আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

নুয়াখাইল্যা হেরেম

আমার মৃত্যু যেন আমার সকল ইচ্ছা পূরণের পর হয়

লেখকের জীবনে কোনো নারী ছিলো না। তাই তিনি ভাবলেন এবার একটা প্রেম করতেই হবে। কিন্তু ঢাকা শহরের মেয়েদের উনার বিশ্বাস হয় না। তাই তিনি গুলিস্তান থেকে বাংলাদেশের ম্যাপ কিনে আনলেন। তার পর চোখে একটা কালো কাপড় বেধে হাতে একটা কলম নিয়ে ম্যাপের উপর পয়েন্টিং করতে লাগলেন।

প্রথম পয়েন্টিং হয়েছিলো বঙ্গোপসাগরে। লেখক ওখানে যাবার সাহস পেলেন না, কারন হাঙ্গর মাছের সাথে আবার কিসের প্রেম! পরে আবার পয়েন্টিং করলেন চোখ খুলে দেখেন নোয়াখালী। লেখক সঙ্গে সঙ্গে একটা রিক্সা নিয়ে চলে গেলেন টি.টি পাড়া। সেখানে গিয়ে বিলাস নামক এক বাসের টিকেট করলেন। বাসে চড়ার আগে কাউন্টারে উকি মারলেন কিন্তু মনে হয় লেখকের কপাল খারাপ কোনো যুবতী আজ নোয়াখালী যাচ্ছে না।

লেখক অন্যান্য কোম্পানীর বাসের দিকে ও নজর রাখলেন যদি কোনো যুবতী অন্য বাসে যায় তবে তিনি সাথে সাথে টিকেট ফেরত দিয়ে ওই কোম্পানীর টিকেট করবেন। লেখক আহত হয়ে বিলাস বাসে চেপে বসলেন। বাসে লেখক ছাড়া আর কেউ নেই। বাস চলছে তো চলছেই। হঠাৎ লেখকের ঘুম পেলো।

আধাঘন্টা খানেক ঘুমানোর পর লেখক ঘুম থেকে উঠলেন। উঠে বাসের মধ্য কিছু শব্দ পেলেন। পিছন ফিরে দেখে বাস ভর্তি লোক। লেখক অবাক হলেন এই লোক গুলো রাস্তা থেকে লোক নিয়েছে। যাই হোক ভালোই হলো।

হঠাৎ করে পিছন থেকে এক যুবতীর কন্ঠ শুনে লেখক ভয় পেয়ে গেলেন। 'ভাইয়্যা আমনের কাছে কি হানির বোতল আছেনি?' কানের কাছে এই কথাগুলো শুনে একটু অবাক হলাম। এত সুন্দর একটা মেয়ে সুন্দর করে কথা বল্লে কি হয়। লেখক :'জী আছে' যুবতী : যুবতীর পাল্টা জবাব ' হানির বোতলখান দিবেন নি বাইচ্ছারে এক্কানা হানি খাবাইতাম'। লেখকের মন টা ভেঙ্গে গেলো, এত কম বয়সের মেয়েটার কবে বিয়ে হলো? আবার বাচ্ছা ও আছে! লেখক আহত হয়ে আবার ঘুমানোর চেষ্টা করলেন।

স্যার উঠেন। চোখ মেলতেই দেখি সুপারভাইজার সাহেব। স্যার আমরা এখানে কিছুক্ষন থামবো আপনার কিছু খাওয়ার বা বাথরুম সারার দরকার হলে সেরে নিন। বিরক্ত হয়ে লেখক সিগারেটের প্যাকেটটা বের করে একটা সিগারেট ধরালেন। হঠাৎ করে মধ্য বয়সী এক লোক এসে লাইটার চাইলেন।

লেখক লাইটার দিলেন। পেছন থেকে 'দুলাভাই! দুলাভাই!' ফিরে দেখি সেই যুবতী কাউকে দুলাভাই বলে ডাকছে। মধ্য বয়সী লোক টি জবাব দিলো ;হ্যাঁ; যুবতী আবার ' আফা আমনেরে বোলায়' মধ্য বয়সী লোকটি আসছে বলে আশ্বস্ত করলেন। লেখক ইতিমধ্য মনে মনে সুখের বাতাস ফিরে পেলেন যুবতীর বিয়ে হয়নি বুঝতে পেরে। লোকটি লেখকের সাথে কথায় মশগুল হলেন।

কোথায় থাকা হয়, কি করা হয়, ইত্যাদি ইত্যাদি... নোয়াখালী কোথায় যাওয়া হচ্ছে প্রশ্ন করাতেই লেখক একটু বিব্রত হয়ে বললেন আসলে কেউ নেই এমনি ঘুরতে বের হয়েছি। লোকটি অবাক হয়ে বললেন আশ্চর্য বিষয়তো। আপনি মনে হয় খুব মজার লোক! লেখক একটু লজ্জা পেলেন। বাসে চেপে বসলেন লেখক। লোকটি তার সিট ছেড়ে এসে পাশে বসলেন।

'কোথায় উঠবেন কিছু ঠিক করেছেন?' লেখক ' না, এখনো না, তবে একটা হোটেল দেখে নেব' লোকটি বললো ' আপনে কিছু মনে না করলে আমার বাসায় থাকতে কি আপনার কোনো সমস্যা আছে' লেখকের প্রায় হার্টএট্যাক হবার উপক্রম। খুশিতে আত্নহারা লেখক একটা বিজয়ের নাচ দেবার ইচ্ছা করছিলো কিন্তু জায়গা ছোট বলে হবে না। লেখক ' না না কি বলছেন, আমি একটা ব্যবস্থা করে নেব' লোকটি ' আপনে না করলে আমি খুব কষ্ট পাবো' লেখক ' ঠিক আছে'। এর পর মধ্য বয়সী লোকটি তার কাহীনি শুরু করলেন, যা বুঝলাম তাতে তিনি আমেরিকা প্রবাসী ছোট বেলা থেকে আমেরিকা থাকে, বিয়ে করেছেন চার বছর হয়। আমেরিকা থেকে এসেছেন বেড়াতে আর বউ বাচ্ছা কে নিয়ে যেতে।

আর ছোট একটা হার্টএট্যাক করা সংবাদ দিলেন। তার শালীর বিয়ে দেবার কথাও ভাবছেন। আমার প্রসংঙ্গে আসতেই বললেন কি করছেন এখন। বললাম ' জী কিছু না পড়ালেখা করছি, বাবা মাস শেষে টাকা পাঠায়, এভাবেই চলে যায়'। বাকী সব কথা চেপে গেলাম সংঙ্গত কারনে।

এভাবে কখন যে নোয়াখালী এসেছি জানি না। লোকটির নাম জামান। জামান সাহেব দুটো রিক্সা ঠিক করলেন। রিক্সায় চেপে বসলাম। যেতে যেতে আবার সিগারেট.....


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।