আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

আশকা তুমি কার (শেষ পর্ব) (পূর্ণদৈঘ্য বাংলা ছায়াছবি)

"ব্লগকে সিরিয়াসলি নেবার কিছু নেই"...গরীব স্ক্রীপ্ট রাইটার

১ মাস পর আশকার বিয়ের সময়ের কিছু টুকরো ঘটনা: সবকিছুই স্বাভাবিক, রমজান আর ছাইফুলের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হয়েছে। সবচেয়ে বড়কথা ওরা ২জন খুব স্বত:ফূর্তভাবে বিয়ের আয়োজনে অংশগ্রহন করছে। রমজান তো ঘর সাজাতে গোছাতে এক্সপার্ট! সে ডেকোরেটরদের সাজানো গায়ে হলুদের স্টেজ সাজানো দেখে বলল, ওয়াক থু! ছি:! কি করছে এইটা! ফুলের স্তুপ বানায় রাখছে! রমজান বিমা ভাবীর কাছে আব্দার করল, ভাবী বর-বউয়ের স্টেজ আর গায়ে হলুদের স্টেজ একটাও ভালো হচ্ছে না, এগুলো খুলে আমি আবার সুন্দর করে সাজাবো। বিমা খুশী হয়ে বলল, আশকা তো তোমারও বোন, তোমার যা খুশি তুমি তাই করো, আমাকে বলার কোনো দরকার নাই। রমজান প্রথমে ডেকোরেটরদেরকে বলল কিন্তু তারা রমজানের কথা মত কাজ করল না।

তারপর বিমার অনুমতি নিয়ে রমজান ছাইফুল আর বাড়ির ছোট্ট কচিকাচাদের নিয়ে স্টেজ সাজাতে লেগে গেল। রমজান ছাইফুলকে গায়ে হলুদের স্টেজ কিভাবে সাজাবে বুঝিয়ে দিল আর বাকী ২টা স্টেজ সে নিজ দায়িত্বে রাখল। এরই মধ্যে আশকার বান্ধবী ক্যারোলিন এসে পৌছালো, ছাইফুল অত্যন্ত চাতুরতার সাথে তাকে বলল, আসুন আমি গায়ে হলুদের স্টেজ সাজাচ্ছি আপনি দেখে বলেন কোথায় কোথায় সমস্যা আছে! জানেন ই তো মেয়েদের সৌন্দর্য জ্ঞান সবসময় ছেলেদের থেকে ভাল হয়। (ক্লোজআপহাসি) রমজান কাজ কতদূর খোজ নিতে এসে দেখলো, কাজের কোন অগ্রগতি না হলেও ছাইফুল অনেকদূর এগিয়ে গেছে, সে কাজ ফাকি দিয়ে ক্যারোলিনের সাথে গল্প করছে। রমজানের মেজাজ খারাপ হয়ে গেল, সে বিমার কাছে বলল, ভাবী দ্যাখেন দ্যাখেন, এরকম করলে কিন্তু হয় না! ওইটার (ছাইফুলের) কিন্তু চরিত্রে সমস্যা আছে! বিমা রমজানের কথা শুনে হাসে।

রমজান: ভাবী আপনি হাসছেন! আমি একা কত দিক সামলাবো!? বিমা: আচ্ছা আমি দেখছি! বিমা ক্যারোলিনকে আশকার ঘরে পাঠালো। আজকে আশকার বিয়ে বরযাত্রীতে এসেছেন বরের মা এ্যাশ খান(বর্তমানে), সে(রাগইমন) নিজের নাম নিজে রাখে, এর আগে তার নাম ছিল মাধুরী, শিল্পাশেঠী, কারিনা, সেলিনা জেটলী, কারিশমা....বলিউডের যে নায়িকাকে তার ভালো লাগে তার নামে সে তার নিজের নাম রাখে। এখন ঐর্শ্বরিয়া রাইকে বেশি ভালো লাগে বলে এ্যাশ খান। আলী আরাফাত শান্ত, বরের ছোট ভাই ভীষণ দেমাগি ছেলে। সিদ্দিক সাহেব (অচেনা বাঙালী) একজন আরাম প্রিয় মানুষ, যেখানেই সুযোগ পান সেখানেই শরীরটাকে এলিয়ে দেন, পারলে শুয়ে পড়েন।

