আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

~বিবর্তনের একটি বছর~

আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ
• পোস্ট করেছেন: ১৩২টি • মন্তব্য করেছেন: ৭০০৬টি • মন্তব্য পেয়েছেন: ৪১৬০টি • ব্লগ লিখেছেন: ১ বছর ১৩ ঘন্টা • ব্লগটি মোট ৫৫১৯৩ বার দেখা হয়েছে দেখতে দেখতে একটা বছর পেরিয়ে গেল আমার বিবর্তনবাদী সত্ত্বার। বর্ষপূর্তিতে আজ অনেক কথা বলার আছে যা এতদিন বলব বলব করে বলিনি। অপেক্ষা করছিলাম বর্ষপূর্তির। তবে শুরু করি। ব্লগে আগমন: ইন্টারনেট ব্যবহার করছি প্রায় ৬/৭ বছর।

এর অলিগলিতে ঘুরতে ঘুরতে একদিন সন্ধান পেলাম বাংলা উইকিপিডিয়ার, অভ্র দিয়েই শুরু আমার ইন্টারনেটে নিজ ভাষায় লেখালেখি। বাংলা উইকিতে সেই ২০০৬ থেকেই কিছু না কিছু লিখবার চেষ্টা করেছি। ব্লগের খবর তখন জানতাম না। ছোটবোনের কাছ থেকে ব্লগের কথা শুনলেও তেমন আগ্রহ পাইনি। বাংলা উইকিতে যারা অবদান রাখেন তাদের অনেকেই উইকিকে জনপ্রিয় করার জন্য অনেক কিছু করেন।

যেমন র্যা লি, সম্মেলন, ব্লগে, সংবাদ পত্রে লেখালেখি। আমি এগুলোর কিছুতেই কখনও অংশ নিতে পারিনি, আত্মীয়-স্বজন বন্ধুবান্ধবকে বলতাম এই যা। একদিন বাংলা উইকির ইয়াহুগ্রুপে একটা মেইল পেলাম রাগিব ভাইয়ের, উনি তারিফ এজাজকে উদ্দেশ্য করে লিখেছিলেন, আজকাল বাংলা ব্লগ খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে, তারিফ যেন ব্লগে লেখে। ঐ মেইলের এক লিংক ধরেই আমার সামহোয়ারে আসা। কিছুদিন পড়লাম, ভালই লাগল।

লেখালেখির আগ্রহ তেমন একটা ছিল না। একসময় ভাবলাম, উইকিতে লেখার বাইরে আর কিছু না করতে পারলেও ব্লগে তো লিখতে পারি। উইকির জন্য লিখবার উদ্দেশ্যেই নিজের নামে নিক নিয়ে রেজিস্ট্রেশন করলাম । দুই একটা লেখাও লিখলাম। প্রথম হিসেবে ব্লগাররা ভালই রেস্পন্স দিল, লেখার আগ্রহ সৃষ্টি হল।

ব্লগারদের নানা ধরনের ছদ্মনাম খুব ভাল লাগত। একসময় ভাবলাম আমিও একটা ছদ্ম নিক নেব, কিন্তু ভাল কিছুই মাথায় আনতে না পেরে ভাবতে লাগলাম। আমার ছোট বোন সারাদিন Hi5 এ পড়ে থাকত। ওকে বলতাম এত Hi5 এর পেছনে সময় দাও, অল্প সময় উইকিতে দিলে ক্ষতি কি। সে ভেবে পেত না কি নিয়ে লিখা শুরু করবে।

একদিন আমি নিজেই তাকে দুই একজন পরিসংখ্যানবিদের নাম বললাম, যাদের জীবনী অল্প কিছু হলেও সে লিখতে পারবে। বোন আমার মহাযজ্ঞে নেমে পড়ল, বইটই ঘাটা শুরু করল। আমি বলি, “আস্তে আস্তে একটিভ হও, নইলে দ্রুতই যজ্ঞে ভাটা পড়বে”। একরাতে আমি পিসির সামনে বসে ভাবছিলাম কি নিক নেওয়া যায়। ছোটবোন এসে জিজ্ঞাসা করে evolutionist এর ভাল বাংলা কি হবে।

আমি বললাম, “বিবর্তনবাদী”। বোন চলে যাওয়ার সাথে সাথেই আমার মাথায় আসল কেননা আমি বিবর্তনবাদী নামেই নিক নেই। তাছাড়া আমি জীববিজ্ঞানে সংশ্লিষ্ট বিষয়ে পড়ছি, বিবর্তনবাদ নিয়েও লিখব। পরদিনই শুরু হল, বিবর্তনবাদীর সামহোয়ার যাত্রা। শুরু: ব্লগে আমার প্রথম যে লেখা ভাল লেগেছিল, তা হল বিহংগদার একটা কবিতা।

