আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

জামাতে ইসলামী ধর্মের প্রবক্তা মওদুদীর কিছু ইসলাম বিকৃতির নমুনা

নিজেরে হারায়ে খুজি..... bohurupi.mohajon@gmail.com

আবুল আলা মওদুদী (১৯০৩-১৯৭৯) পাকিস্তান ভিত্তিক দল জামাতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা যা বর্তমানে পৃথিবীর অনেক দেশেই তাদের ধর্ম ব্যবসা খুলে বসেছে। প্রথম দিকে মওদুদী পাকিস্তান রাস্ট্র প্রতিষ্ঠার বিরোধীতা করলেও ১৯৪০ এর দশকে এসে নিজের ভোল পাল্টায় এবং তখন থেকেই সে পাকিস্তানে তার কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ প্রচেষ্টায় লিপ্ত হয়। সে ইসলামকে একটি জীবন ব্যবস্থার পরিবর্তে একটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে প্রচার করতে শুরু করে। ইসলামের মৌলিক নীতি ও ভিত্তি সমূহ, যেমন: তাওহীদ, এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস, সালাত, সাওম, যাকাত, হ্জ্জ ইত্যাদিকে উপেক্ষা করে মওদুদী শাসন ব্যবস্থার ওপর বেশি জোর দেয়। রাস্ট্রের কর্তৃত্ব আকাংক্ষার ব্যাপারে তার মতামত: “তাই কর্তৃত্বের আকাংক্ষা ছাড়া কোন দর্শণে আস্থাজ্ঞাপন করার কোন অর্থ নেই, এবং কোনটি আইন সম্মত বা কোনটি নিষিদ্ধ অথবা নির্দেশিত আইন, কোনটিরই কোন মানে নেই।

" - তাজদীদ উদ দ্বীন, পৃষ্ঠা ৩২ - ৩৩ অথচ হযরত মুহাম্মদ (স) পরিস্কার ভাবে কর্তৃত্বের লালসাকে পুরোপুরি নিষেধ করে দিয়েছেন; ওনার মতে কর্তৃত্ব ও শাসন করার লোভ মানুষকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়। তিনি বলেন: “নেতৃত্বের আকাংক্ষা করোনা। কেননা তোমরা যদি নেতৃত্বের আকাংক্ষা করে তা পাও তবে সে দায়িত্ব তোমাদের একাই পালন করতে হবে। কিন্তু আকাংক্ষা না করেই যদি তোমরা নেতৃত্ব পাও তবে তোমরা সাহায্য পাবে (আল্লাহর কাছ থেকে)। ” - মুসলিম, ৪৬৯২ এখানে মওদুদীর কিছু ইসলাম বিকৃতির নমুনা তুলে ধরছি।

এখানে পবিত্র কুরআন, হাদীস এবং মওদুদীর বিভিন্ন লেখা ও ভাষন থেকে উদ্ধৃতি তুলে ধরা হয়েছে; এখানে পরিষ্কার যে মওদুদী জেনেশুনে ইসলামের বিকৃতি ঘটানোর অপচেষ্টা করেছে। তাতেও যদি গন্ডমূর্খ জামাত-শিবিরের সমর্থকদের কিছুটা বোধ হয়। আল্লাহ আমাদের এধরনের দুরাত্মার খপ্পড় থেকে রেহাই দিন। “শাসন ও কর্তৃত্ব করার নামই হচ্ছে ধর্ম, শাসন ব্যবস্থার আইন হল শরিয়া এবং উপাসনা হচ্ছে শাসন ব্যবস্থার ঐতিহ্যকে অনুসরন করা’’ - খুতবা, পৃষ্ঠা ২১৭। “লোকে সাধারণত বলে ইসলামের পাচটি স্তম্ভ: এক আল্লাহর ওপর বিশ্বাস, নামাজ, যাকাত, রোযা এবং হজ্জ।

এবং এ গুলোই ইসলাম এই ভুল ধারণার মধ্যে তারা অনেকদিন ধরে আছে। এসলে এটা একটা বড় বিভ্রান্তি যা মুসলমানদের পথ এবং কর্মকে ধ্বংস করেছে। “ (কাউসার, ৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৫১- মওদুদীর ভাষণ থেকে উদ্ধৃত) অথচ সহীহ বুখারী এবং মুসলিম শরীফে স্পষ্টভাবে উল্লেখ আছে ইসলামের মূল স্তম্ভ পাচটি: ১. শাহাদাহ ২. সালাত ৩. বাধ্যতামূলক যাকাত প্রদান ৪. সাওম এবং ৫. হজ্জ। শুধু তাই নয়, মওদুদী হাদীস শরিফের ও সমালোচনা করতে ছাড়েনি। মওদুদী এ সম্পর্কে বলেছে: “কোন সত্যবাদী মানুষই এই দাবী করতে পারবেনা যে ৬ - ৭ হাজার হাদীসের (সহীহ বুখারী শরিফ) সবগুলোই পুরোপুরি ঠিক।

