আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ক্যাসান্ড্রা’স ড্রিম



টেরি ও আয়ান, দুই ভাই। থাকে মা-বাবার সাথে দক্ষিণ লন্ডনে। বাবা একটি রেস্টুরেন্ট চালান। আয়ান রেস্টুরেন্ট চালাতে বাবাকে সাহায্য করে। আর টেরি একটি ছোটখাট গাড়ির গ্যারেজ চালায়।

টেরি স্বপ্ন দেখে তার এই গ্যারেজটি একদিন বিশাল বড় হবে। কিন্তু টাকা আসবে কোত্থেকে? টেরি আবার স্বপ্নবিলাসী, ফুর্তিবাজ। সে কুকুর রেসে যায়, ড্রিংক করে। একদিন ‘ক্যাসান্ড্রা’স ড্রিম’ নামের একটি কুকুরে বাজি ধরে টেরি বিশাল অঙ্কের টাকা জিতে যায়। এই টাকায় দুই ভাই মিলে একটি ছোটখাট প্রমোদতরী কিনে ফেলে।

নাম দেয় ‘ক্যাসান্ড্রা’স ড্রিম’। কেনার পরপরই দুই ভাই তাদের বান্ধবীদের নিয়ে বেরিয়ে পড়ে নৌভ্রমণে। টেরির জুয়া খেলার দোষ আছে। মাঝে মাঝে হারে আবার জেতে। আয়ানের ইচ্ছা ক্যালিফোর্নিয়াতে হোটেল ব্যবসায় বিনিয়োগ করবে।

কিন্তু সমস্যা সেই টাকা। এ ব্যাপারে তারা ধনী ব্যবসায়ী চাচা হাওয়ার্ডের সাহায্য চায়। চাচা জানান তিনি বিশাল ঝামেলায় পড়েছেন, একেবারে জেলে যাওয়ার দশা। কারণ তার ব্যবসায়িক পার্টনার মার্টিন বার্নসের সঙ্গে ঝামেলা চলছে। চাচা এ ঝামেলা থেকে মুক্তি পেতে তাদের দুই ভাইয়ের কাছে সাহায্য চান।

প্রথমে রাজি না হলেও পরে দুই ভাই রাজি হয়। প্রথম চেষ্টায় দুই ভাই মার্টিন বার্নসের ওপর হামলা চালাতে ব্যর্থ হয়। কিন্তু পরের প্রচেষ্টায় হামলা চালিয়ে তাকে মেরেই ফেলে। মার্টিনকে খুনের বিষয়টি আয়ান মাথা থেকে তাড়াতে পারলেও টেরি সেটা ভুলতেই পারে না। সে অপরাধবোধে ভুগতে থাকে।

মানসিক যন্ত্রণা থেকে মুক্তি পেতে সে অ্যালকোহলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, ট্যাবলেট খায়। এতে তার গার্লফ্রেন্ড স্যালি চিন্তিত হয়ে পড়ে। ব্যাপারটা নিয়ে সে আয়ানের সঙ্গে দেখা করে কথা বলে, জানায়, টেরির ধারণা হয়েছে সে নাকি কাকে খুন করেছে। বিষয়টা আয়ানকেও ভাবিয়ে তোলে, কারণ টেরির আচরণে কেমন পাগলামি দেখা যাচ্ছে। টেরি একসময় আয়ানকে জানায় সে ঠিক করেছে পুলিসের কাছে গিয়ে ধরা দেবে।

আর এ নিয়ে পরামর্শের জন্য সে চাচা হাওয়ার্ডের কাছে যায়। হাওয়ার্ড তখন আয়ানের সঙ্গে পরামর্শ করে সিদ্ধান্ত নেয় টেরিকে আর বাঁচিয়ে রাখা যাবে না, এতে তাদের দুজনের জীবনই হুমকির মুখে পড়বে। ছবির শেষে দেখা যাবে আয়ান টেরিকে নৌভ্রমণে নিয়ে গিয়ে মাথায় আঘাত করে খুন করে। ‘ফ্রিদা কাহলো যদি ৫৫টি আত্মপ্রতিকৃতি আঁকতে পারেন তবে উডি অ্যালেন একই ছবিকে বিভিন্ন ভার্সনে তৈরি করতে পারেন। ’ বিখ্যাত পরিচালক উডি অ্যালেনকে নিয়ে বাজারে এমনই একটি কথা প্রচলিত আছে।

নিশ্চয়ই বলে দিতে হবে না ‘ক্যাসান্ড্রা’স ড্রিম’ ছবিটির পরিচালক উডি অ্যালেন। ছবির কাহিনি পড়েই বুঝতে পারছেন এটি একটি সাসপেন্স ফিল্ম। উডি অ্যালেন এখানে মানুষের ভালর আড়ালে অন্ধকার দিকটি তুলে ধরেছেন। ছবির মূল দুই চরিত্র দুই ভাই যারা একসময় একসাথে জীবনে উন্নতি করার স্বপ্ন দেখত, পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল ছিল; জীবনের জটিলতায়, স্বার্থপরতায় পরবর্তী সময়ে একজন অন্যের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। ১ ঘণ্টা ৪৫ মিনিটের এই ছবিটি রিলিজ হয়েছে গত বছর।

ছবির কাহিনি অ্যালেন নিজেই লিখেছেন। ছবির কলাকুশলীরা হলেন : কলিন ফ্যারেল (টেরি), ইওয়ান ম্যাকগ্রেগর (আয়ান), টম উইলকিনসন (হাওয়ার্ড), জন ব্যানফিল্ড (টেরি ও আয়ানের বাবা) ও অন্যান্য।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।