্যিক, চিকিৎসক, বিজ্ঞানী, প্রকৌশলী, দার্শনিক এবং শিক্ষাবিদগণ। একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশের অভ্যুদয়ের পূর্ব মুহূর্তে দেশকে মেধা-প্রতিভা, শিক্ষা ও সংস্কৃতি শূন্য করার হীনমানসিকতা থেকেই সাঁইত্রিশ বছর আগে এমনি এক দিনে একটি নীল নকশা অনুযায়ী ঠাণ্ডা মাথায় মানব সভ্যতার অন্যতম বর্বর ও কাপুরুষোচিত এই হত্যাকাণ্ড পরিচালিত হয়। গোটা জাতির আবেগঘন শ্রদ্ধা ও ফুলেল ভালোবাসায় শহীদ বুদ্ধিজীবী দিবস পালিত হচ্ছে। "http://www.dailysangram.com/newsdtls.asp?NID=28603&NDate=12/14/2008 আমরা কখনও আশা করিনা - জামায়াতের পত্রিকা দৈনিক সংগ্রাম ঘাতকচক্রের নাম উল্লেখ করবে।

এরা সব সময়ই এই ধরনের শব্দের খেলা খেলবে। আর অপেক্ষা করবে কখন সুবিধা মতো এই ঘটনাটা অন্যের ঘাড়ে চাপিয়ে দিতে পারে। ইতোমধ্যে দেখা গেছে জহীর রায়হানের অন্তর্ধানের সাথে আওয়ামীরীগকে জড়িয়ে একটা গল্প বাজারে ছেড়েছিলো। (৩) প্রশ্ন হলো - মিরাজুর রহমানের ইতিহাস চর্চা আর দৈনিক সংগ্রামের ইতিহাস চর্চা এক হয়ে গেল কিভাবে? এইটা কি আসলেই কাকতাল?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.