“ (১৯৫৫ সালের ১৫ মে বরকত হলে মওদুদীর দেয়া ভাষণ থেকে; যা পরে আল-ইতেশাম পত্রিকায় ২৭ মে ১৯৫৫ এবং ৩ জুন ১৯৫৫ তারিখে প্রকাশিত হয়। ) শুধু এই নয়, হযরত মুহাম্মদ (স) চুক্তি ভিত্তিক অস্থায়ী বিয়ে (মুতাহ) হারাম ঘোষনা করেছেন। কিন্তু মওদুদী হাস্যকর উদাহরণ টেনে তা হালাল করতে চেয়েছে: “ধরেন সমুদ্রের মাঝে একটি নৌকা ডুবে গেল। একজন পুরুষ ও একজন মহিলা বেচে গিয়ে এক নির্জন দ্বীপে গিয়ে ওঠে। এ অবস্থায় তাদের একসাথে থাকতেই হবে।

কিন্তু ইসলামী আইন মতে তারা নিকাহ করতে পারবে না। তাই তাদের কাছে যে একমাত্র রাস্তাটা খোলা আছে তা হল নিজেদের মধ্যে চুক্তি করে অস্থায়ী বিয়ে করা ততদিনের জন্য যতদিন না তারা লোকালয়ে পৌছাতে পারে বা লোকেরা তাদের খুজে পায়। অস্থায়ী বিয়ে (মুতাহ) এ ক্ষেত্রে বা এর মত পরিস্থিতিতে জায়েজ। “ -তারজুমামুল কুরআন, ১৯৫৫, পৃষ্ঠা: ৩৭৯ যুদ্ধবন্দী মহিলাদের ব্যাপারে মওদুদীর মতামত দেখুন: “এমনকি বর্তমান যুগেও যুদ্ধবন্দী মহিলাদের সৈনিকদের মধে বন্টন করে দেয়া উচিৎ এবং সৈন্যদেরকে তাদের (মহিলাদের) ভোগ করার অনুমতি দেয়া উচিৎ। “ অথচ পবিত্র কুরআনে এ ব্যাপারে স্পষ্ট নির্দেশ দেয়া আছে।

আল্লাহ বলেন: “অবশেষে যখন তাদেরকে (কাফিরদের) পূর্ণরূপে পরাভূত কর তখন তাদেরকে শক্ত করে বেধে ফেল। অতঃপর হয় তাদের প্রতি অনুগ্রহ কর, না হয় তাদের নিকট হতে মুক্তিপণ লও (এবং মুক্তি দাও) । ” - সূরা মুহাম্মদ, আয়াত ৪ বাল্য বিবাহ নিয়ে মওদুদী বলেছে: “নাবালিকা মেয়েদের (বয়:প্রাপ্তির আগে) বিয়ে করা যায়। স্বামীরাও তাদের সাথে সহবাস করতে পারে। “ -তাহফীমুল কুরআন, পঞ্চম খন্ড, পৃষ্ঠা: ৫৭১ বিভিন্ন নবী-রাসূলদের নিয়ে মওদুদীর সমালোচনার বিস্তর উদাহারণ আছে।

যেমন নিচের মন্তব্যে সে হযরত ইউসুফ (আ) কে মানুষ হত্যাকারী জঘন্য মুসোলিনীর সাথে তুলনা করেছে - “কিছু মানুষ যে ধারনা পোষণ করে যে তিনি [হযরত ইউসুফ (আ)] মিশরের তত্ত্বাবধায়কের দায়িত্ব চেয়েছিলেন শুধু সেখানকার অর্থ মন্ত্রী হবার জন্য তা আদপে ঠিক নয়; প্রকৃত পক্ষে তিনি একজন সৈরশাসক হতে চেয়েছিলেন। এমতাবস্থায় হযরত ইউসুফ (আ) যে পদ পান তা বর্তমানকালের ইতালির মুসোলিনীর অবস্থার সমতুল্য। “ - তাহফিমাত, খন্ড ২, পৃষ্ঠা ১২২, ৫ম সংস্করণ মওদুদী হযরত সুলাইমান (আ) এর ১০০ স্ত্রী থাকার ব্যাপারে মন্তব্য করেছে: “হয় আবু হুরাইরা (রা) নবীর কথা শুনতে ভুল করেছেন অথবা তিনি পুরো ব্যাখ্যা শোনেননি। “ -রাসাইল -ও-মাসাইল, খন্ড ২, পৃষ্ঠা: ২৭ এখন বলেন কিভাবে কোন সভ্য ও বিবেকবান মানুষ এই লোকের মতবাদে বিশ্বাস করতে পারে এবং একে ইসলাম বলে দাবী করতে পারে? (বি:দ্র: এখানে অনেক উদ্ধৃতি ইংরেজী থেকে অনুদিত)

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.