আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আবারো অলিম্পিক চ্যাম্পিয়ন আর্জেন্টিনা,এবারে নায়ক মেসি (আর্জেন্টিনা ১-নাইজেরিয়া ০)



এ মাসে আর লিখব না ভেবেছিলাম,কিন্তু মনে হল,তাবৎ ফুটবলভক্তদের,বিশেষত আর্জেন্টিনাভক্তদের খবরটা জানানো দরকার, মানে অনেকেই এর মাঝেই জেনে গেছেন,তারপরেও আরেকটু গলাবাজি করে জানানো দরকার যে আর্জেন্টিনা পর পর ২য় বারের মত অলিম্পিক ফুটবলে স্বর্ণ জয় করেছে,দু'বারই অপরাজিত চ্যাম্পিয়ন। প্রতিপক্ষ নাইজেরিয়া,ব্যবধান ১-০,গোলদাতা অ্যান্ঞ্জেল ডি মারিও,গোল বানানেওয়ালা,কে হতে পারে? অনুমান সঠিক,পুরো টুর্নামেন্টেই আর্জেন্টিনাকে খেলিয়ে আসা "Lion" el "Messi",ম্যারাডোনার সত্যিকার উত্তরসূরী হিসেবে এর মাঝেই যিনি নিজেকে প্রায় প্রতিষ্ঠা করে ফেলেছেন। সাধারণত যে সময়টায় খেলা দেখে আমরা অভ্যস্ত তার সাথে একেবারেই বেমানান সময়ে,বাংলাদেশ সময় সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে খেলা শুরু হয়েছে এবার,প্রায় ফসকে গেছিল,হঠাৎ পেয়ে গেলাম। স্বীকার করতেই হবে সেমিফাইনালে যে দাপটে খেলেছিল আর্জেন্টিনা তার অনেকটাই ফাইনালে ছিল না,অনেকটা হিসেবী,সতর্ক ফুটবল খেলেছে। নাইজেরিয়া খেলেছে সমানতালে,বড় দল হলেও আর্জেন্টিনাকে বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি ছিলনা তারা।

বেশ কয়েকটা ভাল আক্রমণও করেছে তারা,তবে খুব বিপজ্জনক কিছু নয়। আর্জেন্টিনার ডিফেন্স বরাবরের মতই ভাল খেলেছে,বিশেষ করে গাগো আর মনযো ছিলেন দুর্ভেদ্য,রিয়াল মাদ্রিদ যে গাগোকে এত খরচ করে নিয়েছে,তার যৌক্তিকতা প্রমাণ করেছেন প্রতি ম্যাচেই। সতর্ক ফুটবল বলেই কিনা,প্রথমার্ধে গোল হয়নি কোন। দ্বিতীয়ার্ধের শুরু থেকে খেলায় বেশ গতি দেখা যায়,বার্সেলোনার সাথে মামলা করে খেলতে আসা মেসিকে আটকানোর ঘোষণা দিয়ে এতক্ষণ মোটামুটি সফল ছিল সুপার ঈগলরা,কিন্তু এর মাঝেই "মেসি"র আগমন "মেসিয়াহ" হয়ে,নাইজেরিয়ার ২ জন খেলোয়ারের মাঝ দিয়ে হঠাৎই ডিফেন্সভেদী এক পাস বাড়িয়ে দেন,সারা ম্যাচেই গতি দিয়ে নাইজেরিয়ান ডিফেন্সকে ব্যতিব্যস্ত করে রাখা ডি মারিয়া বল ধরে প্রচন্ড গতিতে এগিয়ে গিয়ে এগিয়ে আসা গোলরক্ষকের মাথার উপর দিয়ে নিখুঁত এক চিপে বল পাঠিয়ে দেন জালে,খেলার ৫৮ মিনিটের ঐ গোলই শেষ পর্যন্ত হয়ে যায় ভাগ্য,বা স্বর্ণপদক নির্ধারক। এরপর নাইজেরিয়া আক্রমণে গেছে,অন্তত ২ বার পরিষ্কার সুযোগও এসেছিল,কিন্তু বলে পা লাগাতে না পারায় ফসকে যায় তা।

শেষদিকে সময় নষ্ট করার জন্য ডি মারিয়া আর রিকুয়েমের কপালে জোটে হলুদ কার্ড,শেষদিকে আহত হয়ে মাঠও ছাড়েন ডি মারিয়া,ইনজুরি টাইম দেয়া হয় পুরো ৬ মিনিট,কিন্তু সুপার ঈগলদের প্রাণপণ চেষ্টাতেও কাজ হয়নি। শেষ বাঁশি বেজে ওঠার সাথে সাথেই আর্জেন্টিনা ঢুকে যায় ইতিহাসে,সেই ১৯৬৪ আর ১৯৬৮ তে হাঙ্গেরি জিতেছিল পর পর ২ অলিম্পিক ফুটবলের সোনা,৪০ বছর পর আর্জেন্টিনা তার পুনরাবৃত্তি করল তাদের ফুটবলের সর্বশেষ কথা ডিয়েগো ম্যারাডোনার সামনেই। তাঁর উত্তরসূরীকেও কি ম্যারাডোনা দেখে গেলেন এখানেই? এত ঘটনার মাঝেও একজনের কথা আলাদা করে বলতেই হচ্ছে,তিনি হাভিয়ের মাশেরানো। আর্জেন্টিনার সবচেয়ে বড় তারকা নন,তারপরেও দেশটির খেলাধুলার ইতিহাস বইতে ঢুকে গেলেন তিনি স্থায়ীভাবে। একমাত্র আর্জেন্টাইন হিসেবে ২টি অলিম্পিক পদক একমাত্র তাঁর গলাতেই উঠেছে,গতবার ছিলেন অনূর্ধ্ব ২৩ হিসেবে,এবার সিনিয়র খেলোয়ারদের কোটাতে,নিজেকে ভাগ্যবান ভাবতেই পারেন তিনি।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।