আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

রাজামশাইয়ের টর্চ হাতে মৎস শিকার

রাজা

এই অপারেশান টার নাম - হট মাশি ( হাতে টর্চ নিয়া মৎস শিকার) -২০০২ তখন আমি একটা এয়ারবেইজে কাজ করি। এয়ারবেইজের একটা ইনিস্টিটিউট হলো সারভাইবেল ট্রেনিং সেন্টার ( সংক্ষেপে বলা হতো এস. টি. সি.)। এখানে সৈন্য রা সারভাইবেল ট্রেনিং দেয়। এই সেন্টারটা ছিল দাম্মাম শহরের হাফমুন বিচ এলাকায়। পুরোপুরি সংরক্ষিত এলাকা।

পাশেই ছিল বোম্বিং রেঞ্জ যেখানে যুদ্ধ বিমান গুলি বোম্বিং প্রকটিস করতো। যাই হোক একদিন ঐ STC এর সুপারভাইজার এলো আমার অফিসে সে এবং আমার বাড়ী একই জেলায়। বললো রাজামশাই মাছ মারতে যাবেন নাকি STC তে। আমার কাছে ফিসিং রড টড কিছুই ছিল না। তাকে বললাম ফিসিং রড টড কিছু তো নাই।

সে বললো আরে কিছু লাগবে না। আজকে আমাবস্যা শুধু টর্চ লাইট হলেই চলবে। আমি পুরা টাশকি। আপনি এক কাজ করেন ওয়ারহাউজে বলে দেন যে দুইটা টর্চ আর একটা ইমারজেন্সী লাইট ইস্যু করতে তাহলেই হবে। যাভাবা সেই কাজ।

ওয়ার হাউজে ফোন করে বললাম অফ বেইজের জন্য দুইটা টর্চ আর একটা ইমারজেন্সী লাইটের দরকার আপনি মেনেজ করেন। কেমন করে জানি সে মেনেজ করে দিল। আমি আর ঐ ভাই মিলে রওনা দিলাম মৎস শিকারের জন্য। অফিস শেষে দুইজন রওনা দিলাম একটা পিকআপে করে। হেলে দুলে মরুভূমির মধ্য দিয় গাড়ী চললো ।

মাঝপথে থেমে কিনে নিলাম মসল্লাপাতি। এর মধ্যে ছিল আদার পাউডার, গুড়া মরিচ, হলুদ, লবন, জিরা গুড়া। কাছাকাছি এসে তার রূম থেকে বারবিকিউ এর সব জিনিস পত্র নিলো। সন্ধ্যার পরপর গিয়ে পৌছালাম STC তে। পারন্য উপসাগরের পারে।

পারস্য উপসাগরের ঢেউ আমার সবসময় ভালো লাগে। ঠিক সমুদ্র মনে হয় না। মনে হয় নদীর পারে বসে আছি পার্থক্য শুধু নীল জল। আবার এইভাবেও তুলনা করা যায় পারস্য উপসাগর হচ্ছে পাশের বাড়ী শান্তশিষ্ট মেয়ে । আর বঙ্গোপসাগর হলো পাশের বাড়ীর দূরন্ত বালক।

চারিদিকে অন্ধকার, সংরক্ষিত এলাকা বলে সমুদ্রপাড়ে আমরা দুইজন। ভাবতেছি এই টর্চ দিয়া কিভাবে মৎস শিকার সম্ভব। যাইহোক সে টর্চটা অন করে ধরলো সমুদ্রের দিকে দেখি এক ভয়াবহ কান্ড ঘটছে সমুদ্রে শত শত মাছ ছুটে আসছে পানি কেটে কিছু পানি উপর লাফাতে লাফাতে। সে আস্তে আস্তে টর্চ টা তীরের দিকে ঘুরিয়ে আনলো । দেখা গেলো ডাঙ্গায় ছয় সাতটা মাছ খাবি খাচ্ছে।

আমি মহা খুশী। তার মতো করলাম দুই তিন বার। ব্যাস হয়ে গেল ৭ থেকে ৮ কেজি মৎস। বেশী আর শিকার করতে পারলাম না বোম্বিং সিডিউল ছিল শুরু হলো বোম্বিং আকাশ বাতস প্রকম্পিত হতে থাকলো সেই গগন বিদারী শব্দে। তাড়াতাড়ি এয়ার কুলার লাগালাম কানে।

মৎস শিকারের সমাপ্ত হলো। সেই মাছ দুইজন মিলে ভালো করে সেই মৎস ধৌত করে করলাম কয়লায় আগুন জ্বালালাম করলাম বারবিকিউ। তখন ঘড়িতে রাত্র ২টা । কোকের সাথে শুরু হলো ভক্ষন আহা!! কি সেই স্বাদ । আজও মুখে লেগে আছে।

ওরে কে আছিস কানিছ আনিছা পিয়া / জরিণা কে ডাক রাজামশাইয়ের আবার মাছের বারবিকিউ খেতে ইচ্ছা হয়েছে।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।