আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

গল্ফ বনাম দেশীয় মার্বেল খেলা

নিজেরে হারায়ে খুজি..... bohurupi.mohajon@gmail.com

আমারা এক আজব জাতি। আমাদের নিজেদের এত কিছু থাকতেও আমরা অন্যদের পারলে দুই চক্ষু কানার মত অনুসরন করি। যদিও আমাদের সেই অনুসরন করা আদৌ দরকার কিনা তা ভেবে দেখিনা। ভাই ও বোনেরা, শুরুতেই আমি অনেক গুরুগম্ভীর কথা বলে ফেললাম। আজকেই আমার প্রথম ব্লগে লেখা।

তাই কিছু কথা বা প্রশ্ন যাই বলি না কেন, সবার সাথে ভাগ করতে চাইছি। কয়েকদিন আগে পত্রিকায় একটা খবর দেখলাম। পূর্ত মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকার সোহরাওয়ার্দি উদ্দ্যানের একটা বড় অংশ ঢাকা ক্লাবকে দেয়া হয়েছে গ্লফ খেলার জন্য। আমি আজ পযর্ন্ত কোন লক্ষণ দেখিলা যে আমাদের গ্লফ খেলায় কোন ভবিষ্যত আছে। আমাদের দেশে অনেক গ্লফ মাঠ অযথা পরে আছে, সেগুলো সবই সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য তৈরি।

অনেকবার সেসবের পাশ দিয়ে গেছি, কখনো মনে পড়েনা কাউকে খেলতে দেখেছি। মাঝে মাঝে টিভিতে দেখি টুর্নামেন্ট হয়। তাতে যাদের খেলতে দেখি মনে হয়না তারা কোনদিন একটা লাঠি হাতে কোন বলে বাড়ি মেরেছেন, গ্লফ খেলাতো অনেক দূরের কথা। উপরন্তু যারা বল বয়, তারাই দেখাযায় সপ্তাহে একদিন খেলার সুযোগ পেয়েও দেশের জন্য ছোট খাট টুর্নামেন্ট থেকে কিছু নিয়ে আসেন। তাহলে প্রশ্ন হল এই গ্লফ খেলা মাঠ এতগুলো তৈরি করার মানে কি? যেখানে দেশের কোটি কোটি মানুষের থাকার ভালো কোন জায়গা নেই সেখানে এত বিশাল বিশাল জায়গা জুড়ে, এত খরচ করে এই মাঠ গুলো তৈরি করার যৌক্তিকতা কত খানি।

কেনই বা ঢাকা ক্লাবের জন্য আমাদের সোহরাওয়ার্দি উদ্দ্যানের জায়গা ছেড়ে দিতে হবে? আসল কথা হল আমাদের দেশের সরকারি প্রশাসনে যারা আছেন তারা তেমন কোন কাজ না পারলেও ব্রিটিশদের মত ঠাটবাট ঠিকই শিখেছেন। কাজ না জানলেও অতীত ইংরেজ প্রভুদের শিখানো বাবুগিরি ঠিক শিখেছেন। তাই তো একদিকে প্রশাসন ঠিক মত চালাতে পারেননা, বিদেশের সাথে চুক্তি করতে গিয়ে দেশের স্বার্থ অবলীলায় জলান্জলী দিয়ে আসেন, আর এদিকে দেশের সম্পদ, গরিব মানুষের সম্পদ দিয়ে নিজেরা ফুর্তি করেন, নষ্ট করেন। আমি বড় পুকুরিয়া কয়লা খনিতে গিয়েছিলাম, সেখানে কয়লা তোলার কোন খবর নেই, অফিসারদের জন্য ক্লাব তৈরি হয়ে গেছে। পুরোটা জুড়ে এসি, সুইমিং পুল, পার্ক আরও কতকি।

আমি সেখান থেকে ঘুরে আসার কয়েক বছর পার হয়ে গেছে, এখনও খনিটি ঠিক মত চালু হয়নি। অথচ আমি যাবার সময়ই দেখি অফিসার, কর্মচারিদের থাকার জন্য কোর্য়াটার তৈরি করে একটা আস্ত শহর তৈরি করে ফেলা হয়েছে। অন্যদিকে যে চাইনিজরা খনি উন্নয়নের মূল কাজ করেছে এবং পাশে একটা বিদ্যুত কেন্দ্রও নির্মাণ করেছে, তারা নিজেদের থাকার ব্যবস্থা করেছে কন্টেইনারে, যেগুলোতে করে তারা চায়না থেকে বিদ্যুত কেন্দ্র তৈরির যন্ত্রাংশ নিয়ে এসেছিল। ওরা উন্নতি করবেনাতো আমরা করবো!! তাই আমার প্রস্তাব হল আমাদের দেশের এই সব বাবুগিরি বন্ধ করে আসল কাজ করতে হবে। সরকারি কর্মকর্তাদের জন্য গ্লফ ক্লাব বানানোর কোনই দরকার নেই।

কারণ তারা খেলতেই পারেনা। বরঞ্চ তাদের জন্য গ্লফ ক্লাবের বদলে মার্বেল খেলার ক্লাব বানানো যেতে পারে, এতে জায়াগা তেমন অপচয় হবে না যদি তারা মার্বেলও ঠিকমত না খেলতে পারে। তাই পূর্ত মন্ত্রলায়কে আমার উপদেশ, ঢাকা ক্লাবের জন্য সোহরাওয়ার্দি উদ্দ্যানে গ্লফ কোর্স না তৈরি করে মার্বেল খেলার একটা জায়গা আপাতত করে দেয়া হোক। ঢাকা ক্লাবের সদস্যরা যদি তাও ঠিক মত খেলতে পারে, তাহলে অন্যকোথাও তাদের খেলার ব্যবস্থা করে দেয়া যাবে পরে। কি আছে দরকার হলে বিদেশেও ট্রেনিং এ পাঠানো যাবে।

কিন্তু খেলা না যেনে খেলার নামে এই ইটকাঠের শহরের দুর্লভ উদ্দ্যান থেকে সাধারণ মানুষকে কোন ভাবেই বঞ্চিত করা যাবে না।

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।