আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

মহাঝামেলায় আছি এই ক্রেডিট কার্ড নিয়ে

একটি বাংলাদেশ, তুমি জাগ্রত জনতা, সারা বিশ্বের বিস্ময়, তুমি আমার অহংকার

আমি ষ্ট্যান্ডার্ড চার্টাড ব্যাংকের ক্রেডিক কার্ড ইউজ করছি প্রায় বেশ কয়েকবছর হলো। কোনদিন আমার কোন সমস্যা হয়নি। আমার ক্রেডিট লিমিট ৭০ হাজার টাকা। প্রতিমাসে ভাল ভাবেই বিল আসে অফিসের ঠিকানায় আমিও বিল পরিশোধ করি সময়মত। কোনদিন ডিফল্টার হইনি।

বরং প্রচুর কেনাকাটা করার জন্য আমার লিমিট ২০ হাজার টাকা থেকে ৭০ হাজার টাকায় উন্নিত হয়। ক্রেডিট কার্ড দিয়ে কেনাকাটার জন্য যে পয়েন্ট পাই তাতে আমার বছরে বোনাস হিসেবে ইয়ারলী ফি মওকুফ হয়ে যায়। এককথায় আমি এই ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড নিয়ে সন্তষ্ট। চার মাস আগে অফিসে এক মার্কেটিং এক্সিকিউটিভ আসলো ব্র্যাক ব্যাংক থেকে বললো, যাদের অন্য কোন ব্যাংকের ক্রেডিট কাড আছে তাদেরকে ব্র্যাক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড দেয়া হবে যার ক্রেডিট লিমিট হবে পূর্বের কার্ডে ১.৫ গুন এবং কোন ইয়ারলী ফি নেই। ভাল কথা।

আমি ফরম ফিলাপ করলাম। বেশ কয়েকদিন পরে ক্রেডিট কার্ড পেলাম। গোল্ড কার্ড। লিমিট ১ লাখ ৫ হাজার টাকা। পিন নাম্বারের জন্য ১৩ বার ফোন করে অবশেষে পিনের চিঠি হাতে পেলাম।

যাক প্রথম মাসে কার্ড ইউজ করলাম না। যথা সময়ে বিল পেলাম ১০০০.৮২টাকার। ফোন দিলাম কাষ্টমার কেয়ারে। বেশ কয়েকবার ফোন করে লাইন পেলাম না। অবশেষে ১০ মিনিটে আমাকে কিউতে রেখে এক সুকন্ঠী ফোন ধরলেন, বললেন, কেমন আছেন স্যার? বললাম, আপনারা যেমন রেখেছেন।

লাইন পেতে এত দেরী হওয়ার কথা জানতে চাইলাম। সুকন্ঠী রিনিঝিনি করে বললেন, আমাদের অনেক কাষ্টমার তো তাই। বললাম, গ্রামীনফোন থেকেও কি আপনাদের বেশী ক্লাইন্ট? জানতে চাইলাম, আমার বিলের ব্যাপারে। উনি আমাকে কোন সদুত্তর দিতে পারেননি। এরপরও বেশ কয়েকজনের সাথে কথা হয়েছে কাষ্টমার কেয়ারে কেউ কোন কথা বলতে পারনেনি।

অবশেষে গেলাম গুলশান ব্র্যাঞ্চের কাষ্টমার কেয়ারে। দেখলাম, এক সুন্দরী বসে আছেন আমাদের সাথে কথা বলার জন্য। উনি সবার সাথে কথা বলছেন বেশ হেসে হেসে দাঁত বের করে। কেউ কেউ মুগ্ধ হচ্ছেন উনার সৌন্দর্য দেখে। আমারও ভাল লাগলো ওনাকে দেখে।

জানতে চাইলাম, কেন আমার উপর আপনার ব্যাংকের এই নির্যাতন? উনি বললেন, আপনার লেট পেমেন্ট ফি আছে। আমি বললাম, আমি তো এখনও কার্ড ইউজ করিনি। তাহলে লেট পেমেন্ট ফি আসলো কি করে? সুদর্শনা মহা চিন্তায় পড়লেন। বললেন, স্যার আমাদের ব্যাংকিং সফটওয়্যারে ভুল হয়ে গেছে, আপনি কাইন্ডলি মিনিমাম এমাউন্ট ৫০০ টাকা দিয়ে দিন পরের মাসে আমরা এটা এডজাষ্ট করে দিবো। সুন্দরীর কথা শুনে আশায় বুক বেঁধে ৫০০ টাকা দিলাম।

পরের মাসের বিল পেলাম না অফিসের ঠিকানায়। অবশেষে সুন্দরীর দারস্থ হলাম। বলল, স্যার আপনার এমাসের বিল ৬৭ টাকা। আপনি দিয়ে দিন। বললাম গত মাসের তার প্রতিশ্রুতির কথা।

উনি আমাকে সুন্দর হাসি দিযে আস্বস্ত করলেন, কিছু মনে করবেন না। আমাদের সফটওয়্যারে সমস্যা হয়ে গেছে। সামনের মাসে ঠিক করে দিবো। আমি লিখিত নিয়ে আসলাম। আমি ৬৭ টাকা জমা দিয়ে দিলাম।

ওনার মোবাইল নাম্বার আর নাম লিখে দিলেন। বললেন, এবার সমস্যা হলে ফোন দিবেন আর কষ্ট করে ব্যাংকে আসতে হবে না। জানিনা আবার সুন্দরীর সাথে দেখা হবে কিনা? আপনি যদি এই ব্যাংকের কাষ্টমার কেয়ারে যান তবে দেখবেন যে, সবাই একই সমস্যা নিয়ে হাজির হয়েছে। আমার অফিসের বেশ কয়েকজন কলিগের এই সমস্যা। যারা কার্ড করেছে তাদেরই সমস্যা।

এই ব্যাংকটি প্রথম থেকেই মানুষের কাছ থেকে সফটওয়্যারের দোহাই দিয়ে টাকা অযথা কেটে আসছে। যেগুলো আর কখনও এডযাষ্ট করে না। এই বিচার কার কাছে দিবো? বাংলাদেশ ব্যাংকের উচিত এগুলো খতিয়ে দেখা।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।