মজার ব্যাপার, বিবর্তনবাদীর প্রথম পোস্টের প্রথম মন্তব্যও বিহংগদার। সেই শুরু পথচলা। সেই সময়টায় আমার জীবনের উপর দিয়ে এক প্রকার ঝড় বয়ে যাচ্ছিল, মানসিক ভাবেও ভেঙ্গে পড়েছিলাম। কথা বলারও মানুষ ছিল না, ব্লগেই কেটে যেত বেশির ভাগ সময়। মন যখনই খারাপ হত তখনই ব্লগে ঢুকতাম কিছু লিখবার উদ্দেশ্যে।

এমন কয়েকবারই হয়েছে লেখার উদ্দেশ্যে ব্লগে ঢুকে হয়ত প্রথম পাতার কোন একটা পোস্ট পড়তে গিয়ে অবাক হয়েছি। হায়! এই কথা লিখবার জন্যই তো ব্লগে ঢুকলাম। হুবহু আমার মনের কথাই অন্য এক অজানা মানুষের লেখায় পড়ে ফেললাম। লেখা পড়ে, ব্লগারদের কমেন্ট পড়ে উপলব্ধি করতাম পৃথিবীতে একই ধরনের সমস্যায় আরো অনেক মানুষই কষ্ট পায়। তবুও জীবন চলতেই থাকে।

প্রথমের সব লেখাগুলোই কষ্টের হত। ব্লগারদের এমন কমেন্টও পেয়েছি, “আপনার ব্লগে ঢুকলেই ভাই, মন খারাপ হয়ে যায়” অথবা “মনটাকে কি ভাল করা যায় না?”। আমার ভালই লাগত, অন্তত আমার কথাগুলো লিখে অন্যকে অনুভব করাতে পারছি। কিন্তু কত দিন আর এভাবে পারা যায়। একদিন ভাবলাম, আমি তো এমন ছিলাম না, কেন এমন হব? তখন মন খারাপকে পেছনে রেখে প্রথম বিবর্তনবাদ সম্পর্কিত একটা পোস্ট দিলাম।

এরপরও অনেকদিন মনটাকে ভাল করতে পারিনি। ধিরে ধিরে অশান্ত মন শান্ত হয়ে এল। বিবর্তনবাদীর লেখায়ও বিবর্তন এল। আমার ব্লগিং: ব্লগে এক এক জন এক এক ধরনের লেখা দেয়। কেউ নিজের কথা লেখে, কেউ সাহিত্য চর্চা করে, কেউ জ্ঞানের কথা ছাড়ে তো কেউ শুধু আনন্দে সময় কাটায়।

একমাত্র গালাগালি ছাড়া আমি সবই করেছি। ভাললাগা গান-কবিতা পোস্ট করেছি, নিজের কথা লিখেছি, চিঠি লিখেছি, লিখতে চেষ্টা করেছি গল্প-কবিতা, ছবি তুলে ব্লগে দিয়েছি, লিখেছি বিজ্ঞান নিয়ে, ধর্ম-ইতিহাস নিয়ে, সাম্প্রতিক বিষয়ে রাজনীতি সম্পর্কে, যুক্ত হতে চেষ্টা করেছি ব্লগাদের নানা উচ্ছাস-প্রতিবাদে। তবে হ্যা স্বীকার করতে হবে, তথ্যবহুল কিছুই আমি লিখতে চেষ্টা করি নি। কারন ব্লগেতো আমি রিসার্চ পেপার পাবলিশ করতে আসিনি। নিজের ক্ষুদ্র অভিজ্ঞতা ও স্বপ্ল জ্ঞানের ভিত্তিতে যতটুকু বুঝেছি তাই লিখেছি।

আমার নিজের সাবজেক্টের চাইতেও বেশি আগ্রহ আমার যে বিষয়ে তা হল “ইতিহাস”। ইতিহাস পড়ে নিজে যতটুকু বিশ্লেষণ করতে সক্ষম হয়েছি, তাই তুলে দিয়েছি। এমনকি বিজ্ঞান বিষয়েও যতটুকু সরল করে একেবারে নুন্যতম বিজ্ঞানের জ্ঞানসমৃদ্ধ ব্লগারও যেন মূল বিষয় অনুধাবন করতে পারে তার চেষ্টা করেছি। সফল কতটুকু হতে পেরেছি, তা ব্লগাররা নির্ধারণ করবেন। এই কিছুদিন হল আমি রেফারেন্স সহ নজরুলের প্রেম কাহিনী লিখছি।

