আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জলাবদ্ধ শৈবাল

"পসার বিকিয়ে চলি জগৎ ফুটপাতে, সন্ধ্যাকালে ফিরে আসি প্রিয়ার মালা হাতে"

জলাবদ্ধ শৈবাল “আজ তাহলে আসি”, বলেই উঠে দাঁড়ালে; শাড়ীর আঁচলটা ঝেড়ে নিলে- ছিটকে পড়লো কিছু বাদামের খোসা। নির্লজ্জ কিছু চোরকাঁটা লুকিয়ে ছিল শাড়ীর পাড়ে, ভারমুক্ত দুর্বাঘাসগুলো নড়ে চড়ে উঠলো। ওরা জানে আবার হয়তো বসবো, কোন এক অবেলায়। কথা আর মৌনতা জুড়ে জুড়ে যে মালা গাঁথা হয়, কেউ দিতে পারিনা কারো গলায়- সময় কিভাবে যেন ফুরিয়ে যায়। নতুন একটি বিকেল উপহার দেবে বলে সূর্যটা প্রতিদিন ক্লান্ত হয়ে ডুবে যায় নিতান্তই অনিচ্ছায়।

সুপুরী গাছের দীঘল ছায়াটাও মিশে যায় তুরাগের জলে। তুমি আমি সব নিষেধ অবজ্ঞা করে রোজ এসে দাঁড়াই বাঁধের কিনারায়। এক সময় সন্ধ্যা ঘনায়। পাখীরা আস্তানা গাড়ে হিজলের ডালে। আমাদের কথামালা কাগজের নৌকার মতো ভাসিয়ে দেই, শান্ত নদীর জলে।

শুরুতে উচ্ছাস, শুধুই চেয়ে থাকা অপলক, অতঃপর মনের ক্যানভাসে অসংখ্য তুলির টান- কোন ছবিই তেমন স্পষ্ট নয়। দুজনের কেউই ছবি আঁকতে পারিনা। বিকেল গড়ায় আরেকটি বিকেলের সম্ভাবনায়- ক্যানভাসের রঙ মাঝপথে শুকিয়ে যায়। তুমি আমি বসে আছি- বাঁধের নীচে। উদাসী দৃষ্টি মেলে ধরি অপার দিগন্তে।

উধাও গাংচিল, ভুল স্রোতে ভেসে আসা কচুরীপানা- উলু খাগড়ায় আটকে থাকে শরীরে পচন ধরে। এখানে জোয়ার কোথায়? ভরা-কোটাল, মরা-কোটাল ওসবের দাপাদাপি নেই- আছে শুধু ন্থবিরতা। স্রোতস্বিনী নদী তার চিরাচরিত পথ হারায়- আমাদের কথা থেমে যায়। মৃতপ্রায় তুরাগের কান্না মিশে থাকে নাগরিক কোলাহলে। প্রতিদিনের মতো আবারো আশ্রয়ে ফেরার প্রস্তুতি- চোখে জেগে রয় ঘরে ফেরার স্বপ্ন।

দেখা হবে এমন প্রত্যাশায় দুজনেই রাজপথে নেমে আসি। কাল তুমি আসবে হয়তো অন্য কোন শাড়ীতে, কিংবা অন্য কোন গাড়ীতে। আমি তোমাকে দেখে জলাবদ্ধ শৈবালের মতো সহসাই নড়েচড়ে উঠবো- হয় ক্ষীণ স্রোতে, নয়তো মৃদু বাতাসে। (সংশোধিত)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।