আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

ওয়েবডিজাইন করার সময় কয়েকটি ক্ষমার অযোগ্য ভুল এবং তার সমাধান

যেকোন ওয়েবডেভেলপারদের ওয়েবসাইট ডিজাইন করার সময় ভিজিটরদের কথাটাও মনে রাখা উচিত। খুব সুন্দর ডিজাইন করলাম কিন্তু যাদের জন্য এই ডিজাইন করলাম সেই ভিজিটর যদি এখানে ‌একবার এসে দ্বিতীয়বার আসতে অনুৎসাহিত হয়, তাহলে সেই ওয়েবসাইটটি ডিজাইন করে কোন লাভ নাই। খুব সুন্দর একটি গাড়ি কিন্তু কোন ইঞ্জিন নাই, ব্যাপারটা সেই রকম হবে। আপনি নিজেও সেই রকম কিছু করেছেন কিনা এখনই চেক করুন এবং সেগুলো ঠিক করুন। কি কি চেক করবেন এবং কিভাবে সেগুলো সমাধান করবেন সেই বিষয় নিয়েই আমার আজকের এ পোষ্ট।



অনেক ওয়েবসাইট ডিজিইন করার সময় নতুনত্ব আনার জন্য এমনভাবে ডিজাইন করে যে সেই ওয়েবসাইটের মেনু সহজে খুজে পাওয়া যায়না। মেনু সহজে খুজে বের করতে না পারলে ভিজিটর সহজে তার প্রয়োজনীয় পেজগুলোতে যেতে না পারেনা, তখন ওয়েভসাইট খুব দ্রুত বিদায় নেয়।
সমাধানঃ সহজে দেখা যায় এমন জায়গাতে মেনু দিতে হবে। মেনুর নাম ব্যবহারের ক্ষেত্রে পরিচিত শব্দগুলো ব্যবহার করতে হবে। যেমনঃ About, Services, and Contact.যে পেজে কোন ভিজিটর অবস্থান করবে সে পেজের মেনুর কালার যাতে অন্য মেনুগুলো হতে ভিন্ন হয় সেদিকেও নজর দিতে হবে।


ওয়েবসাইটের প্রস্থ নির্ধারনের সময় লক্ষ্য রাখা দরকার, ভিজিটরকে যাতে পুরো ওয়েবসাইটটি দেখতে স্ক্রল করতে না হয়। আমি প্রস্থের দিকে স্ত্রলের কথা বলছি, উচ্চতার দিকে না।
  সমাধানঃ এটা সমাধানের জন্য relative width ব্যবহার করতে হবে। এটা HTML এ <body> ট্যাগে ব্যবহার করা যেতে পারে। আমি সাধারণত css এটা ব্যবহার করি।

সে এক্ষেত্রে কোডটি হবে। body{width:100%;}
যদি একটি ওয়েবসাইটের সকল পেজের মধ্যে লেআউট,  কালার কিংবা বাকি সকল থিম মিল না থাকে, তাহলে সৌন্দয্য থাকেনা।
সমাধানঃ একটি ওয়েবসাইটকে বইয়ের মত মনে করা উচিত। একটি বইয়ের সবাই দেখেছেন যে সকল পেজের মধ্যে মূল থিম একই রকম থাকে। ওয়েবসাইটেও সেটা করতে হয়।


ওয়েবসাইটের সৌন্দযের জন্য বর্তমানে সবাই header এর নিচে ব্যনার ব্যবহার করে যেখানে স্লাইড শো হতে থাকে। অনেকে সেটির এমন height দেয় যেটির জন্য এর পরে কোন কনটেন্ট আছে সেটা নিয়ে ভিজিটর কিছুটা দ্বিধাতে পরে যায়।
 সমাধানঃ স্লাইডশো ব্যানারের উচ্চতা হওয়া উচিত যাতে যে কেউ কোন স্ক্রলিং না করেও বুঝতে পারে নিচে আরও কিছু কনটেন্ট আছে।
 
