আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ইসলামী শিক্ষা দিবস ,ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা এবং আমার কিছু আউটসাইড প্রশ্ন

ইদানিং খুব ঘাস খাই আর নির্বোধ গরু হয়ে উঠার স্বপ্ন দেখি,বঙদেশে গরুদের জন্য সব লক্ষীই হাত পেতে আছে । রাষ্ট্র ও সমাজযন্ত্র যখন সংকরিত গরুর গোয়াল ।

ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা নিয়ে ব্লগার বর্নের একটি পোস্ট পড়ে কিছু প্রশ্ন মাথায় আসলো। প্রথম প্রশ্নটিই হচ্ছে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা মানে কি? প্রশ্নটা পোস্টের অথরকেও করা হয়েছিল তিনি তখন নীচের উত্তরটি দেন। ১২ ই আগস্ট, ২০০৮ বিকাল ৪:০৫ "লেখক বলেছেন: ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা মানে মাদ্রাসা শিক্ষা ব্যবস্থা না।

এইটা আগে মাথায় গেথে নেন। ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা একটি নীতিমালা। তাবৎ শিক্ষার সাথে সৃষ্টিকর্তার প্রতি আনুগত্য ও আগ্রহ, মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্যে, মানুষের প্রতি আল্লাহ তায়ালার দায়ীত্ব, মানবতা ও বিশ্বজগতের কল্যাণ- এই নীতিমালাগুলোর সামঞ্জস্যই হচ্ছে সংক্ষেপে ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থা। তুমি যদি জান আগামী কাল কিয়ামত, তবে আজ একটি বৃক্ষরোপণ কর, এভাবেই রসূল সা. এর বাণী মানুষকে সদা কর্মচঞ্চল হতে উদ্বুদ্ধ করে। সে মুমিন নয় যে প্রতিবেশিকে অভুক্ত রেখে পেট পুরো রাত্রী যাপন করে।

- এ হাদিস মানবতাকে দারিদ্র বিমোচনে বাধ্য করে। যার মুখ ও হাত থেকে অন্যে নিরাপদ নয়, সে মুমিন নয়। - এভাবে সুশৃঙ্খল হতে শেখায়। প্রার্থী ঘোড়ায় চরে এলেও তাকে দান কর- এ হাদিস দানশীল হতে নির্দেশ দেয়। ভিক্ষুক কিয়ামতের দিন তার মুখমণ্ডলে গোশত বিহিন কঙ্ঙ্কাল হয়ে উঠবে- এ হাদিস সমাজ থেকে ভিক্ষা বৃত্তি নিষিদ্ধ করে।

কত বলবো-- মাত্র কয়েকটা বললাম। এ হলো ইসলামী শিক্ষা ব্যবস্থার ছোট্ট নমুনা। " উত্তরটি অনেকাংশেই অসম্পূর্ন এবং আবেগতাড়িত। ধর্মানুভূতির বিপক্ষে আমি নই কিন্তু কিছুটা কৌতুহল জাগা স্বাভাবিক। আমি আমার প্রশ্ন গুলো সাজিয়ে দিচ্ছি বর্ন বা যারা এই ইসলামী শিক্ষাব্যবস্থার কথা বলছেন তারা প্লীজ জবাব দেবেন।

আর সকল মতই স্বাগত,আমি কাউকে ব্লক করি না । সেই সাথে ধরে নিচ্ছি জামায়াতে ইসলামী সরকার গঠন করেছে একক ভাবে তাই আপনাদের ইচ্ছা অনুসারে আপনারা শিক্ষা নীতি চালাতে পারবেন। ১। আমি শিক্ষার কেবল মাত্র একটি স্তর নিয়ে আলোচনা করব সেটি হচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয় স্তর । আর আমি নিজে বিজ্ঞানের ছাত্র তাই বিজ্ঞান শিক্ষাই আমার আলোচনায় প্রাধান্য পাবে ।

২। ইসলামী বিজ্ঞান শিক্ষা কেমন হবে?যেহেতু আপনারা প্রচলিত পদ্ধতি থেকে পৃথক সেহেতু প্রচলিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলো কি চালু থাকবে নাকি সবগুলোই ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে রুপান্তর হবে? ৩। যদি হয় তাহলে অমুসলিম রা কোথায় পড়বে?তাদের জন্যে কি আলাদা শিক্ষা পদ্ধতি আপনারা তৈরী করবেন ?যদি তারা আপনাদের শিক্ষানীতির আওতা বহির্ভূত হয় তাহলে তাদের শিক্ষার রিকগনিশন কি আপনদের পদ্ধতির সমমানের হবে? ৪। আপনাদের পদ্ধতি যেহেতু ভিন্ন সেহেতু আপনাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠক্রম ভিন্ন হবে। বাংলাদেশের অধিকাংশ বিজ্ঞান শিক্ষার বিভাগগুলির পাঠক্রম পশ্চিমা বিশ্ববিদ্যালয় গুলোর অনুসারে সাজানো।

