আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জেনে নিন- পুরুষের নারীসুলভ বৈশিষ্ট্য ও নারীদের পুরুষসুলভ বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী ব্যধি সম্পর্কে

আমিও শিশুর মতো/ তারই মতো মেনে নিতে পারি, যতো ব্যাথা না পাবার,/ ততো কাঁদি, ততো ঠুঁকি মাথা,/ যতো ক্ষতে বয়ে চলে- এ জীবনধারা। পুরুষের নারীসুলভ আচরন ও বৈশিষ্ট্য- ক্লাইনফেল্টার সিনড্রোম(Klinefelter's syndrome): ১৯৪২ সালে আমেরিকান চিকিৎসক H. F. Klinefelter ৯জন রোগী নিয়ে পরীক্ষা করেন যাদের সবাই ছিলেন পুরুষ কিন্তু তাদের শারীরিক গঠন ও আচরন ছিলো নারীসুলভ। এজন্য এদেরকে স্ত্রীসুলভ গুন সম্পন্ন পুরুষ বা বলায় অধিকতর যুক্তিসংগত হবে। এসকল রোগীর শারীরিক ও মানষিক কমবেশি অভিন্ন বৈশিষ্ট্য দেখা গেল। এদের ও অনুরুপ রোগীদের বৈশিষ্ট্যগুলো: ১।

বন্ধ্যত্ব(sterility), এদের শুক্রানু উৎপন্ন হয় না, যদিও লিঙ্গোত্থান এবং বীর্যপাত সম্ভব, ২। উচ্চতায় কিছুটা দীর্ঘ, ৩। স্তন কিছুটা বিকশিত, যদিও স্পষ্ট নয়, ৪। টেস্টিস স্বাভাবিকের চেয়ে ছোট, ৫। পুরুষে FSH নিঃসরন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি(FSH-ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন), ৬।

মুখে লোম স্বল্প, ৭। কন্ঠস্বরের পিস(pitch) স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি, ৮। ধড় অন্চলে অতিশয় স্থুলতা, ৯। হিজড়ার(eunuch) মতো আকৃতি, ১০। আচরন গত সমস্যা।

রোগের কারন: ১৯৫৯ খ্রীষ্টাব্দে আবিষ্কৃত হয় যে,একটি অতিরিক্ত X ক্রোমোসোমের জন্য ক্লাইনফেল্টার'স সিনড্রোমের উৎপত্তি ঘটে। সুতরাং ভুক্তভোগীর জেনোটাইপ XY এর পরিবর্তে XXY হয় এবং ক্রোমোসোম সংখ্যা ৪৪+XY =৪৬ এর পরিবর্তে হয় ৪৪+XXY =৪৭। এ রোগটি ট্রাইসোমির(trisomy) উদাহরন। কোন দ্বিপ্রস্তি(diploid) জীবে দুটি জেনোমের পাশাপাশি একটি অতিরিক্ত ক্রোমোসোম থাকলে(2n+1) তাকে ট্রাইসোমিক বলে। মায়োসিসের সময় নন-ডিসজাংসনের(গ্যামিট উৎপন্ন হবার কালে জিন বিচ্ছিন্ন না হওয়া) কারনে অতিরিক্ত ক্রোমোসোমটির উৎপত্তি ঘটে।

চিকিৎসা: পুরুষ হরমোন দেয়া যেতে পারে। এতে স্তন স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসবে এবং স্বাভাবিক যৌন জীবন অতিবাহিত করতে পারবে যদিও বন্ধ্যাত্ব(infertility) বজা্য় থাকবে। নারীদের পুরুষসুলভ আচরন ও বৈশিষ্ট্য- টার্নার'স সিনড্রোম(Turner's syndrome): আমেরিকান endocrinologist, Henry Turner সর্ব প্রথম এই সিনড্রোম আবিষ্কার করেন। এ সকল রোগীদের অসম্পূর্নভাবে বর্ধিত স্ত্রী(incompletely developed females) হিসেবে বর্ননা করা হয়। স্বাভাবিক স্ত্রীদের সাথে স্পষ্ট প্রতীয়মান কোন পার্থক্য রোগীদের নেই।

রোগীদের লক্ষণ গুলো: ১। বন্ধ্যাত্ব(sterility), ২। ডিম্বাশয় অনুপস্থিত কিন্তু যোজক কলা হিসেবে উপস্থিত থাকে, ৩। উচ্চতায় খাটো, ৪। জরায়ু ছোট, ৫।

webbed ধড় থাকতে পারে, ৬। puffy আংগুল, ৭। মাথার পিছনে hair line স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা নিচে থাকে। রোগের কারন: ১৯৫৯ সালে এই সিনড্রোমেরও কারন আবিষ্কৃত হয়। এক্ষেত্রে দুটি X ক্রোমোসোমের পরিবর্তে একটি X ক্রোমোসোম থাকে।

ক্রোমোসোম সংখ্যা ৪৬ এর পরিবর্তে হয় ৪৫। এটি মনোসোমির(monosomy) উদাহরন। কোন জীবের একজোড়া জেনোম থেকে যদি কোন একটি ক্রোমোসোমের হ্রাস ঘটে (2n-1) তবে তাকে মনোসোমিক বলে। উপরের চিত্রে XXY ক্লাইনফেল্টার সিনড্রোম ও XO টার্নার সিনড্রোম উপরের চিত্রে XXY ক্লাইনফেল্টার সিনড্রোম, XO টার্নার সিনড্রোম, XXX স্বাভাবিক স্ত্রী, YO বেঁচে থাকতে অসমর্থ। উল্লেখ্য, XXX superwoman উৎপাদন করেনা।

XXX স্ত্রী কিছুটা দীর্ঘকায়। YO জাইগোট প্রস্ফুটিত হয় না। স্পার্মাটোজেনেসিসের সময় পুরুষে ও উওজেনেসিসের সময় স্ত্রীতে নন-ডিসজাংসনের কারনে এ রোগ দুটির সৃষ্টি হয়। প্রকৃতপক্ষে টার্নার'স সিনড্রোম, ক্লাইনফেল্টার'স সিনড্রোমের উল্টো পিঠ(flip side)। তাই তাত্ত্বিকভাবে সম সংখ্যাক ক্লাইনফেল্টার'স সিনড্রোম ও টার্নার'স সিনড্রোম ভুক্তভোগীর জন্ম হওয়া উচিৎ।

কিন্তু বাস্তবে টার্নার'স সিনড্রোম খুবই কম(২৫০০ শিশুর মধ্যে ১জন)। অপরদিকে ক্লাইনফেল্টার'স সিনড্রোম ৫০০তে ১জন. এর কারন গর্ভাবস্থার প্রথমদিকে টার্নার'স সিনড্রোম প্রানঘাতক(fatal)। আনুমানিক হিসাবে দেখা গেছে, মাত্র ২-৩% টার্নার'স সিনড্রোম সম্পন্ন গর্ভধারণ জন্মলাভ করতে সক্ষম। গবেষনায় দেখা গেছে, টার্নার'স সিনড্রোম গর্ভপাতের একটি বড় কারন।  ।

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১০৯ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.