আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এসব কী লিখছে---আমার প্রতিক্রিয়া

তারা বলে সম্ভব না, আমি বলি সম্ভাবনা

‌‍" ‌বাংলাদেশ সরকার ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠানের পরিকল্পনা বাতিল করেছে। আর তা করা হয়েছে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের আপত্তির কারণেই। " মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র থেকে প্রকাশিত বিশ্বখ্যাত ও প্রভাবশালী পত্রিকা ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল গত ২৩ জুলাই "ওয়ার্ল্ড ব্যাংক সর্টস অন করাপশন" শিরোনামে এক প্রতিবেদনে বাংলাদেশকে নিয়ে 'অতি চমৎকার' এই গাজাখুরি প্রতিবেদন রচনা করেছে। ১/১১ পরবর্তী সময়ে নানা চড়াই-উতরাই পাড়ি দিয়ে যখন দেশ একটা গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যাবার পথ পরিক্রমায়। কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে ভোটার তালিকার কার্যক্রমও সম্পন্ন।

সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউসিন্সলর প্রার্থীরা যখন নির্বাচনী প্রচারনায় পাড়ায় পাড়ায় মুখর হয়ে উঠেছে। জরুরী অবস্থা আংশিক শীতল হওয়ায় এতদিনের নিরবতা ভেঙ্গে, গ্রেফতার আতংক উপেক্ষা করে রাজনীতিকরা আবারও মাঠে-ময়দানে ছড়িয়ে পড়েছেন। ----এই যখন বাংলাদেশের বাস্তবতা; ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এসব কী লিখছে? জার্নালের ১৬ তম পৃষ্ঠার সম্পাদকীয় ও উপ-সম্পাদকীয় বিভাগ - ‌‌"রিভিউ এন্ড আউটলুকে" স্থান পায় বাংলাদেশের বিরুদ্ধে এই প্রোপাগান্ডা। এ থেকে ধরে নেয়া যায়, প্রতিবেদনটির মাধ্যমে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল বাংলাদেশ সম্পর্কে তাদের অবস্থান আরও একবার পরিস্কার করল। প্রতিবেদনটির ছত্রে ছত্রে ভুল তথ্য ও অজ্ঞতার পরিচয় দিয়েছে প্রতিবেদক।

সে কারণেই হয়ত তিনি তার নাম প্রকাশে লজ্জা বোধ করেছেন। অপার সম্ভাবনাময় ছোট্ট এই দেশটি সম্পর্কে তার যে নুন্যতম ধারণাও নেই, প্রতিবেদনটির শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সেই মুর্খতার স্বাক্ষরই রেখে গেছেন তিনি। তবে এটাকে নিছক মুর্খতা বলে উড়িয়ে না দিয়ে একটু খোঁজ-খবর নিয়ে দেখা যেতে পারে কাদের স্বার্থ পূরণে রচিত হয়েছে এমন বানোয়াট ও কণ্পনা প্রসূত লেখা। এসব রিপোর্টের উৎসই বা কোথায়। প্রতিবেদনটিতে লেখা হয়েছে- "আর্মি সমর্থিত সরকার এ পর্যন্ত ১২ হাজার মানুষকে কোন ধরণের অভিযোগ ছাড়াই গ্রেফতার করেছে।

এবং তাদেরকে নিক্ষেপ করা হয়েছে ধারণ ক্ষমতার অতিরিক্ত বন্দি বোঝাই কারাগারে"। -------------রাজনৈতিক দলমত নির্বিশেষে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষই দুদকের এ দুর্নীতি বিরোধী অভিযান সমর্থন করেন। তবে এ ক্ষেত্রে বর্তমান তত্ত্বাবধায়ক সরকার ও সেনাবাহিনীর যে অসৎ কোন উদ্দেশ্য নেই, তা উড়িয়ে দেয়া যায়না। ভবিষ্যৎ যাই হোক --সরকারের দুর্নীতি বিরোধী এ অভিযান দেশী -বিদেশী মিডিয়ায় বেশ গুরুত্বের সাথেই প্রকাশ করেছে। তবে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল যেন চোখ থাকিতেও অন্ধ।

সংবাদপত্র কোন জাতির জন্য পথ নির্দেশক। বলা হয় ফোর্থ স্টেট। তবে প্রভাবশালী এ পত্রিকাটি কোথায় বাংলাদেশের দারিদ্র ও দুর্যোগে বিপর্যস্ত দেশটির জন্য সুপরামর্শ ও সুন্দর পথ নির্দেশ করবে। তা কোথায়। একের পর এক মিথ্যাচার লিখেই চলছে।

যার প্রভাব শাসক গোষ্টীর উপরে নয়, পড়ছে সাধারণ মানুষের উপর। প্রতিবেদনের অন্য এক স্থানে বলা হয়েছে- ভয়াবহ দুর্নীতি স্বত্ত্বেও বিশ্বব্যাংক অল্প সুদে বাংলাদেশকে ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ দিয়েছে। উক্ত প্রতিবেদন অনুযায়ী বিশ্বব্যাংক এ ঋন দিয়েছে গগনচুম্বী দ্রব্য মূল্য নিয়ন্ত্রণ ও ঘুর্ণিঝড় সিডরের ক্ষয়-ক্ষতি কাটিয়ে ওঠার লক্ষ্যে। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল প্রতিবেদক তার লেখায় বিশ্বব্যাংকের দেয়া উক্ত ঋণের কথা উল্লেখ করলেও কীভাবে এ অর্থ দুর্নীতির পৃষ্ঠপোষকতা করবে সম্পর্কে উল্লেখ নেই কোথাও। লেখকের আরও দু;খ যে, বাংলাদেশের মত ঋণ গ্রহনকারী গরীব দেশগুলো যথা সময়ে ঋণ পরিশোধ করেনা।

এমনকি ঋণ পরিশোধে বিলম্ব করলেও কোনরূপ জরিমানা আদায় করা হয়না। মাননীয় প্রতিবেদক সাহেব, দয়া করে আমাদের এই সোনার বাংলায় একবার বেড়ায়ে যান। দেখে আসুন সিডর বিধ্বস্ত উপকুলের মানুষদের চোখের অশ্রু এখনও মুছে যায়নি। শ্রাবণের অবিরাম বর্ষণে, কাদা-জলে সিক্ত হয়ে লাখো মানুষ কেমন অনাহারে-অর্ধাহারে কেমন মানবেতর জীবন যাপন করছে। তাদের কস্ট দেখলে হয়ত আপনি এমন প্রতিবেদন লিখতে পারতেন না।

আর ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের দেয়া ঋণের টাকা এমন 'শাইলকীয়' চিন্তাও আপনার মাথায় ঘুর ঘুর করতনা। তার পরিবর্তে আপনি নিজেই উদ্যোগী হতেন নিজের সর্বস্ব দিয়ে এসব সর্বহারাদের পাশে দাড়াতে। (বানান ভুলের জন্য ক্ষমা চাইছি)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.