তবে উনি একটু লাজুক স্বভাবের। রাশেদ স্যার ও তার বোন মনচিলা। রাশেদ স্যার নাদানেরও স্যার। এরা সহ আরো অনেক লোকজন। কনেপক্ষে আছেন, দোলা (দোলা হাসান), মর্জিনা (মতয), রাতুল (রাতুল), পিচ্চি, ব্যাটারী (এ্যামাটার) বর স্টেজে বসার সাথে সাথে পিচ্চি তার কোলে উঠে বসল।

এরপর দোলা আর মর্জিনা প্রথমে শররত(স্যালাইন) খাওয়ালো। এবার সবাই মিলে স্টেজে উঠে নতুন দুলাভাইকে কাতুকুতু দেয়া শুরু করল, নাদান খিকখিক করে হাসতে হাসতে স্টেজ থেকে পড়ে গেল। শান্ত এসে বিরক্ত ভঙ্গিতে বলল, কি হচ্ছে এগুলা?! দোলা: আপনি বরের কি হন? শান্ত: আমি... দোলা: স্টাইল মাইরে বলার দরকার নাই। চুপ করেন তো, ওই চেয়ারে যেয়ে চুপ করে বসে থাকেন। শান্ত: আমি ভাই হই, আমি ভাই হই বরের মর্জিনা: ও আপনি তো তাহলে আমাদের বেয়াই (ক্লোজআপহাসি) শান্ত: ছ্যাবলামি করবেন নাতো! এসব বেয়াই টেয়াই এসব ঢং আমার ভালো লাগে না!! মর্জিনা আর দোলা হতবাক ছেমড়ার কথা শুনে।

তারা ব্যাটারীকে আলাদা ডেকে বলল শান্তকে সাইজ করতে। ব্যাটারী সব কচিকাচাদের নিয়ে শান্তর কাছে গেল... ব্যাটারী: আচ্ছা আপনাকে একটা ধাধা জিজ্ঞেস করি! মনে হয় পারবেন না, আপনাকে দেখে মনে হয় আপনার বুদ্ধি নিম্নজাতের প্রাণীদের মত। শান্ত: আপনারা কি আমাকে ইনসাল্ট করতে আসছেন (খাইয়ালামু) ব্যাটারী: ছি: ছি: কি ধরনের কথা বলেন! আপনি আমাদের দুলাভাইয়ের ভাই...... শান্ত: কথা বাড়াইয়েন না তো। যা জিজ্ঞেস করবেন তাড়াতাড়ি করেন ব্যাটারী: একিল আর দেকিল দুই ভাই, একিল গেল বাজারে ঘরে থাকলো কে? শান্ত অত্যন্ত বিরক্ত হয়ে বলল, এটা না পারার কি আছে!! দেকিল দে কিল বলা মাত্র বাচ্চারা শান্তর উপর ঝাপিয়ে পড়ল। সিদ্দিক সাহেব তার স্বভাবমত বরের স্টেজে সাজিয়ে রাখা বালিশে হেলান দিলেন।

রাতুলকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল বরের জামার সাথে স্টেজের কাপড় সেইফটিপিন দিয়ে আটকানো। রাতুল কোন কাজের না, সে সবকাজেই ঘাপলা পাকায় ফেলে, এক্ষেত্রেও ব্যতিক্রম করলো না। সে বরের বদলে সিদ্দিক সাহেবকে সেইফটিপিন দিয়ে আটকালো। এরপর বরের হাত ধোয়ানোর সময় যখন টাকাপয়সা নিয়ে ঝগড়া শুরু হল, রাতুল স্টেজের পিছন থেকে সে সেইফটিপিন দিয়ে বরের বদলে সিদ্দিক সাহেবকে খোচাতে লাগলো। সিদ্দিক সাহেব সরে যেতে গেলেন, পারলেন না কি যেন তাকে টানছে, মুখচোরা সিদ্দিক সাহেব কিছু বলতেও পারছেন না।

