আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

= মৈত্রী রেল যোগাযোগ ভাবনা

কাব্য-দিনের কথাঃ স্পর্শের আগুনে! অন্যদিগন্ত: www.fazleelahi.com

বাংলাদেশ-ভারত মৈত্রী রেলযোগাযোগ, উদ্দেশ্য দু'দেশের মধ্যে নানাবিধ সম্পর্কোন্নয়ন। হতেই পারে, প্রতিবেশী দেশের সাথে এমনতর সুসম্পর্ক থাকাটাই বাঞ্চনীয়। পারস্পরিক সহযোগিতাই যেখানে মূখ্য হওয়া উচিত। কিন্তু ভারতকে তেমন প্রতিবেশী হিসেবে আমরা অতীতেও পাইনি, ভবিষ্যতের ভার সময়ের উপরই ছেড়ে রাখলাম। ভারত যখন যা কিছু সুবিধা দিয়েছে তার মূল্য কয়েকগুণ হারে আদায় করে নিয়েছে।

মূলতঃ ভারতকে খুশী করা কেবলমাত্র তখনি সম্ভব হবে যখন বাংলাদেশ ভারতের একটা অংশ হয়ে নিজেকে দেখাতে পারবে; যা এই স্বাধীন দেশের সংগ্রামী মনোভাবাপন্ন মানুষেরা কোনদিনই হতে দেবে না। যার প্রমাণ তারা রেখেছে বায়ান্নতে, রেখেছে একাত্তরে। ভারত সম্পর্কে এহেন কথার সবচেয়ে বড় হেতু ফারাক্কা বাঁধ, যা ধীরে ধীরে চুষে খাচ্ছে বাংলাদেশকে। আসা যাক মৈত্রী রেল যোগাযোগের কথায়, ধরে নিলাম ভারত অত্যন্ত শুভ উদ্দেশ্যেই সুপ্রতিবেশী সাজ ধারন করে বাংলাদেশের সাথে রেলমৈত্রী স্থাপনের জন্য এগিয়ে এসেছে। কিন্তু সেই ভারতেই এর বিরুদ্ধে শুধুমাত্র সোচ্চার কণ্ঠ ধ্বনিত হয়েই ক্ষান্ত থাকেনি; বরং কিছুদিন আগে "বাংলাদেশ" ভেঙ্গে "নতুন বাংলা" গড়ার দাবীও উঠেছে।

লক্ষণীয় যে, সে দাবী ভারতের মধ্য থেকে, ভারতীয়দের মধ্য থেকে। অথচ অনেক রক্ত দিয়ে এ দেশ স্বাধীন করেছিল এদেশের মানুষেরা। ভারত সহযোগিতা করেছে, ভালো কথা, কি উদ্দেশ্যে ছিল এ সহযোগিতা? প্রতিবেশীকে সহযোগিতা করার অর্থ কোনদিন এ হয়না যে, সহযোগিতার পর প্রতিবেশীর সকল সম্পত্তির মালিক হয়ে যাওয়া, কিংবা সে লালসায় গুড়েবালি পড়লে প্রতিবেশীর বাড়ীঘর পাইকারী হারে লুণ্ঠন করে নিয়ে যাওয়া; ভারত সে আচরণই করেছে বাংলাদেশের সাথে। আজো সীমান্তে পাখি শিকারের মত ভারতীয় সেনারা বাংলাদেশী শিকার করে অহরহ আর পতাকা বৈঠকগুলোতে সাজানো কিছু কথা বলেই নিরব করে দেয় ভারত, নিরব হয় বাংলাদেশ। তাই মৈত্রী বলুন আর প্রতিবেশীসুলভ সুসম্পর্ক বলুন; ভারতের মুখের আড়ালে মুখোশ খোঁজেন প্রতিজন বাংলাদেশী।

এ রেলযোগাযোগ সুবিধায় যেমন সুবিধা রয়েছে তেমনি অসুবিধাও রয়েছে প্রবল। চোরাকারবারী, সন্ত্রাসী ও গুপ্তচরদের জন্য যাতায়াত ব্যবস্থা আরো সহজতর হয়েছে। তাই দু'দেশেরই সর্বোচ্চ সতর্কতা রাখতে হবে যাতে অসদুদ্দেশ্যে ব্যবহার না হয় এ মৈত্রী সুফল। ভারত থেকে ইন্ধন পেয়ে যেভাবে অতীতে পার্বত্য এলাকায় বিভাজনের ত্রাস সৃষ্টি হয়েছিল, এ মৈত্রী সুবিধাকে কেন্দ্র করে যাতে সে চক্র আবারো মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে, সে ব্যাপারে বাংলাদেশ এবং বিশেষভাবে ভারতকে ভূমিকা রাখতে হবে। অনাগত দিনের কার্যকলাপই বলে দেবে "মৈত্রী রেল যোগাযোগ" কতটা সফল কিংবা অন্যকিছু।

তবুও আশা, তিন দিক থেকে ঘেরা এ দীর্ঘদেহী প্রতিবেশী তার এ বিপ্লবী প্রতিবেশীর সাথে 'মৈত্রী', 'সুসম্পর্ক' ইত্যকার মধুময় শব্দাবলীর দ্বারাই অনাগত কালাতিপাত করবেন। কেননা, বাংলাদেশের মানুষেরা খুবই আন্তরিক, খুবই বিনয়ী, খুবই সহনশীল; কিন্তু অধিকার আদায়ে হিমালয় টলিয়ে দেয়ার মত বিপ্লবী। থাবার মত ঘিরে রাখা প্রতিবেশীকে অনুরোধ করবো, তার প্রতিবেশী সম্পর্কে এ সত্যগুলোকে সদা সম্মুখে রাখতে। শুভ হোক মৈত্রী রেলযোগাযোগ।


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।