আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জীবনটা সত্যিই অদ্ভুদ

একজন ইউনুস খান বেঁচে থাকতে চান গণ মানুষের মৌলিক চাহিদা পূরণের আন্তরিক প্রচেষ্টা এবং উদ্যেগ গ্রহণের মাঝে।

ছেলেবেলা যখন মাঠে ফুটবল নিয়ে দৌড়াদৌড়ি বা ডাংগুলি বা গোল্লাছুট খেলা নিয়ে ব্যাস্থ থাকতাম, তখন মা শুধু বলতো পড় পড়। না পড়তে বসলে মা মনে করিয়ে দিতো, লেখাপড়া করে যে গাড়ি ঘোড়ায় চড়ে সে। তখন মা হয়তো রান্না বসাতো আর আমি মার কাছে পাটি বিছিয়ে জোড়ে জোড়ে শব্দ করে পড়তাম 'আমাদের ছোট নদী চলে বাঁকে বাঁকে' অথবা 'তালগাছ একপায়ে দাঁড়িয়ে, সবগাছ ছাড়িয়ে উঁকি মারে আকাশে'। এইভাবেই যখন আরেকটু বড় ক্লাসে উঠলাম তখন বৃত্তি পেতে হবে, না হলে যে বাবা-মা মুখ দেখাতে পারবেনা।

আবারো পড়াশুনার চাপ। এস.সি.তে ভালো রেজাল্ট না করলেতো সর্বনাশ। সারাটা জীবনই নষ্ট হয়ে যাবে। শহরে যখন এইচ.এস.সি তে ভর্তি হলাম তখন বিদায়বেলা মায়ের কথা ছিলো সবাইকে ছেড়ে যাচ্ছিস যে কারনে সেই লেখাপড়াটা ঠিকমত করিস। মাঝে মাঝেই মার লম্বা করে চিঠি আসতো মেসের ঠিকানায়।

সেখানেও লিখা থাকতো খোকা তোর পড়াশুনা কেমন হচ্ছেরে। চিঠির শেষেও বি.দ্র. আকারে লিখা থাকতো তোর একটা ভালো রেজাল্টের প্রতীক্ষায় আমরা সবাই পথ চেয়ে বসে আছি। ইউনিভার্সিটিতে ভর্তি হওয়ার পর মা এই প্রথম বললো ঢাকা যাচ্ছিস, দেখিস কোন মেয়ের পাল্লায় পরিসনা। লেখাপড়া করতে যাচ্ছিস, ভালোভাবে লেখাপড়া করিস। তখন আর চিঠি লিখতোনা, মোবাইলে বলতো পড়াশুনার কথা।

এইভাবেই ইউনিভার্সিটি লাইফ শেষ হয়ে গেলো। পাশ করার সাথে সাথেই চাকুরীতে ঢুকে গেলাম। এখন মা বায়না করছে এমবিএ টা কমপ্লিট করে ফেল। আমি মাঝে মাঝে মনে মনে হাসি। মানুষের জীবনটা আসলে বড় অদ্ভুদ।

খুব গভীর ভাবে চিন্তা করলে দেখা যায় ছোটবেলা থেকে পড়াশুনা করে বড় হওয়া, চাকুরী তারপর একসময় হয়তো বিয়ে। তারপর সংসার, বাচ্চা-কাচ্চাদের পড়াশুনা নিয়ে চিন্তা। একসময় মেয়ের বিয়ে নিয়ে চিন্তা, ছেলে বকাটে হয়ে যাওয়ার ভয়। এইভাবেই সংগ্রাম করতে করতে একসময় জীবনের পরিসমাপ্তি।



এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।