আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

র্যাগিং :শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এরকম অসুস্থ ও বিকৃত আচারের চাষাবাদ চলতে পারে না ।

মামা ভাগ্নে যেখানে আপদ নাই সেখানে । ঘটনা একঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় । আইটি ডিপার্টমেন্টের প্রথম বর্ষের একজন ছাত্রী,আমাদের বোন । বাসস্থান বিশ্ববিদ্যালয়ের জাহানারা হল । বিশ্ববিদ্যালয় ও হলজীবনের প্রথম দিন,শারীরিক ও মানসিকভাবে চরম লাঞ্চিত হয়ে আমাদের বোনটি কাঁদছে-সাথে কাঁদছে তার মা ।

একইঅবস্থা তার ডিপার্টমেন্টের অন্য ছাত্রীদেরও । কেনো ? কারন তার ডিপার্টমেন্টের সিনিয়র আপুরা তাকেসহ ওই ডিপার্টমেন্টের সকল মেয়েদের বলেছে ডিপার্টমেন্টের বড় ভাইদের কাছ থেকে তাদের নিজেদের ব্রেস্টের মাপ করে আনতে এবং.................. (আরোসব নোংরা নির্দেশ সম্বলিত কথাবার্তা) ডিপার্টমেন্টের সিনিয়রদের ভাষায়,“আজ কেবলতোমাদের মাংস ধুইলাম,আগামীদিন এই মাংস “কশানো” হবে । হল ছেড়ে যাওয়ার চিন্তাও কেউ করবা না ” সূত্রঃ Bumerang(বুমেরাং) ঘটনা দুইঃ আহসানউল্লাহ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় । টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং ডিপার্টমেন্ট । সেখানে প্রথমবর্ষে অধ্যয়নরত এক ছাত্র,আমাদের বন্ধু ।

তার কাছেও শুনলাম এরকম তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা । যে ছাত্রটি অনেক আশা নিয়ে হাসিমুখে পা রেখেছিলো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে,সিনিয়র ভাইদের বিকৃত মানসিকতার নির্মম শিকারে পরিনিত হয়ে মুছে গেছে তার মুখের হাসি,আশা পরিনত হয়েছে হতাশায়-দিন কাটছে চরম মানবেতর অবস্থায় । আমাদের ওই বন্ধুটির শার্টের একটি পকেটে কাগজের গোল্লা ঢুকিয়ে দিয়ে মহিলাদের বুকের অবয়ব বানিয়ে তাকে জিজ্ঞেস করা হয়, “কিরে !তোর আরেকটা ব্রেস্ট কই গেলো রে ?” তাকে জিজ্ঞেস করা হয় এই তুই ছেলে নাকি মেয়ে ? ছেলে হয়েও আরেকটা ছেলের কাছে সে যখন উত্তর দিতে বাধ্য হলো, “আমি ছেলে” তখন ওই অসুস্থ মানসিকতার সিনিয়রগুলো তার পুরুষত্বের প্রমান চাইলো । তাকে বলা হলো “যা !!সিনিয়র আপুদের কাছ থেকে তোর পুরুষত্বের প্রমান দিয়ে প্রত্যয়নপত্র নিয়ে আয় । সূত্রঃভিকটিম,এডমিনের সহপাঠী ।

এমন অনেক জানা ঘটনা থেকে কেবলমাত্র দুইটি ঘটনার কথা উল্লেখ করলাম । দেশের প্রতিটি পাবলিক ও প্রাইভেট ভার্সিটিতে এমনকি মেডিকেল কলেজ ও প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতেও এই নোংরামি চলে । ১২ বছর লেখাপড়া শেষ করে-ভর্তিযুদ্ধ মোকাবেলা করে একজন ছাত্র-ছাত্রী তার স্বপ্নের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের নতুন একটি জগতে পা রাখে । তার বুক ভরা স্বপ্ন থাকে । নিজস্ব প্রচেস্টা ও সিনিয়রদের সহযোগিতাই পারে তার লালিত স্বপ্নকে বাস্তব রূপ দিতে ।

অথচ শুরুতেই এই স্বপ্নের অপমৃত্যু ঘটে সিনিয়র নামের কতগুলো পিচাশের কাছে । একঝাঁক মেধাবী ছোট ভাই-বোনদের যারা একটি প্রতিষ্ঠানে এইরকম ভাবে বরন করে নেয় তাদের কি বিশেষনে বিশেষায়িত করা যায় তা আমার অজানা । জাহাঙ্গীরনগরের যে বোনটিকে আজ ব্রেস্টের মাপ আনতে সিনিয়রদের কাছে পাঠানো হয় কে বলতে পারে কাল তাকে কোনো ছাত্রনেতার শয্যাসঙ্গী হতে বাধ্য করা হবে না ???বরং এমনটাই তো ঘটে আসছে । ইডেন কলেজের কেলেঙ্কারির কথা তো আমাদের জানা !! আমাদের প্রত্যাশা দেশের এই বিদ্যাপিঠগুলো থেকে দেশ গড়ার কারিগর সৎ- দেশপ্রেমিক প্রজন্ম গড়ে উঠবে । কিন্তু কিভাবে তা সম্ভব ??? যে বোনটি লেখাপড়া করতে এসে আজ টিজিঙের শিকার,তার মনে দেশপ্রেম জাগ্রত হওয়া কতটুকু সম্ভব ???বরং দেশের প্রতি তার এক তীব্র ঘৃনা জন্মাবে ।

আর যেই অসভ্যরা টিজিং করছে তাদের থেকে আপনি সততা আশা করতে পারেন ?না । বরং এদের থেকেই এ যুগের পরিমলদের জন্ম হয় । ভেবে দেখুন দেশের ভবিষ্যত্ আজ কোন পথে চলছে !! আমি সকল সিনিয়রদের ঢালাওভাবে দোষারোপ করবো না । এইসব অসভ্যদের ভিড়ে আমি অনেক সুন্দর মনের অধিকারী ভাইদের সন্ধান পেয়েছি,কিন্তু তাদের কোনো তৎপরতা নেই । আমার মনে হয় ওই ভাইরা টিজারদের তুলনায় সংখ্যালঘু হওয়ায় প্রতিবাদ করার সাহস করেন না এবং ঝামেলায় জড়াতে চান না ।

আমি তাদের বলবো,আপনারা একটি ভালো কাজের ধারা চালু করেন হোক তা স্বল্প পরিসরে । কিন্তু একদিন তা বিস্তৃত হবে । কিন্তু কেউ যদি শুরুই না করে তবে কিছুই হবে না । । আজ অন্যের মেয়ে-বোন লাঞ্চিত-নির্যাতিত হয়েছে,কাঁদছে ।

আপনি চুপ থাকলেন । ভবিষ্যতে আপনার মেয়ে-বোন লাঞ্চিত-নির্যাতিত হবে,কাঁদবে,আপনিও কাঁদবেন । তখন সবাই চুপ থাকবে । তাই আসুন নিজের-নিজের ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে অন্যায়ের প্রতিবাদ করি । collected.www.facebook.com/note.php?note_id=545655768787690&refid=28&_ft_=qid.5838763030157744201:mf_story_key.545655768787690 ।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।