কিছু ব্লগারের কথা: এই অংশটা লম্বা হবে। ব্লগারদের সাথে কিভাবে যে নিছক ব্লগিয় সম্পর্ক থেকে আত্মার সম্পর্কে পৌছল ধরতে পারি নি। এটা প্রথম বুঝি তিন চার মাস পরে। ব্লগে মন মরা পোস্ট দিতে দিতে এক পর্যায়ে নিজেই বিরক্ত হয়ে উঠলাম। একদিন নিজের উপর রাগ করেই সব পোস্ট ড্রাফট করে ব্লগ থেকে বিদায় নিলাম।

কাউকে কিছু বলবার সুযোগও দিলাম না। দুই তিন দিন পরেই মেসেঞ্জারে ঢুকে দেখি একজন ব্লগার আমাকে মেসেজ দিয়েছেন, উনি আর কেউ নন আমাদের সাজি আপু। আপু এমন আদর করে ব্লগে ফিরে আসতে বললেন যে আমার পক্ষে আর ব্লগ থেকে দূরে থাকা সম্ভব হল না। ফিরে আসার পরে অনেক ব্লগার তাদের রাগ প্রকাশ করেছিল ব্লগ ছেড়ে চলে যাবার ঘোষণা দেওয়ায়। ব্লগের বাইরে আমার প্রথম মেসেঞ্জারে যোগাযোগ হয় মুন্নার সাথে (তাজুল ইসলাম মুন্না)।

এরপর খোলাচিঠির সাথে অনেক কথা হয়েছিল ধিরে ধিরে ব্লগারদের সাথে পরিচয় ব্লগের বাইরে মেসেঞ্জারে আরো বিস্তৃত হয়। ২০০৮ সালে ফেব্রুয়ারিতে। জনৈক ব্লগার (নাম উল্লেখ করলাম না) আমার প্রতি বাজে মন্তব্য করে একটা পোস্ট দিলেন। সাথে সাথে মুকুল ভাই, না বলা কথা, কানা বাবা সহ অনেকেই আমার পক্ষে ঐ ব্লগারকে জবাব দিলেন। ঐ দিন আমি নিজেই থ হতে গেছিলাম।

এত এত ব্লগার আমাকে ভালবাসেন আমি ভাবতেও পারিনি। ব্লগস্ফিয়ারে অনেকের হৃদয়ে আমার নিজের আলাদা একটা অবস্থান দেখতে পেয়ে সেদিন খুবই খুশি হয়েছিলাম। নতুন ব্লগার হলেও অনেক পোস্টেই রাশেদ, মুকুল, বিহংগ, মুনিয়া, নিবেদীতা, নরাধম, নাদান, ফারহান দাউদ, মেহরাব শাহরিয়ার, জিহাদ, নাজিরুল হক, মানবী, সাইফুর, নাজিমউদ্দিনের কমেন্ট পেতাম। যেসব ব্লগারের লেখা ভাল লাগে তাদের মাঝে উল্লেখ করতেই হবে নির্বাসিতদা, মানুষ, শফিউল আলম ইমন, নুশেরা, উশৃঙ্খল ঝড়কন্যা, ফারজানা মাহবুবার কথা। কবিদের নিয়ে এখন বেশি বলব না, কারন তাদের জন্য আলাদা পোস্টই দিয়েছি।

তবুও উল্লেখ করতেই হবে সাজি আপু, কালপুরুষদা, বিহংগদা, নিবেদীতা, মুকুল ভাই, চিঠি আপুর কথা। ব্লগে ঘুরতে ঘুরতে কিছু ব্লগার খুব প্রিয় হয়ে উঠে তাদের সংখ্যাই অনেক যেমন একরামুল হক শামীম, সাতিয়া মুনতাহা নিশা, ভাঙা চাঁদ, কাঙাল মামা, রাজামশাই, প্রলয় হাসান (বর্তমানের একজন ব্লগার), মিলটন, বিডি আইডল, তাজনু রহমান, এরশাদ বাদশা, তানজিলা হক, সুখী মানুষ, নিশীথ রাতের বাদল ধারা, চাঁদের বুড়ি, পুষ্প (এবং দ্বীপ), অ্যামাটার, নিলা, আবদুর রাজ্জাক শিপন, মৈথুনানন্দ, কৈলাশ, শাওন, পুতুল, মদন, স্বাধীন বাংলা, কোলাহল, প্রচ্যেত, উম্মনা রহমান, লাল দরজা, জেরী, সহ আরো অনেকে। আলাদা করে বলতে হয় আমাদের গানের পাখিদের কথা অর্থাৎ আমাদের বিষাক্ত মানুষ, রুবেলশাহ ও শিরোনামহীনের কথা। সেই সাথে নিজের লেখা গান যে নিশ্চিন্তে ব্লগে দিয়ে দেয় সেই নিহনের কথাও বলব। প্রীটি সোনিয়া, বিবেক সত্যি, ইউনুস খান, ব্রাইট, ঝড়ো হাওয়া, ফারিহান মাহমুদ, ওয়ার হিরো, যীশূও সুন্দর কমেন্ট করত।