ওয়েবসাইট ওপেন করলেই সাথে সাথে ভিডিও কিংবা মিউজিক শুরু হয়ে যায়, এটা আমার কাছেতো অবশ্যই , আমার ধারনা সকলের কাছে বিরক্তির কারণ সৃষ্টি করে। কিছুদিন আগে এরকম একটি ওয়েবসাইট আমি দেখেছি।

আমি সেই ওয়েবসাইটটিতে মাঝে মাঝেই যেতাম কিন্তু যখন তারা মানুষকে বিনোদন দেয়ার জন্য ওয়েবসাইটে ঢুকার সাথে সাথেই মিউজিকের ব্যবস্থা করেছে, তখন আমি সেখানে যাওয়া সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিয়েছিলাম। পরে কিছুদিন পর তারা আবার সরিয়ে দিয়েছে, এখন আবার সেখানে যাই। কেন নিয়মিত যাই? আপনি একবার সেখানে প্রবেশ করলে আপনিও নিয়মিত না প্রতিদিন একবার সেখানে ঢুকবেনই। আমার চ্যালেঞ্জ। ওয়েবসাইটটির নামঃ http://bn.takkizbd.com/
সমাধানঃ অটো প্লে ফিচার অফ রাখুন।

ভিজিটর যদি শুনতে চায়, তাহলে সে বাটনে ক্লিক করে চালিয়ে শুনে নিবে।
বর্তমানে সকল ওয়েবসাইট রেসপন্সিভ হওয়া উচিত অর্থাৎ  সকল ডিভাইস এবং সকল ব্রাউজারেই যাতে এটি সুন্দর দেখায়। রেসপন্সিভ ওয়েবসাইটটি কেমন হয় সেটি চেক করার জন্য ক্রিয়েটিভ আইটির সিনিয়র ওয়েবডেভেলপার এবং ওয়েবডেভেলপমেন্টের জনপ্রিয় ট্রেইনার নুরে আলমের করা ওয়েবসাইটটি দেখতে পারেন। http://www.bcc.gov.bd সকল ব্রাউজার এবং সকল ডিভাইসে (পিসি, মোবাইল, ট্যাব) চেক করে দেখতে পারেন।
সমাধানঃ ওয়েবসাইট অনলাইনে দেয়ার আগে সকল ব্রাউজার এবং সকল ডিভাইসে চেক করে নিন।

রেসপন্সিভ ওয়েবসাইটের উপর আমার একটি পোস্ট টেকটিউনসে আছে, সেটার লিংকটিতে ঘুরে আসুন।
এটি মুলত প্রয়োজন সেইসব ওয়েবসাইট যেখানে প্রচুর কনটেন্ট থাকে অর্থাৎ বড় ওয়েবসাইটে এটি খুবই প্রয়োজনীয়। না হলে ভিজিটররা প্রয়োজনমত কিছু খুজে পাবেনা।
সমাধানঃ মানুষ সাধারণত যেকোন ওয়েবসাইটের একদম উপরের ডানদিকের কর্ণারে সার্চ বক্স দেখতে অভ্যস্ত। সেজন্য ওই জায়গাতেই সার্চ বক্স বসাতে হবে।


এনালিটিকস হলো এমন একটি টুলস যার মাধ্যমে আপনার একটি আঙ্গুল ওয়েবসাইটের পালসে সবসময় রাখতে পারবেন। যদি আপনি আপনার ভিজিটরদের গতিবিধি না জানতে পারেন, তাহলে বুঝতে পারবেননা আপনার ওয়েবসাইট তৈরি করে লাভ হয়েছে কিনা।
সমাধানঃ গুগলে সার্চ দিয়ে গুগলের এনালিটিকসের সাইটে যেতে হবে, তারপর আপনার জিমেইল একাউন্ট ব্যবহার করে সেটি লগইন করে আপনার ওয়েবসাইটটি সেখানে লিস্টেড করলে একটি কোড দিবে, সেটি আপনার ওয়েবসাইটের সকল পেজের  <head> সেকশনে ব্যবহার করুন।
ওয়েবসাইটের অগোছালো পেজ সবসময়ই সবার কাছে খুব বিরক্তির সৃষ্টি করে। কোন ভিজিটর যদি ওয়েবসাইটে এসে প্রচুর বিঞ্জাপন, ছবি, অগোছালো লেখা দেখে তাহলে সেই ওয়েবসাইট থেকে দ্রুত সরে যাবে।