খোচা খেয়ে বারবার আউ আউ উরি বাবা ওরে মা বলে উঠছেন। মর্জিনা খেয়াল করলো বরের বদলে সিদ্দিক সাহেব অনবরত খোচা খাচ্ছেন। মর্জিনা সিদ্দিক সাহেবকে বলল, প্লিজ আপনি একটু বলেন না, আমাদের দাবী মেনে নিতে সিদ্দিক সাহেব করুন গলায় বললেন: নাদান যা চায় দিয়ে দাও তো....আউ উউ বাবা...উফ....ইশশিরে....ইমাগো.... পিংগুলির বাবার ছবির কাছে আবার যেয়ে পিংগুলির মা: ওগো... দ্যাখো..তুমি কি দেখতে পাচ্ছো!! আজ তোমার আদরের ছোটবোন আশকার বিয়ে হচ্ছে, তোমার পিংগুলি ক্লাস ফোরে উঠেছে। আমি তোমার দেয়া সব দায়িত্ব পালন করছি, জানি না কতটুকু পেরেছি....ওগো দ্যাখো আশকাও আমায় একা ফেলে চলে যাচ্ছে....তুমি কেন চলে গেলে....আমায় নিয়ে যাআআও (আম্মাআআ)(চিতকার করে জ্ঞান হারায় বিমা) কাজের মেয়ে শামীমা(একরামুল হক শামীম) গ্লাস প্লেট ধোয়ার সময় দুইটা ভিম বার চুরি করলো। আশকা আর নাদানের বিয়ে সেই কাজী সাহেবই(মিরাজ) পড়ালো।

মনচিলা আর রাশেদ স্যার জানতো না যে নাদানের আশকার সাথেই বিয়ে হচ্ছে। তারা্ এসেই বেকুব। রাশেদ স্যারের মুখ গোমড়া হয়ে আছে। আর মনচিলা অনবরত আশকাদের দুর্নাম করে যাচ্ছে, ইশ! এরা কি ক্ষ্যাত! এদের রুচি বলে কিছুই নেই। নাহলে এরকম একটা ছেলে কে কেউ বিয়ে করে! ও তো এস্টাবলিশ্ডও না।

আর শাশুড়ীর দ্যাখো কি ছিরি! এরকম যার মা তাকে কি করে আশকা বিয়ে করে!.......... মনচিলার কথা শুনতে শুনতে রাশেদ স্যারের চোখ পড়ে নাবিলার উপর। তখন মনচিলার কথা ওর কানে ঢোকে না। রাশেদ স্যার তার লাজুক স্বভাবের জন্য আশকা ও আগের সেই মেয়েগুলোর সাথে কখনও আওয়াজ করেনি তেমন। কিন্তু এবার, এবার সে কোনো কিছুর কমতি করবে না। রাশেদ স্যার: হ্যালো, আমি রাশেদ.... নাবিলা: ও স্যার, আপনি! স্লামালেকুম! ভালো আছেন? রাশেদ স্যার অবাক হয়ে: আপনি আমাকে চিনেন? নাবিলা: স্যার আমি তো একদিন আপনার ক্লাসও করছি।

রাশেদ স্যার: আচ্ছাআআ.....তুমি কোন ইয়ার? নাবিলা: স্যার, আমি ফার্স্ট ইয়ারের। রাশেদ স্যার: তোমাদের তো ক্লাস শুরু হয়েছেই গত সপ্তাহে, তাইনা? নাবিলা: হুম রাশেদ স্যার: শোন কোনো সমস্যা হলে আমার কাছে অবশ্যই আসবে, কেমন? (রাশেদ স্যার মনেমনে প্রচন্ড খুশি হয় নাবিলা ফার্স্ট ইয়ার হওয়ায়) চিকনমিয়া: এট্টু কি বগুড়ার দই দেয়া যাইবেক? ছাইফুল: আরে পাগল এটা বগুড়ার দই না, বলে ছাইফুল হেসে চলে গেল। চিকনমিয়া হাত গুটিয়ে রাগীরাগী চোখে বসে আছে। রমজান: কি চিকনা খাও না ক্যান? চিকনমিয়া: ক্যান, চিকুন হইচি বইল্যা কি এট্টু বগুড়ার দইও খাইতে পারতাম না!? রমজান: ও আচ্ছা, তোরে দই দেয়া হয় নি। রমজান চিকনমিয়াকে দই দিল।

কিছুক্ষণ পর চিকনমিয়া আবার রমজানকে বলল: আরেট্টু কি বগুড়ার দই দেয়ার ব্যাফারে বিবেচনা করা যাইবেক? রমজান: এই নে দই, তবে এটা বগুড়ার দই না (হেসে রমজান চলে গেল) যে পান ভাজ করছিল, পান আর মসলা শেষ হয়ে যাওয়ায় আনতে ঘরে গেল, এই ফাকে চিকনমিয়া পানের টেবিলে দইয়ের হাড়িতে থাকা চুন বগুড়ার দই ভেবে চুরি করে কয়েক চামচ টপাটপ মুখে পুরলো। ---------------------------------শেষ----------------------------------

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।