আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বই পাঠের যে আনন্দ তা অন্য কোন মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব নয় {} ফয়সল আরেফিন দীপন, জাগৃতি প্রকাশন

সাইফ শাহজাহান শুচি সৈয়দ জাগৃতি প্রকাশনীর ফয়সল আরেফিন দীপন বলেন, ‘আমি মনে করি বইয়ের কোনো বিকল্প নেই। বই পাঠের যে আনন্দ তা অন্য কোন মাধ্যমে পাওয়া সম্ভব নয়। সুতরাং বই চ্যালেঞ্জের মুখে আমি মনে করি না। বইয়ের পাঠক প্রতিনিয়ত বাড়ছে। বই পড়া একটি বিনোদন।

আজ থেকে ২০ বছর আগেও বাংলাদেশে বিনোদনের, সুন্দর সময় কাটানোর একটা বড় মাধ্যম ছিল বইপড়া। কিন্তু সময়ের আবর্তনে বিনোদনের আরো অনেক মাধ্যম যুক্ত হয়েছে। কাজেই বইয়ের প্রতি মনোযোগটা কিছুটা হলেও ছড়িয়ে গেছে অন্যান্য মাধ্যমে। তাই জনসংখ্যার সাথে তাল মিলিয়ে বাড়তে পারেনি বইয়ের পাঠক। ’ দীপনের মতে, ‘বাংলাদেশে পুস্তক প্রকাশনার সবচেয়ে দুর্বল অংশ বিপনন।

কোন সম্মিলিত বিপনন ব্যবস্থা এদেশে গড়ে ওঠেনি। ব্যক্তিপর্যায়ে যে যার মতো করেই প্রকাশিত বইয়ের বিপনন করছে। বইয়ের বিজ্ঞাপন দেয়া ব্যয়বহুল ব্যাপার। তবু বিজ্ঞাপন কখনো কখনো কার্যকরী ভূমিকা রাখে। এখন প্রকাশকদের উদ্যোগে দেশব্যাপি বইয়ের মেলা আয়োজিত হচ্ছে।

সেখানেও ভালো বিক্রি হয় বই। বাৎসরিক একবার বিশেষ মূল্য ছাড় দেয়া হলে ভালো সাড়া পাওয়া যায়। বর্তমানে অনলাইনে বই বিক্রি একটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ বলে আমি মনে করি। ’ তিনি জানান, ১৯৯২ সালে ৫টি বইয়ের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ করে জাগৃতি। প্রথম বছরের এবং এখনো যে বইটি জাগৃতির জন্য মাইলফলক সেটা ড. নীলিমা ইব্রাহিমের ‘আমি বীরাঙ্গনা বললছি’।

জাগৃতি প্রকাশনী থেকে বিগত একুশ বছরে আট শতাধিক বই প্রকাশিত হয়েছে। ২০১৩ সালের বইমেলাতেও ৬০টি বই জাগৃতি থেকে প্রকাশিত হবে। বাংলাদেশের মূলধারার প্রায় সকল লেখকের বই জাগৃতি থেকে প্রকাশিত হয়েছে। এবারের মেলায় জাগৃতির উল্লেখযোগ্য বইÑ মুহাম্মদ হাবীবুর রহমানের রাজার চিঠির প্রতীক্ষায় এবং উন্নত মম শির, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর রবীন্দ্রনাথ রবীন্দ্রনাথের মতোই, বদরুদ্দীন উমরের বাঙলাদেশের রাজনীতি এবং বাঙলাদেশে দুর্নীতি ও সন্ত্রাস, আবুল কাসেম ফজলুল হকের জাতীয়তাবাদ আন্তর্জাতিকতাবাদ বিশ্বায়ন ও ভবিষ্যত, ফরহাদ মযহারের জ্যাক দেরিদার চিহ্নবিচার। বাংলাদেশের প্রকাশনা শিল্পের বিবর্তন বিষয়ে তার পর্যবেক্ষণ প্রসঙ্গে বলেন, ১৯৯২ সালে জাগৃতি যাত্রা শুরু করে।

বাংলাদেশের মুদ্রণ ও প্রকাশনায় তখনো বিপ্লব না ঘটলেও উন্নত প্রযুক্তির নানান উপকরণ এই শিল্পে যোগ হয়েছে। মুদ্রণ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অফসেট মেশিন স্থান করে নিতে শুরু করেছে লেটার প্রেস-এর জায়গায়। কম্পিউটার কম্পোজ হটিয়ে দিয়েছে হ্যান্ড কম্পোজ। আর্টিস্টের কাছ থেকে ডিজাইন নিয়ে ছুটতে হচ্ছে না কালার সেপারেশনের জন্য। শিশার ব্লকের জায়গায় চলে এসেছে ফিল্ম আউটপুট।

তবে তখনো কিছু কাজ লেটার প্রেসে হতো। যেমনÑ ক্যাশমেমো, ব্যাগ ইত্যাদি। মুদ্রণ ও প্রকাশনার প্রাথমিক বিপ্লব সাধনের প্রধান ক্রিড়ানকের ভূমিকা পালন করেছে কম্পিউটার। এর ফলে মুদ্রণ-প্রকাশনা অনেক সহজ হয়ে গেছে। বাসায় নিজের হাতে কম্পোজ করে এখন প্রকাশনা প্রতিষ্ঠানে গিয়ে খরচ দিয়ে বই প্রকাশ করা সম্ভব হচ্ছে।

যার আর্থিক সঙ্গতি আছে সে-ই এখন বইয়ের লেখক বনে যেতে পারছে। যার কারণে বাংলা একাডেমী আয়োজিত অমর একুশে বইমেলায় প্রকাশিত হচ্ছে অসংখ্য বই। দুঃখজনক হলেও বলতে হয় এই প্রকাশিত বইয়ের বেশিরভাগই অপাঠ্য। বই নিয়ে বিভিন্ন উদ্যোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘প্রকাশকদের সংগঠন থেকে বইমেলার আয়োজন করা হয়। হেমন্তের বইমেলা গত পাঁচ বছর ধরে নিয়মিত সাফল্যের সাথে আয়োজিত হচ্ছে।

রকমারি ডট কম নামক প্রতিষ্ঠান বইকে পাঠকের দোর গোড়ায় পৌঁছে দেয়ার কাজ করছে। তবে এ ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় যে উদ্যোগের কথা স্মর্তব্য তা অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ স্যারের বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের আন্দোলন। কেন্দ্রের সাথে যৌথভাবে প্রকাশকেরা নানা কর্মসূচিতে অংশ নিতে পারে। ’ পাঠক ও লেখকদের প্রতি তার অনুরোধ, ‘ভালো বই পড়–ন। ভলো বই কিনুন।

লেখক হয়ে ওঠার বেশ কিছু ধাপ আছে। বই প্রকাশ করলেই লেখক হওয়া যায় না। লেখক হিসেবে নিজেকে গড়ে তুলুন । প্রকাশকই আপনাকে খুঁজে বের করবে। ’ ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।