আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আমার ১ বছর ১ মাসের ব্লগজীবন: একজন অজনপ্রিয় ব্লগারের আত্নকথন

ইদানিং খুব ঘাস খাই আর নির্বোধ গরু হয়ে উঠার স্বপ্ন দেখি,বঙদেশে গরুদের জন্য সব লক্ষীই হাত পেতে আছে । রাষ্ট্র ও সমাজযন্ত্র যখন সংকরিত গরুর গোয়াল ।

ব্লগে একবছর পেরিয়েছে অনেকদিন আগেই। প্রথমদিকে যতটা সক্রিয় ছিলাম এখন আর ততটা নেই। ২০০৭ এর অক্টোবর মাসে বন্ধু রাজী প্রথম সামহোয়ারের সন্ধান দেয়।

কন্সেপ্ট টা ভালোই লেগেছিল। টুকটাক কবিতা লেখার অভ্যাস ছিল। লেখা গুলো হারিয়ে ফেলতাম। ভাবলাম লেখাগুলো সংরক্ষনের একটা উপায় হল। লিখতাম, কমেন্ট করতাম, ভালোই লাগতো।

ব্লগের মানুষগুলোকে কেমন যেন আপন মনে হত। ব্লগে প্রথম পরিচিত মানুষ মেহরাব শাহরিয়ার ভাই। বুয়েট সুত্রে ওনার কথা আগেই জানতাম। ওনার লেখা পড়ে বেশ ভালো লাগতো। তারপর পরিচিত হলাম সিহাব ভাই(সিহাব চৌধুরী) এর সাথে।

ওনার সাথে কনভারসেশন খুব উপভোগ করতাম। ব্লগে লেখালিখি শুরু না করতেই বেশ কিছু আলোচিত ঘটনার সম্মুখীন হলাম। পুরাতন ব্লগার (মানুষ,বিমা,রাশেদ,নরাধম একেএ হ্যারি সেলডন) দের হয়ত মনে আছে নুরে আলমের ফ্যান ক্লাবের কথা। ঐ ফ্যান ক্লাবের প্রথম পোস্ট(সম্ভবত চাশমিস ফ্যান কিলাব) এর আইউইটনেস ছিলাম। হেভী মজা লাগত নুড়ানী ব্যাটার হেনেস্তা হতে দেখে।

তবে ব্লগে অনেক রাজাকারী কর্মকান্ড হতে দেখে খারাপ লাগত। আরেকটা ব্যাপার খারাপ লাগত ব্যাপক গালাগালি। আসলে নতুন ব্লগারদের এই যায়গায় অসুবিধা হয়। তারা গালাগালির যৌক্তিকতা প্রথমবারে বুঝে না। যাই হোক অর্বাচীনের মত এর বিপক্ষে পোস্ট দিলাম।

আর যায় কোথায়,আমার বিরুদ্ধে পোস্ট আসল। সম্ভবত মাথামোটা পোস্ট দিয়েছিল। এই ব্লগারটিকে আজাকাল দেখি না। জানি না অন্য কোন নিকে আছে কি না। এর মাঝখানে সিডর আঘত হানল যার বিভতসতায় আমরা স্তম্ভিত হয়ে গেলাম।

সিডরের দিন সকালবেলা একটি অদ্ভুত পোস্ট দেখলাম "হে ইরান আমাদের মাথা হেট করে দিও না"। পোস্টের অথর জনৈক ফারজানা১৬। তিনি বর্তমানে ফারজানা মাহবুবা নামে ব্লগান। তখন তিনি মোটেও পরিচিত ছিলেন না। ঐ ইরান বিষয়ক পোস্ট টা সম্ভবত তার দ্বিতীয় বা তৃতীয় পোস্ট।

যাই হোক সিডরের দিন সকালে এই পোস্ট দেবার ফলে যথারীতি ভালো কথার ঠ্যাঙ্গানি খেলেন তিনি। এর মাঝখানে আরেক ঘটনা ঘটল। মানবী এর পোস্টে একটি কমেন্ট কে কেন্দ্র করে মেহরাবভাইএর বিপক্ষে পোস্ট দিল জেনারেল। সেই পোস্ট টা সম্ভবত "ব্লগের যত কুতুব। " এই পোস্টেই পরিচয় হয় আমার আরেকজন প্রিয় ব্লগার ফারহান দাউদ ভাই এর সাথে।

তবে ঐ পোস্টে যে তুলকালাম কান্ড ঘটেছিল!!পুরোনোদের হয়ত মনে আছে!!তার ফলশ্রুতিতে সিহাব ভাই আর রোকোন ব্যান হয়েছিল। রোকোনের গালি খেয়ে আমার অবস্থা তখন খারাপ। সবারই হয়ত মনে আছে চতুরভুজের কথা। এই ব্লগে সর্বাধিক বিতর্ক জন্ম দেয়া একটি নাম। যাই হোক চতুরভূজ প্রথমদিকে আমার নিয়মিত পাঠক ছিল।

তার আসল চেহারা আমি তখন বুঝি নাই। ভালোই খাতির হয়ে গেছিল। ইভেন আমার সাথে মেইলে কন্টাক্ট করেছে। এবং পরে ফোন করেছিল। চতুরভূজ মেয়ে না ছেলে এটা নিয়ে তখন প্রচুর ডিবেট হত।

