আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

শীর্ষ যু্দ্ধাপরাধীদের তালিকা: ইসলামী ঐক্যজোটের দৃষ্টিতে



দৈনিক আমাদের সময় । ১৭ ফেব্রুয়ারি ২০০৮ রোববার। ============================================ ১৫ শীর্ষ যুদ্ধাপরাধীর নাম ঘোষণা করেছে ইসলামী ঐক্যজোট খাদ্য সচিব আইয়ুব মিয়ার নামও রয়েছে তালিকায় ------------------------------------------------------------------------------- দীনেশ দাস: পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী গতকাল শীর্ষ ১৫ যুদ্ধাপরাধীর নামের তালিকা ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ইসলামী ঐক্যজোট। বাকী ৩০ জনের নাম ঘোষণা করা হবে শিগগিরই। এই তালিকায় খাদ্য ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রণালয়ের সচিবের নামও রয়েছে।

গতকাল দুপুরে দলের চেয়ারম্যান আলহাজ মিছবাহুর রহমান চৌধুরী এক জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ১৫ যুদ্ধাপরাধীর নাম ঘোষণা করেন। এরা হলেন, আলবদর বাহিনীর সুপ্রিম কমান্ডার ও বর্তমানে জামায়াতে ইসলামের আমীর মাওলানা মতিউর রহমান নিজামী, আলবদর বাহিনীর উপপ্রধান ও জামায়াতের বর্তমান সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মোহাম্মাদ মুজাহিদ, চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত বদর বাহিনীর সহকারী প্রধান, বর্তমানে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নেতা ও রাবেতা আলম ইসলাম বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর, ১৯৭৭ সালে ইসলামী ছাত্র শিবির পুনঃপ্রতিষ্ঠার প্রথম সভাপতি মীর কাশেম আলী, বদর বাহিনীর কমান্ডার, ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশের নির্বাহী কমিটির সাবেক চেয়ারম্যান ও জামায়াতের প্রয়াত নেতা মুহাম্মদ ইউনূস, জামালপুর বদর বাহিনীর কমান্ডার ও জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মোহাম্মদ কামারুজ্জামান, ময়মনসিংহের দায়িত্বপ্রাপ্ত বদর বাহিনীর কমান্ডার ও বর্তমানে ব্যবসায়ী আশরাফ হোসাইন, ঢাকার আলবদর বাহিনীর উপকমান্ডার জামায়াতের মজলিসে শুরার সদস্য আসম রুহুল কুদ্দুস, বদর বাহিনীর ঢাকা শহরের প্রধান কমান্ডার ও বর্তমানে জামায়াতের কেন্দ্রীয় প্রশিক্ষণ সম্পাদক সরদার আবদুস সালাম, বদর বাহিনীর রাজশাহী জেলার কমান্ডার ও বর্তমানে দুবাইয়ে ব্যবসারত আবদুল হাই ফারুকী, বদর বাহিনীর চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডার, বর্তমানে ইবনে সিনা ও ইসলামী ব্যাংকের অন্যতম মালিক আবদুল জাহের মোহাম্মদ আবু নাসের, আলবদর বাহিনীর অপারেশন গ্র“পের ঢাকার উপপ্রধান বর্তমানে লন্ডনে বসবাসকারী চৌধুরী মঈন উদ্দিন, বরিশাল শহর আলবদর বাহিনীর কমান্ডার ও বর্তমানে খাদ্য ও দুর্যোগ মন্ত্রণালয়ের সচিব আইউব মিয়া, আলবদর বাহিনীর সিলেট শহরের দায়িত্বপ্রাপ্ত কমান্ডার ও সুপ্রিম কোর্টের আইন ব্যবসায়ী ব্যারিস্টার আবদুর রাজ্জাক, আলবদর বাহিনীর সিলেট জেলার দায়িত্বপ্রাপ্ত ও জামায়াতের সাবেক এমপি মাওলানা ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী এবং আলবদর বাহিনীর ঢাকা শহরের প্রধান ও বর্তমানে জামায়াত নেতা মুহাম্মদ সামসুল হক। যুদ্ধাপরাধী হিসেবে প্রথম কিস্তিতে প্রকাশিত ১৫ জনের তালিকায় পূর্ব পাকিস্তান জামায়াতে ইসলামের আমীর অধ্যাপক গোলাম আজমের নাম না থাকায় সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মিছবাহুর রহমান চৌধুরী বলেন, গোলাম আজম একজন শীর্ষ স্বাধীনতা বিরোধী হলেও যুদ্ধাপরাধ আইনের সজ্ঞায় তার যুদ্ধাপরাধসমূহ তদন্তের কাজ চলছে। তা উদঘাটিত হলে পরবর্তী কিস্তিতে প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, শিগগিরই জামায়াত নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত আলবদর বাহিনীর আরও ১৫ জন, মুসলিম লীগসহ বিভিন্ন স্বাধীনতা বিরোধীদের সমন্বয়ে গঠিত রাজাকার বাহিনীর ১০ জন এবং নেজামে ইসলামের নেতাকর্মীদের সমন্বয়ে গঠিত আলশামস বাহিনীর ৫ জন যুদ্ধাপরাধীর তালিকা প্রকাশ করা হবে।

