আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মোল্লা কাদের

ঢাকায় আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের একটি ট্রাইব্যুনাল জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লাকে গণহত্যা ও ধর্ষণসহ বিভিন্ন অপরাধে এই সাজা দেয়। সম্পর্কিত বিষয় বাংলাদেশ তাঁর বিরুদ্ধে হত্যা, গণহত্যা, ধর্ষণ, গণ-ধর্ষণ এবং অগ্নিসংযোগের মোট ছয়টি অভিযোগ আনা হয়। এর মধ্যে পাঁচটি অভিযোগে তিনি দোষী সাব্যস্ত হন। আবদুল কাদের মোল্লা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল। এই প্রথম দলটির কোন শীর্ষস্থানীয় নেতা ১৯৭১ সালের যুদ্ধে অপরাধের দায়ে সাজা পেলেন।

জামায়াতে ইসলামী ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় পাকিস্তানের পক্ষ নিয়েছিল। দলটির নেতা-কর্মীরা পাকিস্তানী বাহিনীকে গণহত্যায় সহযোগিতা করে বলে অভিযোগ আছে। জামায়াতে ইসলামী আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতের এই রায় প্রত্যাখ্যান করে ইতোমধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় বিক্ষোভ শুরু করেছে। দলটি আজ মঙ্গলবার এবং আগামীকাল বুধবার সারাদেশে হরতালের ডাক দিয়েছে। আদালত কক্ষে হৈ-চৈ ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে মঙ্গলবার রায় ঘোষণার আগে থেকেই কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা নেয়া হয়েছিল।

আদালত কক্ষ ছিল সাংবাদিক এবং আইনজীবীদের ভিড়ে ঠাসা। বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের ট্রাইব্যুনাল যখন রায় ঘোষণা করে, তখন কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন বিবাদী আবদুল কাদের মোল্লা। তাঁর পরনে ছিল সাদা পায়জামা-পাঞ্জাবী এবং হাতা বিহীন সাদা কোট। রায় ঘোষণার আগে-পরে এই বিচারের বৈধতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে এবং বিচার প্রত্যাখ্যান করে তিনি দুই দফা হৈ-চৈ করেন। বিচারক ১৩২ পৃষ্ঠার রায় পড়ে শোনানোর আগে আবদুল কাদের মোল্লা তাঁর দৃষ্টি আকর্ষণ করে কিছু বলার অনুমতি চান।

কিন্তু বিচারক তার আবেদন নাকচ করে দিয়ে রায় পড়তে শুরু করেন। যাবজ্জীবন সাজা ঘোষণা করে বিচারকরা আদালত কক্ষ ত্যাগ করলে আবদুল কাদের মোল্লা ‘আল্লাহু আকবর’ ধ্বনি দিয়ে চিৎকার করে বলতে থাকেন, “এটি অন্যায় বিচার, এই বিচার মানি না। ” তিনি আরও বলেন, “এখানে সব জল্লাদ এনে বসানো হয়েছে। ” আদালত কক্ষে আবদুল কাদের মোল্লার এক মেয়ে এবং এক ছেলেও উপস্থিত ছিলেন। তবে তাদের মধ্যে আবেগের কোন প্রকাশ ছিল না।

সাংবাদিকদের কাছে তারা রায়ের ব্যাপারে কোন মন্তব্য করতেও অস্বীকৃতি জানান। পাঁচটি অভিযোগে দোষী বিচারকরা তাদের রায়ে বলেছেন, যে ছয়টি অভিযোগ আবদুল কাদের মোল্লার বিরুদ্ধে আনা হয়েছিল, তার মধ্যে পাঁচটিতে তিনি দোষী প্রমাণিত হয়েছেন। এর মধ্যে একটি অভিযোগে বলা হয়েছিল, ১৯৭১ সালের ২৪ শে এপ্রিল ঢাকার আলোকদি গ্রামে পাকিস্তানী বাহিনী যে গণহত্যা চালায়, সেখানে তার সক্রিয় ভূমিকা ছিল। তিনি পাকিস্তানী বাহিনীকে ঐ গ্রামে নিয়ে যান। ঐ ঘটনায় ৩৪৪ জন নারী-পুরুষ গণহত্যার শিকার হন।

দ্বিতীয় একটি অভিযোগে বলা হয়েছিল, ঢাকার মিরপুর দশ নম্বরের একটি বাড়ীতে হযরত আলি লস্করের স্ত্রী, দুই মেয়ে এবং এক ছেলেকে হত্যার ঘটনায় তাঁর হাত ছিল। সেখানে একটি মেয়ে ধর্ষণেরও শিকার হয়। তবে ১৯৭১ সালের ২৫ শে নভেম্বর কেরানীগঞ্জের ভাওয়াল খান বাড়ী এবং ঘটার চরে শতাধিক মানুষকে হত্যার ঘটনায় তার সংশ্লিষ্টতা প্রমাণ করা যায়নি। বহু প্রতীক্ষিত রায় বাংলাদেশে ১৯৭১ সালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে আন্দোলন চলছে গত তিন দশক ধরে। বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোটের অন্যতম নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল যুদ্ধাপরাধীদের বিচার।

তবে জামায়াতে ইসলামী শুরু থেকেই এটিকে ‘রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে গঠিত ট্রাইব্যুনাল’ বলে অভিহিত করে বিচার প্রক্রিয়া বন্ধের দাবি জানিয়েছে। দলটি গত কিছুদিন ধরে এই বিচার বন্ধের দাবিতে সহিংস আন্দোলন করছে। জামায়াতে ইসলামীর প্রাক্তন প্রধান গোলাম আযম এবং বর্তমান আমীর মতিউর রহমান নিজামীসহ দলের আরও অনেক শীর্ষস্থানীয় নেতার বিচার চলছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে। মেইন লিঙ্কঃ Click This Link ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.