তবে চতুরভূজ নিশ্চিতভাবে একজন মেয়ে। তাকেও ব্লগে দেখি না। সারোয়ার নামের একজন অতি নিউট্রাল ব্লগার ছিলেন,তাকেও দেখি না। রাগইমন এর লেখা আমার সামহোয়ারইনের অন্যতম প্রাপ্তি। অসংখ্য পোস্ট ছিল তার।

কিন্তু এ টীমের সাথে তার আর উদাসী স্বপ্নের ঝামেলা লাগার ঘটনা টা খারাপ লেগেছিল। উদাসীকে আর দেখি না এখন। রাগইমন ও তার আগের অসংখ্য পোস্ট মুছে দিয়েছিল। তারপর মনে পড়ছে নিধিরাম সর্দারের কথা। আমি যখন ব্লগাতাম প্রথম তখন আইজুদ্দীনের নিক ছিল এটা।

ওনার সাথে প্রায় দা কুমড়া সম্পর্ক ছিল। আমি আমেরিকা দেখতে পারতাম না আর উনি ছিলেন মার্কিনবাদী। এখনও আছেন তিনি ম্যাকলাভিং নিকে!! গত বিজয়দিবসের কয়েকদিন পর লাগল চতুরভূজের সাথে। তখন তার জামাত মনস্কতার কথা জেনে মাথা গরম করে গালি দেই। ব্যান হয়েছিলাম সপ্তাহখানেকের জন্যে।

এরপর মনে পড়ছে সন্ধাবাতির কথা। একেও দেখি না অনেকদিন। আস্তমেয়ে নিক থাকার সময় আইজুদ্দীনের সেই মন্তব্যটি আমি সমর্থন করতে পারি নাই। তবে সন্ধাবাতির জামাত ঘেষা স্বভাবের জন্য খারাপ লাগত। মেয়েটা লিখত ভালো।

এর ছোটবোন এর ব্লগ ছিল। এখন লিখে কিনা জানি না। তারপর অবশ্যই মনে পড়ছে এই ব্লগের আরেকজন নন্দিত নিন্দিত ব্লগারকে। নাস্তিকের ধর্মকথা। উনার প্রথম পোস্টের আইউইটনেস হবার সৌভাগ্য হয়েছে আমার।

তারপর একবার তুমুল জমেছিল লোল্লা আন্দোলন, নিধিরাম এর নেতৃত্বে এবং আহমেদ শরফুদ্দীনের তত্বাবধানে কালপুরুষের বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছিল পুংটা পোলাপান। এর কিছুদিন আগেই বর্তমানের জনপ্রিয় ব্লগার সুলতানা শিরিন সাজি ব্লগিং শুরু করেছিলেন। তারপর আরেকটা ক্যারেক্টারের কথা মনে পড়ছে, সাতিয়া মুনতাহা নিশা। ইদানিং আর দেখি না তাকে। তাকে অনেক খুচিয়েছিলাম।

বেচারী। একরামুল হক শামীমের হয়তো মনে আছে তার কথা। তার স্বর্ণপদকের কাহিনী মনে আছে কারো??রাগিব ভাই সিহাব ভাই আরো অনেকে সেদিন অনেক ফান করেছিলাম। মাহিন্দ্র ভাই সম্ভবত পোস্ট টা দিয়েছিলেন। সেদিন পোস্ট টা খুজেছিলাম, পাইনি।

তারপর অবশ্যই মনে পড়ছে ওয়ামী কে তাড়ানোর কথা। আর কীবোর্ড বিরতি,সেই অনুভূতি আমি কখোনোই ভুলব না। এরপর দীর্ঘদিন ব্লগে ঢুকি নাই। মাঝখানে ওয়ামীকে ডিফেন্ড করতে গিয়ে ফারজানা ব্যান হল আর সন্ধাবাতি গুডবাই বলল। ভালোই লেগেছে আরো অনেককে মনে পড়ছে।

গন্ডারের সাথে অনেক তর্কাতর্কি করেছি। তবে গন্ডুর সাথে একটা মিল খুজে পেতাম নিজের। ড্রীম ক্যাচার,হাসান,স্করপিয়ন্স ইত্যাদি নিকে থাকলেই সেই বডিবিল্ডার কে চিনতে ভুল করবে!! মনে পড়ছে অলৌকিক হাসানের কথা। ওনাকে দেখি না এখন। তারপর অচেনা বাঙ্গালীর কথা।

উনি যে কেন তার প্রোফাইল পিকচার টা চেন্জ করলেন,আগেটাই ভালো ছিল। অমি পিয়াল,এস্কিমো,আরণ্যক যাযাবর এদের কথাও মনে পড়ছে। এস্কিমো অবশ্য সক্রিয় আছেন এখনও। অমি পিয়ালকে দেখি না। আর ত্রিভুজকে কিভাবে ভোলা যায় আবার কিছুদিন আগে যখন ব্লগে নিয়মিত আসা শুরু করলাম।

অধিকাংশ ব্লগারকেই চিনি না এখন। ব্লগের ভাও বুঝে উঠতে পারলাম না। নিজেকে কেমন যেন বিচ্ছিন্ন লাগলো। দেখলাম এখনকার তুমুল জনপ্রিয় ব্লগারদের অধিকাংশকেই আমি চিনি না। যাই হোক,সামহোয়ার আমাকে অনেকদিয়েছে,হ্যাটস অফ টু ইউ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।