প্রায়ই এই ব্লগ অস্থিতিশীল হয়ে উঠে, তখন মনে হয় ক্ষণিকের জন্য চিন্তার প্রকাশ বন্ধ হয়ে গেল। কিন্ত সেটা কি সম্ভব! মিরাজ, ফাহমিদুল হক, রাগিব, আহমদ মোস্তফা কামাল, রিফাত হাসান, খোমেনি ইহসান, লেখাজোকা শামীম, সাঈফ শেরিফ, মুনির উদ্দীন শামীম, জামাল ভাস্কর, আরিফ জেবতিক, এদের লেখায় প্রগতিশীল চিন্তার ছাপ সর্বদা থাকে। এখন দুই ভাইবোন আউলা আর চানাচুরের (প্রাক্তন বর্তমানটা না হয় উহ্য রাখলাম) কথা বলি। ব্লগ থেকে ওরা দুজন যেমন আনন্দ নেয় তেমনি আনন্দও দেয়। আউলার সিনেমায় রোল না পেলে আমার সত্যিই মন খারাপ হয়।

একবার এক সিনেমার রোল না পেয়ে কয়েকটা পোস্টই পড়ি নাই। সেই পোস্টগুলোতেই আমাকে একটা ভাল রোল দেওয়া হয়েছিল। কিছু ব্লগারের কথা এখন আলাদা করে বলি। একজন হচ্ছে হমপগ্র, তার লেখা পড়ে কল্পনাও করতে পারিনি সে ২০০৭ সালের এইচএসসি। এই বয়সে এত পরিনত লেখাতো দূরের কথা চিন্তাও করতে পারতাম নাকি সন্দেহ।

আরো দু’জন ব্লগারকে আমার ইন্টারেস্টিং মনে হয় একজন ডা. আইজুদ্দিন দ্বিতীয় জন হাসিব মাহমুদ। আমার মনে হয় প্রকাশ ভঙ্গী যেরকমই হোক না কেন, এদের মাথায় ঘিলু আছে। এস্কিমো ভাই ভাল লেখেন। আরো আছেন আমাদের কবি আবদুলহাক (পলাশমিঞা)। উনাকে বড়ভাইয়ের মতই শ্রদ্ধা করি।

উল্লেখ করব অবশ্যই এই ব্লগের এই পর্যন্ত আমার পড়া শ্রেষ্ট পোস্টের লেখক অচেনা বাঙালির কথা। তার বাঙাল গরব সিরিজের জন্য আজীবন তার কথা মাথায় থাকবে, তা এই ব্লগ থাকুক আর না থাকুক। নানা বিতর্কের জন্মদিলেও স্বাধীনতা তুমির আলাদা চিন্তাধারা ছিল। যেটা তিনি নির্দ্বিধায় প্রকাশ করে যেতেন। আর ব্লগ কিংবদন্তি চিকনমিয়াতো আছেনই।

ত্রিভুজের টেকনিক্যাল পোস্ট গুলো ও কমেন্ট যথেষ্ট কাজে আসে। মাঝে মাঝেই মনে হয় ব্লগার বইপাগলের কথা, উনি হঠাৎ গায়েব হয়ে গেলেন। চলে যাবার আগে ওনার সাথে বিবর্তনবাদ বিষয়ে আলোচনা চলছিল, কিন্তু হঠাৎ মন খারাপ করা একটা পোস্ট দিয়ে ব্লগ হতে বিদায় নিলেন। আমার জানা মতে মোট পাঁচজনের ব্লগে আমি ব্লক। একজন হচ্ছেন ব্লগার খুশবু।

