আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

হাসিনার বিরুদ্ধে মামলার 'দালিলিক তথ্য' উইপোকায় খেয়ে ফেলেছে!



সুত্র:বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম ঢাকা, মে ২৯ (বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম)- সর্বনিম্ন দরদাতাকে বাদ দিয়ে যে প্রতিষ্ঠানটিকে অবৈধভাবে বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের অনুমতি দেওয়ার অভিযোগ সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা হয়েছে সেই ওয়ার্টসিলার প্রস্তাবিত দরপত্রের বেশিরভাগ অংশই উইপোকায় কেটেছে। বৃহস্পতিবার সংসদ ভবনের ১ নম্বর বিশেষ জজ আদালতে ভাসমান বিদ্যুৎ কেন্দ্র দুর্নীতি মামলার কার্যক্রম চলাকালে প্রমাণ হিসেবে নথি উত্থাপনের সময় বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমের প্রদীপ চৌধুরী দেখেছেন প্রায় ১০ বছর আগের দরপত্রটির কাগজ খেয়ে ফেলেছে উইপোকায়। শেখ হাসিনার অন্যতম আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছেন, "এটা ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে। নথি পোকায় খাওয়ার কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হবো। এটাই ছিলো মূল দলিল।

এখন ফটোকপিতে অনেক কিছু বিকৃত করা হতে পারে। " রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবিএম শরফুদ্দিন আহমেদ মুকুল আদালতে বলেন, "নথিতে পোকা লাগলেও লেখা ঠিক আছে। এতে মামলার কোনো সমস্যা হবে না। " রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান অভিযোগ, নিউ ইংল্যাণ্ড পাওয়ার কোম্পানি সর্বনিম্ন দরদাতা হলেও অবৈধভাবে কাজ দেওয়া হয় ওয়ার্টসিলাকে। উইয়ে খেয়ে ফেলা নথিটি ওয়ার্টসিলা পাওয়ার ডেভেলপমেন্ট কনসোর্টিয়ামের দেওয়া প্রস্তাবের দলিল।

বৃহস্পতিবার এই বিষয়ে হাসিনার আইনজীবীরা আদালতের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে বিচারক নথি দেখতে চান। তখন দেখা যায় ওই নথিটির অধিকাংশ পাতা পোকায় খাওয়া। এদিন সাক্ষ্য দেন মামলার এজাহার রেকর্ডকারী পুলিশ কর্মকর্তা আনোয়ারুল ইসলাম এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের অতিরিক্ত পরিচালক আবদুল হালিম। আবদুল হালিমের আংশিক জেরা শেষ হয়েছে। আগামী ৩ জুন আবারও সাক্ষ্য নেওয়া শুরু হবে।

আসামিপক্ষের আইনজীবী সৈয়দ রেজাউর রহমান জব্দ করা নথির জিম্মাদার আবদুল হালিমকে জেরা করেন। আইনজীবীরা তাকে প্রশ্ন করেন, "আপনি যে নথি আদালতে উপস্থাপন করেছেন তার মধ্যে কয়টা উইপোকায় খাওয়া?" জবাবে আব্দুল হালিম বলেন,"আমার জানা নেই। " নথির অবস্থা দেখে বিচারক বলেন, "আপনারা নথি সংরক্ষণের জন্য কোনো মেডিসিন ব্যবহার করেন না? কোর্টের রেকর্ড রুমে আপনি এক'শ বছর আগেরও নথি পাবেন। " এ সময় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী এবিএম শরফুদ্দিন আহমেদ মুকুল আদালতকে বলেন,"নথিতে পোকা লাগলেও লেখা ঠিক আছে। এতে মামলার কোনো সমস্যা হবে না।

" আসামিপক্ষের আইনজীবীরা সাংবাদিকদের বলেন, জব্দ তালিকার সাক্ষীকে জিজ্ঞাসাবাদ করে 'ভয়ানক তথ্য' বেরিয়ে এসেছে। এই মামলার গুরুত্বপূর্ণ নথি উইপোকায় খেয়ে ফেলেছে। তারা ওই নথিকেই মামলার মূল ভিত্তি আখ্যা দিয়ে বলেন, এর দালিলিক সাক্ষী দিয়েই শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ যে মিথ্যা তা প্রমাণ করা সম্ভব হতো। সৈয়দ রেজাউর রহমান বলেন, "এখন ফটোকপিতে অনেক কিছু বিকৃত করা হতে পারে। " বৃহস্পতিবার সাক্ষ্য গ্রহণ উপলক্ষে মামলার আসামি শেখ হাসিনা ও সাবেক জ্বালানি ও বিদ্যুৎ সচিব তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরীকে আদালতে হাজির করা হয়।

প্রায় তিন কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে ভাসমান বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ দেওয়ার অভিযোগে গত বছরের ২ সেপ্টেম্বর দুর্নীতি দমন কমিশন তেজগাঁও থানায় হাসিনাসহ আটজনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করে। মামলার অন্য আসামিরা হলেন-বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান নূরুদ্দীন মাহমুদ কামাল, সামিট গ্র"পের পরিচালক মো. আজিজ খান, একই প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ফরিদ খান, ইউনাইটেড গ্র"পের পরিচালক হাসান মাহমুদ রাজা, একই গ্র"পের পরিচালক আবুল কালাম আজাদ ও বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের কিউরেটর সৈয়দ সিদ্দিকুর রহমান। মামলার অভিযোগপত্রে সিদ্দিকুর রহমানকে আসামি করা হয়। এতে বলা হয়, অভিযুক্তরা ক্ষমতার অপব্যবহার করে হরিপুর, শিকলবাহা ও খুলনায় তিনটি ভাসমান বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনের কাজ দুটি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়ার বিনিময়ে বঙ্গবন্ধু মেমোরিয়াল ট্রাস্টের নামে জমিসহ বাড়ি কেনার জন্য প্রায় তিন কোটি ঘুষ টাকা নেন। এতে আরও অভিযোগ করা হয়, নিউ ইংল্যান্ড পাওয়ার কোম্পানি সর্বনিম্ন দরদাতা হলেও তাদের না দিয়ে আর্থিক সুবিধা নিয়ে ওয়ার্টসিলাকে এই প্রকল্পের কাজ দেওয়া হয় ।

গত ১৮ মে এ মামলায় সব আসামির বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন হয়। সাক্ষ্য নেওয়া শুরু হয় ২১ মে থেকে। শেখ হাসিনাকে গত বছরের ১৬ জুলাই গ্রেপ্তার করা হয়। সংসদ ভবন এলাকায় একটি বাড়িকে বিশেষ কারাগার ঘোষণা করে তাকে সেখানে রাখা হয়েছে।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.