আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ভালোবাসার রসায়ন

হাজার বছর ধরে আমি পথ হাঁটিতেছি পৃথিবীর পথে..
ভালোবাসা সম্পর্কে একেকজন দিয়েছেন একেক রকম তথ্য। ভালোবাসার প্রথম অনুভূতি, সম্পর্কের ঘনঘটার পর পর্যায়ক্রমে এর পরিবর্তন, বন্ধনে আবদ্ধ থাকার চির আকাঙ্ক্ষা- এসবই কবি সাহিত্যিকরা বর্ণনা করেছেন বিভিন্নভাবে। বিজ্ঞানে কী বলে? তারই চিরায়ত রূপ জেনে নিন সংক্ষেপে। লোপা প্রেমে পড়েছে। প্রথম দর্শনেই সেলিমকে তার ভীষণ ভালো লাগে।

সেলিমের চলাফেরা, ব্যক্তিত্ব, চেহারায় আকর্ষণীয় ভাব দেখে কেমন আবেশে জড়িয়ে যায়। বন্ধুদের এ কথা জানাতে চায়, কিন্তু লজ্জা ও ভয়ে আপনা থেকে গুটিয়ে নেয় নিজেকে। লোপার মনের মাঝে উথাল পাতাল করে সব সময়। অন্য কিছুই তার ভালো লাগে না। এই যে প্রথম দর্শনেই ভালো লাগা, তারপর ভালো লাগা থেকে ভালবেসে ফেলা বিজ্ঞানের ভাষায় এই কাজটা করে ‘ফিনাইল ইথাইল অ্যামাইন (পিইএ)’ নামক স্নায়ুরস।

তবে প্রেমে পড়লে হাত পা ঘেমে নেয়ে একাকার, বুক ধড়ফড়, হাঁটু কাঁপুনির জন্য দায়ী এড়্রেনালিন এবং এ রকম কিছু শরীরবৃত্তীয় স্নায়ুরস। পিইএ কে বলা হয় ‘লাভ মলিকুল’। এটা ডোপমিন ও এপিনেফ্রিল নামক স্নায়ুরসের নি:সরণ ঘটায়। ডোপমিনের প্রভাবেই প্রেমিক-প্রেমিকারা শারীরিক ও মানসিকভাবে উদ্দীপ্ত হয়। এদের মধ্যে এক ভাল লাগার সম্মোহন ঘটে।

এই ভালবাসা ভালো লাগাও কিন্তু অবিরাম নয়। ভালোবাসার প্রতি বেশি আসক্তি আর উম্মাদনায় বেশি মাত্রাই এই রস নি:সৃত হয়ে মাথায় ঝিমুনি ধরাতে পারে। ভালোবাসার দিনে ভাল লাগার মানুষকে চকলেট দিয়ে এর মাত্রা বাড়িয়ে তোলা যুগলদের বিশেষ পছন্দ। অক্সিটোসিল নামক কাডলিং স্নায়ুরস ভালবাসায় সিক্ত যুগলদের নিজেদের প্রতি দায়িত্ব, কর্তব্য বাড়িয়ে এক সুন্দর স্থিরভাব বজায় রাখতে সাহায্য করে। ভালোবাসায় রোমান্স থাকবে না, তা হতেই পারে না।

এ সময়ে প্রেমিক প্রেমিকারা নিজেদের মধ্যে ভালোবাসার এক আকর্ষণ অনুভব করতে থাকে। সে এক অন্য রকম অনুভূতি। যার তুলনা জগতের আর কিছুর সাথেই তুলনীয় নয়। বিজ্ঞানের ভাষায় এটা মোহ প্রেমেরই এক বিশুদ্ধ রূপ। রোমান্টিক যুগলরা বরাবর নিজেদের মধ্যে তাদের ভালবাসার, ভালো লাগার সবকিছু আদান-প্রদান করতে চায়।

যদিও তাদের কথা, কাজ ও বিভিন্ন আদান প্রদান ঘুরে ফিরে একই রকম হয়। তাই ড. ফিশার এই সমস্যাটাকে মানসিক রোগ ডিপ্রেশনের সাথে তুলনা করেছেন। যদিও তাদের এই সময়ের আচরণগত বৈশিষ্ট্য অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসঅর্ডারের সাথেই মিলে যায়। এই প্রেমিক প্রেমিকারা তাদের গুরুত্বপূর্ণ লেখাপড়া, কাজকর্মের মধ্যেও দিনরাতের বেশির ভাগ সময়টাতে তার সঙ্গীর কথা, কাজ, চিন্তা, চেতনা নিয়েই ভাবতে থাকে। কখন তার জন্য নতুন কিছু করে তাক লাগিয়ে দেয়া যায় তাই নিয়েই মশগুল থাকে।

সঙ্গীকে নিয়ে নতুন এক অনুভূতি, নতুন এক জীবনের হাতছানিও তারা অনুভব করে এ সময়েই। বিজ্ঞান তাই ভালোবাসাকে সমর্থন যোগায় সব সময়। আপনার মতামত কি...................???
 

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.