আমাদের কথা খুঁজে নিন

   

কোহিনূর কনফেকশনারী

আমার এই পথ চাওয়াতেই আনন্দ

চা আমাদের খুব প্রিয় পানীয় এমন নয়। এটা ছাড়া চলে না, এই চায়ের পরিচয় আমার কাছে। বিভিন্ন রকম চায়ের সাথে আমরা পরিচিত। লাল চা, দুধ চা, সবুজ চা, আরো কত কি? সিলেটে আবার পাঁচ লেয়ারের চা পাওয়া যায়। কিন্তু, আজ লিখব ঢাকায় খাওয়া দুই স্থানের চায়ের কথা।

পুরানো ঢাকায় দয়াগঞ্জের মোড়ে পাওয়া যায় আখ-ফ্লেভারের চা। এরা চায়ে আখের রস (অথবা গুড়) ব্যবহার করে। অন্যরকম!! তাই ভাল লাগে। প্রায়ই যাই। সেখানের প্রায় সব দোকানেই আখ-ফ্লেভারের চা।

এই পর্যন্তই। কিন্তু, শাহাবাগের পিজি হাসপাতালের নিচে (যাদুঘরের উত্তরে) কোহিনুর কনফেকশনারীর চায়ের ব্যাপার সম্পূর্ণ আলাদা। চায়ের টেস্ট যেমন আকৃষ্ট করে তেমনি তার পরিবেশন। মজা কিন্তু সেখানেই অর্থাৎ পরিবেশনে। আজ থেকে পাঁচ বছর আগের থেকে শুরু।

ঢাকা বিশ্বদ্যালয়ের সবে মাত্র ভর্তি হয়েছি, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে সাথে প্রেমেরও সূত্রপাত। যদিও, তখনও প্রকাশ হয়নি। বান্ধবি সহ চার সহপাঠি গিয়েছিলাম, বৃটিশ কাউন্সিলে সিনেমা দেখতে। সিনেমা শেষে অন্যরা চলে গেলে, আমরা দুজন গেলাম শাহাবাগের উদ্দ্যেশে, চা খাব বলে। সেদিনই প্রথম ঢুকলাম তাকে নিয়ে কোহিনুর কনফেকশনারীতে।

একতলা নয়, দুই তলা নয়, দেড় তলা কনফেকশনারী। বসেই চা চাইলাম। দুই কাপ চা দিয়ে গেল, চা দেখেই মেজাজ খারাপ। এনেদিল রং চা। কেমন লাগে, এলাম দুধ চা খেতে!! চিৎকার দিয়ে বললাম, আমরা দুধচা চেয়েছি।

ওরা হেসে উত্তর দিল, “আগে চা নাইড়া লন”। আমি থতমত খেয়ে চা নাড়া দিলাম। দেখি আসলেই দুধ চা। ওরা নিচের কনডেন্সড মিল্ক নেড়ে দেয় না। আমরা দুজনেই খুব মজা পেলাম।

এরপর ঐ কনফেকশনারীতে যাকেই নিয়ে গেছি একই কাহিনী ঘটেছে। আমার বোন গিয়েছিল, তার সাথেও একই ঘটনা। আমি আমার এক বন্ধুকে নিয়ে গেলাম, সে উলটা আমাকে ধমক। বলে শালা, “এই রং চা খাওয়াইতে নিয়া আইলি”। কিন্তু, নেড়েই দেখে দুধ চা।

অবাক হল। ব্লগে রেজিস্টার করবার পর, আমরা তিন বন্ধু গিয়েছিলাম একদিন সেখানে। তিনজনের একজন আবার সেই আগের বন্ধু। কিন্তু, এবারের নতুন জন, কনফেকশনারীর ওদের উপর ক্ষেপে বলে, “দুধ চা আন”। আমরা আবার হাসলাম।

প্রথম দিনের স্মৃতি রোমন্থন করলাম। আমার সেই প্রথম দিনের বান্ধবি, আজ আমার প্রমিকা প্রেমের বয়স পাঁচ বছর। তাকে নিয়ে অসংখ্য ঘন্টা কাটিয়েছি, কোহিনুরে। যখনই, মন ভাল ছিল প্রথম দিনের কথা মনে করে হেসেছিল। আমরা চিন্তা করে দেখলাম, ঢাকাতে আমাদের জান মতে আর কোথাও এভাবে চা দেওয়া হয় না।

সবাই চায়ে দুধ নেড়ে দেয়। কিন্তু, ওদের এটাই বিশেষত্ব। ওদের আরো একটা বিশেষত্ব্ব আছে, সেটা হল কোহিনুরের কলিজার সিঙ্গারা। সত্যিই এরকম মজার সিঙারা আর কোথাও খাই নি। (ওদের পাবলিসিটি করে দিলাম একদম ফ্রিতে, ওরা কিন্তু ওদের এই পাঁচ বছরের কাস্টমারকে এক কাপ চাও ফ্রিতে খাওয়াবে না)


অনলাইনে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা কথা গুলোকেই সহজে জানবার সুবিধার জন্য একত্রিত করে আমাদের কথা । এখানে সংগৃহিত কথা গুলোর সত্ব (copyright) সম্পূর্ণভাবে সোর্স সাইটের লেখকের এবং আমাদের কথাতে প্রতিটা কথাতেই সোর্স সাইটের রেফারেন্স লিংক উধৃত আছে ।

প্রাসঙ্গিক আরো কথা
Related contents feature is in beta version.