সংবাদ সম্মেলনে তিনি সরকারকে সুপ্রিম কোর্টের একজন বিচারপতিকে প্রধান করে মুক্তিযুদ্ধের সেক্টর কমান্ডার, বিশিষ্ট আইনজীবী, শিক্ষাবিদ ও রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর সমন্বয়ে একটি শক্তিশালী স্বাধীন তদন্ত কমিশন গঠন করার দাবি জানিয়ে বলেন, সেখানে ইসলামী ঐক্যজোটের সংগৃহিত যুদ্ধাপরাদের প্রামাণিক দলিল এবং যুদ্ধাপরাধের শিকার ৬৫১ জনের তৈরি করা জবাবনবন্দী দাখিল করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে ইসলামী ঐক্যজোট নেতা যুদ্ধাপরাধের তদন্ত ও বিশেষ ট্রাইব্যুনালে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে ৫ মাসব্যাপী কর্মসূচি ঘোষণা করেন। কর্মসূচি হচ্ছে, ১ মার্চ থেকে ২৪ মার্চ পর্যন্ত দেশের সকল রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতা, সেক্টর কমান্ডারস ফোরাম নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠনের নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময়, ২৭ মার্চ থেকে ২৫ এপ্রিল দলীয় প্রধানের নেতৃত্বে ৩ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দলের যুক্তরাজ্য, কানাডা, ফ্রান্স, যুক্তরাষ্ট্র, ফ্রান্স, জার্মান, নরওয়ে, ডেনমার্ক, ইতালিসহ ইউরোপের কয়েকটি দেশে প্রবাসী বাংলাদেশী ও বিশ্ববরেণ্য মানবতাবাদী নেতাদের সঙ্গে মতবিনিময় করে একাত্তরের যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের যৌক্তিকতা উত্থাপন, একই সঙ্গে দলের ভাইস চেয়ারম্যান এ্যাডভোকেট নূরুল ইসলাম খানের নেতৃত্বে ২ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশ সফরের মাধ্যমে সেখানে বসবাসকারী বাংলাদেশি ও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের যৌক্তিকতা তুলে ধরবেন। ২০ থেকে ২৫ মে ঢাকায় দেশের শীর্ষস্থানীয় আলেম-ওলামাদের জাতীয় সম্মেলন করে ইসলামের দৃষ্টিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের ব্যাপারে অভিমত নেয়া হবে। ২৬ জুলাই ঢাকায় আন্তর্জাতিক সম্মেলন করে বিশ্বের বরেণ্য মানবাধিকার ও যুদ্ধবিরোধী নেতাদের আমন্ত্রণ করা হবে।

এরপর ২৮ জুলাই সংবাদ সম্মেলন করে পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করা হবে। সম্পাদনা: দুলাল আহমদ চৌধুরী

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.