আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

বানিশান্তা ও ময়মনসিংহ পতিতালয়ের আপা ও শিশুদের কথা মনে পড়ে



যৌন নির্যাতন বিরোধী কমিউনিটি ভিত্তিক সামাজিক সুরক্ষাদলগুলোকে দক্ষতা বৃদ্ধি ও নির্যাতন বিরোধী ভাবনা চিন্তায় উদ্দীপ্ত করার লক্ষ্যে বানিশান্তা পতিতালয়ে নিয়ে গিয়েছিলাম। এটা সেই সময় যখন আমি বাংলাদেশ জাতীয় মহিলা আইনজীবি সমিতিতে সিনিয়র রিসার্চ, মনিটরিং, ডক্যুমেন্টেশন অফিসার হিসেবে কাজ করতাম। আর ময়মনসিংহ পতিতালয়ে যাওয়া হয়েছিল বহু পুরস্কার পাওয়া জাপানিজ আমেরিকান সাংবাদিক বন্ধু শিহোকে নিয়ে। চমৎকার সময় কেটেছে দুজায়গাতেই। চমৎকার বলছি তাদের সাথে গড়ে উঠা সখ্যতা, পারস্পরিক শেয়ারিং ও শিখনগুলোকে মাথায় রেখে।

সেই সাথে দেখেছি জীবনের ভয়াবহ বাস্তবতা। ময়মনসিংহ পতিতালয়ে দেখেছি জেীবনরে করুন বাস্তবতা: বেচে থাকার জন্য একই ঘরে মা ও তার দুই মেয়ের একত্রে খদ্দের নেয়ার অধ্যায়। তবে দুজায়গাতেই দেখেছি, দুটো দলের করুণ অবস্থা, যারা সবচেয়ে ভালনারেবল। এরা হলো শিশু ও সেই সকল যৌনকর্মী বয়স হয়ে যাওয়ার কারনে আর যাদের চাহিদা নেই। দুজায়গাতেই দেখেছি একই সাধারণ চিত্র: মা যখন খদ্দের নেয়, তা দিন বা রাত, ঝড়বৃষ্টি যাই হোক না কেন, শিশুদেরকে বাইরে থাকতে হয়।

যখন নাগরিক শিশুরা পরম আদরে লেপের তলায় ঘুমায়, তখন অনেক শীতার্ত শিশু পতিতালয়ের ভেতরের সরু রাস্তায় জেগে থাকে। আর বৃদ্ধ ও চাহিদা শেষ হয়ে যাওয়া যৌনকর্মীদের মধ্যে যারা ভাগ্যবান তারা কমবয়সীদের ঘরে ঘরে যেয়ে রান্না ও পানি আনার কাজ পেয়ে যায়। অন্যরা থাকে আরো খারাপ অবস্থায়। বানিশান্তা পতিতালয়ের অবস্থা ভৌগলিক কারনেই ভয়াবহ, চারদিকে সমুদ্র ও সুন্দরবন লাগোয়া জীবন্ত নদী, শেয়ারিং এর সময় অধিকাংশেরই বক্তব্য ছিল নদীর পাড়ের এই পল্লী যেকোন ধরনের ঝড়বৃষ্টির পয়লা শিকার। শতবার সতর্কীকরণ শুনে থাকলেও ভৌগলিক অবস্থা ও সামাজিক শৃঙ্খল দুকারনেই কোথাও যেয়ে আশ্রয় নেয়ার সুযোগ তাদের নেই।

তাদের সাথে কথা হয়েছিল ২০০৭ এর শুরুতে। আচ্ছা দেশ লন্ডভন্ড করে দেয়া সিডর এর রাতে বানিশান্তা পতিতালয়ে কী কী ঘটেছিল? আন্দাজ করা যায় ভোগী খদ্দেরদের অনেকেই সে রাতে আসেনি, কিন্তু বানিশান্তার প্রানস্পন্দন আপারা কি কোথাও আশ্রয় নিতে পেরেছিল?? সে রাতেও িক শিশুরা বাইরে থাকতে বাধ্য হয়েিছল?? আমি জানিনা। (নোট: পতিতালয় শব্দটি যৌনকর্মীদের সাবজেকটিভিটির প্রতি যথার্থ সম্মানবোধ প্রদর্শন করতে ব্যর্থ জানা স্বত্বেও এখানে ব্যবহার করলাম গ্রহণযোগ্য বিকল্প শব্দ মাথায় না আসায়। দু:খিত। আর ছবিটি বনিশান্তার।

এক বসাতে তাদের সাথে শুধু আলাপ ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ই হয়নি, চমৎকার গানবাজনা ও নাচ উপহার েপয়েছিলাম, আমার জীবনে উপভোগ করা অন্যতম এক জীবন্ত কনসার্ট। তবে দৃশ্যমান আনন্দ ছাপিয়ে প্রত্যেকের গহনিে ঠিকরে উঠা কান্না প্রত্যেকেই আমরা টের পেয়েছিলাম। )

সোর্স: http://www.somewhereinblog.net     দেখা হয়েছে ১৩ বার

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।