সমাধানঃ ওয়েবসাইট থেকে অপ্রয়োজনীয় জিনিস সরিয়ে ফেলুন। ওয়েবপেজের header , ওয়েলকাম মেসেজ কিংবা অন্যান্য সব কিছুর মধ্যে যথেষ্ট ফাকা রাখুন।
প্রত্যেকটি ওয়েবসাইটের একটি উদ্দেশ্য থাকে। পণ্যকে মার্কেটিং করা কিংবা আপনার ট্যালেন্টকে প্রচার করা কিংবা কোন কোম্পানীর ব্যবসাকে আরও সমৃদ্ধ করা ইত্যাদি। কিন্তু যদি কেউ ওয়েবসাইটে না বুঝে আসলে এ ওয়েবসাইটটি কি উদ্দেশ্যে তৈরি, তাহলে শুধু ঘুরপাক খাবে।


সমাধানঃ ওয়েবসাইটটি তৈরি উদ্দেশ্য জানুন এবং এরপর সকল কনটেন্টে সেই উদ্দেশ্যকে প্রকাশ করার দিকে নজর দিন যাতে যে কেউ ওয়েবসাইটে এসে সহজেই সব বুঝতে পারে।
ওয়েবসাইটের লেখা অনেক বড় কিংবা অনেক ছোট কিংবা এমন ফন্ট ব্যবহার করলেন যেটা পড়া কষ্টকর কিংবা ব্যাকগ্রাউন্ড ও ফন্ট কালার মিলে যাওয়া- এগুলো একজন ভিজিটরকে পুনরায় ওয়েবসাইটে ফিরে আসতে অনুৎসাহিত করে।
সমাধানঃ ওয়েবসাইটের বডিতে যে লেখা ব্যবহার হবে সেটির ফন্ট সাইজ ১২ স্ট্যান্ডার্ড। ফন্ট কালার এবং ব্যাকগ্রাউন্ড কালার যাতে মিলে না যায়, যাতে খুব ভালভাবে লেখা বুঝা যায়, সেদিকে ভালভাবে নজর দিতে হবে। সাধারণ ফন্ট ব্যবহার করা ভাল, মানুষ সহজে পড়তে পারবে।


নতুন অনেক ওয়েবডেভেলপাররা অনেক সময় ক্ষমার অযোগ্য একটি ভুল করে। সেটি হল ভিজিটরের সাথে কতৃপক্ষের যোগাযোগের কোন মাধ্যম তারা রাখেনা।
সমাধানঃ সাইনআপ ফরম কিংবা ইমেইল সাবস্ক্রাইব এর ব্যবস্থা রাখতে হবে। যেসব ক্ষেত্রে সেটি সম্ভব হবেনা, সেখানে ফিডব্যাক ফরম খাকতে পারে।
একটি কোম্পানীর ওয়েবসাইট সেই কোম্পানীর খুব বিশাল সম্পদ।

সুতরাং সেটি করার সময় যতটুকু সম্ভব ইউজার ফ্রেন্ডলি করা উচিত। তাহলে ভিজিটররা সেই ওয়েবসাইটে ভিজিট করতে আগ্রহী হবে। আপনার ক্লায়েন্ট হয়ত এগুলোর ব্যপারে খুব বেশি সচেতননা, আপনাকে নিজ উদ্যোগে এসব দিকে মনোযোগ দিতে হবে। আজ এ পযন্তই।
প্রশ্ন থাকলে ফেসবুক গ্রুপে আমাকে পাবেন।


ফেসবুক গ্রুপঃ https://www.facebook.com/groups/creativeit/

সোর্স: http://www.techtunes.com.bd/     দেখা হয়েছে ১৪ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।