আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

প্রত্নসম্পদ প্রদর্শনী নিয়ে কেন এত টানাটানি???

সামুতে বারবার ইসলাম ধর্মকে অবমাননা করলেও কর্তৃপক্ষের নিশ্চুপ থাকার বিরুদ্ধে প্রতিবাদ হিসাবে ব্লগিং বন্ধ করলাম এখানে। ধিক্কার সামুর কর্তৃপক্ষকে

মামলা ও সর্বস্তরের মানুষের বাধা উপেক্ষা করে ফ্রান্সে নিয়ে যাওয়া হলো দেশের ৪২টি মূল্যবান প্রত্নসম্পদ। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগের ছাত্র-শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবী মহল এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। এজন্যে তারা এদেশের একশ্রেণীর স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠীকে দায়ী করেছেন। এই প্রত্ননিদর্শনগুলো ফ্রান্সে প্রদর্শনীর জন্যে নিয়ে যাবার কথা জানিয়ে ফরাসি দূতাবাস ও গীমে জাদুঘর কর্তৃপক্ষ যুক্তি দেখিয়েছে, প্রাকৃতিক দুর্যোগের দেশ বলে বিশ্বের দরবারে পরিচিত বাংলাদেশ এর মাধ্যমে তাদের মর্যাদা বাড়াতে পারবে।

ফ্রান্সের গীমে মিউজিয়ামে প্রত্নসম্পদ প্রদর্শনের মধ্য দিয়ে আমাদের মর্যাদার পরীক্ষা দিতে হবে! এমন খোঁড়া যুক্তি দিয়ে আমাদের সম্পদ নিয়ে যাবে, এ অন্যায় মেনে নেয়া যায় না। আমাদের দেশের সম্পদ আমাদের দেশেই প্রদর্শিত হলে ক্ষতি কী ছিল? একটি দেশের প্রত্নসম্পদের মধ্যে লুকিয়ে থাকে তার আর্থসামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক চিত্র, যেটি তার দলিল হিসেবে কাজ করে। আর এদেশের প্রত্নসম্পদের যে সামান্য অংশ আবিষ্কৃত হয়েছে তাতে উদ্ঘাটিত হয়েছে আমাদের কয়েক হাজার বছরের সমৃদ্ধ অতীত। ঔপনিবেশিক আমলে ও তার পরে এসম্পদের অনেক কিছুই আমাদের জ্ঞাতসারে ও অজান্তে বিদেশে পাচার হয়ে গেছে এবং হচ্ছে এখনও। পাকিস্তান আমলে পশ্চিম পাকিস্তানে পাঠানো মহাস্থানগড়, ময়নামতি ও পাহাড়পুর জাদুঘরের প্রত্নসম্পদ আজও আমাদের দেশে ফেরত আসেনি।

বাংলাদেশের প্রত্নতত্ত্ব আইন (এন্টিকুইটিস এক্ট, ১৯৭৬) এর ২২(১)(গ) ধারা অনুযায়ী বিদেশে প্রত্নসম্পদ দেয়া যাবে না। এক্ষেত্রে প্রত্নসম্পদ বিদেশে পাঠানো প্রচলিত আইনের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন। ১৯৯১ সালের জাতীয় জাদুঘর ম্যানুয়ালে বলা হয়েছে, এক্ষেত্রে ট্রাস্টি বোর্ডের অনুমতি লাগবে। জানা গেছে, ফ্রান্সে প্রত্নসম্পদ পাঠানোর ক্ষেত্রে তাও মানা হয়নি। অর্থাত ফরাসি দূতাবাস ও সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের যে চুক্তি হয়েছে তা অস্বচ্ছ এবং অসম।

দেশের সোনালী স্বার্থ বিপন্ন করে কেন এই অসম চুক্তি? এই চুক্তির খেসারত দিতে হবে গোটা জাতিকেই। একটি অস্বচ্ছ এবং অসম চুক্তির কারণে আমাদের জাতীয় সম্পদ হাতছাড়া হওয়ার আশঙ্কা রয়ে গেল। অথচ এদিকে সরকারের চোখ নেই। বর্তমানে ফ্রান্সের প্রচলিত আইনই প্রত্নতত্ত্ব চুরির মালিকানাকে স্বীকৃতি দেয়। এতে করে সেখানকার যে কেউ যে কোনো চুরি বা পাচারকৃত প্রত্নবস্তুর মালিক হতে পারে।

তার আর ফেরত দেয়ার প্রয়োজন হবে না। এজন্যে দাঁড়াতে হবে না বিচারের কাঠগড়ায়ও। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, আদৌ কি এই মহামূল্যবান পুরাকীর্তি আবার জাতীয় জাদুঘরে ফিরে আসবে নাকি সুদূর ফ্রান্সের গীমে মিউজিয়ামেই থাকবে?

অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।