গত ফেব্রুয়ারী মাসে তার পোস্টে ইংরেজী দেখে বলে কয়েই মাইনাস দিয়েছিলাম, ফলাফল সাথে সাথে ব্লক। দুই একজনকে দিয়ে রিকোয়েস্ট করিয়েও লাভ হল না। যাই হোক, আর একজন ব্রাত্য রাইসু। ইনি একবার ছদ্মনামের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণা করলেন, বিধায় আমি তার ব্লগে শহীদ হলাম। সম্প্রতি একজন আমাকে ব্লক করেছেন যার নিক “ছাই চাপা আগুন”।

আর একজন ব্লগারের (প্রলয়ের কথা বলছি না) ব্লগে আমি ব্লক। উনি খুব গর্ব সহকারে তার ব্লগের ব্লক করা নিকগুলোর লিস্ট দেন, কিন্তু লিস্টে আমার নাম থাকে না। অদ্ভুত এক ব্যাপার, যাইহোক উনি যেহেতু আমার নাম লেখেন না, তাই আমিও ওনার নাম লিখলাম না। আর কারো ব্লগে আমি ব্লক বলে জানা নাই। ঝুমী নামের এক ব্লগারে ব্লগেও আমার মন্তব্য করা অধিকার নাই, ঘটনা না হয় নাই বললাম।

ব্লগের অপ্রিয় কিছু কথা: একটা সময় আমার দৈনন্দিন জীবনের অনেক কিছুই অপ্রিয় ছিল। এখন সব কিছুকেই কঠিন বাস্তব বলে মনে করে, অপ্রিয়ের লিস্টে কিছুই রাখি না। তেমনি এই ব্লগেও আমার অপ্রিয় তেমন কিছুই নেই। তারপরও কিছু কথা বলতেই হয়। প্রথমত, ব্লগে মুক্তিযুদ্ধকে ছোট করা, ইসলাম ও বাংলাদেশকে হেয় করে লেখা পোস্ট আমার জন্য চরম বিরক্তিকর।

ইতিহাসের ঘটনা প্রবাহ সবদেশে, সবসময়ই প্রশ্নবিদ্ধ থাকে, কিন্তু ইতিহাসের ত্যাগ ও অর্জন গুলোকে প্রশ্নবিদ্ধ করা খুবই নিন্দাজনক। আস্তিক, নাস্তিকদের বিজ্ঞান নিয়ে টানাটানিকে হাস্যকর লাগে। যাকে তাকে গালাগালি ও রাজাকার বলার পক্ষপাতি নই একেবারেই। প্রথমে আমি তেমন নেগেটিভ রেটিং করতাম না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ভাল লাগলে প্লাস না লাগলে কিছুই না।

কিন্তু কিছু কপি-পেস্ট বিশেষজ্ঞ, কম্পিউটার গুরু (এবং অন্যান্য নিক সমূহ), সৈয়দ পরিবার, মেহেদী এরা আমার অভ্যাসই খারাপ করে দিয়েছে। বিশেষ করে সৈয়দ পরিবারের নিকগুলোকে মাইনাস দিতে দিতে মাইনাস ব্যাপারটাতেই বিতৃষ্ণা এসে গেছে। এখন কারো পোস্ট ভাল না লাগলেই মাইনাস দিতে কিপটামি করি না। ব্লগ থেকে পাওয়া: ব্লগ থেকে এই একটা বছরে অনেক পেয়েছি। ব্যস্ত জীবনে নিজের চিন্তাধারাকে ঝালাই করার একটা যথার্থ জায়গা এই ব্লগ।

আমার আশেপাশেই এত এত মানুষযে দেশ, জাতি, ইতিহাস, বিজ্ঞান, ধর্ম নিয়ে ভাবতে, জানতে, বুঝতে এত মুল্যবান সময় দেয় তা আমার চিন্তার অতীত ছিল। আমি যাদের সাথে ঘুরে ফিরে বড় হয়েছি, তাদের মাঝে এমনটা দেখি নি। আবার আমার অজান্তেই আমারই পরিচিতদেরই কেউ কেউ এই ব্লগে লিখছেন, যার লেখার পড়ে হয়ত আমিই অবাক হয়েছি। বিগত দুইতিন বছর ধরে আমার আর নম্বর প্রাপ্তির জন্য লেখাপড়ার প্রতি আগ্রহ নেই। এই দুই বছরে আমি পড়ার বই যতটা না পড়েছি তার চাইতে অনেক অনেক বেশি পড়েছি অনান্য বিষয়।

আগে অনেক কিছুই ভুল জানতাম, ভুল বুঝতাম বা অর্ধেকটা জানতাম। কোন বিষয় বিশ্লেষণ বা সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষেত্রে, যথেষ্ট পরিমানের লেখাপড়ার কোন বিকল্প নেই। লোক মুখে শোনা কথা বা অল্প কিছু ইতিহাস জেনে কোন কিছু নিয়ে লেখা বা আলোচনা করা চরম ভুল। আমিই এক সময় বিশ্বাস করতাম নজরুলকে রবীন্দ্রনাথ চক্রান্ত করে অসুস্থ করেছিলেন, আমিই উইকিতে লিখেছিলাম এক সময় বঙ্গবন্ধু ২৬ মার্চ পাকিস্তানীদের কাছে নিজেই ধরা দিয়েছিলেন, আমিই এককালে নাস্তিকদের যথেষ্ট সম্মানও করতাম। এখন অনেক চিন্তাধারাই পরিবর্তীত হয়েছে, অনেক ভুলই ধরতে পেরেছি।

নতুন নতুন শিখেছি। আমার মনে হয় বিবর্তনবাদী নিকটা নেওয়া আমার ব্যক্তিগত চরিত্রের সাথে পুরোপুরি মিলে যায়। চিন্তাভাবনার বিবর্তন ঘটে আমার প্রতিনিয়ত। আর যাই হোক গোড়া নই কোন বিষয়ে। খুব সত্য একটা কথা হচ্ছে, অল্প বিদ্যা ভয়ংকরি।

সেই সাথে কোন সিদ্ধান্ত ততক্ষণ পর্যন্ত মনে স্থান দিতে নেই যতক্ষন নাগাদ এটি অন্যের সাথে আলোচনা না করা হয়। ব্লগে আমি সেই সুযোগটাই পেয়েছি, হয় নিজের লেখায় অথবা অন্য কারো লেখায় কমেন্ট করতে গিয়ে। আমি ব্লগে যখন লেখা শুরু করি, তখন আমার জীবনের এ পর্যন্ত সবচাইতে খারাপ একটা সময় যাচ্ছিল, সেই সময়টা পার হতে ব্লগারদের সাহায্যের জন্য আমি সবসময় কৃতজ্ঞ থাকব। আমি এখানে চিনেছি অনেক অনেক মানুষকে, পেয়েছি তাদের ভালবাসা। প্রত্যেককেই কৃতজ্ঞতা সহকারে ধন্যবাদ, আমাকে এখানে সকলের মাঝে নিজেকে প্রকাশ করার সুযোগ দেবার জন্য।

ফেলে আসা একবছরে আমার লেখাগুলোতে যারা মন্তব্য করছেন তাদের প্রত্যেককে আলাদা ধন্যবাদ দেওয়া সম্ভব হল না। তাই ----------------------- বিহংগ, আউলা; মুনিয়া, মানবি; প্রচ্যেত; উন্মনা রহমান; আলি; কগু; রাশেদ; নিসঙ্গ; নরাধম; ফারহান দাউদ; নাজিমউদ্দিন; বিবন; জোনাকি; বিশাক্ত মানুষ; এলোমেলে; শফিক; এরশাদ বাদশা; শিবলী; কোবরা; লাল দরজা, সিদূরে মেঘ; আহমেদ শরফুদ্দিন; তানজিলা হক; রদ্দুর মিছিল; ভাসমান; খুশবু; মুকুল; খোলাচিঠি; চিটি; স্বাধীন বাংলা; অচেনা বাঙালি; রুবেল শাহ; ছায়ার আলো; মেহরাব শাহরিয়ার; জিহাদ; নাদান; শাওন; সুলতানা শিরীন সাজি; ফ্রুলিংক্স; নির্বাসিত; অজানা একজন; রাজিব; খোমেনী ইহসান; কালপুরুষ; মদনবাবু; উদাসী স্বপ্ন; জেবীন; বিকেল বেলার স্বপ্ন; ইকরাম; নুরে আলম; নামিরা নাওয়ার; মোহাম্মদ আরজু; কেক বাংলাদেশ; কানা বাবা; এখনও গল্প লিখি; মৈথুনানন্দ; রাতুল; ফয়সল; কোলাহল; পুতুল; আবদুর রাজ্জাক শিপন; নিবেদীতা; কুম্ভকর্ণ; শিরোণামহীন; শফিউল আলম ইমন, ভাঙা চাদ, প্রিয়জন; ক্যাচাল; দাড়াও আসতেছি; ডোরাকাটা; আব্বু ৬৯; মানুষ; অহিরমান; দুষ্ট ছেলে; দিগন্ত; বইপাগল; অহেতুক অকারন; ত্রিভুজ; পুসকি; দিনমজুর; স্বাধীনতা তুমি; সুখি মানুষ; প্রিয়তি; নীল গোলাপ; সাইফুর; রুদ্র আবীর; অমি রহমান পিয়াল; গোপনীয়া; আলৌকিক হাসান; অন্যরকম; পুষ্প; হমপগ্র; মাথামোটা; ২য় জীবনানন্দ; ফারজানা ১৬; মাহমুদ উল্লাহ; তারার হাসি; পথ হারা; এবি+; মিরাজ; সোনার বাংলা; নাস্তিকের ধর্মকথা; জ্বীনের বাদশা; স্নোবল; বিকেল বেলার স্বপ্ন; বিবেক সত্যি; আবু ফয়সল আহমদ; প্রীটি সোনিয়া; রুমানা খানম; মাইবম সাধন; কাস্তের মত চাঁদ; BangladeshCirojiboHok; কণা; সুশীল সমাজ; আজমান আন্দালীব; উশৃঙ্খল ঝড়কণ্যা; হরিসূদন; প্রশাসন; ঝড়ো হাওয়া; ফারজানা মাহবুবা; মাসুদ যা বলেছেন ঠিকই; সাতিয়া মুনতাহা নিশা; ক্রাউন; সারোয়ার চৌধুরী; পলাশ রহমান; সুশান্ত; বিপ্লব রহমান; কাঙাল মামা; আহমদ; এমএ হামিদ; সন্ধ্যাপ্রদীপ; মেক ভাইরাস; রাহাত আহমেদ; ইয়াহিয়া ফজল; পলাশ মিঞা; খারেজি; নিলা; চিকনমিঞা; নেমেসিস; মদন; অ্যামাটার; না বলা কথা; সালিশদার; মাহমুদুল হাসান রুবেল; ঘোড়ার ডিম; যীশু; সামী মিয়াদাদ; প্রাণ চানাচুর; ফেলুদা; হলদে ডানা; আকাশচুম্বি; সর্বনাশা; জামাল ভাস্কর; মাহমুদ মামুন; ইয়র্কার; তারিক টুকু; তূর্য্য; চে; হমপজদ; একে৪৭; আরিফুর রহমান; সীন-লাম-মীম; পিচ্চি; ফেরারী পথিক; সব্যসাচি; এস্কিমো; কতবতবকতকত; আহমদ মোস্তফা কামাল; বিবর্ণ; সন্ধ্যাবাতি; রিয়াজ শাহেদ; রাতমজুর; চাঁদের বুড়ি; হ্যারি সেলডন; খারাপ লোক মাগার হাচা কথা কই; আলেকজান্ডার ডেনড্রাইট; নতুন; স্বাপ্নিক; তামিম ইরফান; শ্রাবনী; সলিল; একরামুল হক শামীম; নাজিরুল হক; হনলুলু; আলি আরাফাত শান্ত; নিশীথরাতের বাদল ধারা; লংকার রাজা; হাবিব ইমন; সমালোচনাকারি; মোস্তাফিজ রিপন; ফাতাহ; দুঃখ বিলাস; শিপু খান; মাইনুল; আশিক হাসান; নাভেদ; শান্তির দেবদূত; আবাবিল; সিহাব চৌধুরী; দুরন্ত পথিক; একাত্তর আমার চেতনা; ভাস্কর চৌধুরি; নিহন; মাহবুবা আকতার; পন্ডিত; কৈলাশ; আজহার ফরহাদ; মিয়াভাই সিলটী; বোকা মানুষ; সবাক; কানু; উত্তরাধীকার; প্রিয়তমা; রন্টিচৌধুরী; ফেরারী ফেরদৌস; শাহানা; প্রতিফলন; ওয়ারহিরো; শাহবাজ; মহাকাল; চানাচুর; আসিফ আহমেদ; সাইফ সামির; মেন্টাল; সহোশি৬; কাঙাল মুরশিদ; প্রবাস কন্ঠ; লুকার; কে এসআমীন; জুনায়েদ সাদিক; আশরাফ মাহমুদ; নুর হাসান মোহাম্মদ তানভীর; অদ্ভুত একজন; ব্রাত্যজন; নিসঙ্গ; কোপা সামসু; আরিফ থেকে আনা; ময়ূরবাহন; রবিউল করিম; হাবিব ইমন; মুহিব; ফাহমিম; দি ওয়ান; দরদী নজরুল; মশহ; তানজু রহমান; বুলবুল আহমেদ পান্না; সারা দিন; আবু সালেহ; নিরুপমা.কম; নাফে মোহাম্মদ এনাম; হৃদছায়া; মাহিরাহি; আমি বাঙালি; মনযূর মান্নান; যুঁথী; ফয়েজ রেজা; ১৯৭১ আমার চেতনা; পথ হারা পথিক; মনচলি; নিবিড় অভ্র; কবি হেলাল রশিদ; একজন ব্লগার; নির্জন রহমান; ছন্নছাড়ার পেন্সিল; অরুনাভ; ইমরান মামা; মোহাম্মদ আবদুলহাক; নুরুন্নবী হাছিব; জানা; রাঙা মিঞা; বাফড়া; বাপ্পী; |জনারন্যে নিসংঙগ পথিক|; পেঁচালি; ছটিক মাহমুদ; নৃ বিজ্ঞানী জিয়া; দ্রগব্য; আহসান মোহাম্মদ ক; সাঈফ শেরিফ; হোদেল কুত কুত; রণদীপম বসু; গোলাপী; মাদারি; আনমোনা; মাহমুদুল হাসান রুবেল; রুখসানা তাজিন; মেঘ; লেখাজোখা শামীম; রাতিফ; হাসিব মাহমুদ; একাকী বালক; নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী; রেটিং; মুনীর উদ্দীন শামীম; নোক্সেনডার; রাতেরপথিক; চাঙ্কু; সাঝবাতির রুপকথা; সুজনবাঙালি; আরিফ রেজা খান; কিসলু; মাসুদ রানা১২৩; কাঁকন; দস্যুবনহুর; আলী আরাফাত শান্ত; টিংকু ট্রাভেলার; রাজামশাই; ব্যাকটেরিয়া; সিক্স স্ট্রিং; k-79er34b; লাল পিপড়া; পথিক; অরণ্যচারী; আহমদে হেলাল ছোটন; রহস্য; মইন; বিডি আইডল; একজন ব্লগার; মামুনুর রশিদ; পারভীন রহমান, অলিক স্বপ্ন; মদন; ফাহমিম; ওপেল; পথ হারা পথিক; ছোটন; হিমালয়৭৭৭; রেনেসাঁ; অপ্‌সরা; নন্দিনী; বেঁচে আছি; আহসান হাবিব শিমুল; হটডগ; উম্মাদ ছেলে; বদরুল খান; অচন্দ্রচেতন; এক্সবিজনেস; মোঃ নাজমুল হাসান; ইউনুস খান; ফ্রান্সিস গোমেজ; তৌহিদ মিলটন; সলিল; শাহরিয়ার আহমেদ; আন্ধার রাত; মাহবুবা আকতার; নুশেরা; পারভেজ; আমি ও আমরা; বেরসিক; শ্রাবনসন্ধ্যা; জয়িতা; রাহা; তুষার; পরিবর্তিত আত্মউপলব্ধি; সুরভিছায়া; সোনালী ডানা; জেরি, ব্রক্ষ্মপুত্র, নিরক্ষর, বক্ররেখা, কিস্তেয়ার, রক্তাত্ব যোদ্ধা, দারাশিকো, তানভির আহমেদ সজিব, জিয়াউল, চাচামিঞা, শাহাদাত হোসেন মজুমদার, অনন্ত দিগন্ত, রাত, শ্রাবন সন্ধ্যা, দুরন্ত, ঠাকুর, উম্মাদ ছেলে, দ্বিতীয়নাম, [ক-খ-গ], সুখী মানুষ, দুঃখবিলাস,ফজলুল কবিরী, বৃত্তবন্দী, আমার জন্য লেখা, ভাইপার, সার্কিট, শেরিফ আল সায়ার,ইয়াহিয়া,মেঘাচ্ছন্ন,বন্ধনহীন,বরূনা ,বাবুয়া, বিলাল, হেরিটেজ, সৌপ্তিক, রাতের বৃষ্টির শব্দ ---------------------------------- কে ধন্যবাদ। আপনাদের কাছে আমি ঋণী। ভবিষ্যতেও সাথে থাকার অনুরোধ করছি। বর্তমানে এই ব্লগিং নিয়ে খুবই ঝামেলায় আছি, সব কাজই বন্ধ হবার উপক্রম।

সবাই দোয়া করবেন যেন, ব্লগিং-এর হাত থেকে উদ্ধার পাই। পোস্টের সাথে সম্পর্কহীন মন্তব্য এখানে না করবার অনুরোধ করা গেল। অনুগ্রহ করে এই লিংকে গিয়ে মন্তব্য করুন।
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.