আর দেশী পদার্থবিদ্যা,ফলিত পদার্থবিদ্যা,প্রকৌশল,চিকিতসা ইত্যাদির বই বলতে গেলে নেই। তাই বই কোথা থেকে যোগান দেবেন?কারন বাইরের বই গুলো তাদের পাঠক্রম অনুসারে রচিত,আপনাদের পাঠক্রম তো ভিন্ন হবে। ৫। ধরে নিলাম আপনারা নিজেরাই বই লেখার উদ্যোগ নিবেন । তাহলে বিভিন্ন বিষয়ে কমপক্ষে একটি বই আপনাদের যোগান দিতে হলেও কমবেশী কয়েক হাজার বই আপনাদের লিখতে হবে,যতদিন আপনারা এই ম্যমথ টাস্ক সম্পন্ন না করবেন ততদিন আপনাদের বিশ্বদিদ্যালয়গুলো কিভাবে চলবে? ৬।

বিজ্ঞানের যে বিষয়গুলো ধর্মকে বিপদে ফেলে দেয় এমন বিষয়গুলো কি আপনারা পড়াবেন?যেমন কোষ বংশবিদ্যা বা জেনেটিক প্রকৌশল পড়াতে গেলে আপনাদের মিউটেশন তথা নব্য বিবর্তনবিদ্যা পড়াতে হবে। আপনারা যদি এগুলো পড়াতে চান তাহলে কিভাবে পড়াবেন? ৭। পদার্থবিদ্যা কিভাবে পড়াবেন?আপনারা কি জেনারেল রিলেটিভিটিতে পোস্ট গ্র্যাজুয়েশনের সুযোগ দিবেন?আন্ডার গ্র্যাজুয়েট লেভেলে কোয়ান্টাম মেকানিক্স পড়াবেন?এ বিষয়ের বই আপনারা লিখতে পারবেন?জেনারেল রিলেটিভিটি পড়াতে গেলে মহাবিশ্বের শুরু এবং শেষ সম্পর্কে বিজ্ঞানের মতামত পড়াবেন নাকি কুরআন তেলাওয়াত করাবেন? ৮। বিজ্ঞান শিক্ষায় এখন মোটামুটি ১৬০ এর কাছাকাছি ক্রেডিট আওয়ার শেষ করতে হয়। আপনাদের পাঠক্রমে অবশ্যই তমুদ্দিনী শিক্ষা এবং হাদিস কুরআনের যায়গা দিতে হবে।

এটা করার জন্যে ধরলাম ৪০ ক্রেডিট আপনারা ন্যুনতম পরিমান ধরে নিবে। এই ৪০ক্রেডিট কি ঐ বিভাগের অপরিহার্য বিষয় বাদ দিয়ে পড়াবেন নাকি আলাদা যোগ করে ২০০ ক্রেডিট করবেন?যদি বাদ দিয়ে করেন তাহলে সেই ছাত্রটি তুলনামূলক ভাবে কম শিখল এটা কি তার প্রফেশনে প্রতিফলিত হবে না?আর যদি আলাদা যোগ করেন তাহলে....১৬০ ক্রেডিটেই জান বাহির হয়ে যায় ২০০ তে যে পড়বে তার জন্যে শুভ কামনা । ৯। দর্শন সম্ভবত ইসলামী দর্শন পড়াবেন। আধুনিক দর্শন পড়ানোর কোনো সুযোগ রাখবেন?আধুনিক বিখ্যাত দার্শনিকরা অবশ্য প্রায় সবই নাস্তিক।

তাদের প্রভাব নিশ্চয়ই আপনারা ছাত্রদের উপর পরতে দেবেন না। ১০। শেষে কর্মজীবন, ধরুন ঘোরাশাল পাওয়ার প্লান্টের একজন সিস্টেম ইন্জ্ঞিনিয়ার দরকার। তিন জন প্রার্থী ,দুইজন শিবির বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরজন অমুসলিম হওয়াতে অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের । কাকে নেবেন?এক্ষেত্রে সিস্টেম ইন্জ্ঞিনিয়ারিং জানা গুরুত্বপূর্ন হবে নাকি সাচ্চা মুসলমান হওয়াটা? আমার অনেক প্রশ্নই বিভিন্ন অনুমানের উপর নির্ভর করে করা,যদি আপনাদের মনে হয় আমার অনুমানে ভুল আছে তাহলে ঠিক কোথায় কোথায় ভুল আছে এবং সঠিক টি কি হবে তা প্লীজ দেখিয়ে দেবেন।

ধন্যবাদ ।